ওই মৌন আকাশের শবাধারে মৃতা সুন্দরীর
নিদ্রিত মুখের মত পাণ্ডু চাঁদ! কয়টি জোচ্চোর
নৈশ আস্তানায় জোটে, যেন খিন্ন মাছি ঊর্ণাজালে।
শিহরিত আমার শহর কত স্খলিত চরণে।
স্বপ্নে দেখি সিমেরীর রাজ্যে আমি যুবরাজ আর
বাহুলগ্না শাহজাদি আমার সপ্রাণ, দীপ্ত কামে
মঞ্জরিত। অথচ আবার ঘুঁটে-কুড়ানির হাত
সযত্নে সেলাই করে আমার মলিন পরিচ্ছদ।
কুকুরের দাঁতে বিদ্ধ হৃদয় আমার, উন্মোচিত
সবার চোখের নিচে, ছিন্নভিন্ন, নগ্ন, অসহায়।
চৌদিকে প্রেতেরা মত্ত ছায়ানাট্যে অফুরান, তবু
বাসনার নৌকো দোলে দুর্নিবার তরঙ্গ-শিখরে।
নাগরিক রাত্রি এই রজনীগন্ধার মতো ঘ্রাণে
উন্মীলিত অনন্তের বিশাল অরণ্যে। অন্ধকারে
প্রৌঢ় কবি হাতড়িয়ে ফেরে লোকালয়ে অবিরাম
নর্দমায় নোংরা জলে প্রজ্বলিত দুর্লভ মানিক।
শোণিতে তারার স্রোত খরশান, মাল্লাদের গানে
মাঝে-মাঝে সচকিত চৈতন্যের ভাস্বর নীলিমা।
মাস্তুলে গ্রথিত দেখি রক্তাক্ত শুশুক, ছেঁড়াখোঁড়া;
রঞ্জিত পাঁকের মাঝে উচ্চকিত কোকিলের স্বর!
আসার, শটিত ক্লেদে কলঙ্কিত অস্তিত্বের পট,
আর আমি প্রমত্ত দঙ্গলে এই চিহ্নিত, ধিক্কৃত
শিল্পের শহীদ। শাশ্বতীরে খুঁজে ফিরি, আর দেখি
নিয়ত রাত্রির চোখ সুশোভিত পাপের কাজলে।