‘অভিপূর্বক নী-ধাতু অ’-এর কাঁটা – ৯

বাসু পরিচয় করিয়ে দিলেন সুজাতার সঙ্গে প্রমীলার। প্রমীলা সুজাতার কাছে জানতে চান, শুনেছি আপনারা কর্তা-গিন্নি দুজনেই পার্টনারশিপে… আই মীন কৌশিকবাবু কোথায়?

‘ও একটা কাজে বেরিয়েছে। আপনার বক্তব্য আপনি আমাকে বললেই চলবে। যদি এক্সক্লুসিভলি সুকৌশলীর

সঙ্গে পরামর্শ করতে চান, তাহলে আমি বাড়ির ওদিকের উইং-এ আমাদের অফিসে গিয়ে বসি, আপনি মিস্টার বাসুর সঙ্গে কাজ সেরে আমার অফিসে আসবেন বরং।’

প্রমীলা হেসে বললেন, ‘আমি কলকাতায় থাকি না বটে, কিন্তু আপনাদের হক-হদিস আমার জানা। আপনি এ-ঘরেই বসুন মিসেস মিত্র, আমার যা বলার আছে তা দুজনের সামনেই আমি অকপটে বলব।’

সুজাতা বলল, ‘বেশ তো, শুরু করুন তাহলে?’

প্রমীলা তাঁর ভ্যানিটি ব্যাগ খুলে একটি অ্যাকাউন্ট-পেয়ী চেক বার করে বাসুসাহেবের গ্লাসটপ টেবিলে নামিয়ে দিয়ে বললেন : ‘এক নম্বর কাজ : বিবেকের দংশন থেকে আমাকে আপনি মুক্তি দিন।’

বাসু চেকটা তুলে দেখলেন। পাঁচ হাজার টাকার। প্রাপক পি. কে. বাসু, অ্যাটর্নি। চেকের সঙ্গে স্টেপল করা একটি স্বীকৃতিপত্র। রীতিমতো আইনের ভাষায় বলা হয়েছে ওই চেকের প্রাপক তাঁর মক্কেলের তরফ থেকে শ্রীমতী প্রমীলা পাণ্ডেকে হাওড়া আদালতের অমুক নম্বর ফৌজদারী কেস সংক্রান্ত যাবতীয় খেসারতের দাবি থেকে অব্যাহতি দিচ্ছেন।

বাসু বললেন, ‘স্বীকৃতিপত্রে ড্রাফটটা কার? আপনার?’

‘না। আমার আইন-সংক্রান্ত পরামর্শদাতার।’

‘এই যে কাল রললেন, আপনার ব্যবসা ও আইন সংক্রান্ত কাজকর্ম আপনি নিজেই করে থাকেন?’

‘তাই তো করছি, মিস্টার বাসু। নিজেই এসেছি ফয়সালা করতে। কিন্তু আইনের ব্যাপারে আইনজ্ঞের পরামর্শ নিই না, এমন কথা তো আমি বলিনি। আপনি অনুগ্রহ করে প্রাপ্তি-স্বীকারের কাগজখানায় স্বাক্ষর করে দেবেন কি?

‘এখনই তা কেমন করে হবে? মক্কেলের সঙ্গে আগে পরামর্শ করি। টাকাটা তো সেই পাবে, আমি নই।’

‘কেন? পাঁচ হাজার টাকা কি আপনি যথেষ্ট বলে মনে করছেন না?’

‘আমার মনে করার প্রশ্ন তো উঠছে না। ‘অ্যাগ্রীভড-পার্টি’ কী মনে করছে সেটাই বড় কথা। আমি ওর কাছে জেনে আপনাকে জানাব। ও যদি রাজি হয়, তাহলে রসিদটা লোক দিয়ে হোটেল হিন্দুস্থানে পাঠিয়ে দেব। নেক্সট পয়েন্টটা কী? ‘

প্রমীলা বললেন, ‘আমার দ্বিতীয় প্রস্তাবটা হচ্ছে ওই গহনা চুরির তদত্ত। ইতিমধ্যে কতকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা অত্যন্ত দ্রুত-পরম্পরায় ঘটে গেছে। যদিও গহনার প্রায় আধাআধি আমার ও পুষ্পার, তবু আমি সুকৌশলীকে একাজে এককভাবে নিয়োগ করতে চাই। বস্তুত পুষ্পার অজ্ঞাতসারে। সুকৌশলী সাফল্যলাভ করলে পুষ্পা জানতে পারবে। ব্যর্থ হলে আর্থিক লোকসানটা একা আমারই।’

সুজাতা বলে, ‘গহনা চুরির কেসটা আমি মোটামুটি জানি। ইতিমধ্যে দ্রুত ঘটনা-পরম্পরা কী ঘটেছে তাই শুধু বলুন।’

‘তার পূর্বে বলুন, আপনারা এ বিষয়ে সক্রিয় সাহায্য করলে আমাকে কী পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে?’

সুজাতা বলে, ‘দেখুন মিসেস পাণ্ডে। কেসটা আমরা আদৌ গ্রহণ করব কি করব না তা কেস না শুনে বলতে পারছি না। তবে কেস গ্রহণ না করলেও আমরা আপনাকে আমাদের মতামত ও পরামর্শ দেব, ফি নেব না। আর কাজটা যদি গ্রহণ করি, তাহলে কাজের পরিমাণের এবং সাফল্যের উপর ফি-টা নির্ভর করবে। নিশ্চয় সেটা আকাশছোঁয়া হবে না। এই শর্তে আপনি আপনার সমস্যাটা ইচ্ছে করলে জানাতে পারেন। আমরা গ্রহণ করি বা না করি এ বাড়ির বাইরে কথাটা যাবে না।’

‘অল রাইট। শুনুন তাহলে…’

বাধা দিলেন বাসু, ‘জাস্ট এ মিনিট। আমার মনে হয়, তোমরা তোমাদের অফিসে গিয়েই বাকি আলোচনাটুকু কর, সুজাতা, কারণ এ কেসে আমার ক্লায়েন্ট একমাত্র রুবি রায়। তার স্বার্থে আমি অন্য কোন পার্টিকে মন্ত্রগুপ্তির প্রতিশ্রুতি দিতে পারি না।

প্রমীলা উঠে দাঁড়ালেন, বললেন, ‘ফেয়ার এনাফ। আপনি চেকটা নিলেন কি নিলেন না, কতক্ষণের মধ্যে আমি জানতে পারব?’

‘সোমবার ব্যাঙ্ক আওয়ার্স শেষ হবার আগে আমি টেলিফোনে জানাব। আজ শুক্রবার। কাল ইদল-ফেতরের ছুটি, ব্যাঙ্ক বন্ধ। ফলে চেকটা সোমবারের আগে জমা দেওয়া যাবেও না।’

.

সুকৌশলীর অফিস বাসুসাহেবের ইংরেজি U- অক্ষরের মতো বাড়ির অপর প্রান্তে। সুজাতা সেই অফিসে নিয়ে এসে বসালো প্রমীলাকে। জানতে চাইল, তিনি চা কফি কিছু খাবেন কি না। প্রমীলা অস্বীকার করে বললেন, ‘না আমাকে এখনই ফিরে যেতে হবে। কাজের কথাটা তাড়াতাড়ি সেরে নিতে চাই। প্রথমে বলুন, আপনারা আমার কেসটা আদৌ নেবেন কি না?’

সুজাতা বললে, ‘একথার জবাব ওঘরেই দিয়েছি। আমার সিনিয়র পার্টনারকে জিজ্ঞেস না করে সে প্রতিশ্রুতি আপনাকে দিতে পারছি না। আপনি একটু বসুন, আমি খোঁজ নিয়ে দেখি, অফিসে সে কোনও নোট রেখে গেছে কি না, মানে কখন তার অফিসে ফিরে আসার সম্ভাবনা।’

অফিসের স্টাফ বলতে তো একমাত্র বিশে। অথবা হয়তো মামিমাও বলতে পারবেন কথাটা। সুজাতা ওঁকে বসিয়ে ভিতর-বাড়িতে ঢুকতেই দেখা হয়ে গেল কৌশিকের সঙ্গে।

‘কী ব্যাপার, তুমি এখনো বের হওনি?’

‘না। প্রমীলাদেবীর হাঙ্গামাটা শেষ করে বেরুব। প্রথমেই যাব টালিগঞ্জ টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে। তা ওদের ওখানে এগারোটার আগে কেউ আসে না।’

কৌশিককে সঙ্গে নিয়ে সুজাতা বাইরের ঘরে ফিরে এল। প্রমীলার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলল, ‘ঘটনাচক্রে ও এখানে। এখনও বের হয়নি। ফলে এখনই প্রাথমিক কথাবার্তা হতে পারে।

নমস্কারান্তে প্রমীলা আর কৌশিক যে যার আসনে বসলেন।

কৌশিক বললে, ‘আপনাদের গহনা চুরির ব্যাপারটা আমরা মোটামুটি জানি। মানে কাগজে যেটুকু বের হয়েছে আর হাওড়া কোর্ট কেসে যেটুকু প্রকাশিত হয়েছে। আমার মনে যে প্রশ্নগুলি জেগেছে তার জবাবে বরং প্রথমে বলুন : এত দামী অলঙ্কার নিয়ে আপনারা দুজন কেন কলকাতায় এসেছিলেন? এখানে তো কোনও স্যোশাল ফাংশন হওয়ার কথা ছিল না। কোনও পার্টিতে যোগদানের সম্ভাবনাও ছিল না।

প্রমীলা বললেন, ‘এ প্রশ্ন বাসুসাহেবও করেছিলেন। তাঁর ধারণা, এর পিছনে ইনকাম- ট্যাক্সকে ফাঁকি দেবার একটা প্রচেষ্টা ছিল। বাস্তবে তা ছিল না। শুনুন বলি :

প্রমীলা দেবী রাজমাতার আদেশে রাজবাড়ির কিছু মাঙ্গলিকী অলঙ্কার নিয়ে এসেছিলেন। তার মধ্যে প্রধান হচ্ছে ওই ‘রানী মুকুট’। এছাড়াও ছিল একটি মঙ্গলসূত্র। রাজমাতার আদেশ ছিল, এগুলি কালীঘাটের মন্দিরে নিয়ে গিয়ে মায়ের পায়ে ছুঁইয়ে আনতে হবে। এটাই নাকি ওঁদের বংশানুক্রমিক কৌলিক আচার। পরিবারের বড় ছেলের বিবাহ স্থির হলে বিবাহরাত্রে নববধূর মাথায় ওই মাঙ্গলিকী মুকুটখানি পরিয়ে দেওয়া হয়। তার আগে সেটি কালীঘাটের মন্দিরে নিয়ে এসে মায়ের পায়ে ছুঁইয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। জনার্দন একালের ছেলে। ওসব মানে না। সে বলেছিল, ‘গোয়ালিয়রে যে অম্বামায়ের মন্দির আছে সেখানে ছুঁইয়ে আনলেই চলবে। রাজমাতার মন মানেনি। তাঁর নিজের বিবাহের পূর্বে এবং তাঁর শাশুড়ির বিয়ের আগে বন্দুকধারী পাইকবরকন্দাজের হেফাজতে মুকুট গোয়ালিয়র থেকে কালীঘাটে এসেছিল। এবারেও তার ব্যতিক্রম উনি হতে দেবেন না। এদিকে মুশকিল হল এই, রাজমাতা নিশ্চিত নন কোন মেয়েটি পুত্রবধূ হতে চলেছে। পুষ্পা বিবাহিতা কি না এটাই জানা নেই। রাজমাতা মনে মনে আর একটি পাত্রী নির্বাচিত করে রেখেছেন। বিবাহের দিন স্থির হলে ওই মোস্তাক আহমেদ যদি বাগড়া দেয়— তাহলে রাজমাতা শেষ চেষ্টা করবেন, তাঁর মনোনীতা পাত্রীটিকে ঘরে আনবার। মোটকথা, পুষ্পা বিধর্মীর বিবাহিতা কি না জানা না থাকায় দায়িত্বটা দিয়েছিলেন প্রমীলা পাণ্ডেকে। ফলে প্রমীলার দৃষ্টিভঙ্গিতে চুরি যাওয়া ওই মুকুটটা তার গচ্ছিত ধন। দ্বিতীয় কথা, ওরা দুই বান্ধবী মুকুটটা নিয়ে কলকাতা আসছে জেনে জনার্দন তার ভাবী পত্নীকে একটা ছোট লোডেড রিভলভার দেয়। অত্যন্ত ছোট। মুঠির মধ্যে লুকিয়ে ফেলা যায়। প্লেনে হাতব্যাগে রিভলভার নিয়ে উঠতে দেয় না, সিকিউরিটিতে আটকায়। সেজন্য মুকুট আর অন্যান্য গহনা রাখা হল প্রমীলার একটা সুটকেসে। তারই একটা সিক্রেট ড্রয়ারে। সিঙ্গাপুরের ফ্রি-মার্কেটে কেনা। তার অ্যালয়-স্টিল গা-চাবি ‘ফুলপ্রুফ। কিছুতেই অন্য চাবিতে খোলা যায় না। এজন্য ওরা নিশ্চিন্ত মনে গাড়ির ডিকিতে স্যুটকেসটা রেখে পুষ্পার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল।

কৌশিক জানতে চায়, ‘আমার কয়েকটা প্রশ্নের জবাব দিন। এক নম্বর প্রশ্ন : দমদম- এয়ারপোর্টে বেল্ট-কেরিয়ার থেকে স্যুটকেসটা যখন ডেলিভারি নেওয়া হয়, তখন আপনারা দুজনেই কি সেখানে উপস্থিত ছিলেন? স্যুটকেসটা মুহূর্তের জন্য আপনাদের চোখের আড়ালে যায়নি? আপনাদের দুজনের সজাগ উপস্থিতিতেই সেটা দমদম এয়ারপোর্টে কন্টেসা গাড়িতে তোলা হয়।

‘হ্যাঁ তাই হয়েছিল। এবং তারপর ঐ স্যুটকেসটা আর কন্টেসা গাড়ির ডিকি থেকে নামানোই হয়নি। ওর ভিতর আমাদের জামাকাপড় বা নিত্য-ব্যবহার্য কোন কিছুই রাখা হয়নি। তাই ওটা খোলার প্রয়োজনও হয়নি, গাড়ি থেকে নামানোও হয়নি।

‘স্যুটকেসে মুকুট আর গহনাগুলো গোয়ালিয়রে কে সাজিয়ে তোলেন? কে তালাবদ্ধ করেন? আপনি না পুষ্পা দেবী?’

‘পুষ্পার উপস্থিতিতে আমিই সাজিয়ে রাখি। তালাবন্ধ করি। পুষ্পা শুধু ঐ স্যুটকেসের সিক্রেট-ড্রয়ারে রিভলভারটা ভরে দিয়েছিল।’

‘স্যুটকেসের ডুপ্লিকেট চাবি নিশ্চয় আছে। সেটা কোথায়?’

‘গোয়ালিয়রে আমার স্টিল আলমারিতে।’

‘ঘটনার দিন— আই মিন, বুধবার সাতাশে, স্যুটকেসটা কন্টেসা গাড়িতে রেখে যখন আপনারা দুই বান্ধবী সকালে ট্যাক্সি নিয়ে সারদামঠে গেলেন তখন কোন চাবিটা কার কাছে ছিল? নাকি দুটোই কোন একজনের কাছে ছিল?’

প্রমীলার ঠোঁটের প্রান্তে একটা হাসির রেখা দেখা দিল। বললেন, ‘স্যুটকেসের চাবিটা ছিল আমার ব্যাগে আর কন্টেসা গাড়ির ডিকির চাবি ছিল পুষ্পার কাছে। আপনি ঠিকই আন্দাজ করেছেন, আমরা দুজনে ষড়যন্ত্র করে একত্রে কাজ না করলে…’

বাধা দিয়ে সুজাতা বলে ওঠে, ‘না, না! এসব কী বলছেন? ও নিশ্চয় সেকথা মনে করে…

এবার বাধা দিল কৌশিক তার স্ত্রীকে। বলল, ‘না, তুমিই ভুল বলছ সুজাতা। প্রমীলা দেবী ঠিকই আন্দাজ করেছেন। য়ু সি— আমার কাছে এটা একটা অ্যাকাডেমিক প্রশ্ন, ব্যক্তিত্ব- নিরপেক্ষ! ‘ক’-য়ের কাছে স্যুটকেসের চাবি, ‘খ’-য়ের কাছে কন্টেসাডিকির। দুটোই ‘ফুল প্রুফ। ফলে একটা সল্যুশান ‘ক+খ’। এক্ষেত্রে তা যখন মিলছে না তখন আমার প্রশ্ন : ‘গ’ কি একটা সমাধান?’

‘গ! গ কে?’ জানতে চাইলেন প্রমীলা।

‘আমি শুনেছি, গোয়ালিয়র থেকে আপনারা প্লেনে তিনজন এসেছিলেন। তৃতীয় ব্যক্তি মহিলা। আপনাদের দুজনের কারও একজনের পরিচারিকা। তার কী নাম, কার পরিচারিকা, বয়স কত, কতদিন চাকরি করছে, কতটা বিশ্বাসী?’

‘হ্যাঁ। ঠিকই শুনেছেন। আমারই মেডসার্ভেন্ট। রুক্মিণী। বয়স আমার চেয়ে কম। পঁচিশ- ছাব্বিশ। বালবিধবা। তিনকূলে কেউ নেই। আমার কাছে আছে প্রায় দশবছর। ওর বিয়ে হয়েছিল দশবছর বয়সে। বিহারে, ছাপড়া জেলায়। অত্যন্ত বিশ্বাসী। তার জিম্মায় ঘরদোর ফেলে রেখে আমি দু-তিন মাসের জন্য ফরেন ট্যুরেও গেছি। কোনদিন কোন কিছু খোয়া যায়নি।’

‘আমার আর একটা জিজ্ঞাস্য আছে মিসেস পাণ্ডে। চুরি যাওয়া মালের লিস্টটা আমি খুঁটিয়ে দেখেছি। তাতে ঐ জনার্দন গায়কোয়াড়ের শেষমুহূর্তে দেওয়া রিভলভারটার উল্লেখ নেই। সেটা বর্তমানে কার কাছে আছে? আপনার না পুষ্পাদেবীর? আর কেন সেটা চুরি গেল না?’

প্রমীলা বললেন, ‘জনার্দন ওটা দিয়েছিল পুষ্পাকে। তাই ওটা পুষ্পার কাছেই আছে। আর কেন চুরি যায়নি? যেহেতু ওটা লুকানো ছিল স্যুটকেসের সিক্রেট ফলস্বটমে। মাত্র তিন-ইঞ্চি তার থিকনেস। নাহলে মুকুটটাও আমরা ওখানে লুকিয়ে ফেলতাম।’

‘স্যুটকেসটা নিশ্চয় হোটেল হিন্দুস্থানে আছে? পুলিশে তার থেকে লেটেস্ট ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেয়নি?’

‘চেষ্টা করেছিল। পায়নি। চোর স্যুটকেসটা বন্ধ করে রুমাল দিয়ে ভাল করে মুছে দিয়েছিল। আর, ও হ্যাঁ, সেটা আমার হোটেলেই আছে। আপনি দেখতে চান?

‘হ্যাঁ, যাব দেখতে।’

‘কখন?’

‘বিকালের দিকে। টেলিফোন করে যাব বরং। বিকালে কি আপনি হোটেলে থাকবেন? অ্যারাউন্ড চারটে?’

‘হ্যাঁ, থাকব। আচ্ছা চলি, নমস্কার। এটাই আপাতত একটা রিটেইনার হিসাবে রাখুন বরং একটা হাজার টাকার চেক লিখে দিলেন উনি।

সুজাতা উঠে গেল রসিদ বইটা আনতে।