আত্মদর্শন
অস্ত্র বানিয়েছিলুম পশুর বিরুদ্ধে, আজ পশুরা নিঃশেষিতপ্রায়
যে ক’টি রয়েছে, তাদের আদর যত্নে রেখেছি সাজানো বাগানে
এদিকে জমে গেছে অস্ত্রের পাহাড়
দিবাবসানের রক্ত আলোয় দেখা যায় মানুষের স্রোত
চতুর্দশী চাঁদের দিকে রোমহর্ষক ব্যস্ততা
যন্ত্র কষে দেয় ন্যায় অন্যায়ের হিসেব
কুকুরে চাটে পরমান্নের থালা, বিনা বাধায় ছুঁয়ে দেয় যজ্ঞ-পুরোভাস।
বীজাণুর চেয়েও দ্রুতবেগে বেড়ে-ওঠা মানুষ এগিয়ে আসে
নিজের মুখচ্ছবিকেই সে ভয় পায়
ভাদ্রমাসের ব্যাঙ আশ্রয় নেয় মানুষের গলায়
জলে-রোদুরে স্নান করে মাঠে হাল ধরে আছে পাঁচ হাজার বছরের
পুরোনো মানুষ
আর নগরে বন্দরে নতুন মানুষেরা ছুঁয়ে আছে অস্ত্রের বোতাম
কেউ কারুর নয়, শোনা যায় এই নিঃশব্দ হাহাকার, কেউ কারুর নয়
কেউ নদীর জলে একলা চোখের জল মেশায়
রঙ্গালয়ে কোমর-লোভী যুবকের হাত অনায়াসে যা চায় তা পায়
সে জানে না সে সাতাশটি মৃত্যুর জন্য দায়ী
পাপবোধ নিয়ে লেখা হয় কাব্য আর নিরপরাধ কারাগারে বসে
খোঁটাখুঁটি করে চাম পোকা
রাস্তায় ছোটাছুটি করে অনিচ্ছার ফসলের মতন শিশু
কেউ কারুর নয়, শোনা যায় এই নিঃশব্দ হাহাকার, কেউ কারুর নয়
অথচ ভালোবাসার কথা ছিল, অথচ মানুষ মানুষের কাছাকাছি
আসার কথা ছিল
ভূলুণ্ঠিত জ্যোৎস্নায় মিশে আছে বহু শতাব্দীর মনীষা
চতুর্দিকে সঙ্ঘ ভেঙে যাবার সংঘর্ষ
চতুর্দিকে ভেঙে যাবার অসম্ভব শব্দ, ঠিক যেন ওষ্কারের মতন
কেউ শোনে না…