ঋগ্বেদ ০৯।০৮৯
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ৯ম মণ্ডল সূক্ত ৮৯
ঋষি ও দেবতা পূর্ববৎ।
১। যেরূপ আকাশ হইতে বৃষ্টি ক্ষরিত হইয়া চতুর্দিক আচ্ছন্ন করে, তদ্রুপ সোম বহিতে বহিতে নানা পথে যাইতেছেন। সহস্রধারাতে তিনি আমাদিগের মাতৃভূতা পৃথিবীর অঙ্গে স্থান গ্রহণ করিতেছেন এবং কাষ্ঠময় পাত্রে সঞ্চিত হইতেছেন।
২। সোম নদীগণের (ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধারাগণের) রাজা, ইনি বস্ত্র পরিধান করিলেন (দুগ্ধে মিশাইলেন)। ইনি যজ্ঞের সুগঠন নৌকায় আরোহণ করিলেন। এই যে সোম যাহাকে শ্যেনপক্ষী আহরণ করিয়াছেন, ইমি নিজে দ্রবময়, জলের সহিত মিশ্রিত হইয়া বাড়িয়া গেলেন। অগ্নি ইহার পিতা, অগ্নি যজ্ঞেরও পিতা, সেই অগ্নি আপন সন্তান সোমকে পান করিলেন।
৩। এই যে সোম, যিনি সিংহ তুল্য, যিনি মধু বহাইয়া দেন, যিনি দেখিতে সুন্দর, যিনি দ্যুলোকের অধিপতি, সকলে তাহাকে ঘেরিয়া দাঁড়াইতেছে। ইনি বীর, ইনি যুদ্ধের সময় অগ্রগামী, ইনি, গাভী কোথা, ইহা জিজ্ঞাসা করেন, অর্থাৎ গাভী জয় করিয়া আনেন। ইহারই সাহায্যে বৃষ্টি সেচনকারী ইন্দ্র বিশ্বভুবন রক্ষা করেন।
৪। এই যে সোম, ইনি যেন একটা দুর্দান্ত ঘোটক, ইহার পৃষ্ঠে মধু আছে, ইনি ক্রমাগত গমন করেন, ইহাকে প্রকাণ্ড চক্ৰযুক্ত রথ অর্থাৎ যজ্ঞে যোজনা করিয়া থাকে, আর শোধনকারিণী দশ অঙ্গুলি পরস্পর ভগিনীর ন্যায়, অথবা সপত্নীর ন্যায়, অথবা এক বংশোৎপন্ন স্ত্রীলোকের ন্যায়, ইহারা সোমস্বরূপ ঘোটকের গাত্র মার্জনা করিয়া দিতেছেন, ইহারা এই ঘোটককে উৎসাহিত করিতেছেন।
৫। চারিটা গাভী এই সোমের সেবা করিতেছে, তাহাদিগের দুগ্ধ যেন ঘৃতের ন্যায়, তাহারা একই আশ্রয় স্থানের মধ্যে উপবেশন করিয়াছে, তাহারা দুগ্ধ দানপূর্বক ইহার সন্নিহিত হইতেছে। সেই বৃহৎ বৃহৎ গাভী ইহাকে ঘেরিয়া আছে।
৬। এই সোম দ্যুলোকের অবলম্বনকারীস্বরূপ; পৃথিবীর আধার স্বরূপ, সমস্ত জীবজন্তু ইহার হস্তগত। তুমি স্তব করতেছ, তোমার নিকট আসিবার জন্য শীঘ্রগামী ঘোটক যোজনা করিতেছেন। তিনি মধুময় অংশু ধারণ করেন, তিনি বল উৎপাদন করিবার জন্য ক্ষরিত হইতেছেন।
৭। হে বলশালী সোম! দেবতাদিগের উদ্দেশে এই যে অনুষ্ঠান করিতেছি, তুমি ইহার দিকে ইন্দ্রের নিমিত্ত ক্ষরিত হও, কারণ তুমিই বৃত্রের নিধনকর্তা। আমাদিগের প্রার্থনা যেন তোমার প্রভাবে আমরা মনোমত অর্থ ও পুত্রসন্তান লাভ করি।