অনারেবল সমারসেট বাটলার ও মি. পিটার বারোজ
১৮০০ সালে কিলকেনি ফ্রেল্যান্ড নামক স্থানের নিকটবর্তী এক উন্মুক্ত প্রান্তরে পিস্তল নিয়ে দ্বন্দ্বযুদ্ধে নামলেন দুটি ভদ্রলোক। ওই ভদ্রলোক দুটির নাম অনারেবল সমারসেট বাটলার ও মি. পিটার বারোজ। শেষোক্ত ব্যক্তি ছিলেন ব্যারিস্টার। তবে বাটলার সাহেবের সঙ্গে বিরোধ মেটাতে তিনি আদালতের আশ্রয় না-নিয়ে পিস্তলের সাহায্য গ্রহণ করেছিলেন–অতএব দ্বন্দ্বযুদ্ধ। মধ্যস্থের নির্দেশ পাওয়ামাত্রই যোদ্ধাদের পিস্তল গর্জে উঠল। বারোজ সাহেব ধপাস করে মাটিতে পড়ে গেলেন এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী বাটলার অক্ষত দেহ নিয়ে স্থান ত্যাগ করলেন অতি দ্রুত বেগে।
একজন চিকিৎসক তাড়াতাড়ি ছুটে এসে ধরাশায়ী বারোজকে পরীক্ষা করে বললেন আহত ব্যক্তির মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী, কয়েক মিনিটের মধ্যেই বহির্গত হবে প্রাণবায়ু। কয়েক মিনিট তো দূরের কথা, প্রায় এক ঘণ্টা ধরে আহত বারোজ আর্তনাদ করলেন, তবু অনিবার্য মৃত্যুর কোনো লক্ষণই তার দেহে দেখা দিল না। বিস্মিত চিকিৎসক আবার ভালো করে পরীক্ষা শুরু করলেন এবং মরণোন্মুখ বারোজ সাহেবের ওয়েস্টকোটের পকেট থেকে একগাদা বাদামের সঙ্গে মারাত্মক গুলিটাকেও বার করে ফেললেন। চিকিৎসক বুঝলেন পকেটস্থ গাদা গাদা বাদাম আর একটি রৌপ্যমুদ্রার সংঘর্ষে পিস্তলের গুলির শক্তি কমে গিয়েছিল–বুলেট সজোরে আঘাত করে বারোজকে ফেলে দিয়েছিল বটে, কিন্তু বাদাম আর রৌপ্যমুদ্রার কাঠিন্য ভেদ করে বারোজকে জখম করতে পারেনি। বারোজ যখন চিকিৎসকের কাছে সমস্ত বৃত্তান্ত শুনলেন এবং জানলেন এখন আর তিনি মরছেন না, তখন ভারি আশ্চর্য হয়ে তিনি আর্তনাদ থামিয়ে ফেললেন এবং এক লাফে ভূমিশয্যা ত্যাগ করে উঠে দাঁড়ালেন। সঙ্গেসঙ্গে তাঁর কর্ণকুহরে প্রবেশ করল নিকটবর্তী চিকিৎসক ও মধ্যস্থের প্রবল অট্টহাসি। মি. পিটার বারোজের কর্ণমূল হল রক্তবর্ণ, চটপট পা চালিয়ে তিনি অকুস্থল ছেড়ে প্রস্থান করলেন দ্রুত বেগে।