কল্পান্তের আগে
কাছাকাছি সব কিছুর মধ্যে হঠাৎ ঢুকে পড়ছে দূরত্ব
দূরত্ব শব্দটাই অনবরত জ্বালাচ্ছে আমাকে
যা-ই লিখতে যাই, কলমের ডগায় পিঁপড়ের মতন দূরত্ব এসে যায়
তবে কি শুরু হয়ে গেল কল্পান্ত?
মাথা তুলছে ড়ুবো পাহাড়, মেঘের সঙ্গে উড়ে যাচ্ছে
শিকড় সমেত গাছপালা
অতিকায় প্রাণীর মতন সহস্রাব্দ ল্যাজ আছড়াচ্ছে
পাশ ফিরে
এমনও কি হতে পারে, দিন-দুপুরে যা আমার চোখের সামনে জীবন্ত
তা অন্য কেউ দেখছে না?
ময়দানে ঘাস ছিঁড়ে মুখে দিচ্ছে জামার সবকটি বোতাম খোলা ছেলেটি
আর মেয়েটির শাড়ির পাড়ের বাইরে রক্তাভ পায়ের পাতায়
বিন্দু বিন্দু শখের দুঃখ
ওরা অন্য কিছু দেখছে না, ওদের মধ্যেও কি উঁকি মারছে দূরত্ব
নইলে সন্ধে হবার আগেই ও কীসের, পর্বতের মতন দীর্ঘ ছায়া?
তবে কি শুরু হয়ে গেল কল্পান্ত?
নদীরা সব দল বেঁধে ফিরে যাচ্ছে বাপের বাড়িতে
মাথা তুলছে ড়ুবো পাহাড়, মেঘের সঙ্গে উড়ে যাচ্ছে
শিকড় সমেত গাছপালা
ধানক্ষেতে পড়ে আছে এত গুঁড়ো গুঁড়ো স্বপ্ন…
হঠাৎ শহরটা বিনা যুদ্ধে ব্ল্যাক আউট ঘোষণার মতন
অলীক হয়ে যায়
চোখের নিমেষে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে এক-একটা রাস্তা
গুলি ভরা পিস্তল নিয়ে যে ছুটছে, তারই পিঠে
লাগছে প্রথম গুলিটা
নিভে যাওয়া বাতিস্তম্ভের আড়াল থেকে বেরিয়ে এল
চকখড়ির মতন মুখওয়ালা একজন মানুষ
কী অসম্ভব ঠান্ডা চোখে সে খুঁজছে কোনও পাশা খেলার সঙ্গী
মেঘের গুরু গুরু ডাকে শোনা যাচ্ছে সমস্ত নিয়ম ভাঙার আহ্বান
তবে কি শুরু হয়ে গেল কল্পান্ত?
ময়দানে বোতাম খোলা ছেলেটি আর একটু দাঁতে কাটুক ঘাস
মেয়েটির চোখ থাক না কান্নাভেজা, রুমাল ছোঁয়াবার দরকার নেই
আরও কিছুক্ষণ, আরও কিছুক্ষণ
বিশ্ব-সংসার চোখ বুজে থাকো
দূরত্ব, তুমি থমকে দাড়াও!