এক বনমানুষ
হাত ধরতে বলো, স্বেচ্ছায় হাত ধরবে না
পা মেলাতে বললা; পা মেলাবে না
একা সরে যাবে, লাফ দিয়ে ছোট্ট এক দ্বীপে
গুটিসুটি বসে থাকবে, ইচ্ছে মতো আঙুল পোড়াবে
কাছেই রয়েছে জল, তবু খুঁড়বে বালি
তার বুকের ক্ষতটি সে কারুকে দেখাবে না।
দামামা বাজিয়ে ডেকে আনো, অজস্র দ্বীপের
নির্জনতা তছনছ করে ধরে আনো, তখন কথা শুনবে
এক তালে পায়ে পা মিলিয়ে গাইবে গান
আকাশের দিকে তুলবে মুষ্টিবদ্ধ শপথের হাত
শরীরের ঘাম দেবে, কত শত দেওয়াল বানাবে
এমনই বাধ্য যেন ঐকতানে লীন হতে চায়
অথচ রাত্তিরে বারান্দায় দ্যাখো চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে
ও সেখানে নেই, হাতের শৃঙ্খলও আর নেই
জেগে উঠছে দ্বীপ, নিজস্ব গাছপালা ঘেরা দ্বীপ
তার মধ্যে এক বনমানুষ, বুকে জন্ম ক্ষত, চুইয়ে পড়ে রক্ত
মেহ নেই, মায়া নেই, সংসার চেনে না
শিরশিরে ব্যথার মতন একাকিত্বে হাত বুলোয়
তার সমস্ত বাসনা গুড়ো গুড়ো হয়ে মিশে যায় বাতাসে
আবার সেই বাতাসই নিঃশ্বাসে টেনে নিয়ে বলে, আঃ
সে কারুকে চেনে না, তাকে কিছুতেই চেনা যাবে না
এ পাশে শিউলিরঙা ভোর, ও পাশে করমচা-গোধূলি
তার বুকের ক্ষতটিতে ঝলসায় অনেকগুলো শতাব্দীর ব্যর্থতা!