আমার কলমটিকে বেশ কিছুদিন টেবিলের
এক কোণে অন্ধকারে ফেলে
রেখে প্রায় ভুলে গিয়েছিলাম বস্তুত। ওর গায়ে
কিছু ধুলো জমেছিল স্পর্শহীনতায়।
কী ক’রে ছিলাম এতদিন ওকে একটুও না ছুঁয়ে?
কী ক’রে সম্ভব হলো আমার এ আচরণ, ভেবে
আজ এই গোধূলিতে কেমন বিপন্ন,
অসহায় মনে হয়। আমি তো নিজেরই কাছে অচেনা এখন।
এখন আমার বন্ধ্যা মনের প্রান্তরে অকস্মাৎ
কতিপয় পুষ্পময় হাওয়ার-দোলানো
ছোট গাছ যেন বা আনন্দে আত্মহারা,
গানে মশগুল, আমি অন্য কেউ হয়ে গানে মিশে যাই।
তাহ’লে কি আমার কলম অভিমান-মুক্ত হয়ে
এই ডান হাতের পাঁচটি আঙুলকে
বন্ধ্যাত্বের খরাত্বকে অপরূপ জলসেচে ফের
নতুন ফসলে ধনী করবে এমন অবেলায়?
কলম, তুমি তো ঢের পথ পেরিয়ে এসেছো
এতদিনে, কখনো সখনো
খেয়েছো হোঁচট খুব, শক্র শিবিরের বাঁকা দৃষ্টি,
মশকরা করেছে তোমাকে বিদ্ধ, তবু আজো ছাড়ি নি তোমাকে।
যে যা-ই বলুক, যত অবহেলা আমার সত্তাকে
ছিন্নভিন্ন করুক নিয়ত, তবু আমি
সন্তের মতোই এই কাগজের পাতায় পাতায়, যতদিন
বেঁচে আছি, শব্দের মিছিল ভালোবেসে সাজাবোই।
এই তো এখন এই গোধূলিতে কতিপয় শব্দ এসে
আমার নিষ্ক্রিয় কলমকে
কল্পনা এবং বাস্তবের মিলনকে অর্থময় করে
তোলার তাগিদে বড় ব্যাকুল হয়েছে বেশ কিছুকাল পর।
১৬-৭-২০০৩