খুফুর নৌকো
কালকে কলেজে প্যাথোলজির লেকচার ক্লাস চলছিল। আমি আর পিজি পিছনের দিকের একটা বেঞ্চে বসেছিলাম। অনেকক্ষণ ধরে লক্ষ করছিলাম বেটা মোবাইলে কী-একটা খুটখুট করছে, ক্লাসে মন নেই। ছুটির পরে বুঝলাম কারণটা।
‘ভবেশদাকে প্যাঁচে ফেলার মতো একটা জিনিস পেয়েছি, বুঝলি।’
‘ভবেশদাকে? কী সেটা?’
‘হুঁ হুঁ বাবা, ও কী ভাবে? ও মিশরের ইতিহাসের সব কিছু জানে? এমন একটা জিনিসের ব্যাপারে আজকে নেটে পড়লাম না, যেটা কোনো বাংলা বইতে লেখা নেই। আজ সন্ধেবেলায় চল ভবেশদার দোকানে। লোকটার নলেজের একটা অ্যাসিড টেস্ট হবে।’
পিজি একরকম টেনে নিয়েই গেল আমাকে ভবেশদার দোকানে। তখন ঘড়িতে বাজে সাড়ে ছ-টা।
‘কী ব্যাপার হে, মানিকজোড়? আজকে আবার গল্প শুনতে নাকি?’
পিজি বেশ গম্ভীর মুখ করে বলল,
‘ভবেশদা, খুফুর নৌকো নিয়ে কিছু বলতে পারবেন? না মানে, আমি একটু রিসার্চ করছিলাম নেটে…’
আমি ভাবলাম, খুফুর নৌকো? সেটা আবার কী জিনিস রে বাবা। ফারাও খুফুর নৌকো থাকতেই পারে। সেটা নিয়ে আবার কিছু জানার আছে নাকি? ভবেশদা কিন্তু পিজির মুখের কথা শেষ হওয়ার আগেই বললেন,
‘হুম, নেটে রিসার্চ করছিলে, ওই জিনিসটা গলিতে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট খেলার মতো। তা কী পেলে তোমার রিসার্চে?’
পিজি রেগে গেলে কান দুটো লাল হয়ে যায়, এটা আমি বুঝতে পারি। আজকেও সেরকমই একটা ব্যাপার হল,
‘আমি নেটে কী পেলাম সেটা বলব পরে, আগে আপনি বলুন আপনি কী জানেন।’
‘আমি কী জানি? তা ভালো, না, খুব বেশি কিছু জানি না এ ব্যাপারে। তবে তুমি খুফুর কোন নৌকোর কথা বলছ?’
‘কোন নৌকো মানে? খুফুর তো একটাই নৌকো…’
‘উঁহু, একটা না, দুটো।’
‘দু… দুটো?’
‘হ্যাঁ ভাই, দুটো নৌকো তো, তুমি জানো না?’
এবারে পিজির ঢোঁক গেলার পালা। ও যখন মাথা চুলকোচ্ছে তখন আমি বললাম,
‘আপনারা কী কথা বলছেন আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছি না। খুফুর নৌকোর গল্পটা আজকে বলুন না তাহলে।’
‘না ভাই, আজকে বলার মতো মুড নেই। আসলে সকাল থেকে কেন জানি না গলাটা শুকিয়ে আছে, ঠান্ডা কিছু একটা পেলে…’
আমি বললাম,
‘কোনো ব্যাপার না, প্যারামাউন্টে চলুন, পিজি আজকে শরবত খাওয়াবে আমাদের। তাই না পিজি?’
ও আর কী বলবে? পরাজিত সৈনিকের মতো কাঁধ ঝুলিয়ে চলল আমাদের সঙ্গে।
সুড়ুৎ করে আওয়াজ করে ডাব শরবতে একটা চুমুক দিয়ে ভবেশদা বলল,
‘নৌকোর কথা ভাবলে প্রথমেই কি মাথায় আসে বলো তো?’
‘নদী?’
‘ঠিক, মানুষের মৃত্যুর পরের জীবনের সঙ্গে নদী অদ্ভুতভাবে জড়িয়ে আছে, বুঝলে। আমাদের পুরাণের কথাই ধরো না, মারা যাওয়ার পরে বৈতরণী নদী পার করে মৃত আত্মা পৌঁছে যাবে যমের দক্ষিণ দুয়ারে, যেখানে তার পাপ পুণ্যের বিচার হবে। সেই বিচার ঠিক করে দেবে সে স্বর্গে যাবে, নাকি, নরকে যাবে। আবার গ্রিক পুরাণের স্টাইকস নদীর কথা ধরো। এই নদী বেয়েও মৃত মানুষের আত্মা পৌঁছে যাবে নরকে, যেখানে তার বিচার করবে দেবতা হেইডিস। কিছুর সঙ্গে মিল পাচ্ছ এই গল্পের?’
‘পাব না আবার? মিশরের পুরাণেও তো মারা যাওয়ার পরে আত্মা যায় মাটির নীচের জগতে, ওসাইরিসের কাছে তার বিচার হয়। আপনিই বলেছিলেন বুক অফ দ্য ডেড-এর গল্প।’
‘বাহ! মনে আছে দেখে খুব ভালো লাগল। মিশরীয়রাও এই বৈতরণী আর স্টাইকস নদীর মতো নীল নদকে মনে করত মৃত্যুর পরের জগতে যাওয়ার রাস্তা। নীল নদেরই পশ্চিম তীরে ছিল অ্যাবিদস নামের একটা জায়গা, যেখানে ছিল ওসাইরিসের মন্দির। তাই ইজিপশিয়ানরা বিশ্বাস করত এই নদী পেরিয়েই আত্মা ওসাইরিসের কাছে পৌঁছোবে। কিন্তু বৈতরণী, স্টাইকস আর নীল, এই তিনটে নদীই পেরোতে গেলে কী লাগবে বলে মনে হয়?’
‘কী আবার, নৌকো।’
‘ঠিক, সেই হিসেবে ফারাও খুফুও যে মারা যাওয়ার পরে একটা নৌকো করেই ওসাইরিসের উদ্দেশে যাত্রা করবেন সেটা হওয়াই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু তাই বলে দু-খানা আস্ত নৌকো যে খুফুর সমাধির সঙ্গে রাখা থাকবে সেটা কেউ কখনো ভাবেনি আগে।’
‘কিন্তু খুফুর পিরামিড তো একদম ফাঁকা ছিল বলেছিলেন।’
‘আমি কি বলেছি নাকি যে নৌকোগুলো পিরামিডের মধ্যে রাখা ছিল? চলো, তোমাদেরকে চৌষট্টি বছর আগের একটা দিনে নিয়ে যাই।
‘২৪ এপ্রিল, ১৯৫৪, গিজার মরুভূমির দক্ষিণে কাজ করছিলেন আর্কিয়োলজিস্ট মহম্মদ জাকি আর ওঁর অ্যাসিস্ট্যান্ট গারাস ইয়ানি। অবশ্য জাকির কাজকে আর্কিয়োলজি না বলে ময়লা পরিষ্কার করা বলা যেতে পারে। সৌদি আরবের রাজা আবদেল আজিজ নাকি গিজার পিরামিড দেখতে আসবেন। তাই পিরামিডের আশেপাশের চলতে থাকা এক্সক্যাভেশনের কাজের জন্য তৈরি হওয়া আবর্জনা সরাবার দায়িত্বে ছিলেন ওঁরা। কিন্তু এইসব ছাইপাঁশ ঘাঁটতে ঘাঁটতেই ওঁদের হাতে চলে এল একটা অমূল্য রতন!
মৃতদেহকে যেমন ধরনের নৌকোয় করে নিয়ে যাওয়ার চল ছিল
‘অনেকগুলো বিশাল আয়তাকার চুনাপাথরের টুকরো। পাশাপাশি গায়ে গায়ে লাগানো আছে। দেখেই মনে হচ্ছে মাটির নীচের কিছু একটার ওপরের ঢাকনার কাজ করছে ওইটা! কয়েকটা পাথরের গায়ে আবার লেখা আছে—
‘‘এই সম্পদ তাঁরর বাবা খুফুকে অর্পণ করলেন ফারাও জেদেফ্রে!’’
‘আরেকটা নতুন আবিষ্কার তাহলে! ব্যস, সৌদির রাজা আসার চিন্তা পাশে সরিয়ে রেখে দু-জনে মিলে লেগে পড়লেন ওই পাথর পরিষ্কার করার কাজে। কাজ শেষ হতে লেগে গেল এক মাস।
‘২৫ মে, ১৯৫৪, সেইদিনই পাথরের ওপরের সব ময়লা সরানোর কাজ শেষ হল। এবারে খুলে দেখার অপেক্ষা। কিন্তু সেইদিনই মহম্মদ জাকির কাছে একটা খারাপ খবর এল। ওঁর ছোট্ট মেয়ে ওয়াফাকে হাসপাতালে ভরতি করতে হয়েছে। সব কাজ ফেলে জাকি ছুটলেন মেয়ের কাছে। দুঃখের খবর এই যে মেয়েকে বাঁচানো গেল না। মহম্মদও আর কাজে ফিরলেন না।
‘অন্যদিকে গারাস ইয়ানি পড়লেন আরেক ফাঁপরে। এক্সক্যাভেশনের কাজ তো এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। জাকিকে এই অবস্থায় পাওয়া যাবে না। এদিকে কাজ ফেলে রাখলে মরুভূমির ধুলোবালিতে আবার একটু একটু করে পাথর ঢাকা পড়ে যাবে। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই ইয়ানি খুঁজে বার করলেন আরেকজন আর্কিয়োলজিস্টকে, কামাল এল মালাখ।
‘কামাল ইয়ানির সঙ্গে মিলে পাথরের চাঁইয়ের কোণের দিকের একটা ছোটো টুকরো ভেঙে ফেললেন। তারপরে নিজের ব্যাগে থাকা দাড়ি কামানোর ছোটো আয়নাটা দিয়ে সূর্যের আলো ফেললেন পাথরের নীচের গহ্বরে। আর সঙ্গেসঙ্গেই চমকে উঠলেন! খুব সামান্য আলোতেই আবছাভাবে দেখা যাচ্ছে একটা কাঠের তৈরি দাঁড়!! কামালের বুঝতে বাকি রইল না যে এই লম্বা গর্তটা কী ঐশ্বর্য লুকিয়ে রেখেছে! চার হাজার বছর পুরোনো একটা নৌকো!
পিরামিডের পাশে খুফুর নৌকোর গর্ত
চুনাপাথরের ঢাকনার নীচে খুফুর নৌকো
‘খ্যাতির লোভ মারাত্মক, বুঝলে। এই আবিষ্কারের সঙ্গেসঙ্গে সেইদিন রাতেই কামাল ‘‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’’কে একটা ইন্টারভিউ দিয়ে দেন। তাতে বলে দেন যে খুফুর নৌকোর আবিষ্কর্তা তিনি একাই! মহম্মদ জাকির নাম বেমালুম চেপে গেলেন কামাল। আর যেদিনকে এই মিথ্যে কথাটা বলছেন সেদিনই নিজের মেয়ের কবর দিচ্ছেন জাকি। তবে সত্যিটা কয়েকদিনের মধ্যেই সামনে আসে। কামালকে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়।
‘যাই হোক, এই ঘটনার কয়েকদিন পর থেকেই ওই গর্ত থেকে বোটটা বের করার কাজ শুরু হয়। তবে নৌকোটার আর কিছুই অবশিষ্ট ছিল না। ১,২২৪টা সিডার কাঠের টুকরো পাওয়া গেল। আর কিছু প্রায় নষ্ট-হতে-বসা কাপড় আর দড়ি। আশ্চর্যের ব্যাপার এই যে, সেখানে একটাও লোহার পেরেক পাওয়া যায়নি। মিশরীয়রা মাটির নীচে থাকা খনিজ লোহার সন্ধান তখনও পায়নি। যেটুকু লোহা পাওয়া যেত সেটা আকাশ থেকে এসে পড়া উল্কা থেকে। তাই ওদের কাছে লোহা ছিল খুব দুর্লভ আর পবিত্র বস্তু। কাঠের খাঁজে কাঠ লাগিয়ে আর জায়গায় জায়গায় দড়ি দিয়ে বেঁধেই নৌকো বানানো হত।
‘তবে এত বড়ো একটা আবিষ্কারের পরেও সবার মনে একটা চিন্তা রয়েই গেল। এই বারোশো টুকরোর জিগ-স পাজল জুড়ে আসল নৌকো বানাবে কে? গোটা মিশরে এমন একটাই মাত্র মানুষের সেই ক্ষমতা ছিল। সেই লোকটা যে…’
‘বুঝেছি, বুঝেছি! যে রানি হেতেফেরিসের সমাধির আসবাবপত্রগুলোর রেস্টোরেশন করেছিল তো! কী নাম যেন…’
‘বাহ! তোমাদের মনে আছে দেখছি! লোকটার নাম আহমেদ ইউসুফ। ওঁকেই ডেকে আনা হল। প্রথমে বেশ ঘাবড়ে গেলেও পরে আহমেদ এই চ্যালেঞ্জটা নেন। তার পরেই শুরু হয় ওঁর একটা নতুন জীবন। তিন মাস ধরে কায়রোর নৌকো তৈরির কারখানায় গিয়ে কাজ শেখেন। তার পরে ওই ১,২২৪টা টুকরোর প্রতিটাকে আলাদা করে মার্ক করে ছোটো ছোটো নৌকোর রেপ্লিকা বানাতে থাকলেন। তারপরে হাত দিলেন আসল কাজে। যে যে টুকরোগুলো নষ্ট হয়ে গেছিল অবিকল সেই মাপের কাঠের টুকরো বানালেন। কুিড় বছর ধরে চলল খুফুর নৌকো জোড়া লাগানোর কাজ। একজন রেস্টোরার হয়ে গেলেন একজন বোট বিল্ডার। কাজ যখন শেষ হল তখন সেই বিশাল নৌকো দেখে সবাই অবাক হয়ে গেল! প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিটার লম্বা। দু-পাশে সারি দিয়ে রাখা দাঁড়। নৌকোর একপ্রান্তে কাপড় দিয়ে মোড়া একটা ছাউনি। নৌকোর নীচের দিকের কাঠে আর দাঁড়গুলোতে এমন ক্ষয়ের দাগ স্পষ্ট যা কিনা জল থেকেই হতে পারে।
খুফুর নৌকোর মডেলের পাশে আহমেদ ইউসুফ
জোড়া লাগানোর পর খুফুর প্রথম নৌকো, এখন যেমন
‘মানে, খুফুর নৌকো একসময় নীল নদের জলেও চলেছিল!!’
‘খুব সম্ভবত তাই। তবে এটাকে ঠিক খুফুর নৌকো বলাটা হয়তো ঠিক হবে না। ছেলে দেজেফ্রে মৃত বাবার উদ্দেশে এই নৌকো দান করেছিলেন। তবে খুফুর নিজের নৌকোও পাওয়া গেছে ১৯৮৭ সালে। সেই গল্পও বেশ মজার।
‘টোকিয়োর ওয়াসেদা ইউনিভার্সিটি থেকে আসা জাপানিজ আর্কিয়োলজির একটা দল আরেকটা চুনাপাথর চাপা দেওয়া প্রায় একইরকম আকারের একটা গর্তের সন্ধান পান। সেই গর্তটা আবার ১৯৫৪ সালে খুঁজে পাওয়া গর্তটার পাশেই ছিল। তাই ওঁরা মোটামুটি বুঝেই গেছিলেন যে এখানেও আরেকটা নৌকোই আছে। তবে এবারে আগেরবারের থেকেও সাবধানে কাজ শুরু করা হয়। চার হাজার বছরের পুরোনো বাতাসে বদ্ধ থাকা নৌকোর কাঠের টুকরোগুলো দুম করে বাইরের বাতাসের সংস্পর্শে এসে আরও ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে। তাই আর্কিয়োলজিস্টরা এবারে পাথরের গায়ে খুব ছোট্ট একটা ফুটো ড্রিল করে সেখানে ঢোকালেন একটা এন্ডোস্কোপ। আর, কী দেখতে পেলেন বলো তো?’
‘কী আবার? নৌকো?’
‘ধুস, ওঁরা দেখলেন একটা মাছি!’
‘অ্যাঁ, জ্যান্ত মাছি! অত হাজার বছর ধরে বেঁচে ছিল!’
‘না রে বাবা, চুনাপাথরের স্ল্যাবটা এক এক জায়গায় ভঙ্গুর হয়ে নিজে থেকেই ছোটো ছোটো গর্ত তৈরি হয়েছিল। সেই গর্ত দিয়ে ঢুকে ভেতরে মাছি আর পিঁপড়ে আস্তানা গেড়েছিল। সম্প্রতি পাথরের স্ল্যাবগুলোকে সরিয়ে ফেলে ভেতরের নৌকোর টুকরোগুলোকে তুলে আনা হয়েছে। সেগুলো জোড়া লাগানোর কাজ এখনও চলছে। আর সেই গর্ত থেকেই ফারাও খুফুর নাম খোদাই করা একটা পাথর পাওয়া গেছে। সম্রাট নিজের সমাধির জন্যই বানিয়েছিলেন এই নৌকোটা।’
একটানা এতটা বলার পরে এবারে চামচ দিয়ে গ্লাসের ভিতরে থাকা ডাবের শেষ শাঁসের টুকরোটা তুলে মুখে পুরে দিয়ে ভবেশদা পিজির দিকে তাকালেন,
‘তাহলে বুঝলে পিজি ভায়া, এইজন্যই বলেছিলাম খুফুর নৌকো একটা নয়, দুটো। আর এই গল্পটা তুমি ইন্টারনেট খুঁড়ে ফেললেও পেতে না।’
‘তাহলে আপনি এগুলো জানলেন কী করে?’
‘বই! বইয়ের বিকল্প কিছু হয় নাকি? যাক গে, আজকে খুফুর নৌকোর কথা শুনলে, জানলে নৌকো করে মৃতের অন্য জগতে পৌঁছোনোর কথা। কিন্তু একজন বাঙালি মেয়ে তার জীবদ্দশাতে ভেলায় চড়ে এরকম একটা নদী বেয়েই পৌঁছে গিয়েছিল স্বর্গের দ্বারে। কে বলো তো?’
‘বাঙালি? মেয়ে? এরকম তো আগে শুনিনি!’
‘শুনেছ, কিন্তু ভুলে গেছ। মনসামঙ্গল কাব্য হয়তো ভুলে যেতেই পার, কিন্তু সুমনকে ভুললে কী করে?’
বলেই ভবেশদা বেসুরো গলায় গেয়ে উঠলেন,
‘কাল কেউটের ফণায় নাচছে লখিন্দরের স্মৃতি,
বেহুলা কখনো বিধবা হয় না এটা বাংলার রীতি…’