তোমার আমার কাঙ্ক্ষিত ভোর
আসার আগেই স্বপ্ন-বিভোর
তোমাকে হানল ওরা।
একদা তুমিও চৈত্র দুপুরে
টলটলে সেই পুরোনো পুকুরে
ফেলেছ চিকন ছিপ।
আম্রছায়ায় কালো দিঘিটায়
এক হাটু জলে দাঁড়িয়েছ ঠায়
শাপলা তুলবে বলে।
সর্ষে ক্ষেতের হলদে হাওয়ায়
কী জানি সে কোন গভীর চাওয়ায়
হাত দুটি দিতে মিলে।
ঝোপের কিনারে কখনো হঠাৎ
গুলতিটা পেলে বাড়িয়েছ হাত
প্রজাপতিটার দিকে।
সেই কবে তুমি শিরীষের মূলে
আহত পাখিকে নিয়েছিলে তুলে
উদার ব্যগ্র বুকে।
যে-সাড়া তরুণ ঘাসের ডগায়
জ্যোৎস্না-ডোবানো স্বপ্ন জোগায়
তা-ও পেয়েছিলে তুমি।
বলেছিলে, তুমি, যে-কথা কখনো
বাজে না হৃদয়ে গান হয়ে কোনো
সে-কথা ব্যর্থ, ম্লান।
বলেছিলে আরও, যে-জীবন কারো
প্রাণকে করে না আলোয় প্রগাঢ়,
সে-জীবন নিষ্ফল।
বুঝি তাই প্রেমে বড় উৎসুক
তুলে ধরেছিলে স্বদেশের মুখ
নিবিড় অঞ্জলিতে!
খোলা রাস্তায় মিছিলে মিছিলে
চকিতে প্রহরে ছড়িয়ে কী দিলে?
চৌদিক থরথর।
তোমার আমার কাঙ্ক্ষিত ভোর
আসার আগেই স্বপ্ন-বিভোর
তোমাকে হানল ওরা।
এই আলো আরো পবিত্র হবে
তোমার রক্ত-রাঙা বৈভবে,-
বলল ব্যাকুল পাখি।
যে-আলো তোমার চোখে নেচেছিল,
যে-আলো তোমার বুকে বেঁচেছিল
আমরা প্রার্থী তারই।