আমার ভেতরে এক বাঁশিঅলা বানিয়েছে তার
আপন নিবাস; সেখানে সে প্রতিদিন কী একাকী
তন্ময় বাজায় বাঁশি যখন তখন। রৌদ্রময়
দারুণ খরায় কিংবা গহন বর্ষায় তোলে সুর-
খুলে যায় অন্তহীন পথ, একাকী কে হাঁটে আর
ইচ্ছে হ’লে পথপ্রান্তে ছায়াকে খোঁচায় বাঁশি দিয়ে।
একজন সঙ্গী আছে তার, স্থূলোদর; মর্চেপড়া
পেরেকের মতো থাকে প’ড়ে এক কোণে কী নিঃসাড়।
যখন সে জেগে ওঠে, হৈ-হুল্লোড় করে বড় বেশি,
খাদ্য পেলে চক্ষুদ্বয় অতিশয় জ্বলজ্বলে হয়
তার, মাঝে-মধ্যে বলে, ‘অসীম তৃষ্ণায় বুক ফেটে
যাচ্ছে, দেখছ না। তার নখ বেড়ে যায় ক্রমাগত;
ঘুমোলে ভীষণ ডাকে নাক। বাঁশিঅলা সঙ্গীটিকে
নিয়ে সর্বক্ষণ খুব বিব্রত বলেই একা একা
পথ হাঁটে। কাক ডাকে, ঝরা পাতা দু’পায়ে মাড়িয়ে
যায় দূরে, যেন তার কোনো দুঃখ-কষ্ট নেই, যেন
হারাতে হয়নি কিছু কস্মিনকালেও। কানাকড়ি
পাবে না জেনেও স্তব্ধতার গালে গাল রেখে সুর
তোলে, মাঝে-মাঝে মনে পড়ে তার-সঙ্গীটির তীক্ষ্ণ
ক্ষুধা আছে, আছে তৃষ্ণা, আছে নিঃসঙ্গতা অন্তহীন।