‘অভিপূর্বক নী-ধাতু অ’-এর কাঁটা – ৮

উনত্রিশে শুক্রবার।

সকালে প্রাতঃভ্রমণ ওঁর নিত্যকর্মপদ্ধতির অন্তর্গত। সাত রাজ্য সেরে সূর্যোদয়ের সময়ে ডেরায় প্রত্যাবর্তন করে দেখলেন ইতিমধ্যে সুজাতা-কৌশিক ফিরে এসেছে। ওঁরা তিনজনে লনে বসেছিলেন। বিশু এক-এক পেয়ালা চা বানিয়ে দিয়েছে।

বাসুসাহেবও এসে বসলেন। বললেন, ‘কোথায় গিয়েছিলে তোমরা? পাটনা? ওরে বিশে। আমাকেও এক পেয়ালা দে।’

কৌশিক বলে, ‘না, মামু! পাটনা নয়, গোয়ালিয়র। আমরা বোধহয় একই চক্করে পাক খাচ্ছি অথচ মামা-ভাগ্নে সে খবর জানি না।’

‘কী রকম? গোয়ালিয়রে কোথায়? কেন?’

‘মামিমার কাছে এতক্ষণ বসে আপনার কপর্দকহীন গাড়ির মালিক মক্কেলের কাণ্ড শুনছিলাম। তাই বলছি, আপনার কেসের সঙ্গে আমাদের তদন্তের একটা নিগূঢ় যোগাযোগ রয়েছে মনে হয়, আমরা দুজনে গোয়ালিয়র গেছিলাম রাজমাতার গোপন আহ্বানে। শুনুন কাণ্ড :

‘সুকৌশলী’র দপ্তরে দেখা করতে আসেন একজন সম্ভ্রান্ত মক্কেল। আত্মপরিচয় দেন গোয়ালিয়রের একজন পরাক্রমশালী প্রাক্তন জমিদারের— ছোটখাটো রাজাই ছিলেন তিনি- দেওয়ানপুত্র হিসাবে। রাজাও নেই, দেওয়ানিও নেই- কিন্তু বৈভব আছে, খানদান আছে। রাজমাতা এই দূতের মাধ্যমে সুকৌশলীর গোয়েন্দা-দম্পতিকে গোয়ালিয়রে আমন্ত্রণ করে পাঠিয়েছেন। হেতুটা কী, তদন্তটা কী জাতীয়, তা দূত জানেন না। আন্দাজ করছেন : অত্যন্ত গোপনীয়। দু-তিনদিনের জন্য ওঁদের দুজনকে গোয়ালিয়রে গিয়ে গায়কোয়াড়-প্রাসাদে আতিথ্য গ্রহণ করতে হবে। ওঁদের ফি তিনি অগ্রিম মিটিয়ে দিতে প্রস্তুত।

বাসু সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে বলেন, ‘গায়কোয়াড়-প্রাসাদ?’

‘আজ্ঞে হ্যাঁ। আমাদের ডেকে পাঠিয়েছিলেন জনার্দন গায়কোয়াড়ের জননী।’

তিনি তোমাদের পাত্তা পেলেন কী করে?’

‘শুনুন সেকথা। আমরা দুজনে ক্রমে সর্বভারতীয় পরিচিতি লাভ করে বসেছি। ভি.আই.পি. কোটায় এ. সি. কোচে দুজনের টিকিট কেটে নিয়ে এলেন রাজমাতার দূত। অত্যন্ত দ্রুত কাজটা সারতে হবে। কারণ রাজমাতার ইচ্ছা— পুত্রের অনুপস্থিতির ভিতরেই যেন ‘সুকৌশলী’ গোয়ালিয়রে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। পুত্র জনার্দন এসেছেন কলকাতায়, তাঁর হবু শাশুড়ির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। কৌশিক ও সুজাতা রাজবাড়ির অতিথি হল। রাজকীয় আপ্যায়নের ত্রুটি নেই, তবে দেওয়ানপুত্র ছাড়া ওদের প্রকৃত পরিচয় আর কেউ জানলো না। এমনকি রাজমাতার খাস পরিচারিকা পর্যন্ত নয়।

রুদ্ধদ্বারকক্ষে রাজমাতা জানালেন যে, তাঁর একমাত্র পুত্র জনার্দন একটি সিনেমা আর্টিস্টকে বিবাহ করতে চলেছে। তাতে তাঁর আপত্তি নেই, অনেক অনেক খানদানী ঘরে এখন ফিল্ম স্টার পুত্রবধূরূপে প্রবেশলাভ করেছে, করছে। কিন্তু উনি গোপনে সংবাদ পেয়েছেন যে, তাঁর একমাত্র পুত্র যে অভিনেত্রীটিকে বিবাহ করতে যাচ্ছে, সে অন্যপূর্বা এবং তাদের পূর্ববর্তী বিবাহের বিচ্ছেদ নাকি হয়নি। পুত্রকে তিনি সে কথা বলেছেন— জনার্দন বিশ্বাস করেননি। মাকে পাত্তা দেননি। ক্ষুব্ধ রাজমাতা তখন বোম্বাইয়ের একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সি বা গোয়েন্দা সংস্থাকে নিয়োগ করেন। তাঁরা সন্ধান করে জানিয়েছেন যে, আশঙ্কাটি হয়তো অমূলক নয়। কিন্তু অভিনেত্রীর পূর্বতন স্বামী— বস্তুত হয়তো বর্তমান খসম্ যদি ‘তালাক’ না দিয়ে থাকে…

রাজমাতাকে বাধা দিয়ে সুজাতা বলে উঠেছিল : ‘তালাক’?

‘হ্যাঁ বেটি। ‘তালাক’। কারণ ওই লোকটা মুসলমান। এবং শরিয়তী আইনে ওদের সাদি হয়েছিল বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কৌশিক জানতে চায়, ‘মা, আপনি তো বোম্বাইয়ের একটি সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করাচ্ছেন, তাহলে আমাদের আবার ডেকে পাঠালেন কেন? আর এই গোয়ালিয়রে বসে আপনি আমাদের পাত্তাই বা পেলেন কেমন করে?’

রাজমাতা ওদের বুঝিয়ে বললেন যে, ওদের নাম সেই বোম্বাইয়ের গোয়েন্দা সংস্থাই সাজেস্ট করেছেন। কারণ ওই মুসলমান লোকটি বছরখানেক ধরে কলকাতার স্থায়ী বাসিন্দা। জনার্দনের হবু পত্নীর সঙ্গে তার আদৌ দেখা-সাক্ষাৎ বা আলাপ হয় না। এক্ষেত্রে বাকি তদন্তটা কলকাতার কোনও সুপ্রতিষ্ঠিত গোয়েন্দা সংস্থা যদি ওদের সঙ্গে যৌথভাবে নিষ্পন্ন করে তবে সত্য উদ্ঘাটনে সুবিধা হতে পারে।

মোট কথা, সুকৌশলী দায়িত্বটা গ্রহণ করেছে। মোটা বায়নানামা নিয়ে ফিরে এসেছে। সাতদিনের মধ্যে ফলাফল জানানোর কথা : পুষ্পাদেবী অবিবাহিতা অথবা অন্যপূর্বা।

বাসু বললেন, ‘পুষ্পার একটি ঘনিষ্ঠ বান্ধবী আছে…’

বাধা দিয়ে সুজাতা বলে, ‘জানি। প্রমীলা পাণ্ডে। ঘনিষ্ঠ বান্ধবীও বটে, আবার প্রতিদ্বন্দ্বিনীও বটে।’

‘প্রতিদ্বন্দ্বিনী! মানে? প্রমীলা তো বিবাহিতা? আমার মনে হল, বয়সেও জনার্দনের চেয়ে বড়।’

‘দুটোই সত্যি কথা। জনার্দন প্রায় রাজপুত্র। অগাধ ঐশ্বর্যের মালিক। তাই জনার্দনকে বাগে আনতে পারলে প্রমীলা পাণ্ডে ডিভোর্সের মামলা দায়ের করবে তার বর্তমান স্বামীর বিরুদ্ধে। সে প্রকাশ্যেই অন্য স্ত্রীলোকের সঙ্গে বসবাস করে, ফলে প্রমীলাকে বিবাহবিচ্ছেদে বেগ পেতে হবে না। কিন্তু তার আগে পুষ্পার সঙ্গে জনার্দনের প্রেমটা খতম হওয়া চাই।’

বাসু বললেন, ‘হয়তো তোমাদের অনুমান ঠিক। কারণ প্রমীলা যখন আমার সঙ্গে দেখা করতে আসে তখন বলেছিল, তার তিনটি উদ্দেশ্য আছে। প্রথমটি আমার মক্কেলকে কিছু টাকা দিয়ে ‘খেসারত-মামলা’ আপসে মিটিয়ে নেওয়া। দ্বিতীয়টি সুকৌশলীর মাধ্যমে গায়কোয়াড় রাজবংশের একটি মাঙ্গলিক ‘রাণী-মুকুট’ উদ্ধার করা। এটা যদি প্রমীলা উদ্ধার করে রাজমাতাকে উপহার দিতে পারে তবে তাকে পুত্রবধূ হিসাবে মেনে নিতে হয়তো জনার্দন- জননীর আপত্তি থাকবে না। বিশেষ যদি প্রমাণিত হয় যে, তার প্রতিদ্বন্দ্বিনী পুষ্পা একজন মুসলমানের বউ। প্রমীলা স্বীকারও করেছিল : তৃতীয় প্রস্তাবটা ডেলিকেট। মনে হয়, সেটা ওই পুষ্পার জীবনের গোপন কথার সন্ধান : যা তোমাদের খোঁজ করে বার করতে বলেছেন গায়কোয়াড়-রাজমাতা। যা হোক পুষ্পার ‘হলেও হতে পারে’ প্রথম স্বামীর নাম-ধাম ফটো পেয়েছ?’

কৌশিক সুটকেশ খুলে খান দশেক হাফ-সাইজ রঙিন ফটো বার করে দেখায়। সবই বোম্বাইয়ের বিভিন্ন স্টুডিওতে তোলা ছবি- পুষ্পা যেসব ছবিতে অভিনয় করেছে। ফিল্মের কাটিং নয়, ‘ছবি তোলার ছবি’- যাতে কোথাও ক্যামেরাম্যান, কোথাও মেকআপ-ম্যান বা অন্যান্য টেকনিশিয়ানদের দেখা যাচ্ছে, অভিনেতা, অভিনেত্রী বা পরিচালকের সঙ্গে। তাদের ভিতর বিশেষ একটি সুপুরুষকে নানা কাজে ব্যস্ত দেখা যাচ্ছে। প্রতিটি আলোকচিত্রেই ঐ ব্যক্তিবিশেষের মাথার উপর ঢেরা-চিহ্ন দেওয়া।

বাসু বলেন, ‘রীতিমতো হ্যান্ডসাম চেহারা। বয়স ত্রিশ থেকে তেত্রিশ। হাইট একশ পঁচাত্তর থেকে আশি সে.মি.। ওজন : অ্যারাউন্ড সত্তর কে.জি.। কী নাম?

‘মোস্তাক আহমেদ।’

‘কী? মোস্তাক আহমেদ! আই সী।’

‘নামটা আগে শুনেছেন, মনে হচ্ছে।

‘তা শুনেছি। বর্তমানে সে পুষ্পার পাবলিসিটি এজেন্টের কলকাতা অফিসে বোধহয় হ্যান্ডিম্যান হিসাবে চাকরি করে। ওই লোকটাই মোটেল বুক করেছিল, কন্টেসা গাড়িটা ভাড়া করেছিল। তাছাড়া প্রমীলা পাণ্ডে বলেছিল, ওই মোস্তাক আহমেদ এককালে ছিল পুষ্পার কম্বাইন্ড-হ্যান্ড। লোকটার রান্নার হাত নাকি দারুণ।’

কৌশিক বলে, ‘না মামু, সমস্যাটা আরও জটিল। বম্বের যে ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সি তদন্ত করছিল তারা অনেক তথ্য সরবরাহ করেছে। এক নম্বর, হৃষীকেশ মুখার্জির ছবিতে সাইড রোল পাবার আগে পুষ্পা থাকত আহমেদের এক-কামরা খুপরিতে। সে আমলে আহমেদই ওর খাওয়া- পরার যোগান দিয়েছে। তারপর পুষ্পা যখন একটু নাম করল— দু-তিনটি ছবিতে কন্ট্রাক্ট পেল, তখন পুষ্পাও আহমেদকে খাইয়েছে, পরিয়েছে। পুষ্পা যখন স্টারলেট, তখন আহমেদ তার ড্রাইভার-কাম-কুক। আর পুষ্পা যখন পুরোপুরি স্টার, তখন আহমেদকে পাঠিয়ে দেওয়া হল কলকাতার অফিসে। আহমেদের হাতে ঠিক কী কী তাস আছে, তা কেউ জানে না। কারও মতে ওরা শরিয়তী কানুনে বিবাহিত। সেটাই ওর রঙের টেক্কা। সেক্ষেত্রে আহমেদ তালাক না দিলে জনার্দন গায়কোয়াড় তাকে বিবাহ করতে পারেন না। হয়তো সে একজন মোল্লা আর বিবাহরাত্রের কিছু সাক্ষীকে খাড়া করে পুষ্পার পুনর্বিবাহে বাগড়া দেবে। টাকা পেলে তবে তালাক দেবে।’

বাসু বলেন, আইনের আরও একটি দিক আছে, কৌশিক। আহমেদ দাবি করতে পারে, পুষ্পার যে সম্পত্তি আজ স্বনামে আছে তার আংশিক ভাগিদার সে নিজে। কারণ পুষ্পার প্রথম অর্থনৈতিক সংগ্রামে সে একা হাতে টাকা-পয়সা জুগিয়ে গেছে। এটা সে সাক্ষীসাবুদ দিয়ে সহজেই প্রমাণ করবে।’

‘না, মামু, আমার মনে হয় ওর এক্তিয়ারে একটা মারাত্মক ডকুমেন্ট আছে, সম্ভবত শরিয়তী- বিবাহের প্রমাণ। পুষ্পার সঙ্গে জনার্দন গায়কোয়াড়ের বিবাহ অফিশিয়ালি ঘোষিত হলেই মোস্তাক আহমেদ দুপক্ষকেই উকিলের নোটিস দেবে। বিবাহ ক্যানসেলের আর্জি জানাবে। বলবে যে, পুষ্পা তার বিবাহিতা স্ত্রী। গোপনে মোটারকম টাকা না পেলে সে তালাক দেবে না।

বিশে ওঁদের ডাকতে এল : ‘ব্রেকফাস্ট রেডি’।

ব্রেকফাস্ট টেবিলে একই আলোচনা এগিয়ে চলে। মোস্তাক আহমেদ থাকে পার্ক সার্কাস অঞ্চলে। ঠিকানা পাওয়া গেছে। বাড়িতে তার ফোন নেই। তবে বেলা এগারোটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সে কাজ করে টালিগঞ্জের টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে। সেখানে টেলিফোনে আহমেদকে পাওয়া যেতে পারে, যদি সে কাছে-পিঠে থাকে। বিভিন্ন প্রোডাকশন ইউনিটে সে হ্যান্ডিম্যান হিসাবে কাজ করে। বিভিন্ন গাড়ি চালায়। তার অনেকটাই ছোটাছুটির কাজ!

এই সময় টেলিফোন বেজে উঠল। সকাল তখন সাড়ে সাতটা।

ফোন করেছেন প্রমীলা পাণ্ডে। বাসু আত্মঘোষণা করে বলেন, ‘বলুন, মিসেস পাণ্ডে?’

‘কী বলব? আমার আর কিছু বলার মুখ নেই। কাল যা বিশ্রী কাণ্ডটা হল।’

‘কালকের বিশ্রী কাণ্ড তো অতীত কথা, মিসেস পাণ্ডে। আজকে নিশ্চয় নতুন করে কিছু বলতে চান? তাই না? তাহলে বলে ফেলুন।’

‘কাল জনার্দন আমাকে প্রস্তাবটা পেশ করার সুযোগই দিল না। ও বড্ড একরোখা। যা বুঝবে, তাই করবে। আপনাকে আগেই বলেছি : আমি কিছু বিবেকের দংশনে পীড়িত হচ্ছি। মনে হচ্ছে মেয়েটিকে কিছু দিতে পারলে মনটা শান্ত হবে। আমি নিঃসন্দেহ : বিচারক ঠিকই রায় দিয়েছেন। রুবি রায় ওই গহনা চুরির অংশীদাব নয়। হয়তো জনার্দনের যুক্তিও অকাট্য — মানে সেজন্য আমার কোনও ‘খেসারত’ দেবার কথা ওঠে না। তা যে যাই বলুক, আমি বিবেকের দংশন থেকে মুক্তি পেতে চাই। আপনি কি আমাকে সে সুযোগ দেবেন?

‘আপনি প্রকারান্তরে বলতে চান যে, আমার মক্কেলকে কিছু আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে চান, এই তো? তা আদালতের বাইরে সমস্যার সমাধানে আমার আপত্তি কী?

‘আমি তাহলে কখন আপনার চেম্বারে আসব?’

‘এখনই আসতে পারেন, আপনার যদি অসুবিধা না থাকে।’

‘আজ্ঞে না। অসুবিধা নেই। তাহলে এখনি আসছি। বাই দা ওয়ে… আপনার বাড়ির অপরাংশে যাঁরা থাকেন— আই মীন ‘সুকৌশলী’ দম্পতি— ওঁরা কি কলকাতায় ফিরে এসেছেন?’

‘ওঁরা কি কলকাতার বাইরে গিয়েছিলেন?’

‘আজ্ঞে হ্যাঁ। দিনকয়েক আগে টেলিফোন করে তাই তো শুনেছিলাম। আজ সকালে ওঁদের ফিরে আসার কথা।

ঠিক আছে। আমি খবর নিচ্ছি। ওরা ফিরে এসে থাকলে ওরাও আপনার জন্য অপেক্ষা করবে। কটায় আসছেন….. ও কে।’

এদিকে ফিরে বললেন, ‘উনি আসছেন নয়টার সময়। তোমাদের দুজনের মধ্যে অন্তত একজন থেকো। সুজাতাই থাকুক। কৌশিক তুমি বরং আমার গাড়িটা নিয়ে বার হও। কিছু তদন্ত দরকার।’

বাসু ওকে বুঝিয়ে দিলেন—

এক নম্বর : মোস্তাক আহমেদ— টালিগঞ্জ টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে কাজ করে। কিন্তু সেখানে কাজকর্ম সচরাচর একটু বেলায় শুরু হয়। এত সকালে সব ভোঁ-ভাঁ। দু-নম্বর : প্রসেনজিতের মাধ্যমে হাওড়ার রুবি রায় কেসের সাক্ষী সহদেব কর্মকারের হদিস। পুলিশ-রেকর্ডে সেটা আছে। তার ঠিকানা…. কোথায় কাজ করে, কী রোজগার; এবং ইতিপূর্বে পুলিশ কেসে সাক্ষী দিয়েছে কিনা। লোকটা যেভাবে সাক্ষী দিচ্ছিল তাতে স্বতই মনে হয় সে প্রফেশনাল সাক্ষীদেনেবালা। তিন নম্বর : রেন্ট-আ-কার এজেন্সির মাধ্যমে জানতে হবে তাদের ড্রাইভার রামলগনের অতীত ও বর্তমান কথা। হাওড়া কেসের পরে এই তিনজনের মধ্যে কারও জীবনযাত্রায় কি কোনও উল্লেখজনক পরিবর্তন হয়েছে? লটারিতে লাখ টাকা পেলে সচরাচর যেমন হয়ে থাকে।