ঋগ্বেদ ১০।১৪৯
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ১০ম মণ্ডল সূক্ত ১৪৯
সবিতা দেবতা। অর্চৎ ঋষি।
১। সবিতা নানা যন্ত্রের দ্বারা পৃথিবীকে সুস্থির রাখিয়াছেন, তিনি বিনা অবলম্বনে দ্যুলোককে দৃঢ়রূপে বাঁধিয়া রাখিয়াছেন। এই দেখ, আকাশে সমুদ্রের ন্যায় মেঘরাশি অবস্থিত আছে, ইহার ঘোটকের ন্যায় গাত্র কম্পিত করে, ইহারা নিরুপদ্রব স্থানে বদ্ধ আছে, ইহা হইতে সবিতাই জল নির্গত করেন।
২। সমুদ্রতুল্য মেঘরাশি যে স্থানে বদ্ধ থাকিয়া পৃথিবীকে আর্দ্র করে, জলের পুত্র সবিতা ঐ স্থান জানেন। তাহা হইতেই পৃথিবী, তাহা হইতেই আকাশ উদয় হইয়াছে, তাহা হইতেই দ্যুলোক ও ভূলোক বিস্তীর্ণ হইয়াছে।
৩। যে সকল দেবতার উদ্দেশে যজ্ঞ হইয়া থাকে, যাঁহারা অমর, ভুবনের উৎপন্ন জীবরূপ, তাহারা শেষে জন্মিয়াছেন। সুপর্ণ গরুত্মান সবিতা হইতে অগ্রে জন্মিয়াছেন। তিনি ইহার ধারণক্রিয়ার পশ্চাতবর্তী।
৪। সেই সবিতা যাহাকে সংসারশুদ্ধ সকলে প্রার্থনা করে, তিনি স্বর্গের ধারণকৰ্ত্তা, তিনি আমাদিগের নিকট সেইরূপ ঔৎসুক্যের সহিত আগমন করুন, যেমন গাভীগণ গ্রামের দিকে যায়, যেমন যোদ্ধা ব্যক্তি অশ্বের দিকে যায়, যেমন নবপ্রসূতা ধেনু প্ৰসন্নমনে দুগ্ধ বর্ষণ করিতে করিতে বৎসের দিকে যায়, কেমন স্বামী স্ত্রীর নিকটে যায়।
৫। হে সবিতা! যেমন অঙ্গিরার বংশস্মভূত আমার পিতা হিরণ্যস্তূপ এই যজ্ঞে তোমাকে আহ্বান করিতেছেন, তদ্রুপ আমি তাহার পুত্র অর্চৎ তোমারনিকট আশ্রয় লাভের জন্য বন্দনা করিতে করিতে তোমার সেবার জন্য তেমনি সতর্ক রহিয়াছি, যেমন যজমানেরা সোমলতা রক্ষার জন্য সতর্ক থাকে।