কখনও দূরের নীল, ভাসমান মেঘ, উড়ে-যাওয়া
পাখির ধূসর পঙ্ক্তি, সতেজ সবুজ
ফ্লাটের রেলিং ধরে দাঁড়ানো কিশোরী কিংবা পথের ভিখিরি
লোকটার মাথার জটিল কুঞ্জে সাড়া জাগায় এবং
রং-বেরঙের শব্দমালা তৈরি হয়। তবে তার
পায়ের তলার মাটি সবচেয়ে বেশি অর্থময় এবং গভীর পঙ্ক্তি
কে জানে কেমন গূঢ় রসায়নে সৃষ্টি করে কখনও নিমেষে
কখনও-বা সময়ের দীর্ঘ ব্যবধানে।
বারবার শুধু শব্দমালা তৈরি করা ছাড়া বিফল সে
অন্যসব কিছুতেই। প্রায়শ লোকটা
ঠেকায় আপন মাথা মৃত্তিকায়, কোনও কোনওদিন
চেয়ে থাকে ধূলিকণাদের দিকে-পথচারীদের
চোখে পড়ে কখনও সখনও। কেউ কেউ তাকে ঘোর
উন্মাদ ঠাউরে হেসে যে যায় গন্তব্যে চলে যায়,
কেউ-বা প্রলুব্ধ হয় ঢিল ছুঁড়ে দিতে। আপন গহনে সেই
অক্লান্ত ডুবুরি উদাসীন খুব হাসি-মশ্করার প্রতি।
এমন মৃত্তিকালগ্ন সত্তার সতেজ রক্তধারায় দেশের
মাটি ভাসাবার হিংস্র ফিকিরে মাতাল
কিছু লোক, এ-কথা জেনেছে কবি। কবিতার সিঁড়ি গড়বার
ফাঁকে ফাঁকে ভাবে সে বিষণ্নতায়, ‘যদি মাতৃভূমি
ভীষণ তৃষিত, তবে সেই ধূ ধূ পিপাসা মিটুক
শোণিতে আমার আর ফুটুক গোলাপ তার বুকে।‘