কৃষক
কৃষক হলেন ধানক্ষেতের ক্রীতদাস। ধানক্ষেত যখন যা আদেশ করে, কৃষক চোখ বুজে তা-ই পালন করেন। ধানক্ষেত যখন পানি চায়, কৃষক তখন পানির ব্যবস্থা করেন। ধানক্ষেত যখন সার চায়, কৃষক তখন সারের ব্যবস্থা করেন। এভাবে তিন-চার মাস খাটানোর পর ধানক্ষেতের মন খারাপ হয়। কৃষকের শরীর দেখে তার মায়া জাগে। ধানক্ষেত তখন একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়। সে কৃষককে আদেশ করে— আমাকে মেরে লাশ বাড়ি নিয়ে যাও।
কৃষক তখন একটি কাঁচি নিয়ে আসেন। কাটতে থাকেন মনিবের দেহ। কিছু ধান এ সময় বিদ্রোহ করে। এদের নাম হয় চিটা ধান। কৃষক তাদের খোলসটা পান, কিন্তু ভেতরটা পান না।
বাড়ি এসে মনিবের স্মৃতি স্বরূপ কিছু ধান কৃষক আলাদা করে রাখেন। কিছু ধান বিক্রি করেন। বাকিগুলো খেতে থাকেন।
একদিন আলাদা করে রাখা ওই ধানগুলোর কথা কৃষকের আবার মনে পড়ে। মনিবের আত্মত্যাগের কথা তার বারবার চোখে ভাসতে থাকে। তখন ধানক্ষেতের মতো, কৃষকও একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নেন। তিনি ধানগুলো ডোল থেকে বের করে পুনরায় হাঁটা শুরু করেন ধানক্ষেতের দিকে। ক্রীতদাস আবার ক্রীতদাস হয়ে ওঠেন।