ঋগ্বেদ ১০।০২০
ঋগ্বেদ সংহিতা।। ১০ম মণ্ডল।। সূক্ত ২০
অগ্নি দেবতা। বিমদ অথবা বসুকৃৎ ঋষি।
১। হে অগ্নি! আমাদিগের মন যাহাতে উত্তমরূপে স্তব করিতে উন্মুখ হয়, তাহা কর।
২। অগ্নিকে স্তব করি, তিনি আহুতি ভোজনকারী দেবতাদিগের সর্ব কনিষ্ঠ; তাহার যৌবনের অন্ত নাই; তিনি দুর্ধর্ষ; তিনি সৎকৰ্ম্ম উপদেশ দিবার বন্ধু। যেমন গোবৎসেরা গাভীর দুগ্মস্থানকে আশ্রয় করিয়া প্রাণ ধারণ করে। স্ববাসী এই সমস্ত দেবতা তাঁহার ক্রিয়াকলাপকে তেমনি আশ্রয় করিয়া আছেন।
৩। তিনি পুণ্যকর্মসমূহের আধারস্বরূপ; তাহার দীপ্তিই তাহার বজা; স্তবকর্তারা তাহাকে সংবর্ধনা করিতেছে। ইনি পুঞ্জ পুঞ্জ অভিলষিত ফল দিতে দিতে দীপ্তি পাইতেছেন।
৪। তিনি লোকদিগের আশ্রয়স্থান; তিনিই পথস্বরূপ; তিনি প্রজ্বলিত হইয়া আকাশের শেষ সীমা পর্যন্ত ও মেঘপৰ্য্যন্ত বিস্তারিত হইলেন; তাহার কাৰ্য্য কি অদ্ভুত!
৫। তিনি মনুষ্যের নিকট হোমের দ্রব্য গ্রহণ করিতেছেন। তিনি যজ্ঞে প্রকাণ্ডমূর্তি ধারণ করিয়া উৰ্দ্ধ-বিস্তারিত হইয়া উঠিলেন। তিনি গৃহ মাপিতে মাপিতে সম্মুখে আসিতেছেন।
৬। সেই অগ্নিই মঙ্গলময়, তিনিই হোমের দ্রব্য, তিনিই যজ্ঞ, তাঁহার পথ শীঘ্রই অগ্রসর হয়। সেই শায়মান অগ্নির প্রতি দেবতারা অসিতেছেন।
৭। তিনি যজ্ঞ নির্বাহ করিতে সমর্থ; পরম সুখ লাভের জন্য তাহার সেবা করিতে ইচ্ছা করি। শাস্ত্রে কহে, তিনি প্রস্তরের পুত্র এবং জীবনের আধার।
৮। আমাদিগের চতুঃপার্শ্বে যে সকল ব্যক্তি এরূপ আছেন, যাঁহারা আহুতিদ্বারা অগ্নির সংবর্ধনা করিয়া থাকেন, তাহারা যেন সর্বপ্রকার অভিলষিত ফল প্রাপ্ত হয়েন।
৯। এই অগ্নির গমনের জন্য যে বৃহৎ রথ আছে, তাহা কৃষ্ণবর্ণ, শুভ্রবর্ণ, সরলভাবে গমন করে, তাহা রক্তবর্ণও বটে, তাহা বহুমূল্য। বিধাতা তাহা সুবৰ্ণতুল্য উজ্জ্বল করিয়া নিৰ্মাণ করিয়াছেন।
১০। হে অগ্নি! তুমি বলের পৌত্র; তুমি অক্ষয়ধনে পরিবেষ্টিত, বিমদ নামে ঋষি নিজ বুদ্ধি প্রয়োগপূৰ্ব্বক তোমার এই স্তুতিবাক্য সকল বলিলেন। তুমি এই সমস্ত উৎকৃষ্ট স্তব প্রাপ্ত হইয়া ধন ও বল ও উত্তম বাসস্থান ও তাবৎ বস্ত্র বিতরণ কর।