আমাকে এখন থেকে

আমাকে এখন থেকে আরেকটু বেশি, আরেকটু
ভালো করে দেখে নাও। কতটা বিবর্ণ হয়ে কত
ক্ষয়ে গেছি, চামড়া কুঁচকে গ্যাছে কত,
কত চুল হলো লীন দূরের হাওয়ায়,
কেমন স্খলিত দাঁত, আমার নিভৃত
দৃষ্টিশক্তি কত শোচনীয় ক্ষীণ আজ ভালো করে দেখে নাও।

বিত্ত নেই, উপরন্তু ধারদেনা আছে কিছু, নিবাসও বন্ধক,
প্রদর্শনযোগ্য কিছু নেই, আছে শুধু
কতিপয় কাব্যগ্রন্থ, বস্তুত যাদের
কানাকড়ি মূল্য নেই অনেকের কাছে। কেউ বইগুলি
পুড়িয়ে উৎসবে মেতে উঠতে উৎসুক অতিশয়;
এরকম পুঁজিহীন কেটে যাবে বেলা পুঁজিতান্ত্রিক সময়ে।

একটি তস্কর আছে খুব কাছে চোখের আড়ালে,
আমাকেই চুরি করবার অব্যর্থ চেষ্টায় আর
আমি বসে থাকি অসহায়। কবিতার
একটি কি দুটি পংক্তি গাছের পাতার মতো
নড়ে ওঠে, বেজে চলে নর্তকীর নূপুর যেমন।
মাঝে মাঝে চিত্রকল্প সৃষ্টি হয় অবচেতনের
গহন আঁধার স্তর ফুঁড়ে। তদুপরি
একটি সোনালি মুখ জেগে থাকে হৃদয়ের নিভৃত জ্যোৎস্নায়।

আমাকে এখন থেকে আরেকটু বেশি, আরেকটু
ভালো ক’রে দেখে নাও। এই যে হাঁটছি
এখনো গলিতে, যাচ্ছি গায়ে
পাঞ্জাবি চাপিয়ে কবিদের সভায় এবং কথা
বলছি সোফার ব’সে, গিলছি আগুন
ঘন ঘন, বমি করে ফেলে দিই রক্তমণি, সীসা-
এই সব দেখতে পাবে না;
আমি তো অধিককাল থাকব না আর, চলে যাব খুব একা।
৮/৪/৯৫