কাঁচপোকার চোখের আয়নায়

কাঁচপোকার চোখের আয়নায়

প্রৌঢ়টির চোখের পর্দায় একটি অদৃশ্য নারীমুখ
কুয়াশা এগিয়ে আসছে, এক্ষুনি নদীর সঙ্গে শুরু হবে রতি
মানুষটির পায়ের নীচে যে ভূমি, সেখানে গুঁড়ো গুঁড়ো
নক্ষত্র-কণা
সে ক্রমশ দীর্ঘ হতে শুরু করে, তার মাথা ছাড়িয়ে যায়
রুদ্র পলাশের চূড়া
আর উঁচু হয়ো না অ্যারিস্টটল, আকাশে মাথা ঠুকে যাবে যে!

এর সঙ্গে ওর দেখা হয়েছিল তমসা নদীর তীরে
ক্রৌঞ্চ মিথুনের একটির বধের সময় এ বলল,
বেশ করেছিস নিষাদ!
অন্যজন চোখের জলের সঙ্গে উচ্চারণ করল শ্লোক
সঙ্গে সঙ্গে দু’ দিকের দুটো রাস্তা ধরে ছুটতে লাগল
সাদা কালো মানুষ
ভেসে আসছে শরীরবাদীদের উদাস বিরহের গান
একটা ঘাসের ডগা কাপছে স্বপ্ন-দেখা চোখের পাতার মতন
ভোরের আলোয় ঝরে পড়ছে স্বর্গের বেহালা বাদকদের
লোকসঙ্গীতের সুর
দশই জানুয়ারি, ষোলোশো দশ, গ্যালিলিও গ্যালিলি
হাপিস করে দিলেন সেই স্বর্গ!

যারা স্বর্গ-বেশ্যাদের নাচের ঘূর্ণির পায়ে নিবেদন করেছিল
তপস্যার পুণ্য
তারা এখন সোনাগাছি খুঁজতে খুঁজতে হারিয়ে যাচ্ছে অনবরত
পিঁপড়েদের শোভাযাত্রায়
বস্তুবিশ্ব বহুরূপী গিরিগিটির মতন রূপ বদলাচ্ছে বারবার
আকাশে আকাশ নেই, সময়ের শুরু ও শেষ নেই, তুমি কেন
জন্মেছিলে মানুষ?
সামান্য এই প্রশ্নটির উত্তর পেলে না আজও
জানলার পর্দা, রোদ্দুরে সোনার ফ্রেম, কাঁচপোকার চোখের
আয়নায় এ আমি কী দেখলাম?