এইতো ক’দিন আগেও তাকে আমার দু’টি চোখ দেখেনি,
অথচ বড় বেশি গভীর দেখেছে
পোড়-খাওয়া অন্তর। আমি ভিড়ঘেরা
তার মৃত্যুশয্যা অথবা নিঃসঙ্গ, নিস্তব্ধ কবর দেখিনি,
কোন দুঃস্বপ্ন তাকে নিয়ে গেলো বড় শীতল,
অন্তহীন অন্ধকারে? কে ওকে
দিয়েছিলো চিরপ্রস্থানের মন্ত্রণা
জীবনের বসন্তকালে? কে সেই অন্তরালের
নির্দয় বিভীষিকা? কোন সেই ছদ্মবেশী দিশারি,
যে মধুর বাক্যের আড়ালে বিধ্বংসী পথ দেখিয়ে চলে?
কবিতার প্রেম তাকে চালনা করেছে
সুন্দরের পথে, আরো ভিন্ন পথে। কখনো
কোনো পথ মোহন রূপে বড় নিকটে
নিয়ে গেছে, কখনো অমৃতের পাত্রের ছলে দু’হাতে
দিয়েছে তুলে গরলের গ্লাস। সোৎসাহে
করেছে পান বিশ্বসের কাঁধে কাঁধ রেখে!
যে কবিতার খাতা সযত্নে রাখতো সে দেরাজে,
যার পাতাগুলো এখন দিনরাত করবে
মাতম রূপময় শব্দাবলীর অভাবে, বড় মলিন
হতে থাকবে ধুলোয়। কারো চোখ কি অশ্রুসজল
হয়ে উঠবে দেখে পুরোনো
পঙ্ক্তিমালা, কবিতার খসড়া আর অনেক পাতার শূন্যতা?
উপমা, উৎপ্রেক্ষা অথবা অন্ত্যমিল, কাব্যগ্রন্থ প্রকাশে
উদ্বেগ কিংবা সংসারের বিবেচনা-কিছুই
করবে না আর বিচলিত তাকে। সে কি এখন
উড়ছে মেঘে নাকি জনহীন, জ্যোৎস্নাশোভিত
অনন্য হ্রদে কাটছে সাঁতার? তার পায়ের
ছন্দে উড়ছে মুক্তপ্রতিম জলকণা-কেউ কি ভাববে?