ঋগ্বেদ ০৬।২৩
ঋগ্বেদ সংহিতা । ৬ষ্ঠ মণ্ডল । সূক্ত ২৩
ইন্দ্র দেবতা । ভরদ্বাজ ঋষি ।
১। হে ইন্দ্র! সোমরস অভিযুত, মহাস্তোত্র পঠিত ও উপাসনা সম্পাদিত হইলে, তুমি নিজ রথে অশ্ব যোজন করিতে প্রস্তুত হও অথবা, হে মঘবা! তুমি হুস্তে বজ্রধারণ করিয়া রথে যোজিত অশ্বদ্বয়সহকারে আমাদিগের নিকট আগমন কর।
২। অথবা, হে ইন্দ্ৰ! তুমি স্বর্গে বীরসেব্য সংগ্রামে উপস্থিত হইলে অভিষবকারী যজমানকে রক্ষা কর এবং নিভাক হইয়া ধাৰ্ম্মিক সন্ত্রস্ত যজমানের বিঘ্নকারী দস্যুগণকে বশীভূত কর।
৩। যিনি স্তবকারীকে নিরাপদমার্গে লইয়া যান, সেই ভীষণ ইন্দ্র অভিযুত সোমরস পান করুন। তিনি যেন যাগকুশল সোমাভিষবকারীকে স্থান এবং স্তবকারীকে ধন দান করেন।
৪। ইন্দ্র বজ্রধর ও সোমপায়ী, তিনি ধেনু ও মনুষ্যের জন্য বহুপুত্রোপেত পুত্র প্রদান করেন এবং স্তবকারীর স্তোত্র শ্রবণ ও স্বীকার করেন, তিনি যেন নিজ অশ্বদ্বয়সহকারে সমুদয় যাগে আগমন করেন।
৫। যিনি প্রাচীনকাল হইতে আমাদিগের জন্য কাৰ্য্য করিতেছেন, আমরা সেই ইন্দ্রের অভিলষিত স্তোত্র উচ্চারণ করি। সোমরস অভিযুত হইলে তাহার স্তব করি এবং তাহার উদ্দেশে প্রদত্ত হব্য যেন তাহার বৃদ্ধিকারক হয় এই অভিপ্রায়ে প্রার্থনা করি।
৬। হে ইন্দ্ৰ! তুমি স্তোত্র সকল বৃদ্ধি বিধায়ক করিয়াছ বলিয়া আমরা বুদ্ধিপূৰ্ব্বক সেই গুলি তোমার উদ্দেশে উচ্চারণ করি। হে অভিযুত সোমপায়ী ইন্দ্র! আমরা যেন হব্যসহকারে নিরতিশয় সুখদায়ক এবং রমণীয় স্তোত্র প্রদান করি।
৭। হে ইন্দ্ৰ! তুমি প্রীত হইয়া আমাদিগের পুরোডাশ স্বীকার কর। দধ্যাদি মিশ্রিত সোমরস শীঘ্ৰ পান কর। যজমান প্রদত্ত কুশোপরি উপবেশন কর। যে যজমান তোমার উপর নির্ভর করেন, তাঁহার স্থান বিস্তৃত কর।
৮। হে প্রচও বলশালী ইন্দ্ৰ! তুমি স্বেচ্ছানুসারে উল্লাসিত হও। এই সমস্ত সোমরস তোমার নিকট উপস্থিত হউক। হে পুরুহূত! আমাদিগের আহ্বান যেন তোমার নিকট উপস্থিত হয়। এই স্তুতি যেন আমাদিগকে রক্ষা করিবার জন্য তোমাকে প্রবৃত্তি প্রদান করে।
৯। হে বন্ধুগণ! সোমরস অভিযুক্ত হইলে তোমরা সেই বদান্য ইন্দ্রকে ইচ্ছানুরূপ সোমরসদ্বারা প্রসন্ন কর। তাহার জন্য ইহার পরিমাণ যেন প্রচুর হয়, কারণ তাহা হইলে তিনি আমাদিগকে পোষণ করিবেন। ইজ অভিষবকারী যজমানের প্রতি যত্ন লইতে অবহেলা করেন না।
১০। সোমরস অভিযুত হইলে হব্যদাতার ঈশ্বর ইন্দ্র স্তোতার সম্মার্গ প্রদর্শক এবং বাঞ্ছিতধনপ্রদাতা হইবেন বলিয়া ভরদ্বাজ তাহার এইরূপে স্তব করিয়াছেন।