ঋগ্বেদ ০৬।২০
ঋগ্বেদ সংহিতা । ৬ষ্ঠ মণ্ডল । সূক্ত ২০
ইন্দ্র দেবতা । ভরদ্বাজ ঋষি ।
১। হে শক্তিপুত্র ইন্দ্ৰ ! তুমি আমাদিগকে সহস্র প্রকার ধন ও শস্যপূর্ণ ক্ষেত্রের অধিকার ও শক্রনিহন্তা একটী পুত্র প্রদান কর। সূর্য্য যেরূপ নিজ দীপ্তিদ্বারা পৃথিবী আক্রমণ করেন, তদ্রুপ সেই পুত্ররূপ ধন সংগ্রামে বলদ্বার। শক্রেগণকে আক্রমণ করিতে সমর্থ হইবে ।
২ ! বস্তুতঃ হে ইন্দ্র ! স্তোতৃবর্গ স্তোত্রদ্বারা সূর্য্যের হায় তোমাতে সমস্ত বল অপণ করিয়াছেন। হে ঋজীষ সোমপায়ী ইত্ৰ ! তুমি বিষ্ণুর সহিত মিলিত হইয়। সেই বলদ্বারা বারিনিরোধক অহি বৃত্রকে বধ করিয়াছ ।
৩। যৎকালে হিংসকগণের হিংসাকারী, নিরতিশয় ওজস্বী, বলবত্তম, অন্নদাতা ও প্রবৃদ্ধ-তেজা ইন্দ্র শক্রপুরীসমূহের বিদারক বজ্র প্রাপ্ত হইলেন, তখন তিনি মধুর সোমরসের অধিপতি হইলেন ।
৪ । হে ইন্দ্র । রণস্থলে বহুহব্য প্রদাতা, তোমার সহায়ভূত মেধাবী কুৎস হইতে ভীত হইয়া পণিগণ শত সৈন্য সমভব্যাহারে পলায়ন করিয়াছিল। তিনি বলশালী শুষ্ণের কপটতা আয়ুপদার খৰ্ব্ব করিয়া সমস্ত অল্প আত্মসাৎ করিয়ছিলেন ।
৫ । যখন বজ্র পতনে শুষ্ণ প্রাণত্যাগ করিল, তখন মহা পীড়নকারী শুষ্ণের সমগ্র বল বিনষ্ট হইল এবং ইন্দ্র সূর্য্যের পূজার নিমিত্ত নিজ সারথীভূত কুংসের ব্যবহারার্থ নিজ রথ বিস্তৃত করিলেন।
৬। যৎকালে ইন্দ্র উপদ্রবকারী নমুচির মস্তক চূর্ণ করিয়া এবং সয়ের পুত্র নিদ্রিত নমীকে রক্ষা করিয়া অক্ষয় ধন ও অন্নদ্বারা তাহাকে যোজিত করিলেন, তখন শ্যেনপক্ষী ইন্দ্রের নিকট মদকর সোম বহন করিয়াছিল।
৭ । হে বজ্রধর ! তুমি দুরন্ত মায়াবী পিপ্রুর সুদৃঢ় নগরী সকল বলদ্বার বিদারিত করিয়াছ। হে বদান্য ইন্দ্ৰ ! তুমি হব্যরূপ ধনপ্রদাতা রাজর্ষি ঋজিশ্বাকে অক্ষয় ধন প্রদান করিয়াছ ।
৮। অভিলষিত সুখদাতা ইন্দ্র বেতসু, দশোণি, তুতুজি, তুগ্র এবং ইভকে মাতার নিকট পুত্রের ন্যায় রাজা দোতনের নিকট সৰ্ব্বদা প্রশান্ত-ভাবে গমন করিতে বাধ্য করিয়াছিলেন।
৯ । অপ্রতিহত প্রভাব ইন্দ্র, হন্তে শত্রুনাশক বজ্রধারণ পূৰ্ব্বক স্পৰ্দ্ধাকারী শক্রগণের সংহার করেন । বীর যেরূপ রথে আরোহণ করে, তদ্রপ তিনি নিজ যুগ্মাশ্ব রথে আরোহণ করেন। বাঙ্মাত্রে নিযুক্ত ত্বদীয় অশ্বস্বয় মহেন্দ্রকে বহন করে ।
১০ । হে ইন্দ্র! আমরা ত্বদীয় রক্ষাদ্বারা অনুগৃহীত হইয়া নূতন ধন প্রার্থনা করিতেছি। তুমি যজ্ঞ বিঘাতকদিগকে নষ্ট করিয়া পুরুকুৎসকে ধন প্রদান পুরঃসর বজ্ৰদ্বারা শরতের সপ্তপুরী বিদারিত করিয়াছ, মনুষ্যগণ ধজ্ঞে এই স্তোত্রদ্বারা তোমার স্তব করেন ।
১১ । হে ইন্দ্র! তুমি ধনার্থী হইয়া কবিপুত্র উশনার প্রাচীর উপকারক হইয়াছ। তুমি নববাস্ত্বকে বধ করিয়া ক্ষমতাশালী পিতা উশপনার নিকট ত্বদীয় দেয় পুত্রকে সমর্পণ করিয়াছ ।
১২ । হে ইন্দ্ৰ ! তুমি শক্রগণের কম্পনবিধায়ী, তুমি ধুনিকর্তৃক নিরুদ্ধ বারিরাশিকে বেগবতী নদীসকলের ন্যায় প্রবাহিত করাইয়াছ। হে বীর । যংকালে তুমি সমুদ্র উত্তীর্ণ হইয়াছিলে, তখন সমুদ্র পারে অবস্থিত তুর্বশ ও যদুকে সমুদ্র পার করাইয়াছিলে ।
১৩। হে ইন্দ্র । সংগ্রামে এ সমস্ত তোমারই কাৰ্য্য । তুমি সুপ্তধুনি ও চুমুরিকে মহা নিদ্রায় অভিভূত করিয়াছ । তংপরে দভীতি মাষক রাজর্ষি সোমাভিষব, হব্যপাক ও ইন্ধন সঞ্চয় কfরয় হব্যরূপ অন্নদ্বারা তো্মার পরিচর্য্যা করিয়াছিলেন ।