ঋগ্বেদ ০৯।০৮৭
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ৯ম মণ্ডল সূক্ত ৮৭
পবমান সোম দেবতা। উশনা ঋষি।
১। হে সোম! তুমি ধাবমান হও, কলসে যাইয়া উপবেশন কর, অধ্যক্ষগণ তোমাকে শোধন করিতেছে, অন্নের দিকে যাও, ঘোটকের ন্যায় তোমাকে ধোয়াইয়া দিতেছে এবং বলগা ধরিয়া তোমাকে কুশের দিকে লইয়াযাইতেছে।
২। সোমদের উত্তম অস্ত্রশস্ত্র ধারণপূর্বক ক্ষরিত হইতেছেন, তিনি অমঙ্গল নষ্ট করেন, উপদ্রব নিবারণ করেন। তিনি দেবতাদিগের জন্মদাতা পিত, তিনি দ্যুলোকের স্তম্ভস্বরূপ, পৃথিবীর আধারস্বরূপ।
৩। উশনা ঋষি বুদ্ধিমান ও একজন অগ্রগণ্য ব্যক্তি, উজ্জ্বল মুর্তি ও ধীর, তিনি এই সকল গাভীর নিগুঢ় ও গোপনীয় নাম পুণ্যানুষ্ঠান প্রভাবে জানিতে পারিয়াছেন। .
৪। হে ইন্দ্র! এই লও, তোমার সোমরস, ইহা রস সেচনকারী, তুমি ও বৃষ্টিবর্ষণকারী; তোমার নিমিত্ত ইহা পবিত্রের উপর ক্ষরিত হইতেছে। এই সোম শতদাতা, সহস্ৰদাতা, বিস্তরদাতা, ইনি ক্রমাগত যজ্ঞেতে অধিষ্ঠান হন।
৫। এই সকল সহসংখ্যক সোমরস, ইহার দুগ্ধের দিকে ধাবমান, বিস্তর চমৎকার অন্ন লাভ ইহাদিগের লক্ষ্য, পবিত্রের ছিদ্রপথ দিয়া ইহাদিগকে প্রস্তুত করা হইতেছে। অন্নই ইহাদের কামনা, অন্ন কামনাই ইহাদিগকে প্রস্তুত করিবার উদ্দেশ্য। ইহারা যেন যুদ্ধজয়ী ঘোটকের ন্যায়।
৬। এই সোমকে বিস্তর লোকে ডাকে। ইনি শোধিত হইয়া লোক দিগকে নানাবিধ অন্ন আহরণ করিয়া দেন। হে সোম! তোমাকে শ্যেনপক্ষী আনয়ন করিয়াছে, অন্ন পরিপূর্ণ করিয়া দাও, ধন দান করিতে করিতে অন্নের দিকে যাও।
৭। এই যে নিষ্পীড়িত সোম, ইনি পবিত্রের চতুঃপার্শ্বে দৌড়িতেছেন, যেমন ঘোটককে ছাড়িয়া দিলে সে দৌড়িয়া যায়, যেমন তীক্ষ্ণ দুই শৃঙ্গ শানাইয়া মহিষ দৌড়িয়া যায়; অথবা যেমন বীরপুরুষ বিস্তর গাভী জয় করিবেন বলিয়া ধাবিত হয়েন।
৮। এই যে সোম, ইনি পরমধাম হইতে নিষ্পীড়নোপযোগী প্রস্তর ফলকের মধ্যে আসিয়াছেন। কোন নিভৃত স্থানে গাভীগণ ছিল, ইনি তাহা জানিতে পারিয়াছেন। হে ইন্দ্র! তোমার জন্য সোমের ধারা ক্ষরিত হইতেছে, যেরূপ আকাশের বিদ্যুৎ মেষদ্বারা প্রেরিত হইয়া শব্দ করিতে করিতে নির্গত হয়।
৯। হে সোম! তুমি শোধিত হইয়া ইন্দ্রের সহিত একরথে আরোহণ পূর্বক বিস্তর গাভী আহরণ কর, তোমার স্বভাব যে, তুমি শীঘ্রই দান কর। প্রচুর ও বিস্তর অন্ন দাও, হে স্তব গ্ৰহণকর্তা! তুমিই অন্নের অধিপতি, সে সমস্ত অন্নই তোমার।