ঋগ্বেদ সংহিতা । ৬ মণ্ডল । ১২ সূক্ত
অগ্নি দেবতা । ভরদ্বাজ ঋষি ।
১ । দেবগণের আহ্বানকারী, যজ্ঞের অধিপতি অগ্নি স্বর্গ ও পৃথিবীর যাগ করিবার নিমিত্ত যজমান গৃহে অবস্থিতি করেন। শক্তিপুত্র, যজ্ঞসম্পন্ন অগ্নি হুর্য্যের ন্যায় দূর হইতেই দীপ্তির দ্বারা অখিল জগৎ প্রকাশিত করেন ।
২ । হে যাগাহ, দীপ্তিসম্পন্ন অগ্নি ! তুমি পরিপক্ক বুদ্ধিসম্পন্ন, সমস্ত যজমান তোমাতে আগ্রহ সহকারে প্রচুর হব্য অর্পণ করে, তুমি ত্ৰিভুবনে অবস্থিত হইয়। দেবগণের নিকট উৎকৃষ্ট মনুষ্যদত্ত হব্য বহন করিবার নিমিত্তে স্বর্য্যের ন্যায় বেগশালী হও ।
৩ । যাহার সর্বব্যাপী, তেজস্বী শিখা বনে দীপ্তি পায়, প্রবৃদ্ধ সেই অগ্নি সূর্য্যের ন্যায় অন্তরিক্ষ পথে বিরাজ করিতেছেন এবং সকলের কল্যাণ বিধায়ক বায়ুর ন্যায় অক্ষয় ও অনিবাৰ্য্য অগ্নি বেগপূর্বক ওষধিমধ্যে গমন করিয়া নিজ দীপ্তিদ্বার। অখিল জগৎ প্রবুদ্ধ করিতেছেন ।
৪ । জাতবেদা সেই অগ্নি যাচকের স্তোত্রবৎ স্থখদায়ক অন্মদীয় স্তোত্রদ্ধারা আমাদিগের গৃহে স্তুত হইতেছেন। যজমানগণ ক্রমভোজী, অরণ্যাশ্রয়কারী, বৎসগণের পিতা বৃষভের ন্যায় ক্ষিপ্ৰকৰ্ম্মকারী সেই অগ্নির স্তব করিতেছেন ।
৫ । যৎকালে অগ্নি অনায়াসে বন সকল ভস্মসাৎ করিয়া পৃথিবীর উপর বিস্তৃত হয়, তখন স্তোতৃবর্গ ইহলোকে এই অগ্নির শিখাসমূহের স্তব করে। অপ্রতিহতভাবে বিচরণকারী এবং চৌরবৎ দ্রুতগামী অগ্নি মরুভূমির উপরেও বিরাজিত হয়েন (১) ।
৬। হে ক্ষিপ্রগামী অগ্নি ! তুমি সমস্ত অগ্নির সহিত প্ৰজ্বলিত হইয়া আমাদিগকে নিন্দা হইতে রক্ষা কর, তুমি আমাদিগকে ধন প্রদান কর এবং দুঃখদায়ক শত্রুসৈন্য দূরীভূত কর; আমরা যেন শোভন পুত্রপৌত্রসম্পন্ন হইয়া শত হেমন্ত মুখ ভোগ করি ।
————————
(১) মূলে ‘অভিধম্বারাট্’ আছে। “ধম্ব মরুভূমিমতিক্রম্য রাট্ রাজতে যম্বা ধম্বস্থ্যস্থাদাপ ইতিধম্বান্তুরিক্ষং অতিশয়েনায়রিক্ষমাক্রম্য রাজতে” সায়ণ। “Shines over the desort.”— Wilson