এখন আমি

এখন আমি কারুর কোথাও যাবার কথা
শুনলে হঠাৎ চমকে উঠি,
এক নিমেষে ছলছলিয়ে ওঠে কেমন বুকের পুকুর।
কোথায় যাবে? কেন যাবে? এমনিতরো প্রশ্ন শুধু
চোখের তারায়, ঠোঁটের রেখায়
কাঁপতে থাকে।

কারুর দিকে হাত বাড়ালে হাত স’রে যায়।
দুঃখভেজা মেঘ-আড়ালে।
যখন-তখন
মনের আপন ঘাঁটি ভীষণ প্রকম্পিত।
এখন আমি কারুর কোথাও যাবার কথা
শুনলে হঠাৎ চমকে উঠি।

এখন আমি একটা কিছু ভেঙে যেতে দেখলে বিষম
ভেঙে পড়ি।
গোলাপ ফুলের চারাটা তার সজীবতা
খোয়ালে খুব ভয় পেয়ে যাই-
বালক বেলার দূর দুপুরে কাটা ঘুড়ির দৃশ্য আবার
যখন-তখন মনে পড়ে।
অনেকগুলো মৃত ঘোড়া শৈশবেরই ভুবনজোড়া
দীর্ঘ ঘাসে উল্টো পাল্টা থাকে পড়ে-
এখন আমি এমন কিছু ভাবলে ভীষণ
ভয় পেয়ে যাই।
বেশ তো থাকি সময় সময় আবছা আলোয় গৃহকোণে
বইয়ের পাতায় মাথা গুঁজে।
মাঝে মাঝে ঝরা পাতার ফিসফিসানি
বয়স বাড়ার খবর রটায়।
বয়স্য কেউ সূর্য ডোবার মতো হঠাৎ ডুবে গেলে,
অন্ধকারে মনের সঙ্গে
এক্কা দোক্কা খেলে কাটাই ক্লান্ত বেলা।
দুঃখ কেবল দুঃখ হয়ে ফেলে গভীর দীর্ঘ ছায়া
মুখের রেখায়-
তখন বুকের ভেতর শুধু একলা লাগে,
একলা লাগে।