কলকাতা ১৯৬৬
বসিরহাট থেকে এসেছে ভানু মণ্ডল মানিকতলায়
সঙ্গে দুটি পুঁটুলি আর বেঁটে বউটি
বাচ্চা দুটো কোলে কঁাখালে, বউটি ঘোমটা খুলে তাকালে
দুপুরবেলার মানিকতলা হা হা শব্দে জ্বলে উঠল!
আমতা থেকে ছোট লাইনে পথ এল বাঁয়ে ডাইনে
দুই মেয়ে তার দুটোই সর্বনাশী
ভাতার পুত খেয়েও তাদের আশ মেটেনি পোড়ারমুখি
এখনও খিদে, পেটের মধ্যে চোখের মধ্যে অমন খিদে
খা না, আমার মাথা খা না! পদ্মর মুখ হাঁড়িপানা
কপালে দুই শিরা ফুলল, নাকের সিঁধে
হাওড়া ইস্টিশানে এসে থামল ট্রেনের হাজার চাকা
অমনি টিকিটবাবু এসে বলল, টাকা?
না পারিস তো নেহাৎ একটা আধুলি দে!
দমদম এয়ারপোর্টে নামলেন মি. কানিংহাম আর সুজি
ঝোপ কামিজ আর প্রজাপতি শার্ট, সুজির বুকে একটা নয়
তিনটে ক্যামেরা
ট্যাক্সি! হপ ইন! হিয়ার উই গো
আঃ, চমৎকার, তাই না? পাতার রং লাল নয় কিন্তু
শরতের আকাশ কি নীল?
দিস ইজ দা মোস্ট সিনফুল সিটি ইন দি ইস্ট অব আডেন
তা হোক, আকাশের কোনো পাপ নেই
আমরা আকাশ দিয়ে উড়ে এসেছি!
কোথাও বিপদ নেই, তবুও সাইরেন তার নিজস্ব চিন্তার মতো বেজে ওঠে
শনিবার ঘুম ভেঙে সংবাদপত্রের থেকে চোখ তুলে
সাইরেনের শব্দ শুনি
ঘুম ভেঙে গেলে আর ঘুম নেই
শব্দ থেমে গেলে তবু শব্দ আছে
আমি ঠান্ডা চায়ে ফের ঠোঁট রেখে
চোখ রাখি পৃথিবীর সুখে ও অসুখে
মুখে কোনো রেখা নেই, কেননা মুখের কাছে অপর মুখের
কোনো ভাষা নেই…