আমার গলার অন্ধকারের পর্দাটা ফুঁড়ে
বেরিয়ে আসছে কথার রৌদ্র কয়েক ঝলক।
সেই রোদ্দুর হয়ে যার ফের গিটারের সুর,
গিটারের সুরে ভেসে ওঠো তুমি আড়ালে আমার
আত্মার-হ্রদে, যেন একরাশ গোলাপ-পাপড়ি।
আমার বাসনা যাত্রা করেছে তোমার দিকেই।
অলক্ষ্যে কবে হৃদয়ে আমার ফুটল চকিতে
প্রেমের মাতৃভাষা অপরূপ। আমার স্বপ্ন
ঘুমায় তোমার চোখের পাতায়, স্তনের ছায়ায়।
কৃষক যেমন নিজস্ব ক্ষেত দ্যাখে অপলক,
রমণী আমার, তেমনি তোমাকে দেখি বারবার।
আমার মাটিতে তুমিই সোনালি ফসলের শীষ।
তোমার শরীরে আনন্দ বুঝি পেয়েছে নিবাস,
অথচ বিষাদ চোখের দু’কূলে যায় বয়ে যায়।
পাখির মতন ঠোকারাতে চাই তোমার সুহাস
শরীরের ফল এবং আমার আঙুলের ছোঁয়া
লাগল তোমার নিবিড় সত্তা কড়ি ও কোমলে
নিশ্চিত হবে মুখর বাদ্যযন্ত্রের মতো।
তুমি তো আমার সতেজ সকাল, তুমিই আমার
দিনান্ত বেলা। তুমি যে আমার অমাবস্যার
গোপন আঁধার, তুমিই আমার রাঙা পূর্ণিমা।
তুমিই আমার মরীচিকা আর তুমিই আমার
মরূদ্যানের সুশীতল শোভা; তুমিই আমার
অকূল তৃষ্ণা, তুমিই আমার তৃষ্ণার জল।
পথের মতন তোমার শাড়ির পাড়ের জন্যে,
তোমার ব্লাউজ, তোমার কানের দুলের জন্যে,
তোমার চোখের পাতার জন্যে, ফুল-ঝলসিত
খোঁপার জন্যে আমি চাই আজ নিটোল শান্তি।
তোমার চলার পথের জন্যে, তোমার হাঁটার
ছন্দের আর ব’সে থাকবার ভঙ্গির জন্যে,
নীরবে তোমার জেগে থাকা আর স্বপ্নে-ভরাট
ঘুমের জন্যে আমি চাই আজ নিটোল শান্তি।
তোমার কণ্ঠস্বরের জন্যে, হাসির জন্যে,
এ-ঘরে তোমার আসার জন্যে, নিরাপদে দূরে
যাওয়ার জন্যে আমি চাই আজ নিটোল শান্তি।
তোমার গহন নৈঃসঙ্গ্যের জন্যে এবং
ঘরের ভেতর গোধূলির মেঘ, অকাল অমন
গানের জন্যে আমি চাই আজ নিটোল শান্তি।