১ পরে ফরৌণের দুই ভৃত্য ফরৌণের প্রতি কিছু অন্যায় কাজ করল। এই ভৃত্যেরা ছিল তার রুটিওয়ালা ও দ্রাক্ষারস পরিবেশনকারী।
২ ফরৌণ প্রধান রুটিওয়ালা ও দ্রাক্ষারস পরিবেশনকারীর উপর ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন।
৩ তাই ফরৌণ তাদের য়োষেফের সাথে একই কারাগারে রাখলেন। পোটীফর, ফরৌণের কারারক্ষকদের প্রধান সেই কারাগারের দায়িত্বে ছিলেন।
৪ প্রধান কারারক্ষক সেই দুই বন্দীকে য়োষেফের পরিচর্য়ার অধীনে রাখলেন। সেই দুইজন লোকই কিছু সময় সেই কারাগারে রইল।
৫ একদিন রাত্রে দুই বন্দীই স্বপ্ন দেখল। (এই দুই বন্দী ছিল মিশরের রাজার রুটিওয়ালা ও দ্রাক্ষারস পরিবেশনকারী।) প্রত্যেক বন্দীই ভিন্ন ভিন্ন স্বপ্ন দেখল এবং প্রতিটি স্বপ্নের নিজস্ব অর্থ ছিল।
৬ পরের দিন সকালে য়োষেফ তাদের কাছে গিয়ে দেখলেন য়ে তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্থ।
৭ য়োষেফ জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমাদের এত বিষন্ন দেখাচ্ছে কেন?”
৮ লোক দুটি উত্তর করল, “গত রাতে আমরা স্বপ্ন দেখেছি কিন্তু স্বপ্নের অর্থ বুঝছি না। সেই স্বপ্নের অর্থ বলার বা তা বুঝিযে দেবার কেউ নেই।”য়োষেফ তাদের বললেন, “ঈশ্বরই একজন যিনি বোঝেন ও স্বপ্নের অর্থ বলতে পারেন। তাই আমার অনুরোধ, তোমাদের স্বপ্নগুলো বল।”
৯ সুতরাং দ্রাক্ষারস পরিবেশক য়োষেফকে তার স্বপ্ন বলল, “আমি স্বপ্নে একটা দ্রাক্ষালতা দেখলাম।
১০ সেই লতায় তিনটে শাখা ছিল। আমি দেখলাম শাখাগুলিতে ফুল হল এবং দ্রাক্ষা ফলল।
১১ আমি ফরৌণের পানপাত্র ধরেছিলাম, তাই সেই দ্রাক্ষাগুলোকে সেই কাপে নিঙড়ে নিলাম। তারপর সেই পানপাত্র ফরৌণকে দিলাম।”
১২ তখন য়োষেফ বললেন, “সেই স্বপ্নের অর্থ আমি তোমায় বলছি। তিনটি শাখার অর্থ তিন দিন।
১৩ তিন দিন শেষ হবার আগেই ফরৌণ তোমায় ক্ষমা করে আবার তোমাক কাজে বহাল করবেন। তুমি ফরৌণের জন্য আগে য়ে কাজ করতে তাই-ই করবে।
১৪ কিন্তু তুমি ছাড়া পেলে আমায় স্মরণ কর। আমার প্রতি দয়া কর। ফরৌণকে আমার সম্বন্ধে বল যাতে আমি কারাগার থেকে বেরিয়ে আসতে পারি।
১৫ আমাকে জোর করে আমার নিজের জায়গা, ইব্রীয়দের দেশ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কারাগারে থাকার মত কোন অন্যায়ই আমি করি নি।”
১৬ রুটিওয়ালা দেখল অন্য ভৃত্যের স্বপ্নটা ভাল। তখন সে য়োষেফকে বলল, “আমিও একটা স্বপ্ন দেখেছি। দেখলাম আমার মাথায় রুটির তিনটে ঝুড়ি রয়েছে।
১৭ উপরের ঝুড়িতে সব রকমের সেঁকা খাবার ছিল। সেই খাবার রাজার জন্য ছিল কিন্তু পাখীরা ঐ খাবার খেতে লাগল।”
১৮ য়োষেফ বললেন, “আমি তোমাকে স্বপ্নের অর্থ বলছি। তিনটে ঝুড়ির অর্থ তিন দিন।
১৯ তিন দিনের মধ্যে রাজা তোমাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেবেন। তিনি তোমার শিরশ্ছেদ করে একটা বাঁশের মাথায় ঝুলিয়ে দেবেন। আর পাখীরা তোমার দেহের মাংস খাবে।”
২০ তৃতীয় দিনটা ছিল ফরৌণের জন্ম দিন। ফরৌণ তাঁর সব দাসদের জন্য ভোজের আযোজন করলেন। সেই সময়ে ফরৌণ রুটিওয়ালা ও দ্রাক্ষারস পরিবেশককে কারাগার থেকে মুক্তি দিলেন।
২১ ফরৌণ পানপাত্র বাহককে মুক্তি দিয়ে পুনরায় তাকে তার কাজে নিয়েগ করলেন। আর সেই পানপাত্র বাহক আবার ফরৌণের হাতে পানপাত্র দিতে লাগল।
২২ কিন্তু ফরৌণ রুটিওয়ালাকে ফাঁসি দিলেন। য়োষেফ য়েমনটি বলেছিলেন সেরকম ভাবেই সব ঘটনা ঘটল।
২৩ কিন্তু সেই পানপাত্র বাহকদের য়োষেফকে সাহায্য করার কথা মনে রইল না। সে য়োষেফের বিষয ফরৌণকে কিছুই বলল না, য়োষেফের কথা ভুলে গেল।