কবি
কবিকে দেখলে মনে হয় যেন সন্তর্পণ একটা শালিক
অথচ তার হৃদয়টা শাঁ শাঁ উড্ডীন বাজপাখির মতন
কী মুস্কিল!
কবিকে হঠাৎ তুলে ফেলে দেওয়া হোক অগাধ সমুদ্রে
সে কিন্তু তখনও চিত হয়ে ভাসবে ছেলেবেলার ছোট্ট নদীতে
সাঁতার কাটবে স্বপ্নে!
কবিকে খাতির করে নিয়ে যাও না পাঁচতারা হোটেলে
গেলাসটা ধরেছে দেখো, যেন চুমুক দিচ্ছে ভাঁড়ের চায়ে
নিজেই হাসছে মনে মনে।
কবি হাঁটছে মিছিলে, অথচ সে কী দারুণ একাচোরা।
বিয়ে বাড়িতে সবার সঙ্গে গল্প করছে হেসে হেসে, আসলে সে
কিছুই বলছে না।
অন্ধকারের মধ্যে একটা একরত্তি স্ফুলিঙ্গ তাকে শাসন করে
বাঁ দিকে তাকিয়ে থাকে, দেখে ডান দিকে, ঠিক যেন লক্ষ্মীট্যারা
বেশি দেখে দেয়াল!
রাস্তাটা তার আয়না, সেই জন্যই, সে নিজেকে দেখতে পায় না
আঙুল ড়ুবিয়ে রাখে জলে, সে জল কিন্তু অসমতল
তেষ্টায় বুক ফাটে।
বাসের জানলার নারীকে সে বসিয়ে দেয় নির্জন ঝর্নার ধারে
মুহুর্মুহু ভাঙছে গড়ছে স্বর্গ, যেন পৃষ্ঠা উল্টে যাওয়া
নরকও বেশ চেনে।
গলির মধ্যে পাহাড় চুড়ো, তাকে ঘিরে রেখেছে গোলোকধাঁধা
সেইখানে তার বাড়ি, সর্বক্ষণ গোলমালে কান ঝালাপালা
তার মধ্যে সে অদৃশ্য!
কবি যে কতবার হোঁচট খায় তার গোনা গাঁথা নেই
ভুলে ভর্তি জীবন, সে এই পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ নির্বোধ
দেবতারাও তাকে ভয় পায়।
তার চুপ করে থাকার মধ্যে দারুণ ব্যস্ততা, যখন মনে হয়
তন্ময় হয়ে সে লিখছে, আসলে সে তখন ঘুমোচ্ছে
ওকে ক্ষমা করে দাও!