ফোন বারবার বেজে উঠবে আমার
ছোট ঘরে, অথচ তোমার কণ্ঠস্বর কোনোদিন
শুনবো না আর
ভোরবেলা অথবা রাত্তিরে কিংবা যাবো না কখনো
সেই শাদা বাড়িতে প্রবাসকে
আপন নিবাস
করবার আকাঙ্ক্ষায় মজে। যদি যাই কোনোদিন বাড়িটার
পথের কিনার দিয়ে, চমকে উঠবো অকস্মাৎ।
সেই বাড়িটিকে মনে হবে
স্মৃতিসৌধ, বড় চুপচাপ পোহাচ্ছে সময় আর
মনে পড়ে যাবে
অমল তোমার ঝকঝকে মুখ, চোখের রহস্যময় দ্যুতি-
বুকের ভেতরে কিছু দুঃখ লুকিয়ে রাখার
প্রবণতা, হুইস্কির গ্লাস হাতে কৌচে
শিল্পিত কথার ঝিলিমিলি। অমল, তোমার জন্যে কোনো কোনো
প্রহরে আমার মন কেমন করবে, মনে রেখো।
তোমার কি মনে আছে? সেখানে কি থাকে
মনে কোনো কিছু? দয়িতার ভালোবাসা, সান্ধ্য আড্ডা, কবিতার
ছন্দমিল মনে থাকে? এই তো সে-রাতে
ফোন বেজে উঠলো, এল ভেসে
যেন বেদনার ছায়াচ্ছন্ন কণ্ঠস্বর, বাক্যহারা
শুনলাম অমল, তোমার
গলার আওয়াজ, মনে হলো। অথচ সে ধ্বনি, হায়,
পর মুহূর্তেই
রমণী-সত্তার ধ্বনি হয়ে যায়। ‘আমরা তো অর্ধনারীশ্বর’,
এই বলে নিজেকে প্রবোধ দিই শুধু
অমল আমাকে তুমি, মনে পড়ে, হেমন্ত সন্ধ্যায়
দিয়েছিলে উপহার
একখানি আধুনিক কবিতার বই-
বইয়ের ‘সময় বড় কম’ নাম দেখে কেন যেন
আমার নিভৃত মর্মমূলে
লেগেছিল টান। তুমি আমি সে সন্ধ্যায়
ড্রইংরুমের স্বল্পালোকে ঘুণাক্ষরে জানতে পারি নি হে বন্ধু
তোমার সময় এত কম।