ওল্ড স্টেটমেন্ট
নিউ স্টেটমেন্ট
1 of 2

ইসাইয়া ৪৪

১ “যাকোব তুমি আমার সেবক। আমার কথা শোন। ইস্রায়েল, আমি তোমাকে মনোনীত করেছি। আমি যা বলি তা তোমরা শোন।
২ আমি তোমাদের প্রভু। আমিই তোমাদের সৃষ্টি করেছি। তোমরা যা হয়ে উঠেছো আমি তাই করে গড়ে তুলেছি। তোমরা যখন মাতৃ গর্ভে ছিলে তখন থেকেই আমি তোমাদের সাহায্য করে আসছি। আমার দাস যাকোব ভয় পেও না। য়িশুরূণ তোমাকে আমি মনোনীত করেছি।
৩ “তৃষ্ণার্ত লোকদের আমি জল দেব। শুষ্ক জমিতে আমি জল প্রবাহ বইয়ে দেব। তোমাদের শিশুদের মধ্যে আমি আমার আত্মা ঢেলে দেব, মনে হবে যেন তোমাদের সন্তানদের ওপর দিয়ে জল বয়ে যাচ্ছে।
৪ ঘাসের মধ্যে তারা বেড়ে উঠবে। তারা জলস্রোতের ধারে গজিযে ওঠা বাইশী গাছদের মতো হবে।
৫ “এক জন বলবে, ‘আমি প্রভুর।’ অন্য একজন ‘যাকোবের’ নাম ব্যবহার করবে। অন্য জন তার নাম সাক্ষর করবে এবং বলবে, ‘আমিই প্রভুর।’ অন্য জন ব্যবহার করবে ‘ইস্রায়েলের নাম।”‘
৬ প্রভু ইস্রায়েলের রাজা। প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলকে রক্ষা করবেন। প্রভু বলেন, “আমিই একমাত্র ঈশ্বর। অন্য কোন দেবতা নেই। আমিই আদি, আমিই অন্ত।
৭ আমার মতো অন্য কোন ঈশ্বর নেই। যদি কেউ থাকেন তাহলে সেই দেবতার কথা বলা উচিত্‌। সেই দেবতার উচিত্‌ ছিল এখানে এসে প্রমাণ করা যে তিনিও আমারই মতো। আমি যখন এই প্রাচীন লোকদের সৃষ্টি করেছিলাম তখন কি ঘটেছিল সেই দেবতার আমাকে বলা উচিত্‌। ভবিষ্যতে কি ঘটবে তিনি যে তা জানেন তা প্রমাণ করার জন্য ঐ দেবতার আমাকে কোন নিদর্শন দেওয়া উচিত্‌।
৮ ভীত হযো না। উদ্বিগ্ন হযো না! আমি সর্বদাই তোমাদের বলেছি যে কি ঘটবে। তোমরাই আমার সাক্ষী! অন্য কোন ঈশ্বর নেই। আমিই একমাত্র। অন্য কোন ‘শিলা’ নেই। আমি জানি আমিই একমাত্র!”
৯ কেউ কেউ মূর্ত্তি বানায়। কিন্তু তারা মূল্যহীন। লোকে সেই মূর্ত্তিকে ভালোবাসে। কিন্তু সেইগুলি মূল্যহীন। সেই লোকগুলি মূর্ত্তিগুলির সাক্ষী হলেও তারা দেখতে পায় না। তারা কিছুই জানে না, তারা তাদের কৃতকর্মের জন্য যথেষ্ট লজ্জিত হতে জানে না।
১০ কে তৈরী করেছিল এই সব মূর্ত্তিগুলিকে? কে তৈরী করেছিল মূল্যহীন মূর্ত্তিগুলি?
১১ শ্রমিকরা ঐসব দেবতাদের বানিয়েছে। তারা সবাই মানুষ; দেবতা নয়। সেই সব লোকেরা যদি এক সঙ্গে বসে এই সব বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করে তাহলে তারা খুবই লজ্জিত হবে এবং ভয় পাবে।
১২ এক জন শ্রমিক তার যন্ত্র ব্যবহার করে গরম কযলা দিয়ে লোহা গরম করার কাজে। সেই লোকটি হাতুড়ি ব্যবহার করে ধাতু পেটানোর কাজে। এবং সেই ধাতুই মূর্ত্তি হয়ে উঠেছে। এই লোকটি তার বাহুর শক্তি ব্যবহার করে, কিন্তু খিদে পেলে সে তার ক্ষমতা হারায়। যদি মানুষটি জলপান না করে তবে সে দুর্বল হয়ে যায়।
১৩ আর এক জন শ্রমিক কাঠের ওপর সরল রেখায় দাগ টানবার জন্য ব্যবহার করেছে ওলন ও কম্পাস। এই দাগগুলি দেখে সে বুঝতে পারে কোথায় তাকে কাটতে হবে। তারপর কাঠ কাটার করাত দিয়ে কাঠ কেটে সে মূর্ত্তি তৈরী করে। তারপর কম্পাসের মত অন্য একটি বিশেষ যন্ত্র ক্য়ালিপার্শ দিয়ে সে মূর্ত্তির মাপ ঠিক করে। এই ভাবে শ্রমিকরা কাঠকে করে তোলে মানুষের মতো দেখতে। এই মানব মূর্ত্তি কিছু করতে পারে না। শুধু ঘরে বসে থাকে।
১৪ এক জন লোক এরস, তর্সা অথবা অলোন বৃক্ষ কেটে ফেলে। সেই লোকটি কোন গাছকেই বড় করতে পারে না। গাছগুলি নিজেদের ক্ষমতাতে বনাঞ্চলে বড় হয়। লোকে যদি কোন পাইন গাছ লাগায তবে তা বৃষ্টির জলে বড় হয়।
১৫ তারপর লোকে সেই গাছকে আগুন জ্বালানোর কাজে ব্যবহার করে। লোকে গাছকে ছোট ছোট কাঠের টুকরোয পরিণত করে। নিজেকে গরম রাখতে ও রান্নার জন্য সে কাঠটি ব্যবহার করে। কিছু কাঠ দিয়ে সে আগুন জ্বালে এবং রুটি সেঁকে। তবুও সে ঐ একই কাঠের কিছু অংশ ব্যবহার করে একটি মূর্ত্তি বানাবার জন্য এবং সে সেই মূর্ত্তিটি পূজো করে। ঐ দেবতাটি মানুষের বানানো একটি মূর্ত্তি, কিন্তু মানুষ তার সামনে নত হয়।
১৬ অর্ধেক কাঠ লোকে আগুন জ্বালার কাজে ব্যবহার করে। লোকে মাংস রান্না করতে আগুন ব্যবহার করে। তারপর সেটা খায় পেট ভরা পর্য়ন্ত। লোকে নিজেকে গরম রাখতে কাঠ জ্বালায়। লোকে বলে, “ভালো। আমি এখন উষ্ণ। আগুন থেকে আলো আসায আমি দেখতেও পাচ্ছি।”
১৭ কিন্তু অল্প কিছু কাঠ অবশিষ্ট থাকে। তাই লোকে কাঠ দিয়ে মূর্ত্তি বানিয়ে তাকে দেবতা বলে। সে এই মূর্ত্তির সামনে মাথা নত করে এবং তার পূজা করে। লোকে ঐ মূর্ত্তির কাছে প্রার্থনা করতে করতে বলে: “তুমিই আমার দেবতা। আমাকে রক্ষা কর!”
১৮ সেই লোকরা জানে না তারা কি করছে। তারা বুঝতেও পারে না। এটা তাদের চোখ ঢেকে রাখার মতো অবস্থা যাতে তারা দেখতে না পায়। তাদের হৃদয় বোঝার চেষ্টা করে না।
১৯ সেই সব লোক এসব ভেবেও দেখে না। এই সব লোকরা বোঝে না তাই তারা নিজেদের নিয়েও ভাবে না। “আমি আগুনে অর্ধেক কাঠ পোড়ালাম। আমি গরম কযলা রুটি ও মাংস রান্না করতে ব্যবহার করলাম। সেই মাংস খেলামও। তারপর যে কাঠ বাঁচলো তাই দিয়ে ভয়ঙ্কর কিছু বানালাম। আমি কাঠের খণ্ডের পূজা করছি।”
২০ সেই লোক জানে না সে কি করছে! সে বিভ্রান্ত, তাই তার মন তাকে ভুল পথে চালিত করছে। সে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে না। নিজের ভুলও বুঝতে পারবে না। সে বলবে না, “আমি যে মূর্ত্তিকে ধরে রেখেছি সেটা ভ্রান্ত দেবতা।”
২১ “যাকোব, এই সব স্মরণ করো! ইস্রায়েল স্মরণ করে দেখ তুমি আমার সেবক। তোমার সৃষ্টিকর্তা আমি; তুমি আমার দাস। তাই ইস্রায়েল, তুমি আমাকে ভুলে যেও না।
২২ তোমার পাপ বিশাল মেঘের মত ছিল। আমি সেই পাপ ধুয়ে দিয়েছি। হাল্কা বাতাসে যেমন মেঘ অদৃশ্য হয়ে যায় তেমনি তোমার পাপও চলে গিয়েছে। তোমাকে আমি রক্ষা করেছি, উদ্ধার করেছি, তাই আমার কাছে ফিরে এসো!”
২৩ হে স্বর্গ, গান কর, কারণ প্রভু মহত্‌ কাজগুলি করেছেন। পৃথিবী, এমনকি পৃথিবীর নিম্নস্থলও আনন্দে চিত্কার কর! পর্বতশৃঙ্গরা! অরণ্যের সব গাছ গান গেযে উঠছে। কেন? কারণ প্রভু যাকোবকে রক্ষা করেছেন। প্রভু ইস্রায়েলে তাঁর মহিমা প্রদর্শন করেছেন।
২৪ তোমরা এখন যা, সে সৃষ্টি প্রভুর। তুমি মাতৃ-জঠরে থাকার সময়ই প্রভু এই সব করেছেন। প্রভু বলেন, “আমি প্রভু, সব কিছু বানিয়েছি! আকাশকে আমি নিজেই টেনে বিছিযেছি! বিশ্বকে আমি একাই ছড়িয়ে দিয়েছি। আমাকে সাহায্য করবার জন্য আমার সঙ্গে আর কেউ ছিল না।”
২৫ ভ্রান্ত ভাব্বাদীরা মিথ্যা কথা বলে। কিন্তু প্রভু তাদের দেখিয়ে দেন যে তাদের ভবিষ্যত্‌বাণী মিথ্যা। তিনি যাদুকরদের হত বুদ্ধি করে দেন। জ্ঞানী লোকদেরও তিনি বিভ্রান্ত করে দেন। যদিও তারা ভাবে তারা অনেক কিছু জানে কিন্তু প্রভু তাদের বোকার মতো করে দেবেন।
২৬ প্রভু লোকদের কাছে তাঁর বার্তা পৌঁছে দিতে তাঁর সেবকদের পাঠাবেন। প্রভু সেই বার্তাকে সত্য করবেন! লোকদের কি করা উচিত্‌ তা জানতে তিনি বার্তাবাহকদের পাঠাবেন। এবং প্রভু দেখান যে তাদের উপদেশটি ভালো।জেরুশালেমকে প্রভু বলেন, “লোকে আবার তোমার মধ্যে বাস করবে!” প্রভু যিহূদার শহরগুলিকে বললেন, “তোমরা আবার পুনর্গঠিত হবে!” ধ্বংস হয়ে যাওয়া শহরগুলিকে তিনি বললেন, “তোমাদের আমি আবার গড়ে তুলব।”
২৭ প্রভু গভীর জলাশযকে বলেন, “শুকনো হয়ে যাও! আমি তোমার জলপ্রবাহকেও শুকিয়ে দেব!”
২৮ প্রভু কোরসকে বলেন, “তুমি আমার মেষপালক, আমি যা চাইব তাই করবে তুমি। জেরুশালেমকে তুমি বলবে, ‘তোমাকে আবার গড়া হবে।’ জেরুশালেমের মন্দিরে তুমি বলবে, ‘তোমার ভিতকে আবার নির্মাণ করা হবে!”‘