অন্য ভ্ৰমণ
ঈষৎ ধারালো রোদে কুমীরের ডিম খোঁজে
মানুষ-শিশুরা
খাঁড়িতে জোয়ার
সারি সারি কুর্মকায় ম্যানগ্রোভ ঝোপে
ছলাৎ হুলাৎ করে ঢেউ
অদূরে অরণ্যভূমি প্রত্যক্ষদশীর মতো স্থির
পাডোক গাছের শীর্ষে টিট্রিভের মন-কাড়া ডাক
তারই মধ্যে বেজে ওঠে স্টিমারের ভোঁ।
জাহাজ ঘাটার থেকে বিশ পা বাড়ালে
আবার বৃক্ষের দেশ, আবার নির্জন
বালিয়াড়ি ভেঙে ভেঙে হেঁটে যাও
ভাঙা শঙ্খ, ঝিনুক, কোরাল
পান্না রং জলে ঘোরে চুনী-রঙা মাছ
পাথরের পিঠে ধার, এখানে বসে না।
যদিও বাতাস নেই, তবুও চলায় ক্লান্তি নেই
যেন কেউ ডাকে
যেন কেউ বসে আছে বাঁকের আড়ালে—
ছিল
তীর ও জলের সীমা ঘেঁষে শুয়ে ছিল এক
পা-বাঁধা হরিণী
তখনো সামান্য প্রাণ, তখনো চোখের মধ্যে দ্যুতি
কাছে যাই
চার চক্ষু বিস্ময়ের পাল্লা দেয়
কে ওখানে, কেন ওকে, কোন অপরাধে?
বুকে পড়ে হাত বাড়াতেই
হামলে আসে ঢেউ
প্রতিটি পরের ঢেউ আগের ঢেউকে দীন করে
তটভূমি দূরে সরে যায়
জুতো না ভিজিয়ে আমি পিছু হটে
এবং ক্রমশ পিছু হটে, চেয়ে থাকি
জলের বিরাট জিভ হরিণীকে নিয়ে যায়
এবং অদৃশ্য করে নেয়!
আর একটু আগেও যদি নিত
তা হলে এ ভ্ৰমণকারীর নিঃসঙ্গতা
আরও একটু বিধুর হতো না!