উইনস্টন চার্চিল ও পাঠান দলপতি
লেখাপড়ায় কোনোদিনই ভালো ছিলেন না স্যার উইনস্টন চার্চিল, কিন্তু ছেলেবেলা থেকেই তার তলোয়ারের হাত ছিল পাকা। ছাত্রজীবনেই তলোয়ারের দ্বন্দ্বযুদ্ধে তিনি শ্রেষ্ঠ সম্মানের অধিকারী হয়েছিলেন। ইংল্যান্ডের বিদ্যালয়গুলির মধ্যে তার সমকক্ষ কোনো অসিযোদ্ধা ছিল না। স্যান্ডহার্স্ট অঞ্চলে রয়েল মিলিটারি কলেজ-এ সৈনিকের শিক্ষাগ্রহণ করেছিলেন চার্চিল এবং সসম্মানে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ব্রিটিশ বাহিনীর চতুর্থ হাসার নামক সেনাবিভাগের অন্যতম অধিনায়ক হয়েছিলেন। ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে ভারতের উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের এক পর্বতসংকুল স্থানে তিনি যখন অধীন সেনাদের নিয়ে টহল দিচ্ছিলেন, সেই সময়ে তাদের আক্রমণ করল একদল বিদ্রোহী পাঠান।
ইংরেজ সেনাদলে সৈন্যসংখ্যা ছিল খুবই কম, তাই তারা পিছু হঠে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করল। নিরাপদ স্থান থেকে চার্চিল দেখলেন তাঁর এক আহত সঙ্গী পাঠান দলপতির উদ্যত তরবারির নীচে বিপন্ন হয়ে পড়েছে। তিনি তৎক্ষণাৎ উচ্চকণ্ঠে পাঠান সর্দারকে দ্বন্দ্বযুদ্ধে আহ্বান জানালেন।
পাঠান দলপতি সেই রণ-আহ্বান উপেক্ষা করল না। আহত সৈনিককে ছেড়ে সে এগিয়ে গেল চার্চিলের দিকে। উদ্যত তরবারি হাতে মৃত্যুপণ দ্বন্দ্বযুদ্ধে অবতীর্ণ হল দুই যোদ্ধা। পাঠান বিদ্রোহীরা সরে গিয়ে যোদ্ধাদের জায়গা করে দিল। উদবিগ্ন নেত্রে শত্রুর গতিবিধি নিরীক্ষণ করতে করতে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী পাঁয়তাড়া করল বেশ কিছুক্ষণ, তারপর অকস্মাৎ তীব্র ঝনৎকারে পরস্পরকে আলিঙ্গন করল দু-খানা শানিত তরবারি। পাঁচ মিনিট ধরে লড়াই চলার পর তরবারির এক দ্রুত সঞ্চালনে চার্চিল লড়াই শেষ করে দিলেন। রক্তাক্ত দেহ নিয়ে ধরাশায়ী হল পাঠান-সর্দার। প্রতিশোধ নিতে এগিয়ে এল বিদ্রোহী পাঠান-বাহিনী; কিন্তু তাদের চেষ্টা সফল হল না। ইংরেজ সেনাদের রাইফেলগুলো ঘন ঘন অগ্নিবর্ষণ করে পাঠানদের ঠেকিয়ে রাখল এবং সেই ফাঁকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিলেন উইনস্টন চার্চিল।