নবম পর্ব – ৩০০১
৬০. তুমি আমায় ডেকেছিলে ছুটির নিমন্ত্রণে
ম্যানহাটানের বুকের মাঝে, মাথা তুলে অহংকারে দাঁড়িয়ে আছে একলা ভবনটা। চারপাশের বনভূমি থেকে সরিয়ে রেখেছে নিজের শির । হাজার বছর ধরে। তার চেহারা তেমন বদলায়নি।
এটা ইতিহাসের অংশ। তাই রক্ষা করা হয়েছে সযত্নে; আর সব ঐতিহাসিক মিনারের সাথে সাথে। এর গায়ে, চারপাশে অনেক অনেক আগে হীরার প্রলেপ বুলিয়ে দেয়া হয়েছিল। এবং এখন সে সময়ের ক্ষয়ের হাত থেকে যোজন যোজন দূরে।
সাধারণ অধিবেশনের মিটিংগুলোয় প্রথমদিকে যারা অংশ নিত তারা আদৌ ভাবেনি ভবনটা হাজার বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকবে। তারা হয়তো জাতিসংঘের ভবন চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকা ভবনটারই আকৃতির কালো, মিশকালো জিনিসটার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। আর সবার মতো তারাও যদি সেটাকে ছুঁয়ে দেখতে যেত তাহলে এর কৃষ্ণ তলকে আঙুল পিছলে যেতে দেখে যারপরনাই আশ্চর্য।
কিন্তু এরচে বড় বিস্ময় লুকিয়ে আছে অন্য কোথাও। আরো আরো অবাক হয়ে যেত স্বর্গগুলোর রূপবদল দেখে…
.
ঘণ্টাখানেক আগে শেষ টুরিস্ট চলে গেছে। এখন এ চত্বরে কোনো জন-প্রাণী নেই। উপরে মেঘহীন আকাশ। আজকাল উপরের উজ্জ্বল জ্যোতিষ্কগুলোর কোনো কোনোটাকে দেখা যায়। বাকী আঁধার তারকাগুলো দেখা যায় না, যে দূরের সূর্য জ্বলজ্বল করার কথা তার আলোয় সেগুলো ম্লান হয়ে যায়।
পুরনো ভবনের কালো কাঁচে সেই নক্ষত্র তার প্রতাপ-কিরণ পাঠায়। পাঠায়। দক্ষিণ আকাশে পৃথিবী ঘিরে থাকা রূপালী রঙধনুর গায়ে। অন্য আলোগুলোও এর চারপাশ ধরে উত্থিত হয়। তারপর যায় থিতিয়ে। যেমন করে সৌর জগতের দু সূর্যের মাঝে অর্থনীতির জোয়ার উপচে পড়ে আবার থিতিয়ে গেছে।
আর, কেউ যদি তীক্ষ্ণ চোখে তাকায়, তো দেখবে পানামা টাওয়ারকে। আরো ছটার মতো এই সরু ফিতাটাও ছাব্বিশ হাজার কিলোমিটার উপরে উঠে গেছে। তারা পৃথিবীর ঠিক উপরের আকাশে ঘুরতে থাকা হীরক-বলয় থেকে প্রয়োজন অনুসারে বসুন্ধরা আর তার ছড়ানো-ছিটানো সন্তানদের জন্য রত্ন ছিনিয়ে আনে।
।জন্মনোর মতোই হঠাৎ করে নিভে যেতে শুরু করেছে লুসিফার। যে রাতকে মানুষ ত্রিশ প্রজন্ম ধরে চেনে না সে আবার এসেছে ফিরে, স্বজন পাবার উচ্ছ্বাস বুকে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছে চারপাশে।
এবং চল্লিশ লক্ষ বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো জেগে উঠছে ঘুমন্ত মনোলিথ।
* * *
আর্থার সি ক্লার্ক
স্যাটেলাইট বিজ্ঞানের জনক ও সর্বকালের শ্রেষ্ঠ স্পেস ট্রাভেল সায়েন্স ফিকশন রাইটার আর্থার চার্লস ক্লার্ক। জীবিতদের মধ্যে তিনিই পৃথিবীর সেরা কল্পবিজ্ঞানী। দ্বিতীয় গ্র্যান্ড মাস্টার অফ সায়েন্স ফিকশন। সবচে বেশি রাশ টেনে রাখেন এস এফ এর কল্পনায়। মহাকাশের কোথায় অভিযান করলে কী হবে তা তিনি অত্যন্ত বিস্তারিত ব্যাখ্যার সাহায্যে বলে দিয়েছেন মানুষ মহাকাশে যাবার আগেই।
নিজদেশ ইংল্যান্ড ছেড়েছুঁড়ে দ্বীপরাজ্য শ্রীলঙ্কায় বাস করেন সেই প্রথম যৌবন থেকে। তার কাছে এস এফ সব সময় সিরিয়াস ব্যাপার, হেলাফেলার ছেলেখেলা নয়। ওডিসি সিরিজের পঞ্চম বইটির জন্য এস এফ এর ইতিহাসে সবচে মোটা অঙ্কের সম্মানী পেয়েছেন। এঁদেভু উইথ রামা এবং ফাউন্টেনস অব প্যারাডাইস দুটিই হুগো এবং নেবুলা প্রাইজ পেয়েছে। এ দু পুরস্কার এস এফ এর ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ এবং এই মানিক-জোড় পূর্ণ হয়েছে মাত্র আট-নবার। তাঁর আর সব পুরস্কারের স্রোতও কম যায় না। মহাকাশ ও সমুদ্র নিয়ে রচনার সংখ্যা শতেক ছাড়াবে।
একজন মহাকাশ বিজ্ঞানী, সামরিক অফিসার, স্কুবা ডাইভার, স্পেস মিশনের ধারাভাষ্যকার-উপদেষ্টা, চলচ্চিত্র নির্মাতা, এবং শ্রেষ্ঠ কল্প বিজ্ঞানবিদের চেয়েও তার বড় পরিচয়, তিনি এস এফ জগতের এক প্রধান দিকনির্দেশক। প্রতিটি রচনা নির্দিষ্ট দিকনির্দেশ করে। কোনো শখ হিসেবে কিংবা জাদুর মতো করে বিজ্ঞান কল্পকাহিনী প্রচারের ব্যাপারে তিনি একমত নন। মানুষ এবং মানুষের সবটুকুর সাথে ভবিষ্যৎ আর মহাকাশের মেলবন্ধন রচনায়, সে সময়ের ভাবনা, মূল্যবোধ, চিরায়ত মানবিকতা নিয়েই তাঁর কাজ। একজন ভবিষ্যৎ নির্দেশক হিসেবে পোপের দাওয়াতও পেয়েছেন।
মোটা দাগে তিন চারটি বৈশিষ্ট্য বলে দিলে প্রথমেই বলা যায়, মহাকাশ, ভয়, জাতিগত অভেদ, রাজনীতি আর রসিকতা তাঁর রচনায় থাকবেই।
অনেক বয়েস হয়ে গেছে, চলাফেরা করতে পারেন না তেমন। তাও লেখা ছাড়েননি। শেষ পর্যন্ত আর্থার ক্লার্ক হার মানবেন না।
তথ্যসূত্র :
১. রুডেঙ্কো: দ্র. চরিত্র-২০১০: ওডিসি টু। মহাকাশ চিকিৎসক, বিশেষজ্ঞ। স্পেসশিপ লিওনভের ক্রু।
২. পাস্তুর: লুইস বা লুই। ১৮২২-৯৫। ফরাসি রসায়নবিদ ও জীববিদ। জীবাণু যে আছে সে তত্ত্ব প্রমাণ করেন, মাইক্রোবায়োলজির জন্ম দেন। পাস্তুরায়ন পদ্ধতির জনক, গাজনের পথপ্রদর্শক। রেশম পোকা নিয়ে গবেষণা করেন। এ্যানথ্রাক্স নিয়ে গবেষণা করেন ও জলাতঙ্কের টিকা আবিষ্কার করেন।
৩. গদার: রবার্ট হাচিন্স। ১৮৮২-১৯৪৫। আমেরিকান রকেট ইঞ্জিনিয়ার, পদার্থের শিক্ষক। ১৯২৩ সালে তরল রকেট ফুয়েল ব্যবহার, ২৬ এ গ্যাসোলিন-অক্সিজেন ফুয়েল, ২৯ এ যন্ত্রবাহী রকেট, ৮৮০ কি.মি. গতি অর্জন সহ ২০০ টি রকেট বিষয়ক নতুন আবিষ্কার করেন। নিঃসীম উচ্চতায় যাবার উপায় নামে বই লেখেন।
৪. ভন ব্রাউন: ড, ওয়ার্নার। ১৯১২-৭৭। জার্মান (পোলিশ)-আমেরিকান ইঞ্জিনিয়ার। রকেট ফুয়েলের বিবর্তক। জগৎ কাঁপানো ভি-২ রকেটের জনক। ২য় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানি জিতে যেতে পারত এ ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য। পরে আমেরিকায় আসেন।
৫. ক্যালটেক: ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি। পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ, আমেরিকার এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ১৮৯১ থেকে। বিজ্ঞানের সব শাখা আছে। এত কীর্তিমান যে, এখানকার ৩০ জন শিক্ষক কর্মরত অবস্থায় নোবেল পেয়েছেন। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এখানকার ছাত্র ছিলেন।
৬. গ্যাগারিন: মেজর ইউরি এ্যলেক্সোভিচ.। মহাকাশচারী প্রথম মানব, ভস্টক-১ এ, ৬১ তে। রাশিয়ান। সয়ুজ-১ এর কু, প্রত্যাশিত সোভিয়েত চন্দ্র অভিযানের সম্ভাব্য যাত্রী। বিমান দুর্ঘটনায় নিহত।
৭. থিওডোর গেরিক্যান্ট: জ লুই আঁন্দ্রে.। ১৭৯১-১৮২৪। ফরাসী এ চিত্রকর তার সময়ের শ্রেষ্ঠ, ইউরোপে রোমান্টিক বিপ্লব আনেন।
৮. লুইস আলভারেজঃ ওয়াল্টার,। তরল হাইড্রোজেন বুদ্বুদ চেম্বার প্রতিষ্ঠার জন্য এ আমেরিকান বিজ্ঞানী ৬৮ তে নোবেল পান। প্রোটন লাইনার এ্যাক্সিলেটর বা লাইন্যাকের জনক। ডায়নোসরের বিলুপ্তি হয়েছে বড় উল্কাপিন্ডের আঘাতে তত্ত্বের প্রবর্তক।
৯. মিউওন-ক্যাটালাইজড ফিউশন: মিউওন এক প্রকার নিউট্রিনো। এ্যান্ডারসন-নিডারমেয়ার আবিস্কৃত । অস্থায়ী কণা। এর প্রভাবে পরমাণু আকার বদলানোর পদ্ধতিই ।
১০.লর্ড রাদারফোর্ড ব্যারন আর্নেস্ট। দুনিয়া কাঁপানো সরল পরমাণু মডেলের জনক, যা একটু পরিবর্তিত হয়ে পরে প্রমাণিত হয়। নিউজিল্যান্ড, কানাডা, ইংল্যান্ডে শিক্ষক। আলফা কণা যে হিলিয়ামের নিউক্লিয়াস তাও দেখান। রেডিয়েশনের মূল তিন দিক আবিষ্কার করে আলফা, বিটা, গামা নাম দেন। ১৯১৯ এ ইতিহাসে প্রথম কৃত্রিম পরমাণু-অন্তর করেন। নাইট্রোজেন হয় অক্সিজেন।
১১. সেলেনোলজিস্ট: স্বৰ্গতত্ত্ববিদ। এখানে মহাজগৎবিদ। কিন্তু বিশেষত চাঁদ বিষয়ক ব্যাপার বোঝানো হয়। চন্দ্রদেবীর নাম সেলেন।
১২. অ্যাস্ট্রোনমির জনক উইলিয়াম হার্শেল:
১৩. শুটনিক: ৫৭-৬১র মধ্যে তৈরি হওয়া প্রথম রাশিয়ান কৃত্রিম উপগ্রহ।
১৪.লয়েডস: লয়েডস অব লন্ডন। সবচে খ্যাতনামা জাহাজ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি।
১৫. রঙধনুর সবগুলো রঙ: প্রিজমের মধ্য দিয়ে সূর্যের আলো এলে রঙের বিন্যাস বিভক্ত হয়ে পড়ে যার যার কম্পাঙ্ক অনুসারে। সাতটা রঙ দেখা দেয়।
১৬. বিগল: ১৮৩১ এর দিকে পাঁচ বছর ডারউইন এ জাহাজে করে পৃথিবীভ্রমণ করেন ও এর দ্বারাই বিবর্তনবাদ আসে।
১৭. গিলগামেশ: মিথোলজিক্যাল মহাকাব্য এবং প্রথম সায়েন্টিফিক ফিকশন এর মহানায়ক। চার হাজার বছর আগের ব্যাবিলনীয় রাজা। ইরাকের নাম এসেছে যে উরাক থেকে, সেখানকার রাজা।
১৮. ওসিরিস: মিশরীয় পুরাণের যৌবনদেবতা, সূর্যের প্রতীক।
১৯. পার্মাফ্রস্ট: বছরের সব সময় জমে থাকা উপমৃত্তিকা । যেমন মেরু বরফ স্তরের নিচে বরফ-মাটি।
২০.বিটল: সত্তর দশকে আমেরিকা কাঁপানো জর্জ হ্যারিসনের দল। তিনি একাত্তরে বাংলাদেশ, বাংলাদেশ গান গেয়েছিলেন।
২১. স্ট্যাল্যাকলাইট: কোনো গুহার ছাদ থেকে ঝুলে থাকা চোখাচোখা ক্যালশিয়াম কার্বনেটের স্তম্ভ। লাখো বছরে বিন্দু বিন্দু পানি গুহার ছাদ থেকে চুঁইয়ে পড়ে, শুধু চুনগুলো ধীরে ধীরে জমে ওঠে, তারপর অনিন্দ্য সুন্দর উল্টো স্তম্ভের সৃষ্টি হয়। কিন্তু এগুলো খুবই ভঙ্গুর। এমনকি পদশব্দেও ভেঙে পড়তে পারে।
২২. স্টার ওয়র্স: ৭৭ এর বক্স অফিস কাঁপানো সায়েন্স ফিকশন মুভি। অনেকগুলো পর্ব আসে। কিন্তু কাহিনী দুর্বল। মুভিমেকিং দুর্দান্ত। ওডিসি সিরিজের প্রভাব আছে এটায়।
২৩.আফ্রিকানার: দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা ডাচ ঔপনিবেশিকদের বংশধর।
২৪.কেপ টাউন বা জোহান্সবার্গ থেকে জুরিখ-আমস্টার্ডাম: কেপ টাউন দক্ষিণ দক্ষিণ আফ্রিকার সিটি। খনি শহর। জোহান্সবার্গ উত্তর-পশ্চিম দক্ষিণ আফ্রিকার শহর। স্বর্ণ খনি। নেদারল্যান্ডের সমুদ্রবন্দর ও বৃহত্তম নগরী আমস্টার্ডাম। অন্যটিও ডাচ শহর। মূলত দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে নেদারল্যান্ডের দিকে উপনিবেশকারীদের চলে যাওয়া।
২৫.কিম্বার্লি: দঃ আফ্রিকান খনি শহর।
২৬. ডি বিয়ার্স: জগৎবিখ্যাত হীরক কোম্পানি। দক্ষিণ আফ্রিকান।
২৭. রিচার্ড দ্য লায়ন হার্ট আর সালাদিন: কিংবদন্তীর ক্রুসেডার। রিচার্ড ছিলেন খ্রিস্টানদের অধিপতি আর সালাদিন বা গাজী সালাউদ্দিন মুসলিম সেনাপতি। রিচার্ডের অসুস্থতার সময় শত্রু শিবিরে গিয়ে সালাউদ্দিন তাকে ছদ্মবেশে সুস্থ করে এলে তাদের মধ্যে মৈত্রী হয়।
২৮. নিস্ফ : যে দেব-প্রাণী প্রকৃতির সাথে মিশে থাকে। যেমন: কোনো দেবীর নদী বা বন হয়ে থাকা। এ নামে পোকাও আছে।
**প্রাসঙ্গিক টিকা
১. গ্যানিমিড: পুরাণে-খীক ট্রয়ের তরুণ রাজপুত্র যাকে জিউস ঈগলরূপে অপহরণ করে। মহাকাশে-বৃহম্পতির ২৬৩৪ কিমি ব্যাসের উপগ্রহ।
৩. আইওঃ পুরাগে- জিউস প্রেমিকা, নদী দেবতা ইনাকাসের কন্যা। হেরার হাত থেকে বাঁচার জন্য জিউস তার কাছে রাজহাঁস হয়ে আসে মহাকাশে-৪২২০০০ কিমি ব্যাসের বিশাল বৃহস্পতীয় উপগ্রহ।
৪. টাইটান: পুরানে–দানব, মহা দৈত্য মহাকাশে শনির ৫১৫০ কিমির উপগ্রহ।
৫. বৃহস্পতি (জুপিটার): পুরাণে-গ্রীক দেবরাজ জিউসের রোমান নাম। মহাকাশে সবচে বড় গ্রহ এবং একটি গ্যাস দানব।
৬. ক্যারমে: মহাকাশে-বৃহস্পতির ছোট্ট উপগ্রহ।
৭. প্যাসিফা: পুরাণে–সূর্য দেবতার কন্যা। মহাকাশে–বৃহস্পতির আরেক ছোট্ট উপগ্রহ।
৮. হাইপেরিয়ন: পুরাগে- এক টাইটান, সূর্যদেবতা হেলিওস ও চন্দ্র দেবী সেলেনের পিতা। মহাকাশে-শনির বড় চাঁদ।
৯. ফোবস: পুরাণে–পলায়নকারী, অ্যারেসের যুদ্ধ সহযোগী মহাকাশে–মঙ্গলের দুই ছোট চাঁদের মধ্যে সবচে ভিতরেরটা।