কে লিখবে?
—পৃথিবীতে অলৌকিক কি আর কিছু নেই?
—আছে, আছে, সে সব কথা পরে হবে, তবে খিদে জিনিসটা
একেবারেই লৌকিক
যেমন আকাশ ভরা এত দুর্বোধ্যতা
কিন্তু একমাত্র ক্ষুধার্ত মানুষই একটুও দুর্বোধ্য নয়
—এ কী অদ্ভুত কথা, মানুষ দুর্বোধ্য নয়?
—মানুষ বলিনি, বলেছি ক্ষুধার্ত মানুষ
—ক্ষুধার্ত মানুষের সব কিছু বোঝা যায়? শুধু
খিদেটাই তার মনুষ্যত্ব, আর কিছু না?
—খিদের সময় যে আর সবকিছুই অবান্তর হয়ে যায়, সে
ফুলের দিকে তাকায় না, সে গান শোনে না
—তুমি কী করে জানলে?
—এই পোড়া দেশ, তাকালেই দেখা যায় চারদিকে
নিরন্ন, অপমানিত মানবতা, খিদের জ্বালায়
যখন শিশুরা কাঁদে..
—তোমার সন্তান কখনো না খেয়ে থেকেছে সারাদিন?
তুমি কি দিনের পর দিন পেট পুড়িয়ে
থেকেছ? তুমি দিনের পর দিন আকাশের দিকে
না তাকিয়ে খুঁজেছ খুদ-কুঁড়ো? জানো কি
তার কান্নার মধ্যে স্বপ্ন থাকে কি না?
তুমি কী ভাবে সাতকাহন করে লেখো তার দুঃখের কথা?
—সে যে নিজে কখনো লেখে না! সে কলম চেনে না, সে
খিদের জ্বালায় কাগজ খেয়ে ফেলে
তা হলে কি কেউ লিখবে না তার কথা?
—লেখার আগে তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নাও!
—ঐ ক্ষমার ব্যাপারটাই অলৌকিক, তখন চোখ ঝাপসা হয়ে যায়!