ঋগ্বেদ ০৬। ৬২
ঋগ্বেদ সংহিতা । ৬ষ্ঠ মণ্ডল । সূক্ত ৬২
অশ্বিদ্বয় দেবতা। ভরদ্বাজ ঋষি।
১। যাঁহারা ক্ষণমাত্ৰে শত্রু নিবারণ করেন এবং প্ৰভাতে পৃথিবীর পর্যন্ত প্ৰদেশ হইতে প্ৰভূত অন্ধকার দূর করেন, দুলোকের নেতা, এই ভুবনের ঈশ্বর, সেই অশ্বিদ্বয়কে স্তুতি করি এবং মন্ত্রসমূহদ্বারা স্তুতি করতঃ আহ্বান করি।
২। তাঁহারা যজ্ঞাভিমুখে আগমন করতঃ নিৰ্ম্মল তেজোবলে রথের দীপ্তি প্ৰকাশিত করেন এবং প্রভূত তেজসমূহ অপরিমিতরূপে নিৰ্ম্মাণ করতঃ জলের জন্য অশ্বসমূহকে মরুদেশ অতিক্ৰম করিয়া লইয়া যান।
৩। হে অশ্বিদ্বয়। তোমরা উগ্র, তোমরা সেই অসমৃদ্ধ গৃহে গমন কর; এবং এই প্রকারে অভিলষণীয় ও মনের ন্যায় বেগশালী অশ্বগণ দ্বারা স্তোতৃগণকে লইয়া যাও। তোমরা হব্যদাতা মনুষ্যের হিংসাকারীকে দমন কয়।
৪। তাঁহারা অশ্বযোজিত করিতে করিতে সুন্দর অন্ন, পুষ্টি এবং রস বহন করত: নূতন স্তোত্রিকারীর মনোহর স্তোত্ৰ সমীপে আগমন করুন। তাহারা যুবা। হোতা, দ্ৰোহশূন্য এবং পুরাণ অগ্নি তাহদের যাগ করুন।
৫। যাঁহারা স্তুতিকারী এবং স্তোত্রকারী ব্যক্তিকে সুখশালী করেন এবং স্তুতিকারীকে বহুবিধ দান করেন, সেই রুচির, বহুকর্ম্মবিশিষ্ট, পুরাণ এবং দর্শণীয় অশ্বিদয়কে নূতন স্তুতিদ্বারা পরিচর্য্যা করিব।
৬। তোমরা তুগ্রের পুত্ৰ ভুভ্যুকে রক্ষা করতঃ রেণুরহিত মার্গে রথযুক্ত, গমনশীল অশ্বগণ দ্বারা জলের উৎপত্তি স্থান, সমুদ্রের জল হইতে বাহির করিয়াছ।
৭। হে রথারূঢ় অশ্বিদ্বয়! তোমরা জয়শীল রথদ্বিারা পৰ্ব্বত বিনাশ কর। তোমরা অভীষ্টবর্ষী, তমরা পুত্রার্থিনীর আহ্বান শ্রবণ কর। তোমরা অভিলষিত দান করিয়া থাক। তোমরা স্তুতিকারীর নিবৃত্ত প্রসবা গাভীকে দুগ্ধযুক্ত কর এবং এই প্রকারে সুস্তুতিগামী হইয়া সর্বত্রগামী হও।
৮। হে পুরাতণ দ্যাবাপৃথিবী! হে অদিত্যগণ! হে বসুগণ! হে রুদ্রপুত্ৰগণ! আশ্বিদ্বয়ের পরিচারক মনুষ্যগণের প্রতি দেবগণের যে মহান ক্ৰোধ আছে, তোমরা সেই তাপপ্রদ ক্রোধকে রাক্ষস স্বামীর হননার্থ প্রেরণ
৯। যে ব্যক্তি, লোকসমূহের রাজা, এই অশ্বিদ্বয়কে যথাকালে পরিচর্য্যা করেন, মিত্র এবং বরুণ তাঁহাকে জানেন। তিনি মহাবল রাক্ষসের বিরুদ্ধে অস্ত্ৰক্ষেপ করেন, অভিদ্রোহাত্মক মনুষ্যগণের বিচনানুসারে অস্ত্ৰক্ষেপ করেন।
১০। হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা উত্তম চক্ৰবিশিষ্ট, দীপ্তিবিশিষ্ট, সারথিযুক্ত রথে আরোহণ করিয়া সন্তান দানের জন্য আমাদিগের গৃহে আগমন কর, এবং ক্রোধ ত্যাগ করতঃ মনুষ্যগণের বিঘ্নকারীদিগের মস্তক ছিন্ন কর।
১১। হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা উৎকৃষ্ট, মধ্যম ও নিকৃষ্ট অশ্বযোগে আমাদের অভিমুখে আগমন কর, দৃঢ়, গোপূৰ্ণ গোষ্ঠের দ্বার অপবৃত কর, আমি স্তুতি করিতেছি, আমাকে বিচিত্র ধন দান কর।