আয়নার মানুষ
কেন সেই দিনটির কথা মনে পড়ছে বারবার?
সেই আমার উনত্রিশ বছর বয়েস, সেবারের সেই শীত
আমার প্রবাসী ঘরে, একদিকের দেয়াল জোড়া আয়না
সেটাই আমার একমাত্র বিলাসিতা
তার সামনে উলঙ্গ হয়ে নিজের সঙ্গে বেশ কথা বলা যায়
কদিন ধরে তুষারপাত হচ্ছে একরাশ নীরবতা
ঘিরে আমি এক শৃঙ্খলহীন নিজের স্বাধীন দরজায় বন্দি
ঘরের উত্তাপ বড় বেশি, গেঞ্জি-জাঙ্গিয়াও খুলে ফেলতে ভালো লাগে
আমার সারা গায়ে রোম, বিবর্তনের পথে কি এক ধাপ পিছিয়ে?
অনায়াসেই আমাকে এক শিম্পাঞ্জির মাসতুতো ভাই বলা যায়
সেই প্রথম নিজেকে প্রশ্ন করেছিলাম, কী চাও তুমি?
এই ছন্নছাড়া, ভ্রাম্যমাণ জীবন, এরপর কোন্ দিকে?
এখানে সবাই রয়েছে, কাবার্ড ভর্তি পানীয়, এবং টেলিফোন
তুললেই ছুটে আসবে প্রিয় বান্ধবী, এবং সবকিছু
জানলার ওপাশে কয়েক হাজার মাইল দূরে কলকাতা
কেন টানছে, কেন এখানেই থেকে যাবে না, কী তোমার ভালো লাগে
আয়নার মানুষ বলো বলো, কী তোমার অন্বিষ্ট?
দু’জনেরই চোখে জল আসে, একজন আর একজনকে বলে
একটাও কি সার্থক কিছু লিখে যেতে পারব এ জীবনে?
যখনই লিখতে বসি, দেখতে পাই সেই আয়নার মানুষটির কান্না…