চৈত্রের আতশি রোদে দিনভর হেঁটে হেঁটে সর্বস্ব খুইয়ে
কায়ক্লেশে পৌঁছে যাই ভুতুড়ে বাড়িতে। ভয়ে চুল
খাড়া, যেন কাটা ধান গাছের তিরিক্ষি গোড়া; ভুল
ক’রে এসে গেছি, তাই মাথাটা নুইয়ে
ব’সে থাকি আরশোলা ইঁদুর এবং চামচিকে, বাদুড়ের
আস্তানায়। এভাবেই ঢের
ভুল ক’রে গেছি, যাচ্ছি ক্রমাগত; এখন কোথায়
যাব এই ঘুরঘুট্রি অন্ধকারে? হায়, এখানেও থাকা দায়।
প্রায় জেতা খেলা
সামান্য ভুলের জন্যে হেরে গেছি ভর সন্ধ্যেবেলা
আনাড়ির ধরনে বস্তুত। বার বার।
শক্রদের করেছি নিবিড় আলিঙ্গন
মিত্র বিবেচনা ক’রে; বিভ্রমের দোলাচলে মৈত্রীর বন্ধন
বেবাক ফেলেছি ছিঁড়ে। নষ্ট যারা, তুখোড় নচ্ছার,
তাদের গলায় মালা দিয়েছি পরিয়ে ঘুরে ফিরে
ঢাক-ঢোল, পেটানোর মাঝে,
হেলাভরে ঈগলের চূড়া ছেড়ে ভীষণ কলহপ্রিয় বায়সের নীড়ে
খুঁজেছি আশ্রয়, এরকম শত কাজে
ভ্রান্তির পেরেক বিদ্ধ। যদি মগ্ন হই সংশোধনে,
তবে কি ধীমান সজ্জনেরা আমাকে দেবেন দীক্ষা নতুন বোধনে?
কুকুর, বেড়াল কিংবা হাঁস, মুরগি, কবুতর- কিছুই পুষি না;
আমার আরাধ্য সেই কবে থেকে ত্র্যাপোলের বাণী।
টেবিল ল্যাম্পের নিচে কত রাত সাজিয়েছি অনেক হরফ
নিদ্রাহীন, ভোরবেলা দেখি ভুল শব্দ ভেংচি কাটে;
কবিতার গায়ে শুধু বিকৃত, বেঢপ সাজ; হাত-পা বরফ
হ’য়ে যায়। যে তন্বীকে অক্ষরবৃত্তের ছাঁচে এনে শূন্য খাটে
সযত্বে বসাই, সে নিমেষে উগ্রচন্ডী স্তনের রাক্ষসী হয়;
বড় রকমের ভুল হ’য়ে গেছে কোথাও নিশ্চয়।
দেখ, দেখ, এ বয়েসে দেচ্ছি এ কেমন লাফ;
আগুনে, অথই জলে যেখানেই পড়ি, সাফ সাফ
ব’লে দিই, অনুশোচনার
কোন গান ইনিয়ে-বিনিয়ে আমি গাইবো না আর।
১৮।৩।৯১