কল্যাণেশ্বরী বাংলোয়
এই নিস্তব্ধতা বড় তী, যে শব্দভেদী, যে প্রেমহীন
মানুষের কাছাকাছি মানুষের বিকিরণ টের পাওয়া যায়
এখানে মানুষ নেই, বৃক্ষ-সমাজের থেকে এত বেশি নিশ্বাসের হাওয়া
আমাকে একলা নিতে হবে, সতেরো জনের খুশি হবার মতন
পাখিদের ডাকাডাকি আমার একার জন্য,
এতদূর আকাশ সীমানা
অনায়াসে দুঃখী মানুষেরা মিলে ভাগ করে নেওয়া যেত,
এত আলো, এত নীল অন্ধকার, আমাকে বিপুল ধনী করে দেয়
এত বিলাসিতা যেন আমার সাজে না!
বৃদ্ধ চৌকিদার গেছে বরাকরে, রাতে সে ফিরবে না
আমার রাজত্বে আজ আমিই রাজা ও প্রজা, সঙ্গে আছে
দুটি হাত, দুটি পা ও কুড়িটি আঙুল
একুশটিও বলা যায়
তাছাড়া অজস্র পক্ষপাত, রোমকূপ, ছটি প্রিয় বন্ধু ইন্দ্রিয় এবং
ছরকম রিপু
তবু একাকিত্ব হয় সভাপতি, বাকি সব অস্পষ্ট নীরব
এমন নির্জনে আমি সহসা ভয়ার্ত হয়ে উঠি,
নিজেকেই ভয়, আর কাকে?
এমন নিবিড়ভাবে নিজের সান্নিধ্যে নিজে দেখা হলে
পাথরের বিশুদ্ধতা ভেঙে যায়, ভেঙে যায় নদীর গরিমা
কীর্তি মাথা নিচু করে, ভুল স্বর্গ নেমে আসে কাছে
কত না জবাবদিহি, কত অনিত্যের শিহরন
তার চেয়ে স্মৃতি ভালো
তার চেয়ে নারীদের রূপ রোমন্থন করা ভালো
অথবা উলঙ্গ হয়ে বারান্দায় রাত্রি প্রকৃতির মধ্যে মিশে যাওয়া ভালো।