ঋগ্বেদ ০৯।০৮৮
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ৯ম মণ্ডল সূক্ত ৮৮
ঋষি ও দেবতা পূর্ববৎ।
১। হে ইন্দ্র! তোমার জন্য এই সোম প্রস্তুত করিতেছি। তোমার জন্য ক্ষরিত হইতেছে। তুমি ইহা পান কর। তুমি তাহাকে প্রস্তুত করিয়াছ। তুমি তাকে মনোনীত করিয়াছ এই অভিপ্রায় যে, সে তোমার সাহায্য করিবে, সেতোমাকে মত্ত করিবে।
২। যেরূপ বিস্তর ভারবহনক্ষম রথকে লোকে যোজনা করে, তদ্রূপ সোমকে যোজনা করা হইল, কেননা তিনি প্রভূত ধন দিবেন। পরে তাবৎ ব্যক্তি ব্যস্তসমস্ত হইয়া স্বর্গলাভের দ্বারস্বরূপ সংগ্রাম মধ্যে প্রবিষ্ট হউক।
৩। যে সোম, নিযুৎ নামক ঘোটকের অধিপতি, বায়ুদেবের ন্যায় অনবরত গমন করেন, অশ্বিদ্বয়ের ন্যায় ডাকিবা মাত্র আসিয়া সুখ দান করেন। ধনদান কর্তা ব্যক্তির ন্যায় যিনি সকলের প্রার্থনীয় এবং সূর্যের ন্যায় যিনি মানস বেগে গমন করেন, তাহারই নাম সোম।
৪। যে তুমি ইন্দ্রের ন্যায় অনেক গুরুতর কার্য সম্পন্ন করিয়াছ, সেই তুমি বৃত্রদিগকে বধ করিয়াছ, শত্রুর পুরী ধ্বংস করিয়াছ। ঘোটকের ন্যায় অহিদিগকে নিধন করিয়াছ। তুমি তাবৎ দস্যুর নিধনকর্তা।
৫। বন মধ্যে অগ্নি উৎপন্ন হইয়া যেরূপ বল প্রকাশ করে, তদ্রুপ তুমি জলের মধ্যে আপনার বীৰ্য্য প্রকাশ কর। যেরূপ যুদ্ধে উদ্যত কোন বীরপুরুষ বিপক্ষকে উচ্চৈঃস্বরে আহ্বান করিতে করিতে অগ্রসর হয়েন, তদ্রুপ ক্ষরণশীল সোম শব্দ করিতে করিতে পূর্ণ রস প্রদান করিতেছেন।
৬। আকাশের মেঘ হইতে যেমন বারি বর্ষণ হয়, কিংবা যেমন নদীগণ নিম্নের দিকে সমুদ্রে যায়, তদ্রুপ এই সমস্ত নিষ্পীড়িত সোমরস মেষলোম অতিক্রমপূর্বক কলসের মধ্যে যাইতেছে।
৭। হে সোম! তুমি বায়ুর ন্যায় প্রবল বেগে বহমান হও; স্বর্গের অতি সুন্দর প্রজার ন্যায় অর্থাৎ বায়ুর ন্যায় বহমান হও। জলের ন্যায় বেগে ক্ষরিত হও। আমাদিগকে সুমতি দাও। বহুসৈন্য বিজয়ী ইন্দ্রের ন্যায় তুমি আমাদিগের যজ্ঞভাগের অধিকারী। সহস্রদিক্ দিয়া তোমার গতি।
৮। হে সোম! বরুণ রাজার ন্যায় তোমার সমস্ত কাৰ্য। প্রকাণ্ড ও গভীর স্থানে তোমার অবস্থিতি। তুমি প্রেমাস্পদ বন্ধুর ন্যায় নির্মল। তুমি সূর্যদেবের ন্যায় পূজনীয় ।