আমরা যদি ঈশ্বর থেকে অবিচ্ছিন্ন এবং তাঁর সঙ্গে সর্বদাই একসত্তা হই, তাহলে আমাদের ব্যক্তি-স্বাতন্ত্র্য বলে কি কিছুই নেই? হ্যাঁ আছে; তা হল ঈশ্বর। আমাদের ব্যক্তিসত্তা হল ঈশ্বর। তুমি এখন যা, সেটা যথার্থ ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য নয়। সে এক সত্যের দিকে তুমি এগিয়ে চলেছ। স্বাতন্ত্র্য কথাটার অর্থ হল যাকে ভাগ করা যায় না। আমরা এখন যে অবস্থায় আছি, তাকে কেমন করে স্বাতন্ত্র্যের অবস্থা বলবে? এখন এক ঘণ্টা তুমি এক-রকম চিন্তা করছ, আবার পরের ঘণ্টায় অন্যরকম এবং দু-ঘণ্টা পরে আর এক-রকম। স্বাতন্ত্র্য হল তাই, যা অপরিবর্তনীয়। বর্তমান অবস্থা চিরকাল বজায় থাকলে ভয়ঙ্কর বিপজ্জনক ব্যাপার হবে, তাহলে চোর চিরকাল চোরই থেকে যাবে, বদমাশ চিরকাল থাকবে বদমাশ। শিশু অবস্থায় যে মরবে, তাকে চিরদিন শিশুই থাকতে হবে। প্রকৃত স্বাতন্ত্র্য হল তাই, যার কখনও পরিবর্তন হয় না এবং কখনও হবে না; এবং তা হল আমাদের অন্তরে সমাসীন ঈশ্বর।
ভারতবর্ষে যা কিছু কল্যাণকর, বিশুদ্ধ ও পবিত্র, সীতা বলতে তাই বুঝায়; নারীর মধ্যে নারীত্ব বলতে যা বুঝায়—সীতা তাই।
সীতা ধৈর্যশীলা, সহিষ্ণু, চির বিশ্বস্তা, চির বিশুদ্ধা পত্নী। তাঁর সমস্ত দুঃখের মধ্যে রামের বিরুদ্ধে একটিও কর্কশ বাক্য উচ্চারিত হয় নাই। সীতা কখনও আঘাতের পরিবর্তে আঘাত দেন নাই। ‘সীতা ভব!’—সীতা হও।