১ কিছু সময় পরে য়োষেফ জানতে পারলেন য়ে তাঁর পিতা খুব অসুস্থ। তাই য়োষেফ তাঁর দুই পুত্র মনঃশি ও ইফ্রয়িমকে নিয়ে তাঁর পিতার কাছে গেলেন।
২ য়োষেফ সেখানে পৌঁছালে ইস্রায়েলকে কেউ খবর দিলেন, “আপনার পুত্র য়োষেফ আপনাকে দেখতে এসেছেন।” ইস্রায়েল খুব দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন, কিন্তু তিনি খুব চেষ্টা করে কোন মতে বিছানায উঠে বসলেন।
৩ তখন ইস্রায়েল য়োষেফকে বললেন, “কনান দেশের লূস নামক জায়গায় সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমার সামনে আবির্ভূত হয়েছিলেন। সেখানে ঈশ্বর আমায় আশীর্বাদ করেছিলেন।
৪ ঈশ্বর আমায় বলেছিলেন, “আমি তোমাকে বহু বংশ করব। তোমার অনেক সন্তানসন্ততি হবে এবং তারা মহান হবে। এই দেশ তোমার বংশধররা চিরকালের জন্য তাদের অধিকারে রাখবে।”
৫ আর এখন তোমার দুই পুত্র, আমার আসার আগেই মিশর দেশে এদের জন্ম হয়েছিল। তোমরা দুই পুত্র মনঃশি ও ইফ্রয়িম আমার কাছে নিজের পুত্রের মতই হোক। তারা আমার কাছে রূবেণ ও শিমিয়োনের মত হোক।
৬ সুতরাং ঐ দুই জন পুত্র আমারই হোক। তারা আমার সব কিছুর অংশীদার হবে। কিন্তু এছাড়া তোমার যদি আর অন্য পুত্র থাকে তবে তা তোমারই হোক। আর তারা ইফ্রয়িম ও মনঃশির কাছে সন্তানের মতই হোক – অর্থাত্ ভবিষ্যতে তারা ইফ্রয়িম ও মনঃশির অধিকারভুক্ত সব কিছুরই অংশীদার হবে।
৭ পদ্দম্-অরাম থেকে আসার সময় রাহেল মারা গেলেন। এই ঘটনায আমি অত্যন্ত দুঃখ পেলাম। আমরা যখন ইফ্রাথের দিকে যাচ্ছিলাম তখন কনান দেশে তিনি মারা গেলেন। আমি তাকে সেখানে ইফ্রাথ যাবার পথের ধারে কবর দিলাম। (ইফ্রাথ বৈত্লেহেমের অপর নাম।)”
৮ তখন ইস্রায়েল য়োষেফের পুত্রদের দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, “এই বালকরা কারা?”
৯ য়োষেফ তাঁর পিতাকে বললেন, “এরা আমার পুত্ররা, ঈশ্বরই এদের আমায় দিয়েছেন।”ইস্রায়েল বললেন, “তোমার ছেলেদের আমার কাছে নিয়ে এস। আমি তাদের আশীর্বাদ করব।”
১০ ইস্রায়েল বৃদ্ধ হয়েছিলেন এবং চোখেও ভালো দেখতে পেতেন না। তাই য়োষেফ দুই পুত্রকে পিতার খুব কাছে নিয়ে এলেন। ইস্রায়েল তাদের গলা জড়িয়ে চুমু খেলেন।
১১ তারপর ইস্রায়েল য়োষেফকে বললেন, “আমি ভাবতেই পারি নি য়ে কখনও তোমার মুখ দেখতে পাব। কিন্তু দেখ! ঈশ্বর আমাকে তোমার এমনকি তোমার পুত্রদেরও দেখতে দিলেন।”
১২ তারপর য়োষেফ ইস্রায়েলের কোল থেকে তার পুত্রদের নিলেন এবং তারা ইস্রায়েলের সামনে মাথা নত করল।
১৩ য়োষেফ ইফ্রয়িমকে তার ডানদিকে এবং মনঃশিকে তার বাঁ দিকে রাখলেন। (সুতরাং ইফ্রয়িম ইস্রায়েলের বাম দিকে ও মনঃশি তার ডান দিকে রইল।)
১৪ কিন্তু ইস্রায়েল তাঁর হাত আড়াআড়ি ভাবে রেখে তার ডান হাত ছোট পুত্র ইফ্রয়িমের মাথায় রাখলেন। ইস্রায়েল তার বাম হাত বড় পুত্র মনঃশির মাথায় রাখলেন। মনঃশি প্রথমজাত হলেও তিনি বাম হাত তার উপরে রাখলেন।
১৫ ইস্রায়েল য়োষেফকে আশীর্বাদ করে বললেন,“আমার পূর্বপুরুষ অব্রাহাম ও ইসহাক আমাদের ঈশ্বরের উপাসনা করতেন। আর সেই ঈশ্বরই সারা জীবন আমায় গ্রহণ করেছেন।
১৬ তিনিই সেই দেবদূত যিনি আমায় সব সমস্যা থেকে রক্ষা করেছেন। আমার প্রার্থনা, তিনিই এই পুত্রদের আশীর্বাদ করবেন। এখন এই পুত্ররা আমার এবং আমার পূর্বপুরুষ অব্রাহাম ও ইসহাকের নামে আখ্যাত হোক। আমার প্রার্থনা তারা য়েন পৃথিবীতে বৃদ্ধি পযে বহু বংশ ও বহু জাতি হয়।”
১৭ য়োষেফ যখন দেখলেন তাঁর পিতা ডান হাত ইফ্রয়িমের মাথায় রেখেছেন, তখন তিনি খুশী হলেন না। য়োষেফ পিতার হাত ইফ্রযিমের মাথা থেকে তুলে ধরে মনঃশির মাথায় রাখতে চাইলেন।
১৮ য়োষেফ তার পিতাকে বললেন, “আপনি আপনার ডান হাত ভুল জনের মাথার উপর রেখেছেন। মনঃশিই প্রথমজাত। তার উপরেই ডান হাত রাখুন।”
১৯ কিন্তু তাঁর পিতা তর্ক করে বললেন, “আমি জানি বত্স, আমি জানি। মনঃশি প্রথমজাত সে মহান হবে, বহুলোকের পিতা হবে কিন্তু ছোট জন বড় জনের চেয়েও মহান হবে আর তার বংশ আরও অনেক হবে।”
২০ তাই ইস্রায়েল সেই দিন এই বলে আশীর্বাদ করলেন,“ইস্রায়েল কাউকে আশীর্বাদ করতে তোমাদেরই নাম ব্যবহার করবে। তারা বলবে, “ঈশ্বর তোমাকে য়েন মনঃশি ও ইফ্রযিমের মতো করেন।”এইভাবে ইস্রায়েল মনঃশির চাইতে ইফ্রয়িমকে বড় করলেন।
২১ তারপর ইস্রায়েল য়োষেফকে বললেন, “দেখ আমার মৃত্যুর সময় কাছে এসে গেছে। কিন্তু ঈশ্বর তোমার সঙ্গে থাকবেন। তিনিই তোমাকে আবার তোমার পূর্বপুরুষদের দেশে নিয়ে যাবেন।
২২ আমি তোমাকে যা দিলাম তা তোমার ভাইদের দিই নি। ইমোরীয়দের হাত থেকে য়ে পাহাড় আমি জয় করে নিয়েছিলাম তা তোমায় দিচ্ছি। আমি সেই পাহাড় জয় করতে আমার তরবারি ও ধনুক ব্যবহার করেছিলাম এবং আমি জয়ী হয়েছিলাম।”