আঠারোটি পাউরুটি
১.
গরু একপ্রকার নল, যা দিয়ে মানুষ ঘাসের রক্ত শোষণ করে।
২.
ডানা নেই বলে মানুষ উড়তে পারে না, এ কথাটি সঠিক নয়। মানুষ উড়তে পারে না তার হিংসার ওজনের কারণে।
৩.
আমি হিসেব করে দেখেছি, আমার গ্রামে সুখী মানুষ আছেন মাত্র একজন। তিনি আমাদের তাওছ ভাই। কারণ তিনি কানে কম শোনেন।
৪.
বাংলাদেশ একমাত্র দেশ, যেখানে অন্ধকারের বিরুদ্ধে কথা বললে টর্চলাইটেরা মিছিল বের করেন।
৫.
শীত এলেই কিছু কোম্পানি আমাদের ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে। কিন্তু আমাদের হৃদয় যে বর্ষাকালেও ফাটা থাকে, এ ব্যাপারে কারও কোনো উদ্বেগ নেই।
একবার স্বপ্নে এক মনীষীর কাছে আমি স্বাধীনতার সংজ্ঞা জানতে চেয়েছিলাম। তিনি উত্তর দিয়েছিলেন— “স্বাধীনতা হলো পুলিশকে ভয় পাওয়ার অধিকার।”
৭.
এ দেশে কারও সাথে তর্ক করা মোটেও নিরাপদ নয়। এখানে রোগী সবসময় ডাক্তারের চরিত্রে অভিনয় করে।
৮.
আমার ‘বুদ্ধিজীবী’ লেখাটি পড়ে একজন জানতে চাইলেন, আপনি কেমন বুদ্ধিজীবী চান? আমি বললাম— সরাসরি এর উত্তর দেওয়া কঠিন, তবে একটি উদাহরণ দিতে পারি। গ্রিক দার্শনিক দায়াজিনিজ একবার রোদ পোহাচ্ছিলেন। এমন সময় তাঁর কাছে গিয়ে হাজির হলেন দিগ্বিজয়ী বীর আলেকজান্ডার। আলেকজান্ডার তাঁকে বললেন— মিস্টার দায়াজিনিজ, আপনি তো আমার কাছে যানও না, কিছু চানও না। তাই আমিই আপনার কাছে এসেছি। দয়া করে বলুন, আপনার জন্য আমি কী করতে পারি? দায়াজিনিজ বললেন, আপনি অবশ্যই আমার জন্য কিছু করতে পারেন। সেটা হলো- আমার সামনে থেকে সরে পেছনে গিয়ে দাঁড়ানো। আপনি আমার সূর্যের আলো আটকে রেখেছেন।
৯.
একবার এক মেয়ে আমাকে জিগ্যেস করলো — ইসলাম ধর্মে পুরুষদের চার বিয়ে করা আপনি সমর্থন করেন কি না?
আমি বললাম— আমার সমর্থনে কিছু যায় আসে না, তবে ভারতবর্ষের স্বাধীনতার পেছনে চার বিয়ের ভূমিকা আছে।
মহাত্মা গান্ধীর জন্ম হয়েছিলো তাঁর বাবা উত্তমচাঁদ গান্ধীর চতুর্থ স্ত্রী পুটলি বাঈয়ের ঘরে।
১০.
ফকিরবাদী মানুষের দেশে পুঁজিবাদ ব্যর্থ হতে বাধ্য। পুঁজিবাদীর কাজ টাকা বিনিয়োগ করে টাকা বাড়ানো। আর ফকিরবাদীর কাজ টাকা লুটপাট করে ব্যাংকে জমানো।
১১.
একবার এক ছেলে খুব দুঃখ নিয়ে আমার কাছে এলো। তার নাকি বিয়ে হচ্ছে না। আমি বললাম— মহাবিশ্ব যারা চালান তাদের কেউই বিয়ে করেননি। ঈশ্বর বিয়ে করেননি, যমদূত বিয়ে করেননি, শয়তান বিয়ে করেননি। এখন ভেবে দেখো, তুমি বিয়ে করবে কি না।
১২.
আমি যে জঙ্গলে বাস করি, সে জঙ্গলে গণতন্ত্র এরকম:
“দুটি বাঘ ও একটি হরিণ, আজ দুপুরে কী খাবে তা নিয়ে ভোটাভুটির আয়োজন করলো, এবং বাঘ দুটি গণতান্ত্রিকভাবে হরিণটিকে খেয়ে ফেললো।”
১৩.
রাষ্ট্র যখন আইনের আশ্রয় নেয়, তখন বুঝতে হবে রাষ্ট্রের চালকেরা কোনো বেআইনি কাজ করছে।
১৪.
বাংলাদেশের দুরবস্থা সম্পর্কে আমি প্রথম ধারণা পাই বসুন্ধরা সিটি যাওয়ার পর। ওখানে গিয়ে শুনি, বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো জুতোর দোকানটি নাকি বাংলাদেশে অবস্থিত! যে-জাতির পায়ের দোকান মগজের দোকানের চেয়ে বড়ো, সে-জাতির পতন আপনি কীভাবে ঠেকাবেন?
১৫.
বিজ্ঞাপনের কাজ হলো— ক্রেতার কাছে গাধা বিক্রি করার সময় ঘোড়ার গুণাবলী বর্ণনা করা।
১৬.
পানির সাথে মাছ তখনই একমত পোষণ করে, যখন সে মারা যায়।
১৭.
একদিন আমাদের আকাশ আমাদের মাথার ওপর টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে পড়তে লাগলো। কিন্তু আমাদের রাজা একটিবারও ভাবলেন না— আকাশের একটি ভাঙা টুকরো তার মাথায়ও পড়তে পারে।
১৮.
আইন জিনিসটি বেশ অদ্ভুত। যেমন— রাস্তায় কুকুর হিস্যু করতে পারবে, কিন্তু মানুষ থুথু ফেলতে পারবে না।