ঋগ্বেদ ১০।১৩৫

ঋগ্বেদ ১০।১৩৫
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ১০ম মণ্ডল সূক্ত ১৩৫
যম দেবতা। কুমার ঋষি।

১। চমৎকার পত্রদ্বারা শোভিত যে বৃক্ষের উপরে যমদেব দেবতাদিগের সঙ্গে একত্রে পান করেন, আমাদিগের নরপতি পিতা ইচ্ছা করিয়াছেন, যে আমি সেই বৃক্ষে যাইয়া পূর্বপুরুষদিগের সঙ্গী হই।

২। পিতা আমার প্রতি নির্দয় হইয়া ‘পূর্বপুরুষদিগের সঙ্গী হও,’ এই আদেশ করাতে আমি তাহার প্রতি বিরক্তিসূচক দৃষ্টিপাত করিয়াছিলাম, পরে সেই বিরাগ ত্যাগ করিয়া পুনর্বার অনুরক্ত হইয়াছি।

৩। (যমের উক্তি)- ওহে কুমার! তুমি মনে মনে এমন এক খানি নূতন রথ প্রার্থনা করিয়াছিলে, যাহার চক্র নাই, যাহার একমাত্র ঈষা(বোম), অথচ যাহা সৰ্বত্ৰ গতিবিধি করিতে সমর্থ। তুমি না বুঝিয়া সেই রথে আরোহণ করিয়াছ।

৪। ওহে কুমার! বুদ্ধিমান্ বন্ধুবান্ধবদিগকে পরিত্যাগপূর্বক তুমি সেই রথ ধাবিত করিয়াছ, উহা তোমার পিতার সান্ত্বনা-পূর্ণ উপদেশবাক্য অনুসারে চলিয়াছে, সেই উপদেশ উহার নৌকাস্বরূপ এবং আশ্রয়স্বরূপ হইয়াছে। সেই নৌকাতে সংস্থাপিত হইয়া ঐ রথ এ স্থান হইতে চলিয়া গিয়াছে।

৫। কে এই বালকের জন্মদাতা? কে এই রথ প্রেরণ করিয়াছে? যাহাতে এই বালক যমকর্তৃক জীবলোকে প্রত্যর্পিত হইবেক, সে সন্ধান অদ্য আমাদিগকে কে বলিয়া দিবে?

৬। যাহাতে বালক যমকর্তৃক জীবলোকে প্রত্যর্পিত হইবেক, তাহা অর্থেই বলা হইয়াছিল। প্রথমে পিতার উপদেশের মূল অংশ প্রকাশ হইল, পশ্চাৎ প্রত্যাগমনের উপায় কহা হইল।

৭। এই দেখিতেছি, যমের বাটী, লোকে কহে, ইহা দেবতাদিগের কর্তৃক নির্মিত হইয়াছে। এই দেখিতেছি, ইহার সর্বাঙ্গে শিরা নির্গত হইয়া আছে, এইদেখিতেছি, ইহাকে লোকে স্তব করিতেছে (১)।

————

(১) কুমার নচিকেতা পিতার কথায় যমপুরী দেখতে যান, সেই আখ্যান লইয়া সম্ভবত এই সূক্ত মূর্তি কবিতাগুলি রচিত হইয়াছে। কঠ উপনিষদে এই নচিকেতার কথা বিস্তীর্ণরূপে বিবৃত হইয়াছে।