ঋগ্বেদ ১০।০২৩
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ১০ম মণ্ডল সূক্ত ২৩
ঋষি ও দেবতা পূর্ববৎ।
১। যে ইন্দ্র বিধিকৰ্ম্মপটু হরিত বর্ণ ঘোটকদিগকে রথে যোজনা করেন, যাহার দক্ষিণহস্তে বজ্র আছে, তাহাকে পূজা করি। তিনি আপনার শ্নশ্রু কম্পমান করিয়া(১) বিস্তর সেনা ও অন্ন লইয়া বিপক্ষ সংহার করিতে উর্ধে গেলেন।
২। এই ইন্দ্রের হরিতবর্ণ যে দুই ঘোটক বন মধ্যে উত্তম ঘাস খাইয়াছে, ইনি তাহাদিগকে লইয়া বিস্তর ধনে ধনবান্ হইয়া বৃত্রকে নষ্ট করিলেন। ইনি প্রকাণ্ডমূৰ্ত্তি, বলবান্ ও দীপ্তিশীল। ইনি ধনের অধিপতি। আমি দাস অর্থাৎ দস্যুজাতির নাম পৰ্য্যন্ত উঠাইয়া দিতেছি।
৩। যখন ইন্দ্র সুবর্ণময় বজ্র ধারণ করেন, তখন তিনি সেই রথে বিদ্বান লোকদিগের সঙ্গে আরোহণ করেন, যে রথ হরিতবর্ণ দুই ঘোটক বহন করে। ইনি চির বিখ্যাত ধনবান, ইনি সৰ্বজন বিদিত অন্নরাশির অধিপতি।
৪। যেরূপ বৃষ্টি পশুযূথকে আর্দ্র করে, তদ্রুপ ইন্দ্র হরিতবর্ণ সোমরসের দ্বারা আপনার শ্মশ্রু আর্দ্র করিতেছেন। পরে তিনি সুশোভন যজ্ঞগৃহে গমন করিতেছেন, তথায় যে মধুময় সোমরস প্রস্তুত রহিয়াছে, তাহা পান করিয়া যেরূপে বায়ু বনকে আন্দোলন করে, আপনার শ্নশ্রুসমূহ সেইরূপে সঞ্চালন করিতেছেন (২)।
৫। শত্রুরা নানা বাক্য উচ্চারণ করিতেছিল, ইন্দ্র আপনার বাক্যমাত্র দ্বারা তাহাদিগকে নীরব করিয়া শত সহস্র বিপক্ষ সংহার করিলেন। পিতা যেরূপ অন্ন দিয়া পুত্রকে বলিষ্ঠ করেন, তদ্রুপ তিনি লোকদিগকে বলিষ্ঠ করেন । আমরা সেই ইন্দ্রের উল্লিখিত ভিন্ন ভিন্ন ক্ষমতা কীৰ্ত্তন করি।
৬। হে ইন্দ্র! বিমদবংশীয়েরা তোমাকে বিশেষ বদান্য জানিয়া তোমার উদ্দেশে অতি চমৎকার ও অতি বিস্তারিত স্তব রচনা করিয়াছেন। এই রাজা ইন্দ্রের তৃপ্তি সাধন কি সামগ্রী তাহা আমরা জানি। যেরূপ গোপাল গাভীকে ভোজনের লোভ দেখাইয়া আপনার নিকটে আনয়ন করে, তদ্রুপ আমরাও ইন্দ্রকে আনয়ন করিতেছি।
৭। হে ইন্দ্র! তোমাতে আর বিমদ ঋসিতে এই যে সমস্ত বন্ধুত্বের বন্ধন গ্রথিত হইয়াছে, তাহা যেন শিথিল হইয়া না যায় । হে দেব! ভ্রাতা ও ভগিনীতে যেমন মনের ঐক্য, তেমনি তোমার মনের ঐক্য আমরা জানি। আমাদিগের সঙ্গে তোমার কল্যাণকর বন্ধুত্ব যেন সংঘটন হয়।
————
(১) শ্নশ্রু ধারণ করা বোধ হয় সে কালে রীতি ছিল।
(২) এ ঋকেও ইন্দ্রের শ্নশ্রুর উল্লেখ।