১ ইস্রায়েল মিশর দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলেন। প্রথমে তিনি বের্-শেবাতে গেলেন। সেখানে ইস্রায়েল তাঁর পিতা ইসহাকের ঈশ্বরের উপাসনা করলেন এবং বলি দিলেন।
২ রাত্রে ঈশ্বর স্বপ্নে যাকোবের সঙ্গে কথা বললেন। ঈশ্বর বললেন, “যাকোব, যাকোব।”ইস্রায়েল উত্তর দিলেন, “এই য়ে আমি।”
৩ তখন ঈশ্বর বললেন, “আমি ঈশ্বর, তোমার পিতার ঈশ্বর! মিশরে য়েতে ভয় কোর না। মিশরে আমি তোমাকে এক মহাজাতিতে পরিণত করব।
৪ আমি তোমার সঙ্গে মিশরে যাব আর তোমাকে সেখান থেকে ফিরিযে আনব। তুমি মিশরে মারা যাবে কিন্তু য়োষেফ তোমার সঙ্গে থাকবে। তুমি মারা গেলে য়োষেফই তার নিজের হাত দিয়ে তোমার চোখ বুজিযে দেবে।”
৫ তারপর যাকোব বের্-শেবা ছেড়ে মিশরের দিকে যাত্রা করলেন। ইস্রাযেলের পুত্ররা নিজেদের পিতা যাকোবকে এবং প্রত্যেকে নিজের পুত্র কন্যা ও স্ত্রীদের নিয়ে মিশরে চললেন। ফরৌণ য়ে মালবাহী গাড়ীগুলো পাঠিয়েছিলেন সেইগুলো করেই তাঁরা গেলেন।
৬ তাঁরা তাঁদের পশুপাল এবং কনান দেশে তাদের যা যা ছিল সব নিয়ে চললেন। সুতরাং ইস্রায়েল মিশরে তার সমস্ত সন্তান এবং তাদের পরিবার নিয়েই গেলেন।
৭ তাঁর সঙ্গে ছিল তাঁর পুত্ররা এবং নাতিরা, তাঁর কন্যারা এবং নাতনিরা। সুতরাং তাঁর সমস্ত পরিবার তাঁর সাথে মিশরে গেলেন।
৮ ইস্রাযেলের পুত্ররা এবং তার বংশধররা যারা তাঁর সঙ্গে মিশরে গিয়েছিলেন তাদের নামগুলি এই: ়বূবেণ ছিলেন জ্যেষ্ঠ পুত্র।
৯ রূবেণের পুত্ররা ছিলেন হনোক, পল্লু, হিষ্রোণ ও কর্মি।
১০ শিমিযোনের পুত্ররা ছিলেন য়িমূযেল, যামীন, ওহদ, যাখীন, সোহর এছাড়া শৌল। (শৌলের মা ছিলেন একজন কনানীয স্ত্রীলোক।)
১১ লেবীর পুত্ররা ছিলেন গের্শোন, কহাত্ ও মরারি।
১২ যিহূদার পুত্ররা হলেন এর, ওনন, শেলা, পেরস ও সেরহ। (এর ও ওনন কনান দেশেই মারা গিয়েছিল।) পেরসের পুত্ররা হলেন হিষ্রোণ ও হামূল।
১৩ ইষাখরের পুত্ররা হলেন তোলয, পুয, য়োব ও শিম্রোণ।
১৪ সবূলূনের পুত্ররা হলেন সেরদ, এলোন ও মহলোল।
১৫ রূবেণ, শিমিয়োন, লেবি, যিহূদা, ইষাখর ও সবূলূন এনারা ছিলেন যাকোব ও লেয়ার সন্তানগণ। পদ্দম্-অরামে লেয়ার এই সন্তানরা জন্মেছিল। তার দীনা নামে একটি কন্যাও ছিল। তার পরিবারে মোট সদস্য সংখ্যা ছিল ৩৩ জন।
১৬ গাদের পুত্ররা ছিলেন সিফিযোন, হগি, শূনী, ইষ্ বোন, এরি, অরোদী ও অরেলী।
১৭ আশেরের পুত্ররা ছিলেন য়িম্না, য়িশ্বা, য়িশবি, বরিয এবং তাদের বোন সেরহ। বরিযের পুত্ররা অর্থাত্ হেবর ও মল্কীযেলও ছিলেন।
১৮ যাকোবের এই পুত্ররা ছিলেন তার স্ত্রী দাসী সিল্পার। (সিল্পাই সেই দাসী যাকে লাবন তার কন্যা লেয়ার সাথে দিয়েছিলেন।) তার পরিবারের মোট সদস্য ছিলেন ১৬ জন।
১৯ বিন্যামীনও যাকোবের সঙ্গে ছিলেন। বিন্যামীন ছিলেন যাকোব ও রাহেলের পুত্র। (য়োষেফও রাহেলের পুত্র। কিন্তু য়োষেফ ইতিমধ্যে মিশরে ছিলেন।)
২০ মিশরে য়োষেফের দুই পুত্র হয়। তাদের নাম মনঃশি ও ইফ্রয়িম। (য়োষেফের স্ত্রীর নাম ছিল আসমত্। তিনি ছিলেন ওন শহরের যাজক পোটীফর এর কন্যা।
২১ বিন্যামীনের পুত্ররা হল বেলা, বেখর, অস্ বেল, গেরা, নামন, এহী, রোশ, মুপ্পীম, হুপ্পীম ও অর্দ।
২২ এনারা ছিলেন যাকোব ও তার স্ত্রী রাহেলের সন্তান। পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ১৪ জন।
২৩ দানের পুত্র ছিলেন হূশীম।
২৪ নপ্তালির পুত্র ছিলেন য়হসিযেল, গূনি, বেত্সর ও শিল্লেম।
২৫ এঁরা ছিলেন যাকোব ও বিল্হার সন্তান। (বিল্হা-ই সেই দাসী যাকে লাবন তার কন্যা রাহেলের সাথে পাঠিয়েছিলেন।) এই পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা ছিল সাত।
২৬ সরাসরি যাকোব হতে উত্পন্ন উত্তরপুরুষদের মোট ৬৬জন তার সঙ্গে মিশরে গিয়েছিলেন। (এই সংখ্যার মধ্যে যাকোবের পুত্রদের স্ত্রীদের গণনা করা হয় নি।)
২৭ আবার য়োষেফেরও দুই সন্তান ছিলেন য়াঁরা মিশরে জন্মেছিলেন। সুতরাং মিশরে যাকোবের পরিবারের মোট সদস্য সংখ্যা হল ৭০ জন।
২৮ য়োষেফের সঙ্গে কথা বলার জন্য যাকোব যিহূদাকে তাঁর আগে পাঠালেন। এর পরে যাকোব এবং তাঁর পুত্ররা গোশন প্রদেশে পৌঁছোলেন। যিহূদা গোশন প্রদেশে য়োষেফের সঙ্গে কথা বলতে গেলেন। যাকোব এবং তাঁর পরিবারের লোকজন এরপর সেই প্রদেশে পৌঁছালেন।
২৯ য়োষেফ যখন শুনলেন য়ে তাঁর পিতা আসছেন তখন তিনি রথ প্রস্তুত করে গোশন প্রদেশে তাঁর পিতা ইস্রাযেলের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। য়েষেফ তাঁর পিতাকে দেখে গলা জড়িয়ে ধরে বহুক্ষণ কাঁদলেন।
৩০ তখন ইস্রায়েল য়োষেফকে বললেন, “এখন আমি শান্তিতে মরতে পারব। আমি তোমার মুখ দেখলাম এবং জানলাম য়ে তুমি এখনও জীবিত।”
৩১ য়োষেফ তাঁর ভাইদের এবং পিতার পরিবারের বাকীদের বললেন, “আমি ফরৌণকে বলতে যাচ্ছি য়ে তোমরা এখানে এসেছ। আমি ফরৌণকে বলব, ‘আমার ভাইরা এবং পিতার পরিবারের বাকী সবাই কনান দেশ ছেড়ে এখানে আমার কাছে এসেছেন।
৩২ পরিবারের সবাই মেষপালক। তারা বরাবরই মেষপাল ও গো-পাল রেখে থাকেন। তারা তাদের পশু ও আর যা কিছু তাদের ছিল সবই তাদের সঙ্গে নিয়ে এসেছেন।
৩৩ ফরৌণ তোমাদের ডাকলে জিজ্ঞেস করবে, ‘তোমরা কি কাজ কর?’
৩৪ তোমরা তাকে বলবে, ‘আমরা মেষপালক। সারাজীবন ধরেই আমরা মেষ পালন করে আসছি। আমাদের আগে আমাদের পিতৃপুরুষরা মেষপালক ছিলেন।’ ফরৌণ তোমাদের গোশন প্রদেশে থাকতে দেবেন। মিশরীযরা মেষপালকদের পছন্দ করেন না, সেইজন্য তোমাদের গোশন প্রদেশে থাকাটাই ভাল হবে।”