১ আমার ভাই ও বোনেরা, তোমাদের কাছে আমি য়ে সুসমাচার প্রচার করেছি, এখন আমি সে কথা তোমাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। তোমরা এই বার্তা গ্রহণ করেছ ও সবল আছ।
২ এই বার্তার মাধ্যমে তোমরা উদ্ধার পেয়েছ, অবশ্য তোমরা যদি তা ধরে রাখ এবং তাতে পূর্ণরূপে বিশ্বাস রাখ। তা না করলে তোমাদের বিশ্বাস বৃথা হয়ে যাবে।
৩ আমি য়ে বার্তা পেয়েছি তা গুরুত্বপূর্ণ মনে করে তোমাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। সেগুলি এইরকম: শাস্ত্রের কথা মতো খ্রীষ্ট আমাদের পাপের জন্য মরলেন,
৪ এবং তাঁকে কবর দেওয়া হয়েছিল। আবার শাস্ত্রের কথা মতো মৃত্যুর তিন দিন পর তাঁকে মৃতদের মধ্যে থেকে জীবিত করা হল।
৫ আর তিনি পিতরকে দেখা দিলেন এবং পরে সেই বারোজন প্রেরিতকে দেখা দিলেন।
৬ এরপর তিনি একসঙ্গে সংখ্যায় পাঁচশোর বেশী বিশ্বাসী ভাইদের দেখা দিলেন। তাদের মধ্যে বেশীর ভাগ লোক এখনও জীবিত আছেন, কিছু লোক হয়তো এতদিনে মারা গেছেন।
৭ এরপর তিনি যাকোবকে দেখা দিলেন এবং পরে প্রেরিতদের সকলকে দেখা দিলেন।
৮ সব শেষে অসময়ে জন্মেছি য়ে আমি সেই আমাকেও দেখা দিলেন।
৯ প্রেরিতরা আমার থেকে মহান, কারণ ঈশ্বরের মণ্ডলীকে আমি নির্য়াতন করতাম, প্রেরিত নামে পরিচিত হবার য়োগ্যও আমি নই।
১০ কিন্তু এখন আমি যা হয়েছি, তা ঈশ্বরের অনুগ্রহের গুনেই হয়েছে। আমার প্রতি তাঁর য়ে অনুগ্রহ তা নিষ্ফল হয় নি, বরং আমি তাদের সকলের থেকে অধিক পরিশ্রম করেছি। তবে আমি য়ে এই কাজ করেছিলাম তা নয়; কিন্তু আমার মধ্যে ঈশ্বরের য়ে অনুগ্রহ ছিল তাতেই তা সন্ভব হয়েছে।
১১ সুতরাং আমি বা অন্যরা যারাই তোমাদের কাছে প্রচার করে থাকি না কেন, সকলে একই সুসমাচার প্রচার করেছিলাম, যা তোমরা বিশ্বাস করেছ।
১২ কিন্তু আমরা যদি প্রচার করে থাকি য়ে খ্রীষ্ট মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন, তখন তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ কি করে বলছে য়ে মৃতদের পুনরুত্থান নেই?
১৩ মৃতদের যদি পুনরুত্থান না হয়, তাহলে খ্রীষ্টও তো উত্থাপিত হন নি,
১৪ আর খ্রীষ্ট যদি পুনরুত্থিত না হয়ে থাকেন তাহলে তো আমাদের সেই সুসমাচার ভিত্তিহীন, আর তোমাদের বিশ্বাসও ভিত্তিহীন।
১৫ আবার আমরা য়ে ঈশ্বরের বিষয়ে মিথ্যা সাক্ষী দিচ্ছি, সেই দোষে আমরা দোষী সাব্যস্ত হব, কারণ আমরা ঈশ্বরের বিষয়ে প্রচার করতে গিয়ে একথা বলেছি য়ে তিনি খ্রীষ্টকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করেছেন।
১৬ মৃতদের পুনরুত্থান যদি না হয়, তবে খ্রীষ্টও মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হন নি;
১৭ আর খ্রীষ্ট যদি পুনরুত্থিত না হয়ে থাকেন, তাহলে তোমাদের বিশ্বাসের কোন মূল্য নেই, তোমরা এখনও তোমাদের পাপের মধ্যেই আছ।
১৮ হ্যাঁ, আর খ্রীষ্টানুসারী যারা মারা গেছে তারা সকলেই বিনষ্ট হয়েছে।
১৯ খ্রীষ্টের প্রতি প্রত্যাশা যদি শুধু এই জীবনের জন্যই হয়, তবে অন্য লোকদের চেয়ে আমাদের দশা শোচনীয় হবে।
২০ কিন্তু সত্যিই খ্রীষ্ট মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন, আর য়েসব ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে তিনি তাদের মধ্যে প্রথম ফসল।
২১ কারণ একজন মানুষের মধ্য দিয়ে য়েমন মৃত্যু এসেছে, মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থানও তেমনিভাবেই একজন মানুষের দ্বারা এসেছে।
২২ কারণ আদমে য়েমন সকলের মৃত্যু হয়, ঠিক সেভাবে খ্রীষ্টে সকলেই জীবন লাভ করবে।
২৩ কিন্তু প্রত্যেকে তার পালাক্রমে জীবিত হবে; খ্রীষ্ট, যিনি অগ্রনী, তিনি প্রথমে মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হলেন, আর এরপর যারা খ্রীষ্টের লোক তারা তাঁর পুনরুত্থানের সময়ে জীবিত হয়ে উঠবে।
২৪ এরপর খ্রীষ্ট যখন প্রত্যেক শাসনকর্তার কর্ত্তৃত্ব ও পরাক্রমকে পরাস্ত করে পিতা ঈশ্বরের হাতে রাজ্য সঁপে দেবেন তখন সমাপ্তি আসবে।
২৫ কারণ যতদিন না ঈশ্বর তাঁর সমস্ত শত্রুকে খ্রীষ্টের পদানত করছেন, ততদিন খ্রীষ্টকে রাজত্ব করতে হবে।
২৬ শেষ শত্রু হিসেবে মৃত্যুও ধ্বংস হবে।
২৭ কারণ, ‘ঈশ্বর সব কিছুই তাঁর অধীনস্থ করে তাঁর পায়ের তলায় রাখবেন।’ যখন বলা হচ্ছে য়ে, ‘সব কিছু’ তাঁর অধীনস্থ করা হয়েছে, তখন এটি স্পষ্ট য়ে ঈশ্বর নিজেকে বাদ দিয়ে সব কিছু খ্রীষ্টের অধীনস্থ করেছেন।
২৮ সব কিছু খ্রীষ্টের অধীনস্থ হলে পুত্র ঈশ্বরের অধীনস্থ হবেন। য়েন ঈশ্বর, যিনি তাঁকে সব কিছুর ওপর কর্ত্তৃত্ব করতে দিয়েছেন, তিনিই সর্বেসর্বা হন।
২৯ কিন্তু যারা মৃত লোকদের উদ্দেশ্যে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করে তাদের কি হবে? মৃতেরা যদি কখনও পুনরুত্থিত না হয়, তাহলে তাদের জন্য এই লোকেরা কেন বাপ্তাইজ হয়?
৩০ আমরাই বা কেন প্রতি মুহূর্তে বিপদের সম্মুখীন হই?
৩১ আমি প্রতিদিন মরছি। খ্রীষ্ট যীশুতে তোমাদের জন্য আমার য়ে গর্ব আছে তারই দোহাই দিয়ে আমি বলছি, একথা সত্য।
৩২ যদি শুধু মানবিক স্তরে ইফিষের সেই হিংস্র পশুদের সঙ্গে যুদ্ধ করে থাকি তাহলে আমার কি লাভ হয়েছে? কিছুই না। মৃতদের যদি পুনরুত্থান নেই তবে, ‘এস ভোজন পান করি কারণ কাল তো আমরা মরবই।’
৩৩ ভ্রান্ত হযো না, ‘অসত্ সঙ্গ সচ্চরিত্র নষ্ট করে।’
৩৪ চেতনায় ফিরে এস, পাপ কাজ বন্ধ কর, কারণ তোমাদের মধ্যে কিছু লোক আছে যারা ঈশ্বর সম্বন্ধে সম্পূর্ণ অজ্ঞ। তোমাদের লজ্জা দেবার জন্যই আমি একথা বলছি।
৩৫ কিন্তু কেউ কেউ জিজ্ঞাসা করবে, ‘মৃতেরা কি করে পুনরুত্থিত হয়? তাদের কি রকম দেহই বা হবে?’
৩৬ কি নির্বোধের মত প্রশ্ন! তোমরা য়ে বীজ বোনো, তা না মরা পর্যন্ত জীবন পায় না।
৩৭ তুমি যা বোনো, য়ে ‘দেহ’ উত্পন্ন হবে তুমি তা বোনো না, তার বীজ মাত্র বোনো, সে গমের বা অন্য কিছুর হোক।
৩৮ তারপর ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে তিনি তার জন্য একটা দেহ দেন। প্রতিটি বীজের জন্য তাদের নিজের নিজের দেহ দেন।
৩৯ সকল প্রাণীর মাংস এক রকমের নয়; কিন্তু মানুষদের এক রকমের মাংস, পশুদের আর এক ধরণের মাংস, পক্ষীদের আবার অন্য রকমের মাংস।
৪০ সেই রকম স্বর্গীয় দেহগুলি য়েমন আছে, তেমনি পার্থিব দেহগুলিও আছে। স্বর্গীয় দেহগুলির এক প্রকার ঔজ্জ্বল্য, আবার পার্থিব দেহগুলির অন্যরকম।
৪১ সূর্যের এক প্রকারের ঔজ্জ্বল্য, চাঁদের আর এক ধরণের, আবার নক্ষত্রদের অন্য ধরণের। একটা নক্ষত্র থেকে অন্য নক্ষত্রের ঔজ্জ্বল্য ভিন্ন।
৪২ মৃতদের পুনরুত্থানও সেই রকম। য়ে দেহ কবর দেওয়া হয় তা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, য়ে দেহ পুনরুত্থিত হয় তা অক্ষয়।
৪৩ য়ে দেহ মাটিতে কবর দেওয়া হয়, তার কোন কদর থাকে না, য়ে দেহ পুনরুত্থিত হয় তা গৌরবজনক। য়ে দেহ মাটিতে কবরস্থ হয়, তা দুর্বল, য়ে দেহ পুনরুত্থিত হয় তা শক্তিশালী।
৪৪ য়ে দেহ মাটিতে কবরস্থ হয় তা জৈবিক দেহ; আর য়ে দেহ পুনরুত্থিত হয় তা আত্মিক দেহ।যখন জৈবিক দেহ আছে, তখন আত্মিক দেহও আছে।
৪৫ শাস্ত্রে এই কথাও বলছে: ‘প্রথম মানুষ (আদম) সজীব প্রাণী হল;আর শেষ আদম (খ্রীষ্ট) জীবনদায়ক আত্মা হলেন।
৪৬ যা আত্মিক তা প্রথম নয় বরং যা জৈবিক তাই প্রথম; যা আত্মিক তা এর পরে আসে।
৪৭ প্রথম মানুষ আদম এলেন পৃথিবীর ধূলো থেকে, দ্বিতীয় মানুষ (খ্রীষ্ট) এলেন স্বর্গ থেকে।
৪৮ মৃত্তিকার মানুষটি য়েমন ছিল, পৃথিবীর অন্যান্য মানুষও তেমন; আর স্বর্গীয় মানুষরা সেই স্বর্গীয় মানুষ খ্রীষ্টের মত।
৪৯ আমরা য়েমন মৃত্তিকার সেই মানুষদের মতো গড়া, তেমন আবার আমরা সেই স্বর্গীয় মানুষ খ্রীষ্টের মত হব।
৫০ আমার ভাই ও বোনেরা, তোমাদের বলছি: আমাদের রক্ত মাংস ঈশ্বরের রাজ্যের অধিকারী হতে পারে না। যা কিছু ক্ষয়শীল তা অক্ষয়তার অধিকারী হতে পারে না।
৫১ শোন, আমি তোমাদের এক নিগূঢ়তত্ত্ব বলি। আমরা সকলে মরব এমন নয়, কিন্তু আমাদের সকলেরই রূপান্তর ঘটবে।
৫২ এক মুহূর্তের মধ্যে যখন শেষ তূরী বাজবে তখন চোখের পলকে তা ঘটবে। হ্যাঁ, তূরী বাজবে, তাতে মৃতেরা সকলে অক্ষয় হয়ে উঠবে, আর আমরা সকলে রূপান্তরিত হব।
৫৩ কারণ এই ক্ষয়শীল দেহকে অক্ষয়তার পোশাক পরতে হবে; আর এই পার্থিব নশ্বর দেহ অবিনশ্বরতায় ভুষিত হবে।
৫৪ এই ক্ষয়শীল দেহ যখন অক্ষয়তার পোশাক পরবে আর এই পার্থিব দেহ যখন অবিনশ্বরতায় ভূষিত হবে তখন শাস্ত্রে য়ে কথা লেখা আছে তা সত্য হবে:‘মৃত্যু জয়ে কবলিত হল।’যিশাইয় ২৫:৮
৫৫ ‘মৃত্যু তোমার জয় কোথায়? মৃত্যু তোমার হুল কোথায়?’হোশেয় ১৩:১৪
৫৬ মৃত্যুর হুল পাপ আর পাপের শক্তি আসে বিধি-ব্যবস্থা থেকে।
৫৭ কিন্তু ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই। তিনিই আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে আমাদের বিজযী করেন।
৫৮ তাই আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, সুস্থির ও সুদৃঢ় হও। প্রভুর কাজে নিজেকে সব সময় সম্পূর্ণভাবে সঁপে দাও, কারণ তোমরা জান, প্রভুর জন্য তোমাদের পরিশ্রম নিষ্ফল হবে না।