ঋগ্বেদ ০৯।১১২

ঋগ্বেদ ০৯।১১২
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ৯ম মণ্ডল সূক্ত ১১২
পবমান সোম দেবতা। শিশু ঋষি।

১। হে সোম! সকল ব্যক্তির কাৰ্য্য এক প্রকার নহে, ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির কাৰ্য ভিন্ন ভিন্ন প্রকার, আমাদগেরও কাৰ্য নানাবিধ। দেখ, তক্ষ কাষ্ঠতক্ষণ করে, বৈদ্য রোগের প্রার্থনা করে, স্তোতা যজ্ঞকর্তা ব্যক্তিকে চাহে (১)। অতএব তুমি ইন্দ্রের জন্য ক্ষরিত হও।

২। দেখ, শুষ্ক বৃক্ষশাখা, পক্ষীর পক্ষ ও শান্ দিবার নিমিত্ত উজ্জ্বল প্রস্তর এই কয় বস্তুর সহযোগে কর্মকার বাণ প্রস্তুত করিয়া সেই বাণ ক্রয় করিবার উপযুক্ত কোন ধনাঢ্য ব্যক্তিকে অম্বেষণ করে (২)। অতএব হে সোম! ইন্দ্রের জন্য ক্ষরিত হও।

৩। দেখ, আমি স্তোত্রকার, পুত্র চিকিৎসক ও কন্যা প্রস্তরের উপর যব-ভর্জন-কারিণী (৩)। আমরা সকলে ভিন্ন ভিন্ন কৰ্ম্ম করিতেছি। যেরূপ গাভীগণ গোষ্ঠ মধ্যে বিচরণ করে, তদ্রুপ আমরা ধন কামনাতে তোমার পরিচর্যা করিতেছি। অতএব হে সোম! ইন্দ্রের জন্য ক্ষরিত হও।

৪। সুন্দর বহন করিতে পারে এতাদৃশ ঘোটক সুগঠন রথে যোজিত হইতে ইচ্ছা করে, নর্মসচিবেরা অর্থাৎ মোসাহেব হাস্য পরিহাস কামনা করে, পুরুষাঙ্গ রোম-বিশিষ্ট দ্বিধাভিৎ প্রার্থনা করে। ভেক জলের কামনা করে। অতএব হে সোম! ইন্দ্রের জন্য ক্ষরিত হও।

————

(১) ছুতার ও বৈদ্য স্তোতাদিগের উল্লেখ পাওয়া গেল। ভিন্ন ভিন্ন জাতি তখন সৃষ্ট হয় নাই, কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন ব্যবসা হইয়াছিল। স্তোত্র পাঠকগণ লোভের উপায় বিলক্ষণ বুঝিতেন এবং যজ্ঞকর্তা ধরিবার চেষ্টা করিতেন, তাহার প্রমাণ এই ঋকে পাইলাম।

(২) প্রস্তরে শাণ দিয়া কাষ্ঠ হইতে কর্মকারগণ বাণ প্রস্তুত করিত।

(৩) জাতি বিধি সৃষ্টি হইবার পর স্তোত্রকারের পুত্র ভিষক হইতে পারিতেন না, ঋগ্বেদ রচনার সময় এত অস্বাস্থ্যকর বিধি ছিল না।