১ আমি প্রভুর বলে কারাগারে বন্দী। ঈশ্বর তোমাদের মনোনীত করেছেন য়েন তোমরা তাঁর লোক হতে পার। আমি তোমাদের সেইরকম জীবনযাপন করতে অনুরোধ করি, য়েভাবে ঈশ্বরের লোকদের জীবনযাপন করা উচিত।
২ তোমরা সর্বদাই নতনম্র থাক, সহিষ্ণু হও, ভালবেসে একে অপরকে গ্রহণ কর।
৩ পবিত্র আত্মা তোমাদের যুক্ত করেছিলেন। সেই একতা রক্ষা করার জন্য সর্বোত্তমভাবে চেষ্টা কর। শান্তি তোমাদের একসঙ্গে ধরে থাকুক।
৪ দেহ এক ও আত্মা এক, ঠিক সেইরকমই ঈশ্বর তোমাদের সকলকে এক প্রত্যাশার জন্য আহ্বান করেছেন।
৫ কেবল একই প্রভু, এক বিশ্বাস ও এক বাপ্তিস্ম রয়েছে;
৬ আর আছেন এক ঈশ্বর যিনি সকলের পিতা। যিনি সকলের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করেন। তিনি সর্বত্র আছেন ও সবকিছুতে আছেন।
৭ খ্রীষ্ট আমাদের প্রত্যেককে বিশেষ বিশেষ বরদান দিয়েছেন। যাকে যা দিতে ইচ্ছা করেছেন তাকে তা দিয়েছেন।
৮ তাই শাস্ত্র বলছে: ‘তিনি উর্দ্ধে আকাশে গেলেন, সঙ্গে বন্দীদের নিয়ে গেলেন, আর মানুষের হাতে তুলে দিয়ে গেলেন নানা বরদান।’ গীতসংহিতা ৬৮:১৮
৯ যখন বলা হয়েছে, ‘তিনি উর্দ্ধে উঠে গেলেন,’ তার অর্থ কি? তার অর্থ এই য়ে প্রথমে তিনি নিম্নে পৃথিবীতে নেমেছিলেন।
১০ সেই জন যিনি নেমে এসেছিলেন (খ্রীষ্ট) তিনি সেই একই ব্যক্তি যিনি আকাশের থেকেও উচ্চে উঠেছিলেন, যাতে সব কিছুই তাঁর দ্বারা পূর্ণ করতে পারেন।
১১ সেই খ্রীষ্ট লোকদের বরদান করলেন, তাদের কয়েকজনকে প্রেরিত করলেন, আবার কয়েকজনকে ভাববাদী, কয়েকজনকে সুসমাচার প্রচারক, কয়েকজনকে শিক্ষক ও পালক হবার ক্ষমতা দিলেন।
১২ ঈশ্বরের লোকদেরকে প্রস্তুত করার জন্য ও সেবার কাজ সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে খ্রীষ্ট এইসব বরদান করেছেন। খ্রীষ্টের দেহরূপে মণ্ডলীকে গঠন করার জন্য তিনি সেইসব বর দিয়েছেন।
১৩ য়ে পর্যন্ত না আমরা ঈশ্বরের পুত্রের বিষয়ে একই বিশ্বাস ও তত্ত্বজ্ঞানে সুষ্ঠভাবে যুক্ত হব, সেই পর্যন্ত এই কাজ চলতে থাকবে। আমাদের পরিণত মানুষের মতো হতে হবে। আমরা ততদিন বৃদ্ধি পেতে থাকব য়ে পর্যন্ত না খ্রীষ্টের মত হই ও তাঁর মত সম্পূর্ণ সিদ্ধ হই।
১৪ তখন আমরা আর শিশুর মত থাকব না। জাহাজ য়েমন তরঙ্গের দাপটে এদিক ওদিক চালিত হয়, তেমনি আমরা কোন নতুন শিক্ষা দ্বারা আর স্থানচ্যুত হব না; ঠগবাজ লোকের নতুন শিক্ষা দ্বারা আমরা প্রভাবিত হব না। এরা তাদের পরিকল্পনা ও চালবাজি দ্বারা মানুষকে ঠকিয়ে ভুল পথে নিয়ে যায়।
১৫ আমরা বরং প্রেমের সঙ্গে সত্য কথাই বলব, এইভাবে খ্রীষ্টের মতো সব বিষয়ে আমরা বৃদ্ধিলাভ করব। খ্রীষ্ট হলেন মস্তক, আমরা তাঁর দেহ।
১৬ সমস্ত দেহটা খ্রীষ্টের ওপর নির্ভরশীল। দেহের সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ পরস্পরের সঙ্গে একত্রে যুক্ত রয়েছে। দেহের বিভিন্ন অঙ্গ যখন তাদের করণীয় কাজ করে, তখন সমস্ত দেহ বৃদ্ধিলাভ করে প্রেমে শক্ত ও দৃঢ় হয়।
১৭ প্রভুর হয়ে আমি তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছি, – যাঁরা বিশ্বাস করে না এমন লোকদের মতো জীবনযাপন করো না। এমন লোকের চিন্তাধারা মূল্যহীন।
১৮ তাদের জ্ঞান বুদ্ধি নেই। তারা কিছুই জানে না কারণ শুনতে চায় না। তাই য়ে জীবন ঈশ্বর তাদের দিতে চান তা থেকে তারা বঞ্চিত থাকে।
১৯ তাদের মনে লজ্জা বলে কোন অনুভূতিই নেই, তারা মন্দ পথে নিজেদের গা ভাসিয়ে দিয়েছে। বিনা দ্বিধায় তারা সব রকম খারাপ কাজ করে চলে।
২০ কিন্তু খ্রীষ্টের কাছ থেকে তোমরা তো এমন মন্দ শিক্ষা পাও নি।
২১ আমি জানি তাঁর অনুগামী হিসাবে সেই সত্য অনুসারে তোমাদের শিক্ষা দেওয়া হয়েছিল, য়ে সত্য খ্রীষ্ট যীশুতে রয়েছে।
২২ তোমাদের পুরানো প্রবৃত্তিকে ত্যাগ করতে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। আগে য়েভাবে মন্দ জীবনযাপন করতে তা ছাড়তে বলা হয়েছে। সেই পুরানো সত্ত্বা দিন দিন মন্দ থেকে মন্দতর হয়, কারণ লোকরা তাদের মন্দ চিন্তা দ্বারা প্রবঞ্চিত হয়।
২৩ কিন্তু তোমাদের শেখানো শিক্ষা অনুসারে তোমরা আপন হৃদয়ে পুনরায় নতুন হয়ে ওঠ,
২৪ এবং সেই নতুন সত্ত্বাকে অবশ্যই পরিধান কর। সেই নতুন সত্ত্বা ঈশ্বরের মত হবার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, যা সত্যই ভাল এবং পবিত্র।
২৫ তাই একে অপরের কাছে মিথ্যা বলা বন্ধ কর, কারণ আমরা পরস্পর এক দেহেরই অঙ্গ প্রত্যঙ্গ।
২৬ রেগে গেলে তার প্রভাবে য়েন পাপ করো না এবং সারাদিন রাগ করে থেকো না।
২৭ তোমাকে পরাস্ত করতে দিয়াবলকে কোন রকম সুয়োগ নিতে দিও না।
২৮ য়ে এক সময় চুরি করত সে য়েন আর কখনও চুরি না করে, বরং ভাল কিছু কাজ করতে নিজ হাতে পরিশ্রম করে। সে য়েন সবরকম ভাল কাজ করে, তাহলে অভাবী লোকদের সঙ্গে ভাগ করে দেবার জন্যেও তার কিছু থাকবে।
২৯ অপরের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করার সময় কোন খারাপ কথা বলো না। লোকেদের প্রযোজনীয় আত্মিক শক্তি দেবার জন্য যা ভাল কেবল তাই-ই বল। এমনভাবে কথা বল য়েন তোমার কথায় অপরের উপকার হয়।
৩০ তোমরা ঈশ্বরের পবিত্র আত্মাকে বিষন্ন করো না। আত্মা ঈশ্বরের কাছে প্রমাণ করে য়ে তোমরা ঈশ্বরের অধিকারভুক্ত। ঈশ্বরের নিরূপিত সময়ে ঈশ্বর য়ে তোমাদের যুক্ত করবেন তার প্রমাণস্বরূপ ঈশ্বর সেই আত্মাকে তোমাদের মধ্যে দিয়েছেন।
৩১ সব রকমের তিক্ততা, রোষ, ক্রোধ, চেঁচামেচি, নিন্দা ও সব রকমের বিদ্বেষভাব তোমাদের থেকে দূরে রাখ।
৩২ পরস্পরের প্রতি স্নেহশীল হও, পরস্পরকে একইভাবে ক্ষমা কর, য়েভাবে ঈশ্বরও খ্রীষ্টে তোমাদের ক্ষমা করেছেন।