কলকাতা ইদানীং
‘Although it is large, with a great many good houses in it, it is as awkard a place as can be conceived, and so irregular that it looks as if all the houses had been thrown up in the air, and fallen down again by accident as they now stand.’
কলকাতা শহরের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো লিখেছিলেন মিসেস কিন্ডারসলি। সেটা ১৭৬৮ সালের কথা। ইতিমধ্যে কলকাতার চেহারার অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। ভাগীরথী দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল। কিন্তু কলকাতার দর্শকরা এখনও সরাসরি দু দলে বিভক্ত।
একদল সেই আজবনগরীর বন্দনায় মুখর যার নাম কলকাতা। লর্ড মেকলে এ শহরকে আখ্যা দিয়েছিলেন ‘সিটি অব প্যালেসেস’। ১৮০৩ সালে লর্ড ভ্যালেনসিয়া লিখেছিলেন:
‘Chowringhee, an entire village of Palaces runs for a considerable length at right angle with it, and altogether forms the finest view I ever beheld in any country.’
১৮০৫-এ উইলিয়ম বেন্টিঙ্কের উক্তি ‘The spectacle is altogether the most curious and magnificent I have ever met with.’
কলকাতাকে দেখে বিশপ হিবারের যেমন মনে পড়েছিল মস্কোর কথা, তেমনই পাদরি লঙ স্মরণ করেছিলেন কলকাতার সমবয়সী আর এক শহর সেন্ট পিটারসবার্গ-এর কথা। তৎকালে অজানা এক দর্শকের উক্তি ‘লন্ডন ইজ পারগেটারি, ক্যালকাটা ইজ প্যারাডাইস।’ ‘অন্যদিকে নিন্দুকেরাও কিন্তু সমান মুখর কলকাতা সম্পর্কে। ‘The most wicked place in the universe’—বলেছিলেন ক্লাইভ। অবশ্যই নিজের অবদানটুকুর কথা ভুলে গিয়ে। কিপলিং আখ্যা দিয়েছিলেন—‘A city of dreadful nights.’
একালে কলকাতা কারও কাছে বা ‘বিভীষিকা নগরী’। জওহরলাল নেহরু কলকাতার নিন্দুকের দলে পড়েন না, কিন্তু তিনিও কলকাতাকে বর্ণনা করেছেন ‘ডেরিলিকট সিটি’ বলে। ডম মোরেসের কলকাতা ‘স্পাইডার সিটি’, বেদ মেহতার এ শহরে পা দিয়ে কেবলই মনে পড়ে ‘ল্যাজারাস’-এর কথা। নইপল যদি এ শহরের ‘বক্সওয়ালাদের’ চাল-চলন উপভোগ করে থাকেন, গুনটার গ্রাস তবে দাবি করেছেন—পৃথিবীর ট্যুরিস্ট মানচিত্র থেকে কলকাতার নাম মুছে দেওয়া হোক। (‘Let’s no waste another word on Calcutta, delete Calcutta from all guide books’).
এবং মনে মনে রমণ করতে চেয়েছেন শবরের বন্দনাগীতিতে মুখর শাড়িপরা বাঙালি কবিদের। (‘and does not know which of the lady poets he would like to fuck if opportunity presented itself.’) তাঁর মতে রাষ্ট্রপুঞ্জের উচিত কলকাতাকে বিশ্বের মানচিত্র থেকে বিলুপ্ত করে দেওয়া!
কলকাতা কি সত্যিই এমন প্রশংসনীয় শহর? কিংবা, এমন ঘৃণ্য? ময়দানের ওপারে, খিদিরপুরের প্রান্তে দাঁড়িয়ে কলকাতার দিকে তাকালে দিগন্তে যে শহরের আকাশরেখা ফুটে ওঠে, তা নিশ্চয়ই কোনও অতি-বৃহৎ গ্রামের আভাস দেয় না। এমনকী, রাত্রির আকাশ থেকে নীচের ঝাঁক ঝাঁক জোনাকিও কিন্তু আমাদের চোখে এক মহানগরের ছবিই তুলে ধরতে চায়। কিন্তু হায়, আজ আর পশ্চিমী অভিযাত্রীদের নিয়ে কোনও পালতোলা জাহাজ চাঁদপাল ঘাটে ভেড়ে না। উড়োজাহাজও শেষ পর্যন্ত দমদমে নামিয়ে দেয় যাত্রীকে। তারপর কল্পনার স্বর্গ থেকে ক্রমে কলকাতার রুক্ষ কঠিন বাস্তবে উত্তরণ। শিয়ালদহ, হাওড়া কিংবা দমদম, যে তোরণ দিয়েই শহরে প্রবেশ করুন না কেন একালের আগন্তুক, শহরের মুখের দিকে তাকালে প্রথম দর্শনে তার মনে পড়বেই উইলিয়ম ম্যাকিনটশের কথা। ১৭৮২ সালে তিনি লিখেছিলেন—‘There was not a spot where judgement, taste, decency and convinience are so grossly insulted, as in that scattered and confused chaos of house, huts, sheds, streets, lanes, alleys, windings, gutters, sinks, tanks which jumbled into an undistinguished den of filth.’
কলকাতা এখনও আধা গ্রাম আর আধা শহর মিলিয়ে এক বিচিত্র গোলকধামে। কোনও গলি যদি আপনাকে নিয়ে যেতে পারে শান্ত সহনীয় বন্ধুত্বপূর্ণ কোনও পরিবেশে, কোনও সরল রাস্তা হয়তো শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়ে নিক্ষেপ করবে অসহ্য, অবর্ণনীয় কোনও দারিদ্র্য আর দুঃখের সাগরে।
জানি, অনেক কিছু কর্মকাণ্ডই চলছে এখন কলকাতায়। সি এম ডি এ-র বিস্তর নীল পুঁথি তৈরির পর ১৯৭০ থেকে চালু হয়েছে সি এম ডি এ। ৩৩টি পৌরসভা, আর ৩৭টি অন্য এলাকা নিয়ে ১৪২৫ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে সহস্রমুখী কর্মধারা। প্রথমেই ছিল ১৫০ কোটি টাকার বাজেট। রাস্তা সারাই হচ্ছে, চওড়া করা হচ্ছে পয়ঃপ্রণালী গভীর এবং মসৃণ করা হচ্ছে, ভারতে প্রথম পাতাল রেলপথ গড়া হচ্ছে, ভাগীরথীর ওপর তৈরি হচ্ছে আর একটি সেতু। সেতু এখনও রাবণের সিঁড়ি যেন। কিন্তু টালিগঞ্জ থেকে চৌরঙ্গি এবং দমদম থেকে বেলগাছিয়ার পথে ইতিমধ্যেই নিঃশব্দে চলতে শুরু করেছে রেল। উদ্যমী পুরসভা প্রাণপণ চেষ্টা করছে ‘শহর পরিচ্ছন্ন’ রাখার জন্য, দেওয়ালে আবেদন ‘শহর পরিচ্ছন্ন রাখুন’। পথের বাঁকে ব্যানারে উচ্চকণ্ঠে ঘোষিত স্বপ্ন ‘কলকাতা আবার কল্লোলিনী তিলোত্তমা হবে।’৪ ‘হয়তো হবে। কিন্তু সত্য এই, এখনও হয়নি। কলকাতা এখনও, অনেক পরিবর্তন সত্ত্বেও মোটামুটি অষ্টাদশ বা উনিশ শতকেই আছে। কিপলিং যে কলকাতা দেখেছিলেন, দর্শকের চোখের সামনে এখনও শায়িত সেই কলকাতা ফাঙ্গাসের মতোই বিশৃংখলতার বিকাশ এবং বিস্তারে নিয়ে এবং ‘As the fungus sprouts chaotic from its bed/so it spread’. place, byre, hovel-poverty and poride/side by side.’
এখনও সেই বিপরীতের আশ্চর্য সহাবস্থান এই কলকাতা।
কলকাতার তিনভাগের একভাগ মানুষ এখনও বস্তিতে বাস করেন। শহরের চার ভাগের একভাগ জমি বস্তির দখলে। সেখানে সাধারণ গরিবরা বাস করেন। নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তও রয়েছেন। কারণ গৃহসংকট। যেসব এলাকা পুরোপুরি গরিবদের দখলে, সেখানে দৃশ্যাবলি স্বভাবতই আরও শ্বাসরোধকারী। মিসেস কিন্ডারসলে লিখেছিলেন—সেখানে বাড়িঘর বলতে ‘Shoddy houses, dead walls, straw huts, warehouses and know not what!’ চিত্রটিকে আরও বিশদ করেছেন লর্ড ভ্যালেনসিয়া—‘Its streets are narrow and dirty; the houses, of two stories, occasionally brick, but generally mud, and thatched perfectly resembling the cabins of the poorest class in Ireland.’
উইলিয়াম ম্যাকিনটশ লিখেছেন—এখানে শহরকে জঞ্জালমুক্ত রাখার দায়িত্ব নিয়েছে রাত্রে ক্ষুধার্ত শৃগাল, আর দিনে চিল-শকুনেরা। (‘hungry jackals by nights and raventins vultures, kites and crows by day). তাই নয়, এখানে মশা তাড়ানো হয় ঘরে বাইরে ধোঁয়া সৃষ্টি করে। আদিম কলকাতার বিবরণ এসব। তবু মনে হয়, যেন গতকালই লেখা।
সি এম ডি এ বস্তির জীবনকে সংস্কার করার চেষ্টা করছে। বস্তিতে কলের জলের নল টেনে আনা হচ্ছে, নর্দমাগুলো পাকা করা হচ্ছে, খাটা পায়খানার (service privy) বদলে স্যানিটারি পায়খানা তৈরিতে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু এখনও যেন সেই আদ্যিকালের ছবিরই প্রতিচ্ছবি। শহরে শেয়াল একদম নেই, এসব কথা হলপ করে বলা যাবে না। চিল নাকি কমতির দিকে, কিন্তু শকুনেরা আছে, শহরতলিতে তো বটেই, খাস শহরেও। ওদিকে বৈদ্যুতিক তারে কাকের বাসা, গৃহস্থের চামচ, মেয়েদের চুলের কাটা, ছুড়ে দেওয়া ডটপেনের রিফিল দিয়ে বাসা সাজিয়ে কাকেরা এখনও তেমনই চালিয়ে যাচ্ছে ধাঙড়ের কাজ। গাছপালা কমে গেছে অনেক, তবে কাকেরা পেয়েছে বিশ্রামের নতুন ঠাঁই, টিভির অ্যানটেনা। কাজের ফাঁকে ফাঁকে সেখানে বসেই তারা নজর রাখে চর্ব-চোষ্য-লেহ্য-পেয়র দিকে। পুরসভার সাধ্য কী এই দুর্গন্ধমাদন নিজেরা সরান। তা ছাড়া, জঞ্জাল সরানো শুধু ঝাঁটা আর গাড়ির ব্যাপার নয়, এর মধ্যে নাকি লুকিয়ে রাজনীতি অর্থনীতির নানা জটিল কুটিল স্বার্থচিন্তা।
যে সব বাড়ি আলাদাভাবে বিচার করলে প্রাসাদ কিংবা মনোরম অট্টালিকা, যাদের ছাদে অ্যানটেনা, ঝুল বারান্দায় চলচ্চিত্রের নায়িকার মতো উদাসীন অথবা চঞ্চলা সুন্দরী, সেগুলোও কিন্তু হারিয়ে যায় বস্তির অরণ্যে। মিসেস কিন্ডারসলি লিখেছিলেন, ভাল ভাল বাড়ির চেহারাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বস্তির জন্য। (‘Spoiled by the little straw huts)। প্রাসাদেও কুটিরের ছায়াপাত। কে জানে, হয়তো সে কারণেই কলকাতাকে অনেক বাহারি ইমারতের ফটকেও লেখা ‘অমুক কুটির’ বা ‘তমুক কুটির’। অতএব তিনি যখন লেখেন—‘There are no seperate slums, bustes, in Calcutta. The Whole city is one bustee, or slum and neither the middle nor the upper classes can segregate themeselves from it.’
তিনি মোটেই বাড়িয়ে বলেন না। সত্যি বলতে কী, বস্তিকে বাদ দিয়ে এ শহরকে আজ কল্পনাই করা যায় না। শহরকে চালু রাখার দায়িত্ব পুরোপুরি বস্তির। বস্তির মেয়েটি না এলে সুউচ্চ বাড়ির উচ্চতম তলেও সংসার অচল।
ডিসরেলি বলেছিলেন, ইংরেজরা এক জাতি নয়, দুই জাতি। এক জাত—সুবিধাভোগীদের নিয়ে। অন্য জাতি সাধারণ মানুষেরা। (‘The Privileged and the people’) পশ্চিমীরাও গোড়া থেকেই শহরের মানচিত্রটিকে কাঁচি চালিয়ে মনে মনে দু’ভাগ করে নিয়েছিলেন। এক: ট্যাংক-স্কোয়ার তথা ডালহৌসি স্কোয়ার তথা আজকের বি-বি-ডি-বাগ আর চৌরঙ্গি এলাকার হোয়াইট টাউন; দুই: অন্ধকারে মোড়া বিস্তীর্ণ ব্ল্যাক টাউন। দুইয়ের মধ্যে সম্ভাব্য স্থানগুলোতে বাফার রচনার দায় চাপানো হয়েছিল বেচারা ‘ইউরেশিয়ান’ বা ‘অ্যাংগ্লো ইন্ডিয়ান’দের ওপর, যাঁদের লাস্যময়ী সুন্দরী মেয়েরা পরবর্তী কালে ‘চি-চি’ গার্ল বলে বর্ণিত হলেও যারা আসলে ইতিহাসের ন্যায্য সামাজিক ফসল। হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও’র মতো জাতীয়তাবাদী যুক্তিবাদী অগ্নিশিশু ছাড়াও অনেক স্মরণীয় নাম উপহার দিয়েছে কলকাতাকে এই সম্প্রদায়। কলকাতায় অ্যাংগ্লো ইন্ডিয়ান স্কুলের কদর অসম্ভবরকম বেড়ে গেলেও, আজ সম্প্রদায় হিসাবে অ্যাংগ্লো ইন্ডিয়ানরা নিশ্চয়ই নিষ্প্রভ। যেমন বহুলাংশে অনুজ্জ্বল হোয়াইট আর ব্ল্যাক টাউনের মাঝামাঝি ধূসর এলাকার আর এক বাসিন্দা চিনারা। পাড়ায় পাড়ায় চিনা খাবার এবং লন্ড্রির কদর বাড়ছে, এমনকী, হয়তো আকুপাংচারারিস্ট চিকিৎসকদের জনপ্রিয়তাও, কিন্তু ’৬২ সালের সীমান্ত সংঘর্ষের পর শহরে চিনা জনসংখ্যা বেশ কমে গেছে। ইংরেজের কলকাতায় অবশ্য এইসব সম্প্রদায়ের নামে কোনও উপবিভাগ ছিল না। শহর তাদের চোখে বরাবর ‘ব্ল্যাক’ আর ‘হোয়াইট’, এই দুই রঙেই চিত্রিত। কিন্তু যা সত্য, তা হল: এই কলকাতা শৈশব থেকেই এক বর্ণাঢ্য মোজাইক। পুরানো দিনের সেনসাস রিপোর্টগুলোর ওপর এক নজর চোখ বুলালেই সেটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। হয়তো এখানে ওখানে রঙ নষ্ট হয়ে গেছে, কিন্তু মোটামুটি এখনও সেই গালিচাটি অক্ষত।
মিউনিসিপ্যাল কলকাতার আয়তন—৩৬,৯২ বর্গমাইল। আয়তনে কলকাতা ভারতের পঞ্চম শহর, কিন্তু লোকসংখ্যায় এক নম্বর। ১৯৭১ সালের সেনসাস অনুযায়ী কলকাতার লোকসংখ্যা ৩১,৯৭,৭৫৬ জন। বৃহত্তর কলকাতা বা সি এম ডি এ এলাকার আয়তন এবং লোকসংখ্যা অবশ্যই অনেক বেশি, আয়তন ১৪২৫ বর্গ কিলোমিটার, লোকসংখ্যা ৮.৩৩ মিলিয়ন। তার কথা থাক। খাস কলকাতার কথাই বলি। কলকাতার ভিড়ে কিন্তু এখনও তিনভাগের দু’ভাগ মানুষের ভাষা বাংলা। সংখ্যায় বললে বাঙালি পুরুষ ১০,৪৭,৪৮৯ জন, নারী ৮৩৯,৯৮১ জন। বাকি নাগরিকরা ১৪টি ভাষা-গোষ্ঠীতে বিভক্ত, ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী আবার তাঁদের ভাগ করা যায় ৬টি প্রধান গোষ্ঠীতে। তাই বলছিলাম, শুধু সাদা আর কালো, বড়জোর একটি ভৌগোলিক বিচার মাত্র।
কলকাতা গোড়া থেকেই বহুবর্ণ, কারণ কলকাতা আদিপর্ব থেকেই ভাগ্যান্বেষী বহিরাগতদের শহর। শহরে মানুষ ছুটে আসে দুটি কারণে। এক—আপন এলাকায় দারিদ্র্য, বেকারি এবং ক্ষুধার তাড়নায়, দুই আলেয়ার হাতছানি। কলকাতার বিস্তীর্ণ পশ্চাদভূমির মানুষের কাছে সক্রিয় ছিল দুই-ই। মহারাজা নন্দকুমারের ফাঁসির পরে ব্রহ্মহত্যা হয়েছে বলে অনেক ব্রাহ্মণ নাকি কলকাতা ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁরা কলকাতার দিকে পিঠ ফিরিয়ে বসে থাকতে পারলেন কই! বিহার, উত্তরপ্রদেশের গ্রামাঞ্চলে নাকি একসময় একটি ছড়া প্রচলিত ছিল, যার অর্থ: কলকাতা যাওয়ার চেয়ে দেশে গমের বদলে ‘মৌহা’ খাওয়াও ভাল। তারাও কিন্তু শেষ পর্যন্ত বয়কট করতে পারেনি কলকাতাকে। কলকাতার কলকারখানায়, ব্যবসা বাণিজ্যে এবং আরও নানা কর্মকাণ্ডে এখনও বহিরাগতদের ভিড়। অশোক মিত্র মশাই ‘ক’বছর আগে হাতে কলমে দেখিয়েছিলেন ‘কলকাতা ভারতের শহর’ (Calcutta, India’s City)’, কলকাতা এখনও কিন্তু তাই আছে। এমনকী সি-এম-ডি-এ কিংবা এম-টি-পি যে বিনিয়োগ করছে কলকাতায়, তারও একটা মুখ্যভাগই পড়ছে আগন্তুকদের পাতে। মিত্রমশাই অধুনা অবশ্য মত পালটেছেন। বলছেন, ১৯৬২-র কলকাতা আজ আর নেই। কলকাতা নাকি এখন স্পষ্টতই পড়তি শহর। (দ্রষ্টব্য: রবিবাসরীয় আনন্দবাজার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯০)। হয়তো বা।
তবে বহিরাগতরা যে এখনও কলকাতার অন্যতম অংশীদার, তা নিয়ে বোধ হয় তর্কের অবকাশ নেই। ঘটনা এই: ভিন রাজ্যের আগন্তুকদের দৌলতে বর্ণাঢ্যতা যেমন বেড়েছে, তেমনই নগর জীবনে দেখা দিয়েছে নানা সমস্যা। এ শহর অনেকের চোখেই কামধেনু মাত্র, দুইয়ে নেওয়া ছাড়া কোনও কর্তব্য নেই তার প্রতি। অনেকে শহরকে এমনভাবে ব্যবহার করছেন, যেন স্টেশন-প্ল্যাটফর্ম মাত্র, কিছুক্ষণের জন্য এখানে থমকে দাঁড়ানো গেল, এই যা। তা ছাড়া, অন্য সমস্যাও আছে। কলকাতার ঘনত্ব অবিশ্বাস্য। এ শহরে প্রতি বর্গমাইলে ১০২,০১০ জন মানুষের বাস। দিল্লিতে কিন্তু সংখ্যাটা মাত্র ৪১২৮০ জন। দিনের বেলায় কাজের সময়ে তারই মধ্যে বাইরে থেকে এসে আছড়ে পড়ে আর লাখ দশেক মানুষ। শহর তখন প্লাবিত। সম্প্রতি একজন সন্ধানী চিৎপুরের পথে এমন একটা বাড়ি আবিষ্কার করেছেন, যা তাঁর মতে পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল বাড়ি। সেখানে প্রতিটি ঘরে কীটের মতো কিলবিল করছে মানুষ। মানুষ অর্থে কলকাতায়, প্রধানত পুরুষ মানুষ। এ শহরে প্রতি হাজারে মেয়ে মাত্র ৬৩৬ জন। (কলকাতার রাস্তায় যে ধর্মের ষাঁড়গুলো ঘুরে বেড়ায়, তাদের মহিলা-ভাগ্য কিন্তু সম্পূর্ণ বিপরীত। ১৯৭২ সালের একটা সরকারি হিসাবে দেখছিলাম, শহরে ষাঁড় (male bovine) যদি ১৭৬১টি তবে গাভী (female bovine) ২৬১৯১টি।) ফলে সেই আদ্যিকালের পরিস্থিতি। অষ্টাদশ শতকে মহিলা অভিযাত্রী মিসেস ফে লিখেছেন—You are liable to be plundered your consent any evening in your life, and without time to collect yourself much less to reract.’
যে কোনও ক্লাবে বা পার্টিতে এক-একজন রূপসী মহিলাকে ঘিরে পুরুষদের বিগলিত জটলা দেখলে মনে হয়, সেই ধারাই বুঝি চলেছে এখনও। ওদিকে লাল আলোর এলাকা বাড়ছে, শহরের জনপথে ফিরি হচ্ছে নারীর যৌবন। এখন এমনকী, দিনে দুপুরে। কলকাতায় পৃথিবীর সব শহরের মতোই বেশ্যাবৃত্তি প্রাচীনতম পেশা। সিরাজউদ্দৌলার কলকাতা আক্রমণের সময়ে (১৭৫৬) কলকাতা কুঠির কর্তারা কী এক অপরাধে যেন, দুটি প্রমোদ বালিকার বিষয়আশয় বাজেয়াপ্ত করতে বলছিলেন। আবার হিকির বেঙ্গল গেজেটের পাতায় আছে ব্ল্যাক টাউনে বেশ্যাপাড়ায় অগ্নিকাণ্ডের খবর। এখজন ইংরাজ তখন সেখানে, তিনিই নাকি বাঁচিয়েছিলেন কাউকে কাউকে। এখন পুলিশের সাধ্য নেই অসহায় প্রমোদ কন্যাদের সঠিক সংখ্যা আপনাকে বলতে পারেন। একজন আকাশের দিকে চোখ তুলে বলেন নক্ষত্রের মতোই অগণনীয় তারা। দুপুরে খাস চৌরঙ্গিতেই আমুদে পুরুষ একসঙ্গে দুটি সিনেমার টিকিট কেনেন, একটি নিজের জন্য, অন্যটি ইতস্তত ঘুরে বেড়াচ্ছে যে কমবয়সি মেয়েগুলো তাদের মধ্যে সবচেয়ে পছন্দসইটির জন্য। ১৮০০ সালে ক্যাপ্টেন উইলিয়মসন লিখেছেন—কলকাতায় মাসে চল্লিশ টাকা খরচ করলেই যে কোনও সাহেব একজন রক্ষিতা রাখতে পারেন, তাঁর মতে সেটা ‘no great price for a bosom friend’. যদিও গত একশো নব্বই বছরে জিনিপত্রের দাম বেড়ে গেছে অনেক, মেয়েরা নাকি এখনও বেশ সস্তা এই কলকাতায়। তার চেয়ে দর বেশি বরং ভালবাসার ঠাঁইগুলোর। কলকাতায় এখনও যে খুটখুট করে কিছু ঘোড়ার গাড়ি চলে ফিরে আছে, তার এক কারণ যদি বাহন হিসাবে উভয় ভারতের সাধারণ যাত্রীরা এগুলোকেই বেশি পছন্দ করেন, তবে অন্য কারণ এই সন্ধ্যায় ময়দানের এগুলোই পরিণত হয় চলমান লাভ-পার্লারে। ট্যাক্সি বা মোটর গাড়িও এ শহরে কখনও কখনও চলমান প্রণয়কুঞ্জ।
কলকাতা অবশ্যই গরিবের শহর। সত্য, অতীতে ব্ল্যাক টাউনে সবাই গরিব ছিলেন না, আবার হোয়াইট টাউনেও সবাই ছিলেন না টাকার কুমির। তৎকালে প্রবাদের ‘প্যাগোডা ট্রি’ ও পাড়ার মতো এ পাড়ায়ও কেউ কেউ ঝাঁকিয়েছেন। বেনিয়ান, মুৎসুদ্দি, সরকার ভাগ্যবান তৎকালেও ছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও কলকাতা চিরকাল গরিবের শহর। দারিদ্র্য এ শহরের পতাকা। কলকাতায় কমপক্ষে ৪ লক্ষ বেকার। আধা-বেকার অগণিত। ভিখারি ৩০ থেকে ৪০ হাজার। কুষ্ঠরোগী হাজার হাজার। (সম্প্রতি ইউনিফর্ম পরা মুখবদ্ধ কুষ্ঠরোগী ভিখারির মিছিল দেখা যাচ্ছে শহরে। এরাও নিশ্চয় শুনেছে কলকাতার পথের ধুলোয় সোনা মিশে আছে।) এখানে কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষ ফুটপাতে ঘুমোয়। কারও কারও মতে সংখ্যাটা আরও বেশি, ৭০ হাজার। ফুটপাতে তাদের নিদ্রাও ইদানীং নির্বিঘ্ন নয়। কেননা, অন্ধকারে হানা দিয়ে ফিরছে খুনি স্টোনম্যান। এ শহরের পথে এখনও ৩৬ হাজার মানুষ রিকশ টানে, হাজার ১৫ ঠেলা চলে, হাজার হাজার মানুষ মাথায় মোট বয়। কলকাতা নিশ্চয় বড়লোকের শহর নয়। কিন্তু কমবেশি ভারতের সব শহরই কি তাই নয়? কথায় আছে যে দেশের মানুষের যা প্রাপ্য, তারা ঠিক সে-ধরনের সরকারই পায়। কলকাতার শ্লথগতি যানগুলি হয়তো সঙ্গত কারণেই মোটরচালক এবং ব্যস্ত যাত্রীদের বিরক্তি উৎপাদন করে, কিন্তু একটু ভেবে দেখলেই বোঝা যায়, এইসব ঠেলা, রিকশ, গরুর গাড়ি কলকাতার পরিবেশ পরিস্থিতির পক্ষে অপরিহার্য বলেই আছে। ‘ঠেলার গাড়ি ঠেলতে ভাল’—লিখেছিলেন সুকুমার রায়। সেই সঙ্গে যোগ করতে পারতেন উনি আরও কয়টি কথা,—‘না ঠেললে শহর অচল’। ঘোর বর্ষায় শহর যখন জলের তলায়, তখন রিকশর টুং টুং কি অসহায় যাত্রীর কাছে দেবদূতের সুমধুর আশ্বাসবাণী নয়?
ঠিক তেমনই কোনও শহরকেই বোধ হয় তার চারপাশের নিকট পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন করে কল্পনা করা যায় না। কলকাতার চারপাশের জেলাগুলোতে কিংবা আশপাশের রাজ্যগুলোতে গরিবদের ভিড় থাকবে আর কলকাতা ঝকঝকে তকতকে স্বর্গোদ্যান হয়ে গড়ে উঠবে, এটা আশা করা অসঙ্গত নয় কি? আর শহরে যখন বেকার আর ক্ষুধার্তের ভিড়, তখন নগরের রূপসজ্জা থাকবে অটুট, এটাও এক ধরনের অবাস্তব চিন্তা। শহরের দেওয়াল পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য ব্যাকুলতা হয়তো স্বাভাবিক। কিন্তু সেখানে যাঁরা আঁকিবুকি কাটে তাদেরও বলার কিছু আছে বই কি। পার্কের রেলিং কিছু মানুষের পক্ষে হয়তো সৌন্দর্য এবং নিরাপত্তার পক্ষে অপরিহার্য, কিন্তু ক্ষুধার্তের কাছে বলাই বাহুল্য, তার মূল্য অন্যরকম, একমাত্র বিবেচ্য লোহার ওজন এবং দর। তাই দেখা যায়, ময়দানের সৈনিকমূর্তির হাত থেকে ব্রোঞ্জের রাইফেল চুরি হয়ে যাচ্ছে, নিজেদের পেট ভরাবার জন্য তস্করেরা নির্দ্বিধায় রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে ম্যানহোলের ঢাকনা। একদিক থেকে কিন্তু এইসব ঘটনাবলিও দারিদ্র্যেরই সংজ্ঞা।
তাই বলে কলকাতা ভারতের অতি গরিবদের জন্য গড়া ভিখারিশালা মাত্র, এমন মনে করবার কোনও কারণ নেই। কলকাতা একই সঙ্গে ধনীর শহরও বটে। উনিশ এবং বিশ শতকের প্রথম দিকে ভাগীরথীর দুই ধারে গড়ে ওঠা কলকারখানাগুলির সব কয়টির চোঙ দিয়েই হয়তো আজ আর সমান বেগে ধোঁয়া বের হয় না। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এই শহর এলাকায়ই রয়েছে এখনও প্রায় ৪০ হাজার রেজিস্টার্ড ফ্যাক্টরি। কলকাতা কিছুটা নিস্তেজ হয়তো। কিন্তু তারই মধ্যে ১৯৭৭-৭৮ সালে এখানে জন্ম নিয়েছে ৩৫৮টি নতুন জয়েন্ট স্টক কোম্পানি। সেগুলোর মিলিত মূলধন ৩৪ কোটি টাকার মতো। তারপর কলকাতা বন্দর। ক’ বছর আগেও এদেশের রফতানি বাণিজ্যের শতকরা ৪০ ভাগ চলত কলকাতার পথে। ইদানীং বন্দরের বেশ বদনাম। তা সত্ত্বেও কিন্তু আমদানি ও রফতানি দুই বাণিজ্যেই কলকাতার বিশেষ ভূমিকা। আর, বিবিধ বাণিজ্যে যে কলকাতা উৎপাদকদের কাছে কতখানি গুরুতর বলে বিবেচিত, তা বোঝা যায় খবরের কাগজে কনজিউমার গুডস-এর বিজ্ঞাপন বা পুজোর সময়ে নানা কোম্পানির হোর্ডিংগুলোর দিকে তাকালে। আমার মনে পড়ে ভূতপূর্ব একজন তথ্যমন্ত্রীর কথা। কলকাতায় তখনও টি ভি আসেনি। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, দেরি হচ্ছে কেন? তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, ‘কলকাতার জন্য প্রয়োজনীয় যথেষ্ট রিসিভিং সেট-এর ব্যবস্থা নেই।’ কলকাতায় তো আর কয়েকশো সেট নিয়ে নামা যায় না। চাল গম হোক, চিনি হোক, ডিজেল পেট্রল আর ক্রিম নেলপালিশই হোক, কলকাতার ক্ষুধা তলহীন। জিজ্ঞাসা করুন যে কোনও কাশ্মীরি শালওয়ালা কিংবা কারিগরকে। তাঁদের অন্যতম ভরসা কলকাতা।
কলকাতার ‘মারকেনটাইল মরালিটি’, শ্ৰেষ্ঠীকুলের নৈতিক মূল্যবোধ কোনও দিনই আদর্শ ছিল না। অ্যাটকিনসন নামে সেকালের একজন কবি কলকাতাকে সম্বোধন করেছিলেন: ‘Calcutta! nurse of obsence and vice’. ভারতে কোন শহরেই বা তা আদর্শ? অষ্টাদশ শতকের কলকাতার একটি কাগজে একটি কপট বিজ্ঞাপন বেরিয়েছিল। হারানো প্রাপ্তি নিরুদ্দেশের বিজ্ঞাপন: ‘Strayed: Common honesty.’ আজকের কলকাতায়ও হয়তো এসব জিনিস খোঁজাখুঁজি করে ফিরতে হবে সত্যসন্ধানীকে। ঔপনিবেশিক বাণিজ্যে লুটের যে উত্তরাধিকার, তাই হয়তো রয়ে গেছে এখনও ব্যবসায়ীদের মুখ্য অংশের আচরণে। কিন্তু ইতিমধ্যে বোধ হয় মিথ্যে হয়ে গেছে ওই বিজ্ঞাপনেরই আর একটি অংশ। ওরা লিখেছিলেন—‘On sale: For ready money—whatever ought to be purchased by merit only.’
আজ আর শুধু টাকার জোরেই কলকাতায় সব কিছু কেনা যায় না। কলকাতার প্রধান বৈশিষ্ট্য সম্ভবত এই যে, টাকা না থাকলেও শুধু গুণের জন্যই এখানে মানুষ সম্মান পায়। অন্যভাবে বললে ‘ম্যামন’-এর সাধকরা এ শহরে যে সম্মান কেনার জন্য ব্যাকুল হয়ে ঘুরে বেড়ায়, মিউজেস-এর পূজারিরা তা ঘরে বসেই পেয়ে যান। লক্ষ্মী সরস্বতীর বিবাদে এ শহরে এখনও সাধারণত বিজয়ী ঘোষিত হন বাগ্দেবীই। কলকাতা এই চরিত্রের জন্যই ভারতের ‘সাংস্কৃতিক রাজধানী’। হ্যাঁ, এখনও। এ জন্য নয় যে, এ শহরে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, কিংবা জাতীয় গ্রন্থাগার, জিওলজিক্যাল সার্ভে বা সার্ভে অব ইন্ডিয়ার ঠিকানা এখনও এখানে, অথবা এখনও ভারতীয় জাদুঘর কলকাতায়ই আছে। কলকাতা শহরে ৯৩টি সিনেমা হল। এখনও বছরে গড়ে ৩০ থেকে ৪০টি বাংলা চলচ্চিত্র এখানে পর্দায় উঁকি দেয়—এসব হয়তো আজ আর তত উল্লেখযোগ্য খবর নয়। কিন্তু ভারতের আর কোনও শহর নিশ্চয় বলতে পারবে না—সেখানে রয়েছে এক ডজন পাবলিক থিয়েটার। একটা পরিসংখ্যানে দেখেছিলাম, পশ্চিম বাংলায় অ্যামেচার থিয়েটার গোষ্ঠীর সংখ্যা নাকি ২ হাজার। তার মুখ্য অংশই বলা নিষ্প্রয়োজন, কলকাতায়। কলকাতার ক্ষুধার কথা জগৎবিখ্যাত। কলকাতার কাগজের ক্ষুধারও সেই খ্যাতি প্রাপ্য। সত্যজিৎ রায় বা মৃণাল সেনের কথাও বাদ দিচ্ছি। যামিনী রায়ের তিরোভাবের পর তো সত্যজিৎ রায় কলকাতার অন্যতম দর্শনীয় পুরুষ ছিলেন। ভারতের যে কোনও জায়গায় উচ্চাঙ্গ সংগীতের সাধকদের কাছেও কিন্তু কলকাতা এখনও সেরা মঞ্চ। এখানে না গাইলে কারও মন ভরে না। কলকাতা থেকেই ঠিক দুশো বছর আগে প্রকাশিত হয়েছিল ভারতের প্রথম মুদ্রিত খবরের কাগজ। হিকির বেঙ্গল গেজেট। এখানেই প্রথম ভারতের হিন্দি উর্দু কাগজ। সে ধারা এখনও অব্যাহত। এখান থেকেই বাংলায় প্রকাশিত হয় ভারতের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিকটি। হিন্দি উর্দু তো বটেই, শুনলে অবাক হয়ে যেতে হয় কলকাতা থেকে চিনা কাগজও বের হয়। কলেজ স্ট্রিটের গলিতে গলিতে রাশি রাশি প্রকাশক। ১৯৭৯ সালে শহরের বইমেলায় ক’দিনের মধ্যে নাকি বিক্রি হয়ে যায় ১ কোটি টাকার বই। ১৯৯০-এ বিক্রির পরিমাণ নাকি ছ’ কোটি টাকা। অথচ তার ক’দিন আগে একটি বাংলা বইয়ের মেলায়ও দেখা যায় একই দৃশ্য—মানুষ ঠেলাঠেলি করছে বইয়ের জন্য। এখানে, একমাত্র এই কলকাতারই ক্রিকেটের মাঠে কিংবা ফুটবলের মাঠে যে ভিড়, সেই ভিড়ের পুনরাবৃত্তি সম্ভব কোনও বইমেলা কিংবা প্রদর্শনীতে। একসময় কর্পোরেশনের হেড কোয়ার্টার-এর পাশে বার্ষিক আর্টফেয়ারে উঁকি দিলেই বোঝা যেত, এ শহর শুধু খেলাপাগল নয়। জেফ্রি মোরহাউস লিখেছিলেন, ‘There are far more poet in this city than there are novelists in Dublin’, সঙ্গে সঙ্গে এটাও তিনি মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যে, কলকাতার কবিরা ভান মাত্র করে না, তারা সত্য সত্যই লেখেন (‘at least put pen to paper’)। ছবি আঁকিয়েরাও তেমনি এঁকে চলেছেন ছবি। অবনীন্দ্রনাথ-যামিনী রায়ের কলকাতায় আজ অনেক শিল্পী। শুধু ক্যালকাটা গ্রুপ-এর অগ্রপথিকরা নন, ভারতের প্রথম সারির অনেক চিত্রকর এবং ভাস্করের ঠিকানাই আজ এই কলকাতা। মীরা মুখোপাধ্যায়, গণেশ পাইন, বা বিকাশ ভট্টাচার্যেই তালিকা নিঃশেষিত নয়। আর কলকাতার ছবি? সে তালিকাও ড্যানিয়েল-ফ্রেজারদের সঙ্গে সঙ্গেই শেষ হয়ে যায়নি। একালে ডেসমণ্ড ডয়েগ-এর উত্তরসূরি অনেকেই। ব্রজগোপাল নামে এক শিল্পী তো শুধু কলকাতার ছবি আঁকতেই মশগুল। তাঁর দেখাদেখি কলকাতা আঁকছেন আজ অন্যরাও। দলে প্রবীণ রথীন মিত্র যেমন আছেন, তেমনই আছেন নবীন সমীর বিশ্বাসও। যাঁরা না আঁকলে বা না লিখলে অবাক হওয়ার কিছু ছিল না, কলকাতার জল হাওয়ার গুণে তাঁরাও এখানে লেখক। মিনিবাস কন্ডাক্টর বা বাসের টাইমকিপার এখানে কবিতা লেখেন, পুলিশের কর্তাব্যক্তি সিনেমা তৈরির কাজে ঝাঁপ দেন।
এই প্রাণৈশ্বর্য আর কতদিন বাঁচিয়ে রাখতে পারবে কলকাতাকে? অনেকের মুখেই শোনা যায় এই প্রশ্ন। কেননা, মাঝে মাঝেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে নাকি অসুস্থতার লক্ষণ। ‘বৈদ্যরা’ বলেন: দেখছেন না, কলকাতায় আত্মহত্যার সংখ্যা বাড়ছে। কলকাতায় খুনের সংখ্যা হয়তো অন্য শহরের তুলনায় কম, কিন্তু মানসিক রোগীর সংখ্যা হয়তো বেশি। তা ছাড়া মাঝে মাঝে যে রাজনৈতিক বিস্ফোরণ, সমাজতাত্ত্বিকেরা নিশ্চয় বলবেন সেটা অন্তঃসলিলা উদ্বেগ আর হতাশারই ফল। এমনকী, সশস্ত্র বিদ্রোহী চরমপন্থীদের অভ্যুত্থান এখানে যে সম্ভব হয়েছিল, সে বোধ হয় কলকাতা শহর জঙ্গলের প্রতিচ্ছবি বলেই। অন্তত কারও কারও ধারণা তাই।
কলকাতার যে ব্যাধি শারীরিক, তা উপশমের চেষ্টা চলছে। তবে যে দ্রুততার সঙ্গে তা চালানো উচিত, ঠিক তা চলছে না। প্রথমত, চেষ্টা চলছে ভাগীরথীর প্রবাহকে বাঁচিয়ে রাখার। ফারাক্কার বিশাল উদ্যোগ তারই জন্য। কলকাতা যে সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় নগর হতে পেরেছিল, সে শুধু কলকাতা বন্দরের জন্য। বন্দরকে বাঁচাবার চেষ্টা চলছে আর এক বন্দর হলদিয়ার সহযোগিতায়। তা ছাড়া, আগেই বলেছি, পাশাপাশি শুরু হয়েছে অন্যান্য কর্মকাণ্ডও। শহরে এই মুহূর্তে চলছে শত শত কোটি টাকার পাতাল রেলের প্রকল্প। শহরের এখানে ওখানে সাবওয়ে হাইওয়ে—এসবের কাজও চলছে। নব নব পরিকল্পনার কথাও শোনা যাচ্ছে।
কিন্তু শুধুমাত্র কিছু সুযোগ-সুবিধা ছুড়ে দিয়েই বোধ হয় কলকাতাকে শান্ত করা যাবে না। কারণ, সে সুবিধাগুলো চোখের সামনে বা নাকের ডগায় ঝুলতে থাকলেও, যতক্ষণ না চারপাশের দুনিয়া থেকে আগন্তুকদের অভিযান বন্ধ হচ্ছে, ততক্ষণ তা অধিকাংশের নাগালের বাইরেই থেকে যাবে। দ্বিতীয়ত, কলকাতার ইতিহাস বলে এ শহরকে শান্ত রাখা শক্ত। কলকাতা জন্ম থেকেই শঠতা প্রবঞ্চনা অসাম্য আর অবিচারের শহর, কারণ কলকাতা ঔপনিবেশিক শহর। ফলে কলকাতা জন্ম থেকেই প্রতিবাদের শহরও বটে। কলকাতার এই ঐতিহ্যের উৎস এবং নজির খুঁজে পাওয়া যায় অষ্টাদশ শতকেও। পরবর্তী কালেও দেখা গেছে, স্বদেশি বা মান্য বলেই কলকাতা কারও অন্যায় নিঃশব্দে মাথা পেতে নিতে রাজি নয়। সুতরাং, রিকশাওয়ালারা কবে বিদ্রোহ করবে, কবে তারা হানা দেবে বড় মানুষদের বাড়িতে, কিংবা যথার্থই ‘The road to world communism lies through Peking, shanghi, and Calcutta’ কিনা, তা নিয়ে বিলাসী কল্পচিন্তা না করেই বলা যায়, কলকাতা সুবিচার চাইবেই। এবং তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার এই, কলকাতা যখন সুবিচার চায়, তখন শুধু নিজের জন্য চায় না। চায় গোটা দেশের জন্যই।
কলকাতা ইদানীং তিলোত্তমা না হলেও কলকাতা কল্লোলিনী অবশ্য। এই মহানগরের প্রধান ঐশ্বর্য বোধ হয় মানুষ। মানুষ আর মানুষ, মাঝে মাঝে কিছু কিছু ফানুস। মোরহাউসের মনে পড়েছিল ব্রুগেলের আঁকা ছবির কথা। ব্যাবেল মিনারের কথা। আমাদের উপমা—জনঅরণ্য। নয়তো ‘ইটের পর ইট, তাতে মানুষ কীট’। যে ভাবেই বর্ণনা করা যাক না কেন, কলকাতা জনসংখ্যায় বিশ্বের চতুর্থ মহানগর মাত্র নয়, এখনও সর্বার্থেই মানুষের শহর। মানুষই এখনও এখানে সার্বভৌম।
পথে মানুষ। ঘাটে মানুষ। হাটে মানুষ। মাঠে মানুষ। মানুষ এখানে কাজ করে। মানুষ এখানে কাজ করে না। মানুষ এখানে ঘুমোয়। মানুষ এখানে ঘুমোয় না। ট্রামে বাসে আঙুরের থোকার মতো ঝুলছে মানুষ। মোটের ওপর মোট নিয়ে চলেছে মানুষ। পথের ধারে মড়ার মতো পড়ে আছে মানুষ। কুঁজোয় জল ভরছে, মানুষ। কাদাজলে পরমানন্দে স্নান করছে মানুষ। কেউ তর্ক করছে, কেউ হাসছে, কেউ চুপচাপ দাঁড়িয়ে মানুষ দেখছে। একজন পরদেশি দর্শক সবিস্ময়ে লিখেছেন, ‘ভোরে পৃথিবীর আর কোনও শহরে এত মানুষ দেখা যায় না। দেখা সম্ভব নয়।’
কলকাতায় রূপ-রস-গন্ধস্পর্শ সব মানবিক। এমনকী শব্দও। ট্রাম-বাস-মিনিবাস-ট্রাক-লরি-টেম্পোর শব্দ অবশ্যই কর্ণভেদী। কিন্তু তারই মধ্যে চলেছে মানবিক ধ্বনির ঐকতান। জুতো পালিশের কিশোরটি হাতের বুরুশ দিয়ে সামনের পাদানিটাকে পেটাচ্ছে, রেডিওতে হিন্দি সিনেমার গান, ভিখারিরা টানা সুরে চালায় প্রার্থনা, ফিরিওয়ালার হাঁকডাক, রিকশাওয়ালার হাতের ঘণ্টার ক্ষীণ শব্দধ্বনি, চলমান মিছিলে উচ্চকিত স্লোগান। সব মিলিয়ে মানুষের জয়ধ্বনি।
শব্দের মতোই কলকাতার শরীরের গন্ধে মানুষ। যেন সেই ‘হাঁউ মাঁউ খাঁউ, মানুষের গন্ধ পাঁউ।’ গাড়ির পোড়া তেল, কয়লার ধোঁয়া, পানমশলা, ধুপধুনো, বেলফুল, গলিত আবর্জনা কিংবা ভাজা ইলিশের গন্ধ ছাপিয়ে যে গন্ধটি নাকে ঠেকে সে কি শেষ পর্যন্ত মানুষেরই গন্ধ নয়? এই অদ্ভুত আশ্চর্য গন্ধটি সম্ভবত দারিদ্র্যের। কেননা, কলকাতার মানুষ গরিব মানুষ। চৌরঙ্গি সিনেমা হলের সামনে বসানো অটোমেটিক দিলবাহার যন্ত্রের সাধ্য কী, সুবাস ছড়িয়ে চাপা দেয় সেই গন্ধ।
কলকাতা, অনেকের মতে অশ্লীলতার সংজ্ঞা। সে অশ্লীলতা যদি আমাদের উলঙ্গ-দারিদ্র হয়, তবে তাকে যথার্থই অশ্লীল করে তোলে কিন্তু এই সব উৎকট আয়োজন। শত গজ দূরে কাঁচা নর্দমার পাশে ইট সাজিয়ে মাটির কালো হাঁড়িতে এক ধরনের আবর্জনা সেদ্ধ হচ্ছে, অন্য ধরনের আবর্জনা জ্বালিয়ে। অভুক্ত শিশুরা তাকিয়ে আছে সেদিকে। অদূরে আকাশে আলোর হরফে লিখিত বিজ্ঞাপন: উপহার হিসাবে এই নরম শয্যাটির কথা কখনও ভেবেছেন কি? কিংবা মানুষ যখন বাদুড়ের মতো ঝুলছে বাসের হ্যান্ডেলে, তখন নাকের সামনে উড়ন্ত বিদেশিনী সুন্দরীর আবদার, ‘উড়ে চলো আমার সঙ্গে।’ ‘সাতান্নর মহাবিদ্রোহের’ পর কলকাতায় যখন সবে গ্যাসের আলো এল তখন গিরিশচন্দ্র ঘোষ (নাট্যকার নন) লিখেছিলেন—আমরা আরও অন্ধকারে নিমজ্জিত হলাম। কেননা, এক একটি গ্যাসের আলো নাকি সতেরোটি মোমবাতির সমান। বিদ্রূপের সে ঐতিহ্যই বহন করে চলেছি আমরা আজও। শহর যখন বস্তিতে বস্তিতে ছয়লাপ, তখন হঠাৎ শখ জেগেছে আমাদের আকাশ ছোঁয়ার, পানীয় জল পৌছাল না সর্বত্র, কিন্তু বাসনা জেগেছে ফোয়ারা সাজাবার।
আর এসব কারণেই বোধ হয়, কলকাতা জন্ম থেকেই প্রতিবাদের শহর। প্রতিবাদ ঠেকানোর জন্য কলকাতার অঙ্গে বিবিধ বর্ম। পাড়ার ছেলেরা বসে আড্ডা জমাতে পারে, সেই ভয়ে অনেক বাড়ির রোয়াকে দেখা যায় স্থায়ী ভাবে রচিত কণ্টকশয্যা। ইদানীং দেখা যাচ্ছে দেওয়ালের পিঠেও বর্ম, পাছে কেউ লিখে ফেলে সে আশঙ্কায় মসৃণ দেওয়াল পরিণত পিপীলিকাভুক কিংবা কুমিরের পিঠের নকশায়। ট্রামের চালকের সামনে তারের জাল, পুলিশের হাতে বেতের ঢাল, কালো গাড়ির ললাটে অতি উজ্জ্বল সার্চ লাইট। স্থিতাবস্থা রক্ষা করার জন্য নানা আয়োজন এই শহরে। তারই মধ্যে মাঝে মাঝে দেখি কলকাতা বিদ্রোহী। ভারতের রাজনৈতিক চেতনায় এই শহরের ভূমিকা কী, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ এখানে নেই। দু’ একটি ঘটনার উল্লেখ করছি শুধু।
দরখাস্ত লেখার অভ্যাস তখনও রপ্ত হয়নি আমাদের। কোথায় তখন ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন? কোথায় কংগ্রেস? ১৮২৭ সালের কথা। কলকাতায় হঠাৎ সেদিন পালকি-বেহারাদের ধর্মঘট। কেননা, পুলিশের হুকুম ‘লাইসেন্স নিতে হবে।’ সে লাইসেন্স আবার ধারণ করতে হবে শরীরে। তা ছাড়া, ঘড়ি ধরে নিতে হবে পারিশ্রমিক। প্রতিবাদে কাঁধ থেকে পালকি নামিয়ে রেখে শহরকে অচল করে দিল বেহারার দল। সমসাময়িক সংবাদপত্র লিখছে— ‘অনুমান হয়, ইহার মধ্যে কিছু দুষ্ট লোক থাকিবেক কিম্বা কেহ তাহাদিগকে কুমন্ত্রণা দিয়া থাকিবেক।’ শুধু ধর্মঘট নয়, মিছিল, সভা, সেদিন সবই দেখা গিয়েছিল এই কলকাতায়। দল বেঁধে বেহারারা হাজির হয়েছিল ‘পুলিশ অফিসে’। যাওয়ার আগে জমায়েত হয়ে সভা করেছিল ময়দানের কোণে। ফেরার পথে সুপ্রিম কোর্টের সামনের মাঠে আবার সভা। হই হই কাণ্ড। তাদের সমর্থনে ধর্মঘট করেছিল প্রাইভেট পালকির বাহকেরাও। ব্যঙ্গ করে খবরের কাগজ লিখেছিল— ‘বোধ হয়, যে, দুই তিন হপ্তার মধ্যে ঘোড়াদেরও সভা হইয়া এক দরখাস্ত উপস্থিত হইবেক। ইহা অসম্ভব নয় যেহেতুক হিতোপদেশ প্রভৃতি গ্রন্থের মধ্যে ষাঁড় শৃগালাদি কথা কহিতেছে।’
কলকাতাকে প্রতিবাদের ভাষা শিখিয়েছে শহরের গরিবরাই। পরবর্তী কালে বাবুরা তাদেরই পদাংক অনুসরণ করেছেন মাত্র। ‘সম্বাদ ভাস্কর’ কাগজে দেখা যায় ১৮৫৬ সালে কলকাতার খালে ‘মেং গিরিন সাহেবের’ দৌরাত্ম্যের প্রতিবাদে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ জানাতে হাজির হয়েছিলেন লাটভবনের দরজায়। তাঁরা গভর্নমেন্ট হাউসের পশ্চিমদ্বারের সামনে দণ্ডায়মান হয়ে দু ঘণ্টা চিৎকার করে নিজেদের দুঃখ জানান। এই প্রতিবাদ ধ্বনিও গরিবদের কাছ থেকেই শিখে নেওয়া। কেননা, ১৮৩৪ সালে একই কাণ্ড করেছিলেন নুনের কারিগর ‘খালাড়িরা’। দু’ হাজার খালাড়ি জমায়েত হয়েছিলেন সেদিন লাটভবনের সামনে। তাঁদের মুখে ‘দুঃখধ্বনি’। লর্ড বেন্টিঙ্ক গাড়ি হাঁকিয়ে বের হতে গিয়ে বাধা পেলেন। খালাড়িরা তাঁর গাড়ির সামনে পড়ে আত্মহত্যা করতে চায়। বাধ্য হয়ে তাঁকে গাড়ি ঘোরাতে হল। ভিতরে গিয়ে সেক্রেটারির মাধ্যমে তিনি কয়েকজন খালাড়িকে ডেকে পাঠালেন। তারা পাঁচ-ছয়শো সরা নিয়ে হাজির হল তাঁর সামনে। সাহেব অবাক। ওরা বলল: ঠাকুরবাবু নিমক মহলের দেওয়ান। প্রতিবার ওজনের আগে তার নামে এক-এক সরা নুন আমাদের সরিয়ে রেখে, তবে ওজন করতে হয়। তা ছাড়া, আরও নানা অভিযোগ।
ঠাকুরবাবু মানে স্বনামধন্য দ্বারকানাথ ঠাকুর। প্রিন্স দ্বারকানাথ। কলকাতা বলতে গেলে তখনও মন মেজাজে কৈশোরে। তবু গরিব খালাড়িরা তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামতেও পিছু-পা নয়। তাই বলছিলাম, স্বর্গের উপমা অলীক। কলকাতার সত্যিকারের গৌরবের হেতু যদি কিছু থাকে, তবে তার চৌদ্দ আনাই গরিবদের অবদান। গরিব বলতে বলাই বাহুল্য, ধরতে হবে তাঁদেরও, ভবানীচরণের ভাষায়, যাঁরা ‘মধ্যবিত্ত লোক, অর্থাৎ যাঁহারা ধনাঢ্য নহেন। কেবল অন্নযোগে আছেন।’
কলকাতার নাম
কলকাতার নামকরণ সম্পর্কে নানা মুনির নানা মত। কয়েকটি প্রধান মতামত মাত্র আলোচিত হয়েছে। তার মধ্যে কালীঘাটে গুপ্তযুগের মুদ্রা প্রাপ্তির সংবাদটি এবং কালিকটের অনুকরণে ‘ক্যালকাটা’ বা কলিকাতা নামকরণের চেষ্টার কাহিনীটি বিশেষ কৌতূহলোদ্দীপক। প্রথমটির জন্য দ্রষ্টব্য: Robert Montgomery Martin, Martins Eastern India, Vol 3, London, 1868। এবং দ্বিতীয়টির জন্য প্রমথনাথ মল্লিকের ‘কলিকাতার কথা’, আদিকাণ্ড (১৯৩১)। তবে উল্লেখযোগ্য, আধুনিক কালে প্রায় সকলেই মেনে নিয়েছেন সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের অভিমত। কলকাতা নামের ব্যুৎপত্তি হিসাবে প্রচলিত ছয়টি অভিমত খণ্ডন করে তিনি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, নামটি ‘কলি (চুন)’ +‘কাতা’ (গুদাম) থেকেই উৎপত্তি লাভ করেছে। তাঁর মতে একই কারণে হুগলি জেলার আমতা থানার ‘রসপুর কলিকাতা’ এবং ঢাকা জেলার লোহাজঙ্গ থানার ‘কলিকাতা ভোগাদিয়া’ নামে দুটি গ্রামের নামকরণ। ‘কলিকাতা নামের ব্যুৎপত্তি’ শীর্ষক তাঁর এই মূল্যবান রচনাটি প্রকাশিত হয় ‘সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা’র পঞ্চচত্বারিংশ সংখ্যায় (১৯৩৮)। দীর্ঘ ত্রিশ বছর পরে সেটি পুনর্মুদ্রিত হয় সাপ্তাহিক ‘দেশ’ পত্রিকায় (৯ মার্চ, ১৯৬৮)। ‘এক্ষণ’ পত্রে (৭ম বর্ষ, ৪র্থ সংখ্যা, কার্তিক-অগ্রহায়ণ ১৩৭৬) রাধারমণ মিত্র সুনীতিকুমারের বক্তব্য খণ্ডন করতে গিয়ে এক দীর্ঘ আলোচনা প্রকাশ করেন। এই পত্রের পরবর্তী কয়েকটি সংখ্যায় যে বাদানুবাদ চলে তাতে সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, সুকুমার সেন সহ অনেকেই যোগ দিয়েছিলেন। সুকুমার সেন প্রসঙ্গত কলকাতা নামকরণের পিছনে অন্য এক যুক্তি পেশ করেন। তিনি বলেন—“আরবি শব্দ ‘কলি’ (qali) মানে নির্বোধ, আর ‘কত্তা’ (qatte) মানে দস্যু, হত্যাকারী (বহুবচন)।” তা হলে স্থাননামটির মানে দাঁড়ায় ‘বোকা বজ্জাতের আড্ডা’ (সুকুমার সেন—‘কলিকাতার কাহিনী’, কলকাতা, ১৯৯০)। কালীর সঙ্গে কলকাতার সম্পর্ক নিয়ে অনেকেই আলোচনা করেছেন। বিশেষ ভাবে দ্রষ্টব্য: অতুলকৃষ্ণ রায়, কলিকাতার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, কলকাতা, ১৯৮২ এবং বিনয়কৃষ্ণ দেব—কলিকাতার ইতিহাস, সুবলচন্দ্র মিত্র সংকলিত, কলকাতা, ১৯০৭। এছাড়া দ্রষ্টব্য—Bholanath Chauder, Antiquti of Calcutta and its name: GourDas Bysak—Kalighat and Calcutta, দুটি প্রবন্ধই পুনর্মুদ্রিত হয়েছে আলোক রায় সম্পাদিত ‘Counterpoint’-এ (Calcutta, 1977)। ‘বিশ্বকোষ’-এ (৩য় খণ্ড, ১২৯৯) কলকাতা বিষয়ক প্রবন্ধটি পুনর্মুদ্রিত হয়েছে নিশীথরঞ্জন রায় ও সুনীল দাশ সম্পাদিত ‘পুরনো কলকাতার কথা’ (কলকাতা, ১৯৮৯) সংকলনটিতে। তৎসহ পাঠ্য—P. T. Nair, Calcutta, Origin of its name, Calcutta, 1985.
কলকাতার দাম
কেল্লা মানে নতুন ফোর্ট উইলিয়াম। এটি তৈরি হয় পলাশী যুদ্ধের পর, ১৭৫৭ সালের শেষ দিকে। তখনই তার সূচনা। উদ্যোক্তা ছিলেন লর্ড ক্লাইভ, তত্ত্বাবধায়ক ক্যাপ্টেন ব্রোহিয়ার। ইট তৈরির জন্য বিলাত থেকে লোক আনা হয়েছিল। কিন্তু তাদের অনেকেই কোম্পানির কাজ ফেলে স্থানীয় ধনীদের কাজে লেগে যায়। তাই নিয়ে অনেক গোল। শেষ পর্যন্ত দেশীয় শ্রমিক দিয়েই কাজ শেষ করা হয়। সেটা ১৭৮১ সালের কথা। সংক্ষিপ্ত বিবরণের জন্য দ্রষ্টব্য: A B. N. Churchill, Short notes on the History of Fort William, Calcutta 1901; C R Wilson, the Buildings of the present Fort William, Calcutta Review, No-237, July, 1904; Fort William Flag day souvenir, 1957; Bhaskar Chakrabarty, Basudeb Chattopadhyay, Suranjan Das, Fort William, A Historical perspective, Calcutta, 1997. রাজভবনের কাহিনীর জন্য দ্রষ্টব্য: Curzon of Keddelstone, The British Government in India, The Story of Viceroys and Government House, 2 Vols, London, 1925. Philip Davies, Splender of the Ray, British Architecture in India, 1660-1947, New Delhi, 1985; Mark Bence-James, Palaces of the Raj, London, 1970. ১৯৯১ সালে কলকাতার আয়তন ছিল ১৮৭.৩৩ বর্গ কিলোমিটার, লোকসংখ্যা ৪৩ লক্ষ ৮৮ হাজার ৩৬২। ওই বছরে সি এম ডি এ তথা বৃহত্তর কলকাতার আয়তন ছিল ১৩৫০ বর্গ কিলোমিটার, লোকসংখ্যা ১ কোটি ২১ লক্ষ। পুরনো কলকাতার আয়তন সম্পর্কে কিছু তথ্য রয়েছে—List of Document on Calcutta, vol-I, 1764-1800, Editor, Adhir Chakravarty, Calcutta, 1990 সংকলনটিতেও। ‘কলিকাতা জমিদারি’ প্রাপ্তির সংবাদটির জন্য দ্রষ্টব্য: William Foster সম্পাদিত English Factories in India গ্রন্থমালা। বইটি ১৬১৮ সাল থেকে ১৬৬৯ সাল পর্যন্ত কোম্পানির কর্তৃপক্ষের কাছে লেখা চিঠিপত্রের সটীকা সংকলন। মোট তেরো খণ্ড। জমি প্রাপ্তির কাহিনীটির জন্য বিশেষ করে দেখা প্রয়োজন ১৬৫৫-৬০ পর্বের খণ্ডটি। জমি বিলি তথা তৎকালীন রাজস্ব সংক্রান্ত তথ্যগুলো প্রধানত সংগৃহীত হয়েছে যে দুটি বই থেকে সেগুলো হল: R.C. Sterndale, A Historical Account of Calcutta Collectorate etc, Calcutta, New edition, Calcutta, 1959; Rainey’s A Historical and Topographical Sketch of Calcutta, P. T. Nair (ed.) Calcutta, 1986, পি টি নায়ার-এর Job Charnock, The Founder of Calcutta: in Facts and Fiction, Calcutta, 1990 বইটিও প্রাসঙ্গিক। আরও দ্রষ্টব্য: A. K. Roy, Short History of Calcutta, 1902. New Edition, (Ed, N.R. Ray), Calcutta, 1982.
কলকাতায় কত মানুষ
১৮৭২ সালে লোক গণনার আগে কলকাতার জনসংখ্যা: ১৭১৬—(হ্যামিলটন) ১২০০০, ১৭৫২—(হলওয়েল) ৪০৯০০০। ১৭৮২—(ম্যাকিনটস) ৫০০০০০, ১৭৮৯—(গ্ৰাঁ পে) ৫০০০০০, ইত্যাদি। শেষে ১৮৫০ সালে চিফ ম্যাজিস্ট্রেটের হিসাবে জনসংখ্যা দাঁড়ায় ৪,১৩,১৮৮৪ জনে। ১৮৭২ সালের লোকগণনায় তার পরিমাণ—৬,৩৩,০০৯, ১৮৮১ সালে ৬,১২,৩০৭, ১৯৪১ সালে ২১,০৮৮,৯৯, ১৯৫১ সালে ২৫,৪৮৬৭৭, ১৯৬১ সালে ২৯,২৭,২৮০, ১৯৮১ সালে ৩৩, ০৫০০৬ এবং ৪৩, ৮৮, ৩৬২। তথ্যসূত্র Hand Book, Calcutta Corporation, 1998, জনসংখ্যা নিয়ে আলোচনার পক্ষে প্রাসঙ্গিক কয়টি বই: Samuel Watter Goode, Municipal Calcutta, its Institutions in their origin and growth, Edinburgh, 1916; P T Nair, Calcutta at a Glances, Calcutta Corporation 1989; India Census 1951, vol-VI, part III, Calcutta City, A Mitra, New Delhi, 1954. তাছাড়া A. K. Roy: A Short History of Calcutta, India Census 1901, vol VIII, Part I বইটিও প্রাসঙ্গিক। বইটির নতুন সংস্করণও লভ্য। সম্পাদনা করেছেন Nisith R Roy, Calcutta, 1982, কলকাতার জনসংখ্যা সম্পর্কে দুইটি কৌতূহলোদ্দীপক রচনা প্রকাশিত হয় ‘রহস্য সন্দর্ভ’ (২২ খণ্ড, ১৯২২ সংখ্যা, ১৮৬৫) এবং ‘বঙ্গমহিলা, পত্রে। (কার্তিক, ১২৮৩ বঙ্গাব্দ,/১৮৬৭)। প্রথম প্রবন্ধে পরিবেশিত হয় ‘প্রজামণ্ডলীর মধ্যে কোন্ জাতীয় মধ্যে কীদৃশ বৃদ্ধ দৃষ্ট হইয়াছিল তদ্বিবরণ যথা—সর্বাপেক্ষা ইউরোপীয় বৃদ্ধ ৮৭ বৎসর বয়ক্রম, ঐ সঙ্কর ইউরোপীয়-১১৪, ঐ আর্ম্মানী ৩৪, ঐ ইহুদী ৮৮, ঐ মুসলমান ১০৮, ঐ হিন্দু ১১৬।” দ্বিতীয় নিবন্ধে জানা যায় এই নগরে ১৫৮ জন বধির ও মূক। ৬৯৫ জন অন্ধ। ১৩০ জন জড়। ১৮৯ জন পাগল ও ১২৭ জন কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত। দ্রষ্টব্য, পুরনো সাময়িকপত্রের প্রবন্ধ সংকলন, সম্পাদক প্রদীপ বসু, কলকাতা, ১৯৯৮।
জোব চার্নকের মুখোমুখি
P. T. Nair, Job Charnock, The Founder of Calcutta, Calcutta, 1977. P. T. Nair, Calcutta in the Seventeenth Century, Calcutta, 1986. T. H. Holland, The Petrology of Job Charnock’s Tombstone, Journal of the Asiatic Society of Bengal, 62(2), 1893; H.B. Hyde— Notes on the Mausoleum of Job Charnock and the bones recently discovered within it, Proceeding of Asiatic Society of Bengal, 1893; A Document of the Charnock Time, Bengal Past and Present, (3) 1909. জোব চার্নকের প্রতিকৃতি যা উপলক্ষ করে এই রচনা, তার প্রতিলিপি প্রথম প্রকাশিত হয় ‘এনসাইক্লোপেডিয়া ব্রিটানিকা’র (১৯৭৪) ‘মাইক্রোপেডিয়া’ অংশে, ২য় খণ্ড, ১৫ সংস্করণ। মূল ছবিটির চিত্রকর হোয়াইট নামে (White) এক শিল্পী। সেটি অবলম্বন করে এচিং করেছিলেন টি ট্রোটার (T. Trotter, 1750-1803) নামে এক খোদাইশিল্পী। ছবিটি এখন রয়েছে বিলাতের ম্যানসেল সংগ্রহে (Mansell Collection)।
কলকাতার পিতামহ
C.R. Wilson, Early Annals of the English in Bengal, Vol II, Part II, Surman Embasy, Calcutta, 1911, Reprint, Calcutta, 1963; Mesrorb J Seth, History of the Armenians in India, Calcutta, 1896, Reprint, Delhi, 1988, J Seth, Armenians in India from the earliest times to the present, Calcutta, 1937. শেঠ আরমেনিয়ানদের নিয়ে অনেক মূল্যবান প্রবন্ধ লিখেছেন। তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি: ১) Khoja Petrus, the Armenian marchant diplomat of Calcutta, Bengal past and present, (36), No 71, Oct-Dec, 1928; A Loyal and an eminent Armenian marchant of Calcutta in Second-half of the 18th century, Bengal Past and Present, 41, No 83-84, Janu-July, 1931; The Oldest Christan Tomb in Calcutta, Bengal Past and Present, 43, No 85-86, Janu-June 1932; Armenians as political stepping stones in India, Bengal Past and Present, 52, No 103-104, July-Dec. 1936. তাছাড়া প্রাসঙ্গিক পাঠ্যের মধ্যে আছে—Suntity Kumar Chaterjee: An old Calcutta Street: Sookes Street and its association, Calcutta Municipal Gazette, 18.2.1928; Pradip Sinha, Calcutta in Urban History, Calcutta, 1978. বইটির একটি অধ্যায় আরমেনিয়ানদের নিয়ে শিরোনাম A Peddling Community, The Armenians; Anne Basil, Armenian Settlements in India, From the earliest time to the present day, Calcutta, 1969; Pradip Sinha, Calcutta in Urban History, Calcutta 1978, Rev. James Long, Selection from the unpublished records of Government for the years 1748 to 1767 etc. Calcutta, 1869. Reprint, Calcutta, 1973.
মারাঠা ডিচ
K K Datta, Aliverdi and His times, Calcutta, 1939. The Maharashtra Puran/An Eighteenth Century Bengali Historical Text, Translated, annotated with an Introduction By Eduard C Dimock Jr, Pratul Chandra Gupta Hanolulu, Hawai, 1961. কবি গঙ্গারামের মহারাষ্ট্রা পুরাণ বাংলায় প্রথম ছাপা হয় ১৯০৮ সালে। দ্রষ্টব্য: সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা, ১৩ (১৯০৮), ১৪ (১৯০৯), ১৫ (১৯১০)। তাছাড়া প্রাসঙ্গিক আর একটি বই, সুপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইতিহাসাশ্রিত বাংলা কবিতা, (১৭৫১-১৮৫৫) কলকাতা, ১৩৬১। মারাঠা ডিচ সম্পর্কে তথ্যের জন্য দ্রষ্টব্য: Elliot Walter Madge, The Maharat Ditch, Bengal Past and Presnt, No. 27, 1924; A. G. Pawar, How Calcutta Prepared to defend itself in 1742, Modern Review, 75 (6), June, 1944; The last traces of Mahratta Ditch, Bengal Past And Present, No. 24, 1922; Mahratta Ditch, the Mofusil and the ditch, Asiatic Journal, vol 38, 1839.
একটি পিতলের পাত
সিরাজউদ্দৌলার কলকাতা আক্রমণ ও বিজয় নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে। বিস্তর লেখালিখি তথা তর্ক বিতর্ক হয়েছে তথাকথিত ‘ব্ল্যাক হোল’ নিয়েও। তর্ক একালেও চলেছে। দ্রষ্টব্য: S. C. Hill, Bengal in 1756-1757, Indian Record Series, 3 vols, London, 1905; J. T. Wheeler, Early Records of the British in India, Calcutta 1879, Reprint, Delhi 1972; C. R. Wilson, Old Fort William in Bengal, A Selection of official documents dealing with its history, 2 vols, London, 1906;
George Nathaniel Curzon (Marquess of Keddleston), British Government in India. The story of Viceroy and Government House, Calcutta, 2 vols, London, 1925; Cotton, Calcutta Old and New, A historical descriptive handbook of the city, New Edition, Ed., N. R. Ray, 1980;
J.Z. Holwell, A Genuine Narrative, 2nd edition. London, 1758; Noel Barbar, The Blackhole of Calcutta, A Reconstruction, New York, 1965; D. L. Richardson, History of the Fall of Calcutta and the calamity of the Blackhole, being the first centennial commoration of the events, 2nd edition, calcutta, 1856; C.R. Wilson, Old Fort Willum and the Black Hole, A note, Calcutta, 1904, Reproduced in ‘counterpoint’, vol-I, Calcutta, 1977; Black-Hole : Full proceeding of the debate organised by Calcutta Historical Society, on 24th March, 1916, Bengal Past and Present, 12 (1916). বিতর্ক চলে মধ্যরাত্রি পর্যন্ত। তবু কোনও স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। প্রাসঙ্গিক আরও কিছু পাঠ্য: H.E. Busteed, Echoes from Old Calcutta, 4th edition, London, 1908; James Julian Cotton, Survivors of Black Hole, Bengal Past and Present, 29, (Janu.-March 1925); Brijen Gupta, Sirajuddullah and the East India Company 1756-1757, Leiden, 1962, Brijen Gupta, ‘The Black Hole incident,’ Journal of Asian Studies, 19, (Nov. 1959); J. H. Little, The Black Hole—The question of Holwell verasity’, Bengal Past and Presnt, II, (July- Dec, 1915); Tapan Mohan Chatterjee, The Road to Plassey, Calcutta, 1960, Amalendu De, Notes on the Black Hole Tragedy, Quarterly Review of Historical Studies, 10, (1970-71); রচনাটি অন্ধকূপ বিষয়ক একটি পাঠ্যতালিকা। Iris Macfarlane, The Black Hole, London, 1975; বইটিতে রয়েছে ভারতে ইংরেজ রাজত্বের সূচনা পর্বের ইতিহাস। পরিশিষ্টে হলওয়েলের দেওয়া বিবরণটি সংযোজিত। প্রসঙ্গত, ক্লাইভের কয়েকটি জীবনীর উল্লেখ করা দরকার। তার প্রত্যেকটিতেই ‘ব্ল্যাকহোল’ আলোচিত। দ্রষ্টব্য: R. J. Minney, Clive of India, London, 1931; Mark Bence-Jones, Clive of India, London 1974; Nirod C Choudhury, Clive of India, London 1975; Percival Spear, London, 1975; Robert Harvey, Clive: The Life and death of a British Emperor, London, 1988. বাংলায়ও ‘অন্ধকূপ হত্যা’ নিয়ে বেশ কিছু আলোচনা হয়েছে। তার মধ্যে বিশেষ করে উল্লেখযোগ্য: অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়, সিরাজউদ্দৌলা, ১ম সংস্করণ, ১৮৯৮। পরিশিষ্টে ক্যালকাটা হিস্টরিক্যাল সোসাইটিতে আয়োজিত বিতর্কে নিজের বক্তব্য পুনর্মুদ্রিত। তপনমোহন চট্টোপাধ্যায়, পলাশীর যুদ্ধ, কলকাতা ১৯৫৩ অন্ধকূপ হত্যা, বাঙালীর দৃষ্টিতে, সংকলন ও সম্পাদনা বারিদবরণ ঘোষ, কলকাতা, ১৯৮৮। সব দেখেশুনে মনে হয় পেতলের ওই পাতের বেষ্টনীতে সেদিন কোনও কিছু না ঘটলেও নিজেদের আগ্রাসী নীতির সমর্থনে ইংরেজকে হয়তো নৈতিকতার প্রয়োজনে অন্য কোনও ঘটনা খুঁজে নিতে হত।
ফেয়ারলি প্লেসের বেগম
H.E.A. Cotton, Calcutta Old and New; A Historical and descriptive handbook to the city, Calcutta, 1907; New Edition, Ed., N.R. Ray, Calcutta, 1980. Moreno, W. W. B., Anglo-Indian Women of the Past, Bengal Past and Present, 39 (1930); Harry Hobbs, Old time European Women in India, Bengal Past and Presnt, 69 (1950); Anjali SenGupta, Cameos of Twelve European Women in India (1757-1857), Calcutta, 1984; Edwards-Stuart Ivon, The Calcutta of Begum Johnson, London, 1990; Nakul Chatterjee, Begum Johnson, Hindusthan Standard, July 7, 1963.
শহরে নৌকাডুবি
দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য অঞ্চলের মতো কলকাতায় মাঝে মধ্যেই আছড়ে পড়ে দুরন্ত ঝড়। ১৭৩৭ সালের ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অবশ্যই ফাঁপিয়ে বলা। ঝড়ের সঙ্গে ভূমিকম্প ও জলোচ্ছ্বাস হলেও মৃত্যুর ওই অঙ্কটি মনে হয় অবিশ্বাস্য। তবে পরবর্তী কালেও কিন্তু ঝড়ে বারবার লণ্ডভণ্ড হয়েছে কলকাতা শহর। সেদিক থেকে ভাবলে নৌকাডুবি অন্য সময়ও সম্ভব। কয়েকটি ঝড়ের বিবরণের জন্য দ্রষ্টব্য: The Great Cyclone of Calcutta, Calcutta Municipal Gazette, 24th Nov., 1934; Sepia Calcutta, Archivist, Cycolne of 1737, Calcutta Municipal Gazette, 30th Sept., 1978; Account of the Great Bengal Cyclone of the 5th Oct., 1864; Calcutta, 1864. The Cyclone of 5th Oct., 1864, Calcutta Christian Observer, 25 1864; ১৮৬৪ সালের আগে কলকাতায় দুটি ভয়াবহ ঝড় ১৮৩৩ এবং ১৮৫২ সালে। ১৮৬৪’র পরে আবার বিধ্বংসী ঝড় হানা দেয় ১৮৭২ সালে।
ফাঁসির ফ্যান্সি
The Mayor’s Court of Calcutta (In High Court at Calcutta Centenary Souvenir (1862-1962), Ed., Ananda Mohan Mukherjee, Calcutta, 1962; Bygone days of the old court house street (In Highcourt at Calcutta 125th aniversary souvenir (1862-1987), Calcutta, 1987; S. C. Law, Stray notes from a Sheriff Scrapbook, Calcutta Municipal Gazette, 30 Nov., 1940; H.E.A. Cotton, The Sherffs of Calcutta, 1727 to 1929, Bengal Past and Prsent, 38, 75, July-Sept., 1929 and the Sheriffs of Calcutta 1727-1930, Bengal Past and Present, 38, 76 (Oct-Dec, 1929); Narendra Nath Ganguli, The Sheriffs of Calcutta, 1931- 50, Bengal Past and Present, 69 (1950); Mayors Court and Indian Residents of Calcutta, Bengal Past and Present, 70, (1951); B.V. Roy, Domestic Servents in Calcutta, Calcutta Municipal Gazette, 7th May, 1960; হরিহর শেঠ, প্রাচীন কলিকাতা পরিচয়, কথায় ও চিত্রে, কলকাতা, ১৯৫২; বিনয় ঘোষ, নূতন শহরে পুরাতন ভৃত্য, কলিকাতা শহরের ইতিবৃত্ত, কলকাতা, ১৯৭৫; ফাঁসি বাজার, মঙ্গল পাণ্ডের বিচার, শ্রীপান্থ, কলকাতা, ১৯৮২। ভারতে চরমদণ্ড হিসাবে ফাঁসির রীতি প্রচলিত হয় ইংরেজি বিচারধারা অনুকরণে। সে দেশেও ফাঁসির সমালোচক ছিলেন অনেকেই। হাল আমলে অবশ্য ব্রিটেন থেকে ফাঁসিকাঠ বিদায় নিয়েছে। পটভূমি হিসাবে প্রাসঙ্গিক দুটি বই: Arther Koestler and C. H. Rolph, Hanged by the Neck, London, 1961; Leslie Hale, Hanged in Error. London, 1961
ইন্দের স্মরণে
Herbert Alick Stark, Calcutta in Slavery days Social Study, Social Bulletin no 23, 1916, Calcutta; Syud Hossan, Slavery Days in Old Calcutta, Bengal Past and Present, 2 (1908); K P Rai, Slave Trade in old Calcutta, Calcutta Municipal Gazette, 18th April, 1931; শ্রীপান্থ, ক্রীতদাস, আনন্দবাজার পত্রিকা শারদীয়া সংখ্যা, ১৩৭০। হিকির গেজেট থেকে কলকাতায় দাস বিক্রির একটি বিজ্ঞাপন: To be Sold/ A Fine Coffre Boy that understands the bussiness of a Butler, Kismutdar, and cooking. Price four hundred sicca Rupees. Any gentleman wanting such a servant, may see him and be informed of further particulars by applying to the printer,” Hickys Bengal Gazetee; or the original Calcutta General Advertiser, (XLVII) Dec. 16, 1780. এই সংখ্যাটিতে কলকাতা বন্দরে এক জাহাজ থেকে একজন দাসের পলায়ন সংবাদও রয়েছে।
লটারির শহর
লটারি কমিটির রিপোর্ট নিয়ে বাংলায় বিস্তৃত আলোচনা করেছেন বিনয় ঘোষ। দ্রষ্টব্য: বিনয় ঘোষ, লটারি কমিটির রিপোর্ট ১৮১৭-২১ : কলকাতা ১৭০৭, কলকাতার ক্রমবিকাশ, কলকাতা শহরের ইতিবৃত্ত, কলকাতা ১৯৭৫। হাতে লেখা লটারি কমিটির ৩ খণ্ড প্রতিবেদন রয়েছে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সংগ্রহে। সাধারণভাবে লটারির ইতিহাস এবং বিশেষভাবে টাউন হল লটারির জন্য দ্রষ্টব্য: Basudev Chattopadhyay, The Town Hall Calcutta, Calcutta, 1998.
কলকাতার পথ
P. Thankappan Nair, A History of the Calcutta Streets, Calcutta, 1986; Thacker’s Calcutta Directory: City and Suburbs, together with the Chief Industries of Bengal 1905- 1959 (yearly vols); Calcutta; Calcutta at a glance, Second Editon 1997. পুরসভা অনেক ডাইরেক্টরি প্রকাশ করেছে।
এই সংক্ষিপ্ত নগর-বিবরণ থেকে জানা যায় স্বাধীনতার পর ৩৫০টিরও বেশি রাস্তার নাম বদল করা হয়েছে।
পথের কাহিনীর জন্য বিশেষ করে দ্রষ্টব্য: ক্ষিতীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কলিকাতায় চলাফেরা, সেকালে আর একালে, কলকাতা ১৯৩০, পুনর্মুদ্রণ ১৯৮৮; হরিহর শেঠ প্রাচীন কলিকাতা পরিচয়: কথায় ও চিত্রে, কলকাতা, ১৯৫২; প্রাণতোষ ঘটক, কলকাতার পথ ঘাট, ১৩৬৩, পুনর্মুদ্রণ ১৯৮৯; নকুল চট্টোপাধ্যায়, তিন শতকের কলকাতা, ১৩৬৩, পুনর্মুদ্রণ ১৩৯৭; অজিতকুমার বসু, কলিকাতার রাজপথ, সমাজে ও সংস্কৃতিতে, কলকাতা ১৯৯৬; সুকুমার সেন, কলিকাতার কাহিনী, কলকাতা, ১৯৯০। অজিতকুমার বসুর বইটিতে বেশ কিছু মূল্যবান সারণি রয়েছে যা শহরের পথের আলোচনায় প্রাসঙ্গিক। তাছাড়া দ্রষ্টব্য Shoshee Chunder Dutt, The Street Music of Calcutta, Bengaliana, London, (N.D.) এবং রাধাপ্রসাদ গুপ্ত, কলকাতার ফিরিওয়ালার ডাক আর রাস্তার আওয়াজ বা টক-নোনতা-মিষ্টি-ঝাল-কষায়-তিক্ত রস মিশ্রিত সখের জলপান, কলকাতা, ১৯৮৪।
ব্ল্যাক টাউন আর ব্ল্যাক জমিদার
দ্রষ্টব্য: C. R. Wilson, Early Annals of the English in Bengal, Vol-I, Calcutta, 1895, vol. II, Part-I, Calcutta, 1900; Rev. James Long, Selections from the unpublished Recods of Government of India for the years 1748 to 1764 etc, Calcutta, 1869, New Edition, Calcutta, 1973; R. C. Sterndele, A Hostorical Account of the Calcutta Collectorate, Calcutta, 1885, New Edition 1959; J. Z. Holwell, Indian tracts, London, 3rd Edition, 1774; J.C. Marshman Note on the left or Calcutta Bank of the River Hoogly, Calcutta Review, 3 : 6 (Janu., 1845), Reprinted in Calcutta Keepsake, Ed., Aloke Roy, Calcutta, 1978; W. H. Carey, Good old days of John Company, 1600-1858, (2 vols), Ist Calcutta Edition, 1906-7; William Makintosh, Travels in Europe, Asia, Africa (1777-1781) etc. অষ্টাদশ শতকে তাঁর মতো অন্যান্য যে সব বিদেশি কলকাতায় এসেছিলেন তাঁদের বিবরণের জন্য দ্রষ্টব্য: P.T. Nair, Calcutta in the 18th Century, Calcutta, 1984; James Ronald Martin, Notes on the Medical Topography of Calcutta, Calcutta, 1837. মার্টিনের প্রতিবেদন এবং সরকারি কমিটির বক্তব্যের জন্য দ্রষ্টব্য: Census of India, 1951, Vol. VI, Part III, Calcutta City, A. Mitra, New Delhi, 1951, N. N. Ghose, Memories of Nubkissen Bahadur, Calcutta, 1875, স্টার্নডেল লিখেছেন গোবিন্দরামের কোনও উত্তরপুরুষ গোবিন্দরাম মিত্রের একটি জীবনী লিখেছিলেন। সংবাদটি সত্য। দুষ্প্রাপ্য এই ছোট্ট জীবনীটি সংকলিত করেছেন নারায়ণ দত্ত তাঁর ‘জন কোম্পানির বাঙালি কর্মচারী’র পরিশিষ্টে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পলাশির পরে শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা যে ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন তাঁদের তালিকায় গোবিন্দরামের দুই রক্ষিতার নামও পাওয়া যায়।
চিনা পাড়ায় গৃহযুদ্ধ
Basanta Kumar Basu, A Bygone Chinese Colony in Bengal, Bengal Past and Present, 47, 1934; C Alabaster, Chinese Colony in Calcutta, Calcutta Review, 31 : 62, 1858; Ali Hasan, The Chinese in Calcutta: A Study of a racial minority (in Aspects of Society and culture in Calcutta, Ed. MKA Siddiqi,) Anthropological Survey, Calcutta, 1982; P.C. RoyChowdhury, A Chinese Temple at Achipur, (in his Temples and Legends of Bengal). Bombay, 1967; Augustus Sommerville, Crime and Religions Belifs in India, Calcutta, 2nd Edition, 1966; Nayana Goradia, Calcutta vanishing era, Imprint, 16(12), March, 1977, Nikhil Sarkar, Chinese of Calcutta, Probe India 2 (2), April, 1980; Jawhar Sircar, The Chinese of Calcutta, (In: Calcutta: The Living City, Vol II) Calcutta, 1950; Pradip Sinha, Calcutta in Urban History, Calcutta, 1978.
প্রাচ্যবিদ্যার পীঠস্থান
Centenary Review of the Asiatic Society of Bengal form 1784 to 1833, Calcutta, 1885. Reprinted in 1986; The Asiatic Society (issued on the occasion of the 190th Aniversary; Calcutta 1974; The Asiatic Society (issued on the occasion of 200th Aniversary, Calcutta 1985; 150th Jubilee of the Royal Asiatic Society of Bengal (1784- 1934) and the bicentenary of Sir William Jones (1746-1946), Calcutta, 1946; Proceedings of the Asiatic Society, Vol I (1784-1800), compiled and edited by Sibdas Chowdhury, Calcutta, 1980; A. J. Arbery, Asiatic Jones (1746-1794), London, 1948; The Life and influence of Sir William Jones (1746-94), London, 1946; G.H. Canon, Oriental Jones, London, 1964; S.N. Mukherjee, Sir Willam Jones, A Study in Eighteenth Century British Attitude to India, London, 1968, Calcutta Edition 1987; O.P. Kejriwal, The Asiatic Society of Bengal and the discovery of India Past (1784-1838), Delhi, 1988; যোগেশচন্দ্র বাগল, কলিকাতার সংস্কৃতি কেন্দ্র, কলকাতা, ১৩৬৬। ১৯৮৪ সাল থেকে কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসাবে স্বীকৃত। প্রাচ্য বিদ্যা সম্পর্কে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে মূল্যবান আলোচনার জন্য দ্রষ্টব্য: Edward W. Said, Orientalism, London, 1978.
রাইটার
Hilton Brown, The Sahibs, London, 1948; C. H. Philips, East India Company, London, 1961; B. Gardner, The East India Company, Londin 1971; R Mukherjee, The Rise and Fall of the East India Company, Berlin, 1955, New Edition, New Delhi 1974; John Keay, The Honourble Company, A History of The English East India Company, London, 1991; K. N. Choudhury, The English East India Company, London, 1965; H. Furber, John Company at work, London, 1970; T.G.P Speer, The Nabobs, London, 1932, P. Woodruff, The Men Who ruled India (2 vols), London, 1953; Sir Gorge Trevelyan, The Compettiona Wallah, 1864, Indian Edition, 1992; Laura Sykes (Ed), Calcutta through the British eyes, New Delhi, 1992; R. V. Vernede (Ed.) British Life in India, New Delhi, 1995; Geoffery Moorhouse, India Britanica, London, 1983; V.G. Kiernan, The Lords of the Human Kind, Londoon, 1972, John Bowle, The Imperial Achivement, Rise and Transformation of British Empire, London, 1974; Michael Edwards, Raj, London, 1967. ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, তার কর্মী এবং কর্মপদ্ধতি থেকে শুরু সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা এবং শাসন ও শাসকদের কাহিনী জানার পক্ষে
কয়েকটি দরকারি বইয়ের নাম বলা হল। একই বিষয়ে সম্প্রতিকালে আর একটি বিশিষ্ট প্রকাশনা তিনখণ্ডে জেমস মরিস-এর ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ইতিহাস। ভারত সেখানে একমাত্র আলোচ্য না হলেও অন্যতম আলোচ্য। দ্রষ্টব্য: James Morris, Heavens Comand, (London, 1973), Pax Britanica (London, 1968), Farewell the Trumpets (London, 1978)। তা ছাড়া প্রাসঙ্গিক আর দুটি ছোট বই, Charles Allen, Plain Tales from the Raj, London 1975, Raj Scrap Book (1877-1947) London, 1977; রাইটার্স বিল্ডিংসের ইতিহাসের রূপরেখার জন্য H.E.A. Cotton, Calcutta Old and New, New Edition 1980; এবং স্থাপত্যের জন্য P.T. Nair, ‘Architecture of the Writers Buildings’ (in Architecture of the Cities, International Conference and exhibition, Souvenir), Calcutta 1990. আরও একটি প্রাসঙ্গিক রচনা: বিমলচন্দ্র সিংহ, রাইটার্স বিল্ডিংস, দেশ, শারদীয়, ১৩৬৪।
ডাক্তার বদ্যি
D.G. Crawford, Notes on the Early Hospitals of Calcutta, Calcutta, 1903, also The Centenary of Calcutta Medical College, Bengal Past and Present, 48 (July-Dec, 1934); Das Sundari Mohan, ‘The Calcutta Medical College’ A short account of its origin, Calcutta Municipal Gazette, 6th Oct, 1934; Devaprasad Sarvadhicary, Origin of the Calcutta Medical College, Calcutta Municipal Gazette, 1st Dec, 1934; The Centenary of the Medical College, Bengal (1835-1934), Souvenir published by a Committee, Calcutta, 1935; B.V. Roy, The First Four Calcutta Doctors, Calcutta Municipal Gazette, 10th June, 1944; W.J. Buchanan, the first hospitals in Calcutta, Bengal Past and Present, 1907; Debasis Bose the first human disection in Calcutta and Madhusudan Gupta, in Calcutta 300, A Retrospective Souvenir, Calcutta, 1991. প্রাসঙ্গিক বাংলা বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অরুণকুমার দত্ত ও আরতি মুখোপাধ্যায়, দেশীয় ব্যাধি ও ব্যবস্থা, কলকাতা, ১৯৯০; বিজয়ভূষণ রায়, দেশীয় ভাষায় চিকিৎসা বিজ্ঞান চর্চা, কলকাতা ১৯৯৫; বিজ্ঞান ভাবনায় কলকাতা (সম্পাদক) অরূপরতন ভট্টাচার্য, কলকাতা ১৯৯০; বিনয়ভূষণ রায় (লেখক-সম্পাদক), উনিশ শতকের বাংলার চিকিৎসা ব্যবস্থা, দেশীয় ভেষজ ও সরকার, দিল্লি, ১৯৯৮; অপরাজিতা বসু, কলিকাতা তিনশ বছরের বিজ্ঞান চর্চা; কলকাতা ১৯৯০। এই রচনায় বাস্টিড-এর ‘ইকোজ’ ছাড়াও বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়েছে ক্যালকাটা গেজেট এবং সেন্সাস রিপোর্ট। ক্যালকাটা গেজেটের ‘সিলেকশানস’ ছয় খণ্ডে প্রকাশিত হয়। সম্পাদক তিনজন। W.S. Seton-Karr সম্পাদনা করেন প্রথম তিনখণ্ড (Vol-I, 1784-1788; Vol-II 1789-1797, Vol 3, 1798-1805). H. I. Sandemann সম্পাদনা করেন পরের দুই খণ্ড (Vol. IV, 1806-1815, Vol-v, 1816-1823) এবং ষষ্ঠ খণ্ডটি A.C. Dasgupta ‘Days of the John Company (1824-1832)’ নামে স্বাধীনতার পরে প্রকাশ করেন। প্রথম পাঁচটি খণ্ড কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয় ১৮৬৪-১৮৬৯ সালের মধ্যে। ষষ্ঠ খণ্ড ১৯৫৯ সালে। ধান ভানতে শিবের গীত হয়ে গেল। তবু বিশদ বলতে হল কারণ রচনায় যদিও প্রধানত প্রথম খণ্ডটি ব্যবহার করা হয়েছে তবে বাকি খণ্ডগুলোও কলকাতা চর্চার পক্ষে অত্যাবশ্যক। সেন্সাস রিপোর্ট বলতে আগে উল্লেখিত ১৯৫১ সালের সেন্সাস-এর কলকাতা খণ্ড। প্রসঙ্গত শোনার মতো একটি ছোট্ট খবর ১৮২৮ সালে ডাঃ হ্যালিডে ৩৮৪ সিক্কা টাকার দাবিতে (ছয়বারের ফি) জনৈক রোগীর বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা দায়ের করেন। স্মরণীয় এই সত্যও যে, ইংরেজরাও তখনও জানতেন না জলের সঙ্গে কলেরার বা মশার সঙ্গে ম্যালেরিয়ার কোনও সম্পর্ক আছে। জোব চার্ণক স্বয়ং নাকি মারা যান ম্যালেরিয়ায়। অন্তত লক্ষণগুলো শুনে আজকের চিকিৎসক তাই বলবেন। কলেরা থেকে বাঁচার জন্য এক সময় কোমর আর পেটে বেল্ট বাঁধাও চল হয়েছিল কলকাতায়। তাকে বলা হত—‘কলেরা বেল্ট’!
মূর্তি চোর
মেজর জেনারেল স্যার চার্লস স্টুয়ার্টের সংগ্রহের প্রসঙ্গে দ্রষ্টব্য: Ramaprasad Chanda, ‘Hindu Stuart’, a forgotten worthy and his tomb, Bengal Past and present, 50, serial No. 99, July-Dec 1935; Evan Cotton, ‘Hindu Stuart’ Bengal Past and Present, 46, Serial No. 91-92, July-Dec, 1933. ‘Hindu Stuart’, a discovery at the British Museum, Bengal Past and Present, 48, 1934; ‘হিন্দু স্টুয়ার্ট’ বিষয়ে একটি বাংলা রচনার কথা প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য। দ্রষ্টব্য: সৌমেন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায়, হিন্দু স্টুয়ার্ট, কোম্পানির আমলের এক বিচিত্র চরিত্র, দেশ, শারদীয়া, ১৩৬৪। হিন্দু দেবদেবীর ভাস্কর্যে শোভিত সাউথ পার্ক স্ট্রিটের গোরস্থানের সমাধি মন্দিরটি আজ আর আগের চেহারায় নেই। পক্ষকালের দশকেও তা ছিল রীতিমত দর্শনীয়। এখন পুরানো ছবিই ভরসা।
ইজ্জতের লড়াই
বাকিংহাম এবং জেমসন-এর লড়াইটির জন্য ‘সেকালের একজন সাংবাদিক’ নিবন্ধটি দ্রষ্টব্য। সাংবাদিকদের অন্যান্য লড়াইগুলোর জন্য দ্রষ্টব্য: Margarita Burns, The Indian Press: A History of the growth of Public Opinion in India, London, 1940; J.H. Stocqueler, The Memoirs of a Journalist, Bombay, 1873. ইংল্যান্ডের সংবাদগুলো সংগৃহীত যে বই থেকে: W.C. Sydeny, England and the English in the 18th century, London, 2d edition, 1892; শেরিডন এবং ক্যাপ্টেন ম্যাথুস-এর লড়াইটি হয় ১৭৭২ সালের মে মাসে। ফক্স এবং অ্যাডমস-এর লড়াইটি ১৭৭৯ সালের নভেম্বর, এবং পিট বনাম টিয়ার্স-এর লড়াই ১৭৯৮ সালের মে মাসে। সম্ভবত সেটাই ইংল্যান্ডে শেষ লড়াই। কলকাতায় প্রথম ডুয়েল হেস্টিংস ও ফ্রান্সিস-এর। সেটা ১৭৮০ সালের ১৭ আগস্টের ঘটনা। এ বিষয়ে হেস্টিংস-এর নিজের লেখা একটা ৪৫ পাতার বিবরণও নাকি রয়েছে। সেটি আবিষ্কার করেছিলেন লর্ড কার্জন। (দ্রষ্টব্য Bengal Past and Present. vol. 30, 1925)। ক্লেভারিং ও বারওয়েল-এর লড়াইটির জন্য দ্রষ্টব্য, Bengal Past and Present, Vol-3, 1919। সম্ভবত ‘মিঃ জি’ ও ‘মিঃ এ’-এর লড়াইটি কলকাতায় শেষ ডুয়েল। এসব ছোটখাটো ডুয়েল সমাচারের জন্য দেখা দরকার Selections from Calcutta Gazette, তার ঠিকুজি আগেই দেওয়া হয়েছে। কাগজটির সংক্ষিপ্ত ইতিহাসের জন্য উল্লেখিত মার্গারেট বার্নস ছাড়াও দেখা দরকার, A.C. Dasgupta, The Story of Calctutta Gazette, Calcutta, 1958. হেস্টিংস ও ফ্রান্সিস এবং তৎকালের প্রাসঙ্গিক নানা তথ্যের জন্য দ্রষ্টব্য: H.E. Busteed, Echoes from old Calcutta, being chiefly reminiscences of the days of Waren Hastings, Francis and Impey, Calcutta, 1882, 4th Edition, Calcutta, 1908; S.C. Grier, Letters of Warren Hastings to his Wife, London, 1905; Hartly House, Calcutta/A Novel of the days of Warren Hsatings, 1st Calcutta Edition, 1908; Keith G. Feiling, Warren Hastings, Calcutta, London, 1954; Charles Lawson, The Private life of Warren Hastings, London, 1895; Baries Merrin, Life and Times of Warren Hastings, the maker of British India, New Delhi, 1989; Penderal Moon, Warren Hastings and British India, Newyork, 1962; Joseph Parkes and Merivale Herman, Memoirs of Sir Philip Francis, 2 vols, London 1867; Sir John Kaye, Memoirs of Sir Philip Francis, Edinburgh Review, No. 127, James, 1868; Sophiq Weitzman, Warren Hastings and Philip Francis, Manchester University Historical Series No. 56, (ND).
কলকাতায় ডুয়েলিং সম্পর্কে কয়েকটি রচনা:
Henry Khundkar, Duelling days of old Calcutta, Calcutta Review No. 267, Janu, 1912; Hemendra Prasad Ghose, Duelling in Calcutta, Calcutta Municipal Gazette, Dec. 4. 1941; B. V. Roy, Duelling in old Calcutta. Calcutta Municipal Gazette, 27th May, 1939; On Duelling, The East Indian United Service Journal, July, 1834; বিনয় ঘোষ, ডুয়েল, টাউন কলকাতার কড়চা, কলকাতা শহরের ইতিবৃত্ত, কলকাতা, ১৯৭৫। ক্যালকাটা জার্নালের একটি সংবাদ সংকলন রয়েছে। দ্রষ্টব্য Satyajit Das, Selections from the Indian Journals, 2 vols, Calcutta Journal (1818-1820), Calcutta, 1963 & 1965.
কলকাতায় প্রথম রুশ নাগরিক
ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বঙ্গীয় নাট্যশালার ইতিহাস (১৭৯৫-১৮৭৫), ১ম সংস্করণ ১৩৪০, ৫ম সংস্করণ, ১৩৮৬; বিলাতি যাত্রা থেকে স্বদেশি থিয়েটার, সুবীর রায়চৌধুরী, স্বপন মজুমদার, কলকাতা, ১৯৭১; শঙ্কর ভট্টাচার্য, বাংলা রঙ্গালয়ের ইতিহাস, কলকাতা, ১৯৮২; হায়াৎ মামুদ, গেরাসিস স্তেপানভিচ লিয়েবেদেফ, ঢাকা, ১৯৮৫; অরুণ সান্যাল বাঙালীর সংস্কৃতি ও লেবেডেফ, কলকাতা, ১৩৭৯; কেশব চক্রবর্তী, ভারত-রুশ কথা: বাঙ্গালীর রুশচর্চা (১৭৫৭-১৯১৭), কলকাতা, ১৯৭৬; তন্দ্রা চক্রবর্তী (সম্পাদক), লেবেদেফ, গেরাসিম স্তেপনোভিচ—কলকাতায় আমি ও আমার থিয়েটার, কলকাতা ১৯৮৭; Sushil Kumar Mukherjee, The Story of the Calcutta Theatres (1753-1980), Calcutta, 1982.
সংক্ষেপে আমার স্ত্রীর কাহিনী
সমসাময়িক বহুজনের রচনা অবলম্বনে লেখা বটে, তবে মিসেস গ্রান্ডের কাহিনীটি তাঁর স্বামীর জবানিতেও লভ্য। জর্জ ফ্রান্সিস গ্রান্ড-এর একটি আত্মজীবনী আছে। দ্রষ্টব্য: G.F. Grand, The Narative of a Gentleman Long Resident in India, Edited by W.K. Firminger, Calcutta, 1910. মিসেস গ্রান্ডের সঙ্গে তাঁর বিয়ে এবং বিচ্ছেদ সে বইয়ের একটি অন্যতম অধ্যায়। অবশ্য মাত্র আট পৃষ্ঠার উপাখ্যান। বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮১৪ সালে কেপ অব গুড হেপ-এ। গ্রান্ড তখন উত্তমাশা অন্তরীপে এবং দ্বিতীয়বার দার পরিগ্রহ করেছেন। মিসেস গ্রান্ডের অবশিষ্ট কাহিনীটির তথ্য সংগৃহীত হয়েছে গ্রান্ড সাহেবের আত্মজীবনীর কলকাতা-সংস্করণ এবং বাস্টিড-এর উল্লেখিত ‘Echoes from old Calcutta (4th edition) থেকে। মিসেস গ্রান্ডের প্রতিকৃতি নিয়েও এককালে রীতিমত আলোড়ন কলকাতায়। দ্রষ্টব্য: Calcutta, Faces and Places in Pre-Camera Days, (Ed) Wilmot Corfield, Calcutta, 1910; ফিলিপ ফ্রান্সিস এবং ইলাইজা ইম্পের পূর্ণাঙ্গ জীবনীর জন্য দ্রষ্টব্য: Joseph Parkes and Herman Merivale, Memoirs of Sir Philip Francis, 2 Vols, London 1867; E.B. Impay, Memoirs of Sir Elijah Impay, London, 1850. মির্জা আবু তালেব খান সেকালের একজন ভারতীয় পশ্চিমযাত্রী। তাঁর অভিজ্ঞতার কাহিনী অনেকেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বইটি ফার্সি থেকে ইংরেজিতেও অনূদিত হয়। তাঁর সম্পর্কে খবরাখবরের জন্য দ্রষ্টব্য: Selections from Calcutta Gazette, Vol-IV, and Asiatic Journal Vol-XIX, NS. 1836. বারওয়েল-এর যে কাহিনীটি মাদাম গ্রান্ডের মুখে বলা হয়েছে তার সূত্র—Henry F. Thompson, Intrigues of a Nabab or Bengal Fittest soil for Lust, London, 1780. মাদাম গ্রান্ড সম্পর্কে আরও খবরাখবরের জন্য দ্রষ্টব্য: J. J. Cotton, The Last Will of Mr. G. F. Grand, Bengal Past and Present, 25 (Serial No. 49-50), Janu-June, 1923; Catherine Noel Jude Grand (1762-1835), Bengal Past and Present, 23 (serial No. 45-46), July-Dec. 1921; also see Bengal Past and Present, 46 (serial No. 91), July-Sept. 1933.
অসবর্ণে আপত্তি নাই
Major A. M. Daniels, The History of Skinner’s Horse, London, 1925; Cardic Dover, Half Caste, London, 1937; J.B. Fraser, Military Memoirs of Colonel James Skinner, London, 1851; G.C. Grey (Ed. by H L O Garrett) European Adventurs of Northern India 1785-1892, London, 2nd ed, 1921; S.C. Hill, The Life of Claude Martin, Calcutta, 1901; H. G. Keene, Hindusthan under Freelancers, 1770-1820, London, 1907; Colonel Hugh Pearse, The Hearseys: Five Generation of an Anglo-Indian Family, London, 1905; Alexander Innes Shand, Soldiers of Fourtunes, London, 1907; John Lall, Begam Samru, Fading Portrait in a Guilded Frame, New Delhi, 1997; Brajendranath Benerji, Begum Samru, New Edition, New Delhi 1989. Emily Eden, up the Country, London, 1930. Bruce Seymour, Lola Montez, Newyork, 1996; IShbal Ross, The uncrowned Queen, Life of Lola Montez, Newyork, 1972; Halen Holdredge, The Woman in Black, the Life of Lola Montez, Newyork, 1955. লোলা নাকি পদ্যও লিখতেন। এদেশের পালকিবাহকদের গান হিসাবে তিনি একটি লিমেরিক লিখেছেন। মোটা সোটা পাদরি সাহেব যখন পালকিতে তখন ‘খবরদার’ ‘খবরদার’ বলতে ওরা নাকি বলে—কী ভারী বোঝা, ওকে ফেলে দাও! আর লোলা যখন পালকিতে—ইনি মোটে ভারী নন, ওঁকে তাড়াতাড়ি নিয়ে চল। দ্রষ্টব্য: Wilmot Corfield, Calcutta, Faces and Places in Pre-Camera Days, Calcutta, 1910. লোলার জন্ম ব্রিটেনে ১৮১৮ সালে, মৃত্যু নিউইয়র্কে, ১৮৬১ সালে। এই প্রসঙ্গে আরও দেখা যেতে পারে: Letters of an Indian Judge to an English women, London, 1934. সম্প্রতি বইটির নতুন এক সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে। বলা হয় বইটির লেখক একজন ‘English Gentleman’. অনেকের অনুমান তিনি অনেক বইয়ের লেখক Dorothy Black। কাহিনীটি অতএব কাল্পনিক হওয়ারই বিলক্ষণ সম্ভাবনা। আরও দ্রষ্টব্য: Sumanta Banerjee, Dangerous Outcaste, The Prostitute in Nineteenth Century Bengal, Calcutta, 1998. এই বইয়ের দুইটি অধ্যায় সাদা-কালোর বিশেষ সম্পর্ক নিয়ে—‘British Sahibs and Native Women’ and ‘White Mars and Black Venus’, শ্রীপান্থ, কেয়াবাৎ মেয়ে, কলকাতা, ১৯৮৮। জোব চার্নক সম্পর্কিত কবিতাটির জন্য দ্রষ্টব্য: James Rainey, A Historical & Topographical Sketch of Calcutta, Edited by P.T. Nair, New Edition, Calcutta 1986; চার্নকের জীবনী সম্পর্কে নায়ারকৃত দুটি বইয়ের কথা ইতিমধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, চার্নকের ব্যক্তিত্বের মূল্যায়নের জন্য দ্রষ্টব্য: Philip Wooddruff, The Men who ruled India, Vol-1, London, 1953. কির্কপ্যাট্রিক-এর কাহিনীটির জন্য Blackwood Magazine, 1893, Calcutta Review, 1899-এর ফাইল দেখতে হবে। কারণ, কোন মাস তা মনে নেই। এটুকু মনে আছে ক্যালকাটা রিভিউ-এর রচনাটির লেখক ছিলেন জুলিয়ান কটন। কর্নেল গার্ডনার-এর কাহিনীটি সবিস্তার লিখেছেন ফ্যানি পার্কস। দ্রষ্টব্য: Fanny Parkes, Wonderings of a Pilgrim in search of Picturesque, Vol-1 London, 1850; De Boigue ছাড়াও অন্যান্য অসবর্ণের কাহিনীর জন্য দ্রষ্টব্য: Dennis Kincaid, British Social Life in India 1608-1937, London, 2nd edition, 1973. ‘Asiaticus’ ছদ্ম নাম। তাঁর আসল নাম—Philip Dromer Stanhope. তাঁর বইয়ের নাম— Genuine Memoirs of Asiaticus in a Series of letters…et., London, 1784, (Reproduced by P. T. Nair in his Calcutta in the 18th century, Calcutta, 1984). মিসেস শেরউড মানে Mary Sherwood. বইয়ের নাম—George Desmond, উদ্ধৃত পদ্যাংশটি ভুলক্রমে ডয়লির বলা হয়েছে। আসলে তা একটি কাব্যকাহিনীর অংশ বিশেষ। দ্রষ্টব্য, The Adventures of Qui Hi, Calcutta, 1816; একই ধরনের একটি সচিত্র বই রয়েছে চার্লস ডয়লিরও। Charles D’oyle, Tom Raw, the griffin, Calcutta, 1824; কর্নেল পিয়ার্স ওয়ারেন হেস্টিংস-এর বন্ধু ও তাঁর মিলিটারি সেক্রেটারি। হেস্টিংস-ফ্রান্সিস-এর লড়াইয়ে তিনি হেস্টিংস-এর পার্শ্বচর ছিলেন। তাঁর স্মৃতিকথার জন্য দ্রষ্টব্য: A Memoir of Colonel Thomas Pears of the Bengal Artillery, Bengal Past and Present No. 1-7, (1908-1911).
কালীঘাটের বিয়ে
গ্রেট নাগ্রিন কাহিনীটির জন্য দ্রষ্টব্য: E.S. Turner, A History of Courtship, London, 1988; এদেশীয় মেয়ের বিয়ে করা সম্পর্কে কোম্পানির একটি আদেশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মূল হুকুমনামাটির একটি অংশ—“Induce by all means you can, invite our soldiers to marry with the Native women, because it will be impossible to get ordinary young women…et. (order from the Directors of the East India Company, (Jan. 1688). এ বিষয়ে আরও তথ্যের জন্য দ্রষ্টব্য: Herbert Alick Stark, Hostages of India: or the life story of the Anglo-Indian Race, Calcutta, 1926; Frank Anthony, Britain’s Betrayal in India: The Story of the Anglo-Indian Community, New Delhi, 1969; H. W.B Moreno, Anglo-Indian Women of the Past, Bengal Past and Present, Vol-39, 1930, H. Hobbs, Old time European…etc. Bengal Past and Present, serial No. 132, 1950 সেন্ট জন চার্চের ইতিহাসের জন্য দ্রষ্টব্য: Elliot Walter Madge, Illustrated Bandbook of St. John Church, Calcutta, 1909; T.H. Holland ‘How St. John Church was Built, Calcutta, (ND). সোফিয়া গোল্ড বোর্ন কলকাতায় ছিলেন ১৭৮৩-৮৪ সালে। অনুমান করা হয় ‘Hartly House, Calcutta’ বইটির তিনিই লেখক। বিশপ হিবার সম্পর্কিত উক্তিটির জন্য দ্রষ্টব্য কিনকেড-এর লেখা পূর্বোল্লিখিত বইটি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য কলকাতার দ্বিতীয় বিশপ রেজিনাল্ড হিবার (কলকাতা বাস ১৮২৩-২৬) সাহেবের জার্নাল একটি প্রাসঙ্গিক গুরুত্বপূর্ণ বই। দ্রষ্টব্য: Bishop Reginald Heber, Narrative of a Journey through the upper Provinces of India, 3 vols, London, 1821. হিবার-এর কলকাতা-বিবরণও নায়ারের সংকলনে রয়েছে। দ্রষ্টব্য: Calcutta in the 19th century, calcutta, 1989; ভারতের এই অঞ্চলে পাদ্রীদের নানা কর্মকাণ্ডের জন্য দ্রষ্টব্য: H.B. Hyde, The Parish of Bengal 1678 to 1788, Calcutta, 1899, & Parochial annals of Bengal, Calcutta, 1901; ম্যাকবেরি ফিলিপ ফ্রান্সিস-এর শ্যালক ও তাঁর একান্ত সচিব। হিকি সংক্রান্ত খবরাখবরের জন্য দ্রষ্টব্য: William Hickey, Memoirs of William Hickey, Ed. by Alfred Spencer, 3 Vols. London, 1913- 1925; one volume edition Ed. by Peter Quenell, London, 1960. প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, হিকির স্মৃতিকথার কলকাতা-পর্ব বিনয় ঘোষের অনুবাদেও লভ্য। দ্রষ্টব্য: বিনয় ঘোষ, কলকাতা শহরের ইতিবৃত্ত, কলকাতা, ১৯৭৪। উল্লেখিত হিন্দুস্থানি ছড়াটি এবং অন্যান্য হিন্দি ছড়া প্রমথ মল্লিক মশাইয়ের বই থেকে উদ্ধৃত। দ্রষ্টব্য: প্রমথনাথ মল্লিক, কলিকাতার কথা, আদি কাণ্ড, কলকাতা, ১৯৩১ এবং সচিত্র কলিকাতার কথা, মধ্য কাণ্ড, কলকাতা, ১৯৩৫। ব্যাণ্ডেল গির্জা সম্পর্কে দ্রষ্টব্য: Rev. James Long, The Portuguese in Northern India, Calcutta, 1846; J.A.A. Campus, History of the Portuguese in Bengal, Calcutta, 1919. ব্যান্ডেলের নানদের বিষয়ে সংবাদটি এশিয়াটিকাস-এর দেওয়া। ক্যাপ্টেন হ্যামিলটন-এর কথা চার্নক প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁর বিবরণের জন্য দ্রষ্টব্য: Captain Alexander Hamilton, A New Account of East Indies. 2 vols. Edinburgh, 1727, পরে আরও বেশ কয়েকটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। কলকাতা পর্বের জন্য দ্রষ্টব্য: P.T. Nair, Calcutta in the 18th centruy, Calcutta, 1984. কালীঘাট বিষয়ে দুটি বাংলা বই: সূর্যকুমার চট্টোপাধ্যায়, কালীক্ষেত্র দীপিকা, ১৮৯১। হরিপদ ভৌমিক সম্পাদিত সাম্প্রতিক সংস্করণই টীকা ভাষ্যে অতিশয় মূল্যবান, কলকাতা, ১৯৮৬; উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় সার্বভৌম, কালীঘাট ইতিবৃত্ত, ১৩৩২। কালীঘাটের বিয়ে প্রসঙ্গে একটি সংবাদ,—সেকালে ইংরেজ মেয়েদের নিয়ে নাকি লটারিও হত! দ্রষ্টব্য: Selections from Calcutta Gazette, vol-V, অথবা, Bengal Past and Present, Vol-10, 1915.
রোটি আউর বেটি
অসবর্ণে আপত্তি নাই প্রসঙ্গে যে সব বইপত্র উল্লেখ করা হয়েছে এই রচনার পক্ষেও তা প্রাসঙ্গিক।
হবসন জবসন
‘হবসন-জবসন’ শব্দটির মূল ‘হায় হাসান, হায় হোসেন।’ ১৬১৮ সাল থেকে ওই কথাগুলোই ইংরেজের কানে ‘Hossees Gossen’, ‘Hossy Gossy,’ ‘Hossein Jossen’, ‘Jacksom Baksom’, ‘Hassien Jassein’ ইত্যাদি হয়ে অবশেষে ১৬৩৮ সালে ‘Hobson Jobson’-এ স্থিতি নেয়। তার পর থেকেই শব্দ দুটি ইঙ্গ-ভারতীয় ভাষার অন্যতম প্রতিনিধি হিসাবে বিবেচিত। Arther Burnal এবং Colonel Yule সাহেব সে কারণেই তাঁদের বিখ্যাত অভিধানটির নাম দেন—‘হবসন জবসন।’ বার্নাল সাহেব (১৮৪০-৮২) মাদ্রাজে বিচার বিভাগীয় কর্মচারী ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর ইয়ুল সাহেবের সম্পাদনায় ১৮৮৬ সালে বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়। তারপর একালে তার অনেক সংস্করণ হয়েছে। সম্প্রতিকালে কলকাতা থেকেও প্রকাশিত হয়েছে একাধিক হুবহু সংস্করণ। শুধু অ্যাঙ্গলো-ইন্ডিয়ান ভাষার ইতিহাস নয়, ‘হবসন জবসন’ অনেক বিষয়েই ভারতীয় এক বিশ্বকোষ তুল্য। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, বর্তমান রচনায় সপ্তদশ শতক পর্যন্ত যে সব শব্দ জন্মলাভ করেছে প্রধানত তারই অংশ বিশেষ ব্যবহৃত হয়েছে। বলা বাহুল্য, তার পরও এই বিশ শতক অবধি হবসন-জবসন প্রক্রিয়া যথারীতি অব্যাহত রয়েছে। বাণিজ্যিক শব্দ বাদ দিলে অষ্টাদশ শতকে প্রধানত জন্মলাভ করে সামরিক ও রাজনৈতিক শব্দাবলি। (যেমন-Lootiewallah, Nabob-maker, Dewani ইত্যাদি)। হেস্টিংস-এর বিচারের সময় এসব শব্দ এমন ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হয় যে, শ্রোতাদের জন্য ইঙ্গভারতীয় ভাষার একটি শব্দকোষ পর্যন্ত প্রকাশ করতে হয়। উনবিংশ শতকে জাত শব্দাবলির একটি বিশিষ্ট অংশ ভারতীয় সংস্কৃতি বিষয়ক। (যেমন—Swaraj, Swadeshi, Hartal, Izzat, Zindabad, Signalwallah, cooly ইত্যাদি। খিচুড়ি ভাষায় বাক্যাংশ—‘to do a jildi move,’ কিংবা ‘the engine does not chell well’. দ্রষ্টব্য: G. Subba Rao, Indian Words in English, Oxford, 1954’ ‘চাউচাউ’ একটি বইয়ের নাম। লেখিকা—Lady Falkland (Cary Amelia). লেখিকার মতে শব্দটির মানে—‘a mixture of things good, bad, indifferent; of sweet little oranges and bits of bamboo sticks’, আমরা বাংলায় বলেছি ‘কমলালেবু আর বাঁশের কঞ্চির তরকারি।’ ‘হবসন জবসন’ ছাড়াও সেকালে ও একালে ইঙ্গ-ভারতীয় ভাষা নিয়ে বেশ কিছু অভিধান প্রকাশিত হয়েছে। তার মধ্যে আছে: G.C. Witworth, Anglo-Indian Dictionary, London, 1885; Horace Hayman Wilson. Glossary, London, 1885; R.E. Hawkings (compiled and Edited), Common Indian Words in English, Delhi, 1984; Ivor Lewis, Sahibs, Nabobs and Boxwallahs, A Dictionary of the worlds of Anglo-India, Bombay, 1991; S. Muthiah, Words in Indian English, New Delhi, 1991; Oxford Advance Learner’s Dictionary, Calcutta, 1996 (with Indian English Suppliment Compiled by Indira Chowdhury Sengupta.)
অথ উত্তমর্ণ-অধমর্ণ কথা
কলকাতা সম্পর্কে ইংরেজি ও বাংলায় যেসব বই আছে তার অনেকগুলিতেই ঋণের দায়ে আটক বন্দিদের মুক্ত করার ঘটনার উল্লেখ আছে। অনেক ধনী বাঙালিই বিশেষ উৎসব উপলক্ষে বন্দি-মুক্তিকে বিশেষ কৃত্য বলে গ্রহণ করেছিলেন। দ্রষ্টব্য: ইতিমধ্যে উল্লেখিত বাংলা ইংরেজি ইতিহাসগুলো। এদেশের প্রথম সংবাদপত্র হিকির গেজেটের সম্পাদক অগস্টাস হিকিও ঋণের দায়ে জেলে ছিলেন। বস্তুত জেলখানা থেকে তিনি তাঁর কাগজও বের করেছিলেন। হিকি প্রসঙ্গে তা আলোচনা করা হয়েছে। সেকালের কলকাতার জেলখানা সম্পর্কে দ্রষ্টব্য: Gopa Chowdhury, The Site of the Victoria Memorial Hall, The Story of its Selection, Bulletin of the Victoria Memorial Hall, 12, 1978; Bhaskar Chunder, Harinbari-Deer House or Jail, Bulletin of the Victoria Memorial Hall, 12, 1978’ Some records relating to the origin of the late Presidency Jail, Bengal Past and Present, 8, 1914’ Charles Moore, The Sheriffs of Fort William from 1775 to 1920, Calcutta, 1921. শেষোক্ত বইটিতে বিচারপদ্ধতি ইত্যাদি ছাড়াও জেলের কথা আছে। প্রসঙ্গত দেখা যেতে পারে—অমলেন্দু বাগচি, কলকাতার আদালত, কলকাতা, ১৯৯১।
বেকার জিন্দাবাদ
Thomas Macguire, Proffessional Beggars: Beeing Sketches of Beggars beggering letterwriters and imposters from personal observation, Calcutta 1884; Chunilal Bose, Professional Beggary in Calcutta, Modern Review, Vol. 25, April 1919; R. Keer, The Social evils in Calcutta, Calcutta, 3rd Edition 1886; J.W.J. Baboo English, কবে প্রকাশিত হয় এবং কোথায় জানা নেই। অনেক দরখাস্তের নমুনা আছে। Shoshee Chunder Dutt, Reminiscences of a Kerani’s Life, Mukherjee’s Magazine, June 1873 to June 1874, Calcutta. See also, Dutt’s Bengaliana, London, Publication Date not mentioned. সরকারি অফিসে নিয়োগ বদলি উমেদারির অনেক কাহিনী রয়েছে। তা ছাড়া বিশেষ ভাবে দ্রষ্টব্য: হুতোম প্যাঁচার নকশা এবং উনিশ শতকের অন্যান্য নকশা। বেকার সর্বত্র। প্রসঙ্গত দেখা দরকার—গুরু বিশ্বাস, পাতাল কলকাতা, কলকাতা, ১৯৯১। ‘Sleep make baby’ কাব্যাংশটির জন্য দ্রষ্টব্য: Roger Pearson, Eastern Interlude: A social History of the European community in Calcutta, Calcutta, 1954; জাহাজের সন্ধানে বেকাররা তখন দশ পনেরো মাইল কেন, সমুদ্রের দিকে ত্রিশ চল্লিশ মাইল পর্যন্ত এগিয়ে যেত, জানিয়েছেন ডয়লি। দ্রষ্টব্য: Charles D’oyle, Tom Raw, the Griffin, Calcutta, 1824; ওঁর Europeans in India-ও একটি প্রাসঙ্গিক বই। তখনকার কলকাতায় নেটিভ ভবঘুরেদের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘রাম জনি’ (Ram Johnies)। পরবর্তী কালে ইউরোপিয়ানদের মধ্যে যে তাদের যথেষ্ট সংখ্যাবৃদ্ধি হয়েছিল তাতে সন্দেহ নেই। দ্রষ্টব্য: H. Hobbes, Scoundrels and Scroungers, Calcutta 2nd edition, 1937; দোভাষীদের নিয়ে কোম্পানির মূল আদেশনামাটি কোম্পানির কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ১৭৬১ সালে প্রেরিত। সম্পূর্ণ আদেশনামাটির জন্য দ্রষ্টব্য প্রাগোক্ত সুব্বা রাওয়ের ‘Indian words in English. উল্লেখিত প্রথম বিজ্ঞাপনটি এবং বিয়ের খবরটি প্রকাশিত হয়েছিল ক্যালকাটা গেজেটে। গেজেটের প্রথম খণ্ড দ্রষ্টব্য।
গুপ্ত শিক্ষক
ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের জন্য দ্রষ্টব্য: Thomas Roebuck, The Annals of the College of Fort William, 2 vols, Calcutta, 1819; G.S.A. Ranking, History of the College of Fort William from its foundation, Bengal Past and Present, vols. 7, 21, 22, 23, 24, 1921-22; Sisir Kumar Das, Sahibs and Munshis, An account of the College of Fort William, New Delhi, 1978; Brojendranath Banerji, The College of Fort William, Modern Review, 41(2), Feb, 1927; ছাত্ররা তখন মাসে তিনশ টাকা ভাতা পেতেন। তা ছাড়া ‘all the candidates received usual allowance for a Moonshee.’; আরও দ্রষ্টব্য: David kopf, British orientalism and Bengal Renaisance (1773-1835), University of California, Calcutta edition 1969; তৎকালীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্পর্কে অন্যান্য খবরাখবরের জন্য দ্রষ্টব্য: N.N. Law Promotion of learning in India by Early European Settlers upto about 1800, Calcutta, 1885; Presidency College Centenary Volume, 1955; রাজনারায়ণ বসু, হিন্দু বা প্রেসিডেন্সি কলেজের ইতিবৃত্ত, কলকাতা, ১৭৯৭ শক, নতুন সংস্করণ, কলকাতা, ১৩৬৩; ১৭১৫ সালে মাদ্রাজে একজন স্কুল শিক্ষকের বার্ষিক বেতন ছিল ৫০ পাউন্ড। মাদ্রাজের মাস্টার মশাইয়ের কাহিনীটি এবং অন্যান্য সামাজিক খবরের জন্য দ্রষ্টব্য: Henry Dodwell, The Nababs of Madras, 1824; সংস্কৃত কলেজ সম্পর্কিত শ্লোক দুটির জন্য দ্রষ্টব্য: ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলিকাতা সংস্কৃত কলেজের ইতিহাস, ১ম খণ্ড, কলকাতা, ১৯৪৮। রাজা নবকৃষ্ণদেব বাহাদুরের জন্য দেখা দরকার—Nagendra Nath Ghosh, Memoirs of Maharaja Nubkissan Bahadur, Calcutta, 1901. প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মুনশিদের সম্পর্কে ‘কারি অ্যান্ড রাইস’-এ সুন্দর একটি ব্যঙ্গাত্মক রচনা রয়েছে। দ্রষ্টব্য: G.F. Atkinson, Curry and Rice on Forty Plates; or, the ingredients of our social life at our station, London, 1859. উইলিয়াম কেরীর কথোপকথন-এ মুনশি নিয়োগের পর্বটিও উপভোগ্য। দ্রষ্টব্য: উইলিয়াম কেরী, কথোপকথন, শ্রীরামপুর, ১৮০১।
সিপাহী বিদ্রোহের দিনে কলকাতা
Sir John William Kaye, History of the Sepoy War in India 1857-1858 3 vols, see vol-II, London, 1880; William Howard Russell, My Indian Mutiny Diary, ed. Michael Edwards, London, 1957; সাতান্নর মহাবিদ্রোহ সম্পর্কে অসংখ্য বইপত্র প্রকাশিত হয়েছে। বিস্তারিত গ্রন্থপঞ্জীর জন্য দ্রষ্টব্য: Surendra Nath Sen, Eightee Fiftyseven Delhi, 1958; Christopher Hibbert, The Great Mutiny, India 1958, London, 1978. অন্যান্য খবরাখবরের জন্য দ্রষ্টব্য: Sir George Trevelyan, The Letters of a Competitionwallah, London, 1865; L. Oliphant, Calcutta During the Mutiny, Blackwood Magurine, vol 140’; B.V. Roy, Mutiny Days in Calcutta, Calcutta Municipal Gazette, 11th May, 1957; Frederick James Halliday, Lieutenant Governer of Bengal on the Mutinies as they affected the Lower provinces of Bengal, 1858 (In Bucklands’ Bengal under Lieutenant Governers, Vol-I, Calcutta, 1902); Hedayet Ali Shaik, A Few words relative to the late Mutiny of Bengal Army and Rebillion in the Bengal Presidency, Calcutta, 1858; Charles Allen, A Glimpse of the burning Plain, Leaves from the Indian Journal of Charlotte Canning, London, 1980; Virginia Surtees Charlotte Canning, London, 1975; ডেকার্স লেন এবং মিঃ ডেকার্স সম্পর্কিত তথ্যাদির জন্য দ্রষ্টব্য R. C. Sterndale, A Historical Account of the Calcutta Collectorate, Calcutta, 1885, New Edition, 1959; ভলানটিয়ার বাহিনী সম্পর্কে আরও খবরাখবরের জন্য দ্রষ্টব্য: H. Hobes, Cadets, Bengal Past and Present, Vol-I, Part II, Vol- IIX,
Part 1 & II; বিদ্রোহ সম্পর্কে বাঙালির মনোভাব জানতে হলে দ্রষ্টব্য: দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, বিদ্রোহে বাঙ্গালী, বা আমার জীবন চরিত, নতুন সংস্করণ, কলকাতা, ১৯৫৭। সুকুমার মিত্র, আঠারো শ’ সাতান্ন ও বাংলাদেশ, কলকাতা, ১৯৬০; ঊনবিংশ শতকের বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহের চিত্র, কলকাতা, ১৩৬৬। শশিশেখর বসু, যা দেখেছি যা শুনেছি, কলকাতা, ১৩৬২; ছাড়াও সম্বাদ প্রভাকর (১৮৫৭-৫৮), হিন্দু প্যাট্রিয়ট (১৮৫৭), ঈশ্বরগুপ্তের গ্রন্থাবলী এবং ‘By a Hindoo’ (Sambhu Chandra Mukhopadhya), The Mutinies and the people’ or Statements of Native Fidelity Calcutta, New Edition ১৯৬৯ শ্ৰীপান্থ, মঙ্গল পাণ্ডের বিচার, কলকাতা, ১৯৮২।
রুশ কর্তৃক কলকাতা আক্রমণ
যে বইটি অবলম্বনে এই কল্পকাহিনী রচিত হয়েছে তার নাম—The Surpize of Calcutta (The Bombardment and capture of Fort Williom, Calcutta, by a Russian Fleet and Army), compiled from the diaries of Prince S. Woronzoff and General Yagodkin, Calcutta, ১৮৯০. লেখকের নাম ছিল না। মনে হয় বইটি জনপ্রিয় হয়েছিল। তার অন্য একটি সংস্করণ আমার চোখে পড়েছে। লেখক—I Patiukshka, বলা বাহুল্য, নামটি ছদ্মনাম। আজগুবি সাহিত্য হলেও তার মানসিক পটভূমি ছিল বটে। দ্রষ্টব্য : K.S. Menon, ‘The Russian Bogey’ and British Aggression in India and Beyond, Delhi, 1957; Suhash Chakravarty, Anatomy the Raj, Russian Consular Reports, New Delhi, 1981.
যে কলকাতা মাটির তলায়
The Bengal Obituary: or a vecord to perpetuate the memory of departed worthy etc.; Holmes & Co, Calcutta. Facsimile reprint with an introduction by P.T. Nair, Calcutta, 1990; M Derozario, The Complete Monumental Register containing all the epitaphs inscriptions,… etc. Calcutta, 1815; H.E. Busteed, Echoes from old Calcutta, 4th edition, Calcutta, 1908; Kathlean Blechynden, Calcutta Past and Present, Calcutta, 1905, New Edition, Ed. N. R. Ray, Calcutta, 1978; Elliot Walter Madge & G. O’Connell, The Park Street Cemeteries : Handlist of principal monuments, Calcutta, 1911; Register of the graves in the Mission, Tiretta, north and south Cemetaries in Park Street, Calcutta, Calcutta 1900; South Park Street Cemetery : Some notable tombs, Bengal Past and Present, 30 (1925); E.W. Madge & G. O’connell. Lower Circular Road Cemetery, Bengal Past And Present, 5 (1910); Theou Willkinson, Two Monsoons, London, 1976.
নাম ছিল তাঁর অ্যাঞ্জেলিকা
যে কলকাতা মাটির তলায় ‘রচনা প্রসঙ্গে’ যে সব বইপত্র প্রকাশিত হয়েছে তিরেত্তা গোরস্থান সম্পর্কিত তথ্যাদিও তাতে লভ্য। এই কবরখানাটি উচ্ছেদের আগে খ্রিশ্চিয়ান বেরিয়াল বোর্ডের তরফে একটি সচিত্র পুস্তিকা প্রকাশিত হয়েছিল। তাতেও কিছু তথ্য ছিল। তাছাড়া দ্রষ্টব্য : Robin Twilen, Edward Tiretta, the Count of Calcutta, Bengal Past and Present, 100 (1981).
একটি তারকার গল্প
W. H. Carey, ‘Theatricals’, Nineteenth Centuary Studies, (6) April, 1974. Chowringhee Theatre, Calcutta, Libretti of 7 operas performed at the theatre, MusiCal Society, 1832-36; Amal Mitra, The English Stage in Calcutta, circa 1750, Sangeet Natak, 88 (April-June, 1988); E.W. Madge, ‘The Sans Souci’ and its star, Bengal Past and Present, I (1907); Susil Kumar Mukherjee, The Story of Calcutta theatres (1753- 1980), Calcutta, 1982; E.W. Madge, A Forgotten Calcutta actress, Madam Maria Dhirminville or Mrs, Maria Madeline Tayler, Bengal Past and Present, II (1908); অমল মিত্র, কলকাতায় বিদেশী রঙ্গালয়, কলকাতা, ১৩৭৪ : সুবীর রায়চৌধুরী (সম্পাদনা), বিলাতি যাত্রা থেকে স্বদেশি থিয়েটার, যাদবপুর, ১৯৭১।
কলকাতার ভাষা ও সাহিত্য
তাত্ত্বিক আলোচনার জন্য দ্রষ্টব্য: S.N. Mukherjee, Eassays in Urban History (1. Bhadralok in Bengali Language and Literature : an eassy on the Language of Class and Status. 2. Language of Calcutta Social control of Verbal Culture), Calcutta, 1993.
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, কলকাতার ভাষা, আনন্দবাজার পত্রিকা, ২৪ নভেম্বর, ১৯৭৬; পবিত্র সরকার, কলকাতার ভাষা, দেশ বিনোদন, কলকাতা সংখ্যা, ১৯৮৯।
কলকাতা শহরকে উপলক্ষ করে রচিত কবিতার জন্য দ্রষ্টব্য : শিবপ্রসাদ সমাদ্দার সম্পাদিত, এই কলকাতা কবিতার, কলকাতা ১৯৯২; সুব্রত রুদ্র সম্পাদিত, কবিদের কলকাতা, কলকাতা, ১৯৯০; অমিতাভ চৌধুরী ও সরল দে সম্পাদিত, একশো কবির কলকাতা, কলকাতা, ১৯৮৯; Sivaprasad Samaddar (Ed), Calcutta in other Tongues, Calcutta, 1995; প্রাসঙ্গিক আর একটি সংকলনেও কিছু সাহিত্য-সমাচার রয়েছে। দ্রষ্টব্য: Geeti Sen (Ed), The Calcutta Psyche, New Delhi, 1990-91.
একটি কবিতার ইতিহাস
সাউথ পার্ক স্ট্রিট গোরস্থানটি (১৭৬৭-১৭৯০) কলকাতার ইংরেজ তথা কলকাতার পক্ষে এক অবিস্মরণীয় স্মৃতি মন্দির বিশেষ। গোরস্থানের ইতিহাস সম্পর্কিত বইপত্রের কথা আগে উল্লেখ করা হয়েছে। তার সঙ্গে যোগ করা যেতে পারে— W.K. Firminger, Thackers Guide to Calcutta, Calcutta, 1906. See also- A short Guide to South Park Street cemetery Restoration Committee, Calcutta, 1953. এলমার-এর কাহিনীটির জন্য বিশেষ করে দ্রষ্টব্য : H. E. Busteed, Echoes from old Calcutta etc., 4th Edition, 1908; হিকি সম্পর্কে দ্রষ্টব্য: Alfred Spencer (Ed), Memoirs of William Hickey, 4 vols, London, 1913, One vol. edition, Edited by Peter Quennell, London, 1960. রিকেটস এবং উল্লিখিত অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের জন্য দ্রষ্টব্য: Denis Kincaid, British Social life in India (1608-1937). কবি ল্যান্ডার-এর জীবনী অবশ্যই নানা বইয়ে লভ্য। এই রচনায় ব্যবহার করা হয়েছিল Malcolm Elwin কৃত Lander.
একটি দশ টাকার কবর
ওয়াজির আলির উপাখ্যান লখনৌর যে কোনও প্রমাণ্য ইতিহাসে লভ্য। তাঁর কবর সংক্রান্ত খবরাখবরগুলোর জন্য উল্লেখিত থ্যাকারস গাইড ছাড়া দেখা দরকার—Bengal Past and Present, vol. (55), 1938.
ঐতিহাসিক ভূত
Henty Meredith Parker, Bole Ponjis, 2 vols, Calcutta, 1851; A. F. M. Abdul Ali, Ghost Stories of old Calcutta, Bengal Past and Present, (65), 1945; E. W. Medge & KND, Anglo-Indian Ghost Stories; Bengal Past and Present, (3), 1909; Nikhil Sarkar, Calcutta’s Ghosts in Life and letters, Sunday, 27 March, 1977; প্রদ্যোত গুহ, কলকাতার ভূত, কলকাতা, ১৯৮২; সুভাষ সমাজদার, পুরানো কলকাতার ভূতুড়ে বাড়ি, ১৩৮৫।
কলকাতায় বড়দিন
Fanny Parks, Wonderings of a Pilgrim in search of Picturesque, 2 vols, London, 1850; Coleswarthy Grant, An Anglo-Indian Domestic Sketch, 2nd edition, Calcutta, 1862; Douglas Dewar, In the days of the company, Calcutta 1920, see also Bygone days in India, London, 1922; A Burnal and Col. Yule, Hobson-Jobson, 1886; Selctions from the Calcutta Gazette, V vols see also vol VI, A C Dasgupta (Ed), Days of the John company; Major H. Hobbs, The Romance of the Calcutta sweep, Calcutta 1930; R. J, Minney, Night life of Calcutta, Meston, 1920. বাঙালিটোলায় বড়দিনের বর্ণাঢ্য চিত্র রয়েছে ঈশ্বর গুপ্তের কবিতায়। দ্রষ্টব্য: ঈশ্বর চন্দ্র গুপ্তের গ্রন্থাবলী (১ম ও ২য় ভাগ একত্রে), সম্পাদক বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (বসুমতী সংস্করণ); তাছাড়া আরও দেখা দরকার হুতোমপ্যাঁচার নকশা, সম্পাদনা সজনীকান্ত দাস ও ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাহিত্য পরিষদ সংস্করণ, কলকাতা ১৯৫৫ বা ভোলানাথ মুখোপাধ্যায়, আপনার মুখ আপুনি দেখ, সম্পাদনা সনৎকুমার মিত্র, কলকাতা, ১৩৬৮; জয়ন্ত গোস্বামী, সমাজ চিত্রে উনবিংশ শতাব্দীর বাংলা প্রহসন, কলকাতা, ১৩৬৮ এবং বাংলা সাময়িকপত্রের বিভিন্ন সংকলন। যথা: ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদিত সংবাদপত্রে সেকালের কথা (২ খণ্ড), বিনয় ঘোষ সম্পাদিত সাময়িকপত্রে বাংলার সমাজচিত্র (৫ খণ্ড), কলকাতা, ১৯৬২-১৯৬৮। হরিপদ ভৌমিক সম্পাদিত সেকালের সংবাদপত্রে কলকাতা (২ খণ্ড) ইত্যাদি। হরিপদ ভৌমিকের সংকলন স্বল্পজ্ঞাত। সমাচার দর্পণ থেকে ইতিপূর্বে যে সব তথ্য সংকলনে গৃহীত হয়নি তিনি সেগুলি উদ্ধার করেছেন। ১ম খণ্ড কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয় ১৯৮৭ সালে, দ্বিতীয় খণ্ড ১৯৮৮ সালে।
লাট সাহেবি
লর্ড কার্জনের দু’খণ্ড বইয়ের কথা আগে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে শুধু লাটভবন নয়, লাটসাহেবির কথাও আছে। এই প্রসঙ্গে আরও দ্রষ্টব্য: Mark Bence-Jones, Palaces of the Raj, London, 1970; see also Clive of India, London, 1974. প্রথম বইটিতে কলকাতা-বারাকপুর থেকে সিমলা,—লাট সাহেবদের সব প্রাসাদের বিবরণ রয়েছে। সেই সঙ্গে সেখানকার জীবন। প্রাসঙ্গিক আরও কয়টি বই: Philip Woodruff, the men who ruled India, vol. 1, The Founders, London, 1953, vol. II The Gurdians, London, 1954; Michael Edward, Glorious Sahibs, London, 1968; Viscount Mersey, The Viceroys and Governer Genaral of India 1757-1947, London, 1949; Emily Eden, Letters from India by the Hon. Emily Eden, (Ed) by her nice, London, 1872; Harriet Dufferin, our Viceregal life in India, Selections from my journal 1884-1888, London, 1980.
করিম বক্স বাহাদুর
‘বাহাদুর’ শব্দটি আমাদের সংযোজন। আসল নাম—করিম বক্স। কেউ কেউ বলতেন—বক্স খানসামা। এক সময় তাঁর নামে কলকাতায় একাধিক রাস্তা। হয়তো এক আধখানা এখনও রয়েছে। রাজভবনে একসময় তাঁর একটি তৈলচিত্র ছিল। হয়তো এখনও আছে। তবে দেওয়ালে নয়, গুদামে। কর্নওয়ালিশ এবং মিন্টো সম্পর্কিত খবরগুলো আগে উল্লেখিত লর্ড কার্জনের বই থেকে নেওয়া। হিকি মানে উইলিয়াম হিকি। তাঁর স্মৃতিকথাও আগে উল্লেখ করা হয়েছে। চারখণ্ডের এই উপভোগ্য স্মৃতিকথার মধ্যে চতুর্থ খণ্ডটি কলকাতার পক্ষে খুবই প্রাসঙ্গিক। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য দেশে ফিরে যাওয়ার সময় হিকি তাঁর পরিচারক-পরিচারিকাদের দু’শ টাকা দিয়ে গিয়েছিলেন। জামদানি বা তাঁর হিন্দুস্থানি বান্ধবীটির কথা স্বতন্ত্র। পরিচারকদের চেয়ে বেশি বকশিস পেয়েছিল কিরণ, গুলাব, টিপি প্রমুখ পরিচারিকারা। ‘কোরামস অব জমিনদারস’-এর জন্য দ্রষ্টব্য: বাস্টিড ও কটন-এর বই। দুটির কথাই আগে বলা হয়েছে। জন লরেন্স-এর কাহিনীটির জন্য দ্রষ্টব্য : Michael Edward, The Necessary Hell, London, 1953. মিসেস ফে সেকালের একজন দুঃসাহসী ভ্রমণকারী। দ্রষ্টব্য: Eliza Fay (1756-1816), original Letters from India, Calcutta, 1817, New Edition, Calcutta, 1908; For extracts on Calcutta see, P.T.Nair, Calcutta in the 18th century, Calcutta, 1984. বিনয় ঘোষ এই ভ্রমণকাহিনীর কলিকাতা প্রসঙ্গ বাংলায় অনুবাদ করেছেন। দ্রষ্টব্য: বিনয় ঘোষ, কলিকাতা শহরের ইতিবৃত্ত, কলকাতা, ১৩৮২। বিনয় ঘোষের এই রচনা সংগ্রহে ভৃত্যদের সম্পর্কেও একটি তথ্যপূর্ণ রচনা রয়েছে। সেকালের ভৃত্যদের সম্পর্কে খবরাখবর রয়েছে হরিহর শেঠের বইতেও। দ্রষ্টব্য: হরিহর শেঠ, প্রাচীন কলিকাতা পরিচয়: কথায় ও চিত্রে, কলকাতা, ১৯৫২। তাছাড়া দ্রষ্টব্য: C. Grant, An Anglo-Indian Domestic Sketch, Calcutta, 1849, Capt, Alban Wilson, Our Indian Servants and how to treat them, Calcutta, 1899: Lady Anne C Wilson, Hints for the first years of Residence in India, Calcutta, ১৯০৪; Eha, Behind the Bungalow, Calcutta, 1897. শেষোক্ত বইটি যদিও বোম্বাইয়ের ভৃত্যকুলকে নিয়ে লেখা তবু কলকাতার সঙ্গে আশ্চর্য মিল তাদের জীবনাচারের। এই বইটিতে ‘কুক’ বা পাচক নিয়ে অসাধারণ একটি ব্যঙ্গাত্মক রচনা রয়েছে।
বরফের মতো ঠাণ্ডা
এমিলি শেক্সপিয়ার মুর্শিদাবাদে যান ১৮১৪ সালে। ১৮২৪ সালে কলকাতায় এক পাউন্ড বরফের দাম ছিল এক পাউন্ড। সাংবাদিক মানে ইংলিশম্যান কাগজের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক স্টককুইলার। দ্রষ্টব্য: J.H. Stocquiler, The Memoirs of a Journalist, Bombay, 1873, বেন্টিঙ্ক-এর সভাপতিত্বে আমেরিকান ক্যাপ্টেনের ওই সংবর্ধনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয় ১৮৩৩ সালের ২২ নভেম্বর। অভিভাষণটি ছাপা হয় ইন্ডিয়া গেজেটে, No 23, 1833; তাছাড়া আরও দ্রষ্টব্য: Philip Chadwick Forter Smith, Crystal Blocks of Yankee Coldness, the Development of Massachusetts Ice Trade etc. (1806-1886), Essex Institute HistoriCal collects, July, 1961; C. B. Tripathi, Begining of American ice trade with India, Giris S Dixit, Ed, American History by Indian Historians, vol. 2, Hyderabad, 1969; Importation of Ice from Boston, Journal of the Asiatic Society of Bengal, (2), 1833; Ice manufacture at Hoogly, Journal of the Asiatic Society of Bengal (1), 1832; Sudhir Kumar Mitra, Sepia Calcutta, The Romance of Ice, Calcutta Municipal Gazette, 14th April, 1979; Ranbir Raychaudhury, Glimpses of old Calcutta, (1836-1850), Bombay, 1978; see also Calcutta : A hundred years ago, Calcutta, 1988; এই সংকলন দুটিতে বরফ সম্পর্কে বেশ কিছু খবরাখবর রয়েছে। বিশেষত প্রথমটিতে। কলসওয়ার্দি গ্রান্ট-এর বইয়ে ‘আইস হাউস’-এর ছবি আছে। হরিহর শেঠ হুগলির বরফ-কলের উল্লেখ করেছেন। যেখানে সেটি ছিল তাকে পরবর্তী কালে নাকি বলা হত—বরফতলা। বরফ সম্পর্কে দু’একটি উপভোগ্য টুকিটাকির জন্য দ্রষ্টব্য: Laura Sykes, (Ed), Calcutta through British Eyes (1690-1990), Madras, 1992. আরও দ্রষ্টব্য : মহেন্দ্রনাথ দত্ত, কলিকাতার পুরাতন কাহিনী ও প্রথা, ২য় সং, ১৯৭৫।
কালচার ও সোডার বোতল
কলকাতায় আবগারি বিভাগের কার্যকলাপের জন্য দ্রষ্টব্য: কলকাতা কালেকটরেট সম্পর্কে স্টার্নডেল-এর বইটি। তার কথা আগে উল্লেখ করা হয়েছে। জাভার খবরটির জন্য দ্রষ্টব্য: Emma Roberts, Scenes and Characteristics of Hindostan….etc. 3 vols. London, 1835, second edition 2 vols, London, 1837. অন্যান্য খবরের জন্য দ্রষ্টব্য: Harry Hobbs, Spence’s Hotel and its times, Calcutta, 1936; also Jahn Barleycorn Bahadur : Old time taverns in India, 2nd edition, Calcutta, 1944; তাছাড়া দেখা যেতে পারে, Nakul Chatterjee, Good old days of Soda Water, Amrita Bazar Patrika, 12th May, 1963. হরিহর শেঠ লিখছেন “সোডাওয়াটার কলিকাতায় প্রথম প্রচলিত হয় ১৮১১ খ্রিস্টাব্দে। উহা তখন বিলাত হইতে আমদানি হইত। দর ১৪ টাকা হিসাবে ডজন বিক্রিত হইত এবং বোতলের জন্য ২ টাকা দোকানদারের নিকট জমা থাকিত।”
শীতে শত্রু তুমি
‘ঠেলা বোঝাই মাছি’ অবশ্যই উপকথা। এ-জাতীয় আরও কাহিনীর জন্য হবস-এর উল্লেখিত ‘জন বার্লিকর্ন বাহাদুর’, স্যার চার্লস ডয়লির কথাও আগে উল্লেখ করা হয়েছে। কলকাতার গরম সম্পর্কে আরও নানা কৌতূহলোদ্দীপক কাহিনী প্রচলিত ছিল। চিত্রকর হামফ্রে নাকি বলতেন, — বাব্বা, যেন বাস্তিলে আছি। লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক টেবিলে পিঠ ঘষতেন। ঘামাচির নাম দিয়েছিলেন তিনি—‘রেড ডগ’। কেউ কেউ বলতেন, ‘ফায়ারি পিম্পল।’ কর্নওয়ালিস নাকি ঘরে ঢুকেই হাঁক দিয়ে বলতেন—‘কোট্স অফ্।’ এমিলি ইডেন-এর অধিকাংশ উদ্ধৃতিগুলোই তাঁর ‘লেটারস ফ্রম ইন্ডিয়া’ থেকে নেওয়া। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, লর্ড অ্যকল্যান্ড এবং তাঁর দুই বোন এমিলি ও ফেনির ভারত প্রবাসের অভিজ্ঞতা নিয়ে সুন্দর একটি সুখপাঠ্য বই বের হয়েছিল। দ্রষ্টব্য: Janet Dunbar, Golden Interlude, The Edens in India (1832-42), London, ১৯৫৫; বইটি মুখ্যত এমিলির দুটি বইয়ের ভিত্তিতে লিখিত। গ্রাঁপ্রে একজন পশ্চিমী অভিযাত্রী। দ্রষ্টব্য: L. de. Grandpre, A voyage in the Indian Ocean and to Bengal, undertaken in the years 1789-1790….etc. 2 vols, London, 1803 (Extracted by P.T. Nair in his Calcutta in the 18th century, Calcutta, 1984); ভোলানাথ চন্দ্র উনিশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি। তিনি ইংরেজিতে অনেক বিষয়ে মূল্যবান প্রবন্ধ লিখেছেন। কলকাতার নামকরণ এবং ইতিহাসও বাদ নেই। তাঁর একটি বিখ্যাত ভ্রমণকাহিনীও রয়েছে। দ্রষ্টব্য: Bholanath Chunder, Travels of a Hindu, Calcutta, 1869; তৎসহ দেখা দরকার, নরেন্দ্রনাথ লাহা, সুবর্ণবণিক কীর্তি ও কথা, (৩ খণ্ড), কলকাতা, ১৯৪০-৪২। ফোর্ট উইলিয়ামে কেরানি সাহেবের পাখা আবিষ্কারের গল্পটি বাস্টিড থেকে সংগৃহীত। প্রসঙ্গত আরও দেখা যেতে পারে, Laura Sykes, (Ed) Calcutta through British Eyes (1690-1940) Madras, 1992. আরও একটি রচনার উল্লেখ পেয়েছি, কিন্তু চোখে দেখিনি। উৎসাহী পাঠক সন্ধান করতে পারেন, Indian Pankhas, The Times, London, 3rd August, 1878.
হুক্কা ও এক্কা
এ দেশে অষ্টাদশ ও উনিশ শতকের প্রায় সব অভিযাত্রীর রচনাতেই হুক্কার কথা রয়েছে। সাধারণ পাঠকের জন্য সেসব বিবরণ এখন অতিশয় সহজলভ্য করে দিয়েছে পি থান কাপ্পন নায়ার। বিদেশিদের বয়ানে কলকাতা প্রসঙ্গর জন্য দ্রষ্টব্য : P.T. Nair, British Social life in ancient Calcutta, Calcutta, 1983; Calcutta in the 18th Century, Calcutta, 1984; Calcutta in the 19th century, Calcutta, 1989; Calcutta in the 17th century, 1986; তাছাড়া কিনকেড প্রমুখ সামাজিক ইতিহাস লেখকরা, যাঁদের কথা আগে বলা হয়েছে তাতেও হুকো প্রসঙ্গ রয়েছে। অতিরিক্ত পাঠ হিসাবে দেখা যেতে পারে : Thomas Williamson, The East Indian Vade Mecum, 2 vols, London, 1810; J. Forbes, Oriental Memoirs, 4 vols, London. W.H.Carey, Good old days of the Hon John Company, Calcutta, 1906; Douglas Dewer, Bygone days in India, London, 1922; B.V.Roy, old Calcutta Cameos, Calcutta, 1946; Rev. J. Long, Peeps into Social life in Calcutta a century ago, Calcutta, 1864; লঙ সাহেবের অন্যান্য রচনার মধ্যে রয়েছে: Calcutta in olden Times, its locations and people, ND, Calcutta; Calcutta in olden times, (Reprint of Two articles form Calcutta Review), Calcutta, 1974, Calcutta and its naighbourhood, History of Calcutta and its people (1690-1857) Ed. Sankar Sengupta, Calcutta, 1974.
এই নির্দেশিকা প্রধানত হুক্কা সম্পর্কে। এক্কা প্রসঙ্গ পরবর্তী রচনা প্রসঙ্গে।
পালকি থেকে ট্রাম
কলকাতায় ট্রামের আদি পর্ব সম্পর্কে কিছু খবরাখবর রয়েছে যে বইটিতে তার নাম : History of Bengal Chamber of Commerce, (1853-1953), The Chamber, Calcutta 1953; এই উপলক্ষে The Statesman যে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করে তাতেও ট্রাম কোম্পানির একটি ইতিহাস ছিল। ট্রাম সহ যানবাহন সংক্রান্ত অন্যান্য খবরের জন্যে দ্রষ্টব্য: Ranabir Ray Choudhuri, Glimpses of Calcutta, (1836-50), Calcutta, 1978; Calcutta : A hundred years ago (1880- 1890), Calcutta, 1988; Ray, Nisith Ranjan, The City of Job Charnock, Calcutta, 1979; Calcutta : The Profile of a city, Calcutta, 1986; দেখা দরকার সুকান্ত চৌধুরীর সম্পাদনায় শহরের তিনশ’ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রকাশিত দুইখণ্ডের মূল্যবান সংকলনটিও। দ্রষ্টব্য: Sukanta Chaudhuri (Ed), Calcutta; The Living City, 2 vols, Calcutta, 1990.
পালকি ধর্মঘটের বিস্তারিত খবর রয়েছে কোলসওয়ার্দি গ্রান্ট-এর ‘অ্যাঙ্গলো ইন্ডিয়ান ডোমেস্টিক স্কেচ’ এবং ‘সংবাদপত্রের সেকালের কথা’য়। তাছাড়া ক্ষিতীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কলিকাতায় চলাফেরা’ এবং অরুণ নাগ সম্পাদিত ‘সটীক হুতোম প্যাঁচার নকশা’য় যানবাহন সংক্রান্ত নানা প্রয়োজনীয় সংবাদ রয়েছে। তৎকালের যানবাহনের কিছু কিছু ছবি সংকলিত হয়েছে হরিসাধন মুখোপাধ্যায়ের কলকাতার ইতিহাসে ও দ্রষ্টব্য : কলিকাতা : সেকালের ও একালের, হরিসাধন মুখোপাধ্যায়, সম্পাদনা নিশীথরঞ্জন রায়, সহযোগী অরবিন্দ ভট্টাচার্য, কলকাতা, ১৯৮৫।
কলকাতার বাঙালি
উনিশ শতকের বিভিন্ন স্মৃতিকথা দ্রষ্টব্য। যথা : শিবনাথ শাস্ত্রীর আত্মচরিত, কলকাতা, ১ম সংস্করণ ১৩২৫, নতুন সংস্করণ ১৩৫১ : রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ, কলকাতা, নতুন সংস্করণ, ১৩৬২; রাজনারায়ণ বসুর আত্মচরিত, কলকাতা চতুর্থ সংস্করণ ১৯৬১, সেকাল একাল নতুন সংস্করণ ১৯৫১, কলকাতা, বিপিনবিহারী গুপ্ত, পুরাতন প্রসঙ্গ, কলকাতা, ১ম খণ্ড ১৯১৩, দ্বিতীয় খণ্ড ১৯২৩; দুর্গাচরণ রায়, দেবগণের মর্ত্যে আগমন, কলকাতা, ১৮৮৯; নরেন্দ্রনাথ লাহা, সুবৰ্ণবণিক কথা ও কীর্তি, ৩ খণ্ড, কলকাতা ১৯৪০-৪২; উইলিয়াম কেরী, কথোপকথন, শ্রীরামপুর ১৮০১; ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, নববাবু বিলাস, কলকাতা, ১৮২৩; দূতীবিলাস, কলকাতা, ১৮২৫, নববিবিবিলাস, কলকাতা, ১৮৩১, কলিকাতা কমলালয়, কলকাতা ১২৩০; ভাঁড় (কেদারনাথ দত্ত), সচিত্র গুলজারনগর, চিত্তরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদিত, কলকাতা, ১৯৮২; অমৃতলাল বসু, স্মৃতি ও আত্মস্মৃতি, অরুণকুমার মিত্র সম্পাদিত, কলকাতা, ১৯৮২; সটীক হুতোম প্যাঁচার নকশা, অরুণ নাগ সম্পাদিত, কলকাতা, ১৩৯৮; বিজয় ঘোষ, নববাবুর চরিত, কলকাতা, ১৯৪৪; অবন্তী সান্যাল, বাবু, কলকাতা, ১৯১৭; টেঁকচাঁদ ঠাকুর কনিষ্ঠ : কলিকাতার নুকোচুরি, কলকাতা, ১৮৬৯, ইত্যাদি ইত্যাদি। তাছাড়া প্রাসঙ্গিক পটভূমির জন্য দ্রষ্টব্য : বিনয় ঘোষ বাংলার সামাজিক ইতিহাসের ধারা (১৮০০-১৯০০), কলকাতা, ১৯৬৮; অমলেশ ত্রিপাঠী, উনবিংশ শতাব্দীর বাংলার সংস্কৃতি, ‘ইতিহাস’, কলকাতা, ১৩৬২-৬৩। বাঙালি এবং বাবু বাঙালি বিষয়ে ইংরেজিতেও নানা লেখক আলোচনা করেছেন। দ্রষ্টব্য : Ram Gopal Sanyal, A Genaral Biography of the Bengal celebrites, both living and dead, vol I, Calcutta, 1889, Reprint, 1976; Reminiscences and anecdotes of Great men of India, both official and non-official, for the last one hundred years, 2 vols, Calcutta, 1894, Reprint, 1980; S. Bose, The Hindoos as they are, Calcutta, 1881; Pramatha Chaudhuri, Calcutta in Bengali literature, Calcutta Municipal Gazette, 23rd Nov, 1929; Nirad C. Choudhury, Hundred years ago : Glimpses of Bengali life in Calcutta, Calcutta Municipal Gazette, 24th Nov, 1934; Buddha Dev Bose, Calcutta in Bengali Fiction, Calcutta Municipal Gazette, 10th Dec, 1934; Gopal Halder, Bengali middle classes in Calcutta, Calcutta Municipal Gazette, 16th Dec, 1939; B.V. Roy, Old Calcutta : Bengali Society, manners and customs, Calcutta Municipal Gazette, 6th Nov. 1943; G.S. Dutta, Calcutta’s part in conservation of Bengalee culture and art, Calcutta Municipal Gazette, 26th Nov. 1932; ইত্যাদি। তাছাড়া, ঐতিহাসিক পটভূমি ও পরিবেশ বোঝার পক্ষে জরুরি কিছু বই : Nirmal Kumar Bose, Calcutta 1968, A Social Survey, Bombay, 1968; Calcutta : A Premature Metropolis, Scientic American, 213, Sept. 1965; Social and Cultural life of Calcutta, Geographical Review of India 52 (2), 1990 (Reprint), Surajit Sinha, (Ed) cultural profile of Calcutta, Calcutta, 1972; M.K.A. Siddiqui Muslims of Calcutta, A Study in aspects of their Social organisations, Calcutta, 1974; Pradip Sinha, Nineteenth Century Bangal; Aspects of Social History, Calcutta 1966.
বাঙালি টোলায় এক চক্কর
এই রচনার তথ্যসূত্র প্রধানত একখানা বই। দ্রষ্টব্য : মহেন্দ্রনাথ দত্ত, কলিকাতার পুরাতন কাহিনী ও প্রথা, ২য় সংস্করণ, কলকাতা, ১৯৭৫।
বাবুদের সম্পর্কে যৎকিঞ্চিৎ
রচনায় কিছু বইয়ের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। প্রাসঙ্গিক আরও তথ্য ‘কলকাতার বাঙালি’র উল্লেখিত গ্রন্থপঞ্জী থেকে লভ্য। এছাড়া দেখা যেতে পারে : বিনয় ঘোষ, ‘কলকাতা শহরের ইতিবৃত্ত’। এই সংকলনে রয়েছে : সুতানুটি সমাচার, কলকাতা কালচার, টাউন কলকাতার কড়চা এবং কলকাতার ক্রমবিকাশ। কলকাতা, ১৯৭৫ : বিনয় ঘোষ, কালপেঁচার রম্য রচনা সংগ্রহ, নতুন সংগ্রহ, কলকাতা, ১৯৯২। পূর্ণেন্দু পত্রী, পুরানো কলকাতার কথাচিত্র, কলকাতা, ১৯৭৯; লোকনাথ ঘোষ, কলকাতার বাবু বৃত্তান্ত, কলকাতা, ১৯৮৩ (লেখকের The Native Aristrocracy and Gentry of Bengal (১৮৮১) থেকে কলকাতা কেন্দ্রিক জীবন কাহিনীর বাংলা অনুবাদ); চিত্রা দেব, ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল, ১৫শ মুদ্রণ, কলকাতা, ১৩৯৩; বৈদ্যনাথ মুখোপাধ্যায়, বাবুগৌরবের কলকাতা, কাঁচড়াপাড়া, ১৯৭৫ ইত্যাদি। তাছাড়া আরও দ্রষ্টব্য : জয়ন্ত গোস্বামী, সমাজচিত্রে ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলা প্রহসন, কলকাতা, ১৯৭৪। হরনাথ ভঞ্জ, সুরলোকে বঙ্গের পরিচয়, কলকাতা, ১৮৭৫, নতুন সংস্করণ, সম্পাদনা অলোক রায়, কলকাতা, ১৯৭৬।
অন্য বাবুরা
‘কলকাতার বাঙালি’ এবং ‘বাবুদের সম্পর্কে যৎকিঞ্চিৎ’-এর গ্রন্থপঞ্জীতে অনেক প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যাবে। তাছাড়া দেখা যেতে পারে: নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, মহাত্মা রাজা রামমোহন রায়ের জীবনচরিত, কলকাতা, ১৮৯৭; দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, আত্মজীবনী, কলকাতা, ১৮৯৮; যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ, বীরপূজা, ২ খণ্ড, কলকাতা ১৯০০; রজনীকান্ত গুপ্ত, প্রতিভা, কলকাতা, ১৮৯৬, দীনেশচন্দ্র সেন, ঘরের কথা ও যুগসাহিত্য, কলকাতা ১৯১৩; মন্মথনাথ ঘোষ, মহাত্মা কালীপ্রসন্ন সিংহ, কলকাতা, ১৯১৫; দেবেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, কৃষ্ণদাস পাল, কলকাতা ১৯১৮; নগেন্দ্রনাথ সোম, মধুস্মৃতি, কলকাতা, ১৯২০; বসন্তকুমার চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিরিন্দ্রনাথের জীবনস্মৃতি, কলকাতা, ১৯১৯; হেমলতা দেবী, শিবনাথ জীবনী, কলকাতা, ১৯২১; মন্মথনাথ ঘোষ, সেকালের লোক, কলকাতা, ১৯২৩; জ্যোতিরিন্দ্রনাথ, কলকাতা, ১৯২৭, হরিহর শেঠ, পুরাতনী, চন্দননগর, ১৯২৮; জগদীশচন্দ্র ভট্টাচার্য, মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র, কলকাতা, ১৯২৯; রাজেন্দ্রকুমার মিত্র, গোকুলচন্দ্র মিত্র ও সেকালের কলিকাতা, কলকাতা, ১৯৫১; ইন্দ্ৰমিত্র (অরবিন্দ গুহ), অন্য জন্ম, কলকাতা, ১৯৫৫; হিরন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়, ঠাকুরবাড়ির কথা, কলকাতা, ১৯৬৬; বিনয় ঘোষ, বাংলার বিদ্বৎসমাজ, কলকাতা, ১৯৭৩; বাংলার নবজাগৃতি, কলকাতা, ১৯৪৮; সুশীলকুমার গুপ্ত, উনবিংশ শতাব্দীতে বাংলার নবজাগরণ, কলকাতা, ১৯৫৯; যোগেশচন্দ্র বাগল, ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলা, কলকাতা, ১৩৪৮। ইংরেজি বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য: Kishori Chand Mitra, Memoir of Dwarakanath Tagore, Calcutta, 1870; Blair Kling, Partner in Empire: Dwaraknath Tagore and Age of Enterprise in Eastern India, Calcutta, 1981; Krishna Kripalini, Dwarakanath Tagore, A forgotten pioneer, New Delhi, 1981; J. K. Majumdar, Raja Rammohan Ray and progressive movement in India, selection from records (1775- 1845), Calcutta, 1941; Nemai Sadhan Bose, The Awakening and Bengal, Calcutta, 1966; Geraldine H. Forbes, Positivism in Bengal, Calcutta, 1975; John Meguire, The Making of a colonial mind; a quantitive study of the Bhadralok in Calcutta (1757-1855), Canberra, 1983; Atul Chandra Gupta and J. Chakraborty, (Ed), Studies in Bengal Renaissance, Jadavpur, 1977: Sumit Sarkar, The radicalism of intellectuals in a colonial situation—a case study of 19th century Bengal, Calcutta Historical Journal, 2 (No. 1, July Dec, 1977); Sivanath Sastri, History of the Brahmo Samaj, New Edition, Calcutta, 1974; David Kopf, Brahmo Samaj and the Shaping of the modern India mind, Princton, 1979; Susobhan Sarkar, on the Bengal Resaissance, Calcutta 1979.
কালেজ বয়
Peary Chand Mitra, A biographical Sketch of David Hare, Calcutta 1877, Reprint in 1949; David Hare Bi-Centenary Volume, 1775-1976 (Ed) Rakhal Bhattacharya, Calcutta, 1976; Radharaman Mitra, David Hare: His Life and Work, Calcutta, 1968; Presidency College Centenary Volume, 1955, Calcutta, 1956; Jogesh Chandra Bagal, The Hindu College, predecassor of the Presidency College; The story of its foundation, Modern Review, July, 1955; The Hindu College: The first phase, Modern Review, Sept., 1955; The Hindu College: The second phase, Modern Review, Dec., 1955; Bhagaban Prasad Majumdar, First fruits of English Education (1817-1857), Calcutta, 1973. হিন্দু কলেজের প্রথম দিককার কৃতী ছাত্রদের প্রায় সকলেরই স্বতন্ত্র জীবনী রয়েছে। বাংলায় কিংবা ইংরেজিতে। অথবা দুই ভাষাতেই।
ডিরোজিওর শেষ ইচ্ছাপত্র
ডিরোজিওর মূল ইচ্ছাপত্রটি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের মহাফেজখানায়। সেখান থেকে উপস্থিত সেটি ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের সংগ্রহশালায়। ডিরোজিও সম্পর্কে বাংলা এবং ইংরেজিতে বেশ কিছু বই বের হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি: যোগেশচন্দ্র বাগল, ডিরোজিও, কলকাতা, ১৯৭৬; বিনয় ঘোষ, বিদ্রোহী ডিরোজিও, নব্য বঙ্গের দীক্ষাগুরু ডিরোজিও জীবনচরিত (১৮০৯-১৮৩১), কলকাতা, ১৯৬১; পল্লব সেনগুপ্ত, ঝড়ের পাখি, কবি ডিরোজিও, কলকাতা, ১৯৭৯; রমাপ্রসাদ দে (সম্পাদক), ডিরোজিও রচনা সংকলন), কলকাতা, ১৯৮৩; সুবীর রায়চৌধুরী, ডিরোজিও, নয়াদিল্লি, ১৯৯৩। ইংরেজি বইয়ের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য: Thomas Edwards, Henry Derozio, 1st Edition Calcutta 1884, Next Edition, Calcutta, 1980; F. B. Bradley-Birt, Poems of H. L. V. Derozio—a forgotten Anglo-Indian Poet, Calcutta, 1923; Cedric Dover, Henry Derozio, Eurasian Poet Preceptor and Philosopher, Calcutta, 1930; Elliot Walter Madge, Henry Derozio, The Eurasian Poet and Reformer, (Ed.) Subir Roychowdhury, New Edition, 1867; Susobhan Sarkar, Derozio and Young Bengal (In Studies in Bengal Renaissance), Calcutta, 1977; Susobhan Sarkar, on the Bengal Resaissance, Calcutta, 1979; See also, A.C. Das Gupta, (Ed.) Days of the John Company, (1824-1832), Calcutta, 1959. Gautam Chattopadhyay, (Ed.), Early Nineteenth Century, Selected Documents, Calcutta, 1978; Suresh Chandra Moitra, Selections from Jnanaranesan (1832-36), Calcutta, 1979.
নরম সভা, গরম সভা
S. N. Mukherjee, Calcutta; Myths and History, Calcutta, 1977; Calcutta: Essays in Urban History, Calcutta, 1993; Rajat Sanyal, Voluntary, Associations and the Urban Public Life in Bengal (1815-1876), Calcutta, 1980; N. N. Ghose, Memoirs of Maharaja Nubkissan Bahadur, Calcutta, 1901; K. C. Mitra, Mutylal Seal, Calcutta, 1869, New Edition (Ed.) Shyamal Das, Calcutta, 1993; Sivnath Sastri, History of the Brahmo Samaj, New Editon, Calcutta, 1974; S. D. Collet, life and letters of Raja Rammohan Roy, 3rd Edition, Calcutta, 1962; Geraldin Forbes, Positivism in Bengal, Calcutta, 1975; Goutam Chattopadhyay, Awakening in Bengal in early Nineteenth Century, Selected Documents, Calcutta, 1965; ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলিকাতা কমলালয় (নতুন সংস্করণ), কলকাতা, ১৩৪৩; বিপিনবিহারী গুপ্ত, দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিকথা, পুরাতন প্রসঙ্গ, কলকাতা, ১৩৭৩; প্রভাতচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায়, আত্মীয় সভার কথা, কলকাতা, ১৯৭১; অরুণ নাগ সম্পাদিত সটীক হুতোমপ্যাঁচার নকশা, কলকাতা, ১৩৯৮; অরুণকুমার চট্টোপাধ্যায়, উনবিংশ শতাব্দীর সভাসমিতি ও বাংলা সাহিত্য, কলকাতা, ১৯৮৬।
কোম্পানির দুর্গোৎসব
সূচনার পদ্যটি রোজার পিয়ারসনে-র ‘ইস্টার্ন ইন্টারল্যুড’ থেকে নেওয়া। বইটির কথা আগে উল্লেখ করা হয়েছে। জন চিপস-এর কাহিনীটির জন্য দ্রষ্টব্য: W. Hunter, The Annals of Bengal, 5th Edition, London, 1872; বইটির অসীম চট্টোপাধ্যায়কৃত পূর্ণাঙ্গ বাংলা অনুবাদও লভ্য। দ্রষ্টব্য: অসীম চট্টোপাধ্যায়, গ্রাম বাংলার ইতিকথা কলকাতা, ১৯৮৪। ক্যালকাটা জার্নাল-এর বিবরণটির প্রকাশ তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর, ১৮১৯ (Vol. 5, No. 194); ‘গভর্নমেন্ট গেজেট’ মানে ‘ক্যালকাটা গেজেট’। তার কথা আগে বলা হয়েছে। এটি এবং ১৮২৪ সালের পরবর্তী খবরগুলোর জন্য দ্রষ্টব্য উল্লেখিত, ‘Days of the John Company’. ‘ক্যালকাটা ক্ৰনিক্যাল’ থেকে উল্লেখিত সংবাদটির প্রকাশ তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর, ১৭৯২। ‘কেউ কেউ কুৎসার পথ ধরলেন’ সত্যকারের ঘটনা। বোর্ড অব রেভেনিউ একজন ভূতপূর্ব সেক্রেটারি লিখেছিলেন—‘especial patronaze of idolatry by christian officers is often found to have been result of native female influence.’ (দ্রষ্টব্য: Bengal Past and Present, Vol. LV1, 1939); রেভা: পেগ ব্যাপ্টিস্ট মিশনের যাজক। মূর্তিপুজো তথা এ দেশীয় উৎসবের সঙ্গে কোম্পানির কর্মচারীদের সংযোগ ছাড়াও সতীদাহ, গঙ্গাসাগরে সন্তান বিসর্জন, দাস প্রথার বিরুদ্ধে বই লিখে তিনি আন্দোলন করেছেন। ওয়ার্ড সাহেব মানে শ্রীরামপুর মিশনের উইলিয়াম ওয়ার্ড। দ্রষ্টব্য: William Ward, A View of the History, Literature and Mythology of the Hindoo, 2 Vols Srerampore 1815-1818, তাঁর মতে প্রথম দিকে কলকাতার পুজোয় বছরে খরচ হত কমপক্ষে ৫ লক্ষ স্টার্লিং। ১৮২৯ সালে ক্যালকাটা গেজেট’-এর মতে খরচ হয় সে টাকার তিন ভাগের এক ভাগ মাত্র। প্রসঙ্গত ‘কোম্পানির পুজো’ বিষয়ে একটি মূল্যবান প্রবন্ধের কথা। দ্রষ্টব্য: R. C. Banerjee, State Patronage to Hindu & Muslim Religion during the East India Company, Bengal Past and Present, Vol. LVI, 1939. কলকাতার পুজোর অনেক বিবরণ ছাপা হয়েছে সমাচার দর্পণ ও অন্যান্য কাগজে। দ্রষ্টব্য: ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় (সম্পাদিত) সংবাদপত্রে সেকালের কথা, প্রথম খণ্ড (১৮১৮-১৮৩০), কলকাতা, ১৩৫৬; দ্বিতীয় খণ্ড, (১৮৩০-১৮৪০), কলকাতা, ১৩৫৬।
বারোয়ারির তেরো কথা
অধিকাংশ তথ্যই উল্লেখিত ‘সংবাদপত্রে সেকালের কথা’ (২ খণ্ড) থেকে সংগৃহীত। ‘ফ্রেন্ড অব ইন্ডিয়া’ কাগজে বারোয়ারি ইতিহাস ছাপা হয়েছিল। ১৮২০ সালের মে মাসে। বারোয়ারি তথা বারো ইয়ারির বিস্তর নমুনা রয়েছে হুতোম প্যাঁচার নকশায়। দ্রষ্টব্য: অরুণ নাগ সম্পাদিত, সটীক হুতোম প্যাঁচার নকশা, কলকাতা, ১৩৯৮।
প্রাণকৃষ্ণ হালদার ও তাঁর দুর্গোৎসব
দ্রষ্টব্য: A. C. Das Gupta, (Ed.), Days of the John Company (1824-1832), Calcutta, 1959; দুর্গাচরণ রায়, দেবগণের মর্ত্যে আগমন, নতুন সংস্করণ, ১৯৮৪; দুর্গাচরণ রায় লিখেছেন— হুগলির কলেজ বাড়িটি প্রাণকৃষ্ণ হালদারের বৈঠকখানা ছিল। তাঁর সম্পর্কে বলেছেন—“মনুষ্যের যতদূর সুখভোগ করা সম্ভব, তাহা এই প্রাণকৃষ্ণ করিয়াছিলেন আবার মনুষ্যের যতদূর দুঃখভোগ করা সম্ভব, তাহাও প্রাণকৃষ্ণের ভাগ্যে জুটিয়াছিল।” যে প্রাণকৃষ্ণ একদিন জুড়িগাড়ি হাঁকিয়ে ঘুরে বেড়াতেন, ভাড়া গাড়িতে চড়তে চাইলে গাড়োয়ানেরা নাকি তাঁকে বলত—‘বাপের জন্মে কি গাড়ি চেপেছ?’ “যে প্রাণকৃষ্ণ রাস্তায় টাকা ছড়াইয়া দিয়া তাহার উপর দিয়া ভ্রমণ করিতেন, সেই প্রাণকৃষ্ণ দুঃখের অবস্থায় এক পয়সার আফিং ক্রয় করিয়া মূল্য দিতে না পারায় দোকানদার-গৃহিণী হাত হইতে আফিং কাড়িয়া লইতেও ছাড়ে নাই।”
পুড়ে মলাম পতি পেলাম না
P.V. Kane, History of Dharmasastra, Pune, 1973, A. S. Altakar, The Position of Women in Hindu Civilization, Delhi, 1959; Edward Thompson, Sutter, London, 1928; John Poynder, Human Sacrifices in India, London, 1827; Sakuntala Narasimham, Sati, A Study of Widow Burning in India, New Delhi, 1990; Lata Mani, Contentions Traditions: The Debate on Sati in Colonial India, New Delhi, 1998. শ্রীপান্থ, দেবদাসী, কলকাতা প্রথম প্রকাশ, ১৯৭০, নতুন সংস্করণ, ১৯৯৩, স্বপন বসু, সতী, দ্বিতীয় সংস্করণ, কলকাতা, ১৯৮২। স্বপন বসুর বইতে একটি গ্রন্থপঞ্জী রয়েছে।
সুকেশ স্ট্রিটের দ্বাদশ সংখ্যক ভবন
দ্রষ্টব্য: বিনয় ঘোষ, বিদ্যাসাগর ও বাঙালী সমাজ (অখণ্ড সংস্করণ), কলকাতা ১৯৭৩। তাছাড়া, দেখা যেতে পারে বিদ্যাসাগরের অগণিত জীবনীর মধ্যে বিশিষ্ট কয়েকটি। যথা: শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন, বিদ্যাসাগর জীবনচরিত, কলকাতা, ১৮৯০; বিহারীলাল সরকার, বিদ্যাসাগর, ৩য় সংস্করণ, ১৩১৭; চণ্ডীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিদ্যাসাগর, ১ম সংস্করণ, ১৮১৫; ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিদ্যাসাগর প্রসঙ্গ, কলকাতা, ১৩৩৮; ইন্দ্র মিত্র, করুণাসাগর বিদ্যাসাগর, কলকাতা, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৯৯২ ইত্যাদি।
সেকালের একজন প্রকাশক
ভারতে প্রথম বই ছাপা হয় ১৫৫৬-৫৭ সালে। বাংলা ভাষায়, অবশ্য রোমান হরফে, ১৭৪৩ সালে। মুদ্রিত বইয়ে প্রথম বাংলা বর্ণমালার ব্যবহার, ১৭৭৮ সালে। সুতরাং, প্রতাপচন্দ্র রায় অনেক পরবর্তিকালের প্রকাশক। প্রথম যুগের ছাপাখানা ও প্রকাশনার জন্য দ্রষ্টব্য: Graham Shaw, Printing in Calcutta to 1800, London, 1981; সেই সঙ্গে দেখা যেতে পারে, শ্রীপান্থ, যখন ছাপাখানা এল, নতুন সংস্করণ, ১৯৯৬। প্রতাপচন্দ্রের একটি ছিন্নভিন্ন দুষ্প্রাপ্য জীবনীর ভিত্তিতে রচনাটি লেখা। বইটির প্রকাশকাল অজানা, তবে বুঝতে অসুবিধা নেই প্রকাশিত কলকাতা থেকে। দ্রষ্টব্য: Dwijendra Chandra Roy, Life of Pratap Chandra Roy. প্রসঙ্গত, সেকালের প্রকাশনার খরচপত্র সম্পর্কে নীচে উল্লেখিত তথ্যগুলি শোনার মতো। এগুলো প্রতাপচন্দ্র বিজ্ঞাপনে প্রচার করেছিলেন বলে উক্ত। এক রিম ডিমাই কাগজের দাম—সাড়ে পাঁচ টাকা, এক ফর্মা ছাপা খরচ— বারো টাকা, দশ ফর্মার আড়াই হাজার বই বাঁধানোর খরচ—পঁচিশ টাকা, এক ফর্মা ইংরেজি অনুবাদের জন্য দক্ষিণা—পঁচিশ টাকা, একজন প্রুফ রিডারের মাসিক মাইনে পঁচিশ টাকা।
কাজী থেকে বিচারপতি
দ্রষ্টব্য: Shumboo Chunder Dey, A History of the Bengal High Court from the time of old Sadar and Supreme Courts together with notices of eminent Judges, Barristers and Vakils, Calcutta Rewiew, in six parts, 1902-1904; Hight Court at Calcutta, Centenary Souvenir, 1862-1962, Calcutta, 1962; High Court at Calcutta, 125th anniversary Souvenir, 1862-1987, Calcutta, 1987; Nemai Sadhan Bose, The Indian Awakening and Bengal, Calcutta, 1960. হাইকোর্টের শতবর্ষ ও একশো পঁচিশ বছর উপলক্ষে প্রকাশিত সংকলন দুটিতে বিচার ব্যবস্থার নানা দিক নিয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের লেখা বেশ কিছু মূল্যবান রচনা রয়েছে। নিমাইসাধন বসুর উল্লেখিত বইটিতে নানা বিষয়ের মতো ‘ব্যাক অ্যাক্ট’ বিশেষভাবে আলোচিত।
লালবাজার, লাল গাড়ি
N. L. Bhattacharya, Crimes of Calcutta, A Study, Calcutta, 1926; R. Kerr, The Social Evil in Calcutta, Calcutta; Basudev Chottopadhya, A study in the Police Administration, Calcutta, 1973; Tapan Chottopadhya, Story of Lalbazar; its origin and growth, Calcutta, 1982; The Police of Calcutta, Calcutta Review, 87:174, Oct., 1888 and No. 88, Janu., 1889; Sabyasachi Mookerjee, Sentinels of Calcutta, Calcutta Municipal Gazette, June 1979 to April 1980; Goondas in Calcutta, Calcutta Municipal Gazette, 3rd Janu., 1963; Sailen Ghose, Calcutta Old and New: Policing in the 18th century, Calcutta, Calcutta Municipal Gazette, 8th Dec., 1948: Evolution of Calcutta Police, Calcutta Police Office, 1990; অসিতরঞ্জন দত্ত, লাল পাগড়ী, কলকাতা, ১৯৯০; গিরিশচন্দ্র বসু, সেকালের দারোগার কাহিনী, কলকাতা, ১ম সংস্করণ, ১৮৮৮, নতুন সংস্করণ, আলোক রায়, অশোক উপাধ্যায় সম্পাদিত, কলকাতা ১৯৮৩; তপন চট্টোপাধ্যায়, লালবাজার, সেকাল একাল, কলকাতা, ১৯৮৬; সুকুমার সেন, ক্রাইম কাহিনীর কালক্রান্তি, কলকাতা, ১৯৮৮; বাঁকাউল্লার দপ্তর, সম্পাদক, সুকুমার সেন, কলকাতা, ১৩৮৯।
হারিয়ে যাওয়া দুটি চিড়িয়াখানা
100 years of Calcutta Zoo (1875-1975), Calcutta Zoological Garden, Centenary Celebration Committee, Calcutta, 1975; John Anderson, Guide to the Calcutta Zoological Garden, Calcutta, 1883-1888; B. Basu, Guide to the Zoological Garden, Alipore Zoo, Calcutta, 1910; Proposal to form a zoological Garden in Calcutta, Calcutta journal of Natural History, (2), 1842; Charls D’oyly, Views of Calcutta and its enviorns, London, 1848; Ray Desmond, A bountiful Ark in India: A pageant of Prints, Rd. Pauline Rohatgi and Pheroza Godrej, Bombay, 1989: Ramesh Ghosal, A Forgotten Menagerio, The Martin Burn House Magazine, 25, 4, Autumn, 1961; Mildred Archer, India and Natural History, The Role of East India Company, 1785-1858, History Today, Vol-IX, No. 11, Nov. 1959; Abdul Halim Sharar, Lucknow, the last phase of oriental culture, London, 1975; David Stacton, A Ride on the Tiger: The Curious Travels of Victor Jacquemont, London, 1954; শ্রীপান্থ, মেটিয়াবুরুজের নবাব, কলকাতা, ১৯৯০। ডয়লি, পলিন রোহাতগি, মিলড্রেড আচার-এর উল্লেখিত বই ও রচনার সঙ্গে ব্যারাকপুর চিড়িয়াখানার ছবি রয়েছে। শারর-এর বইতে রয়েছে (খিদিরপুরে) ওয়াজিদ আলি শাহ’র চিড়িয়াখানার বিস্তারিত বিবরণ।
পররুচি পিনহা
প্রথম দিকে এদেশে সাহেবদের পোশাক সম্পর্কে নিম্নোক্ত পত্রাংশটি উল্লেখযোগ্য। কলকাতার ‘মুর্গিবাজার’ থেকে ‘An old country captain’ ‘ইন্ডিয়া গেজেট’-এ (২৪ ফেব্রুয়ারি, ১৭৮১ সালে) লিখছেন যে তিনি ১৭৩৬ সালে কলকাতায় এসেছেন। তাঁর মতে—“Those were the days when gentleman studied Ease instead of Fashion, when even the members of council met in Banyan shirts, long drawers and conjee caps, with a case of good arrack…etc. রচনার উদ্ধৃত বাংলা খবরগুলো ‘সংবাদপত্রে সেকালের কথা’ (দুই খণ্ড) থেকে নেওয়া। যে সরকারি আদেশনামাটির কথা বলা হয়েছে সেটি, ‘selection from Calcutta Gazette, Vol. I, Part II, থেকে নেওয়া। লর্ড অ্যকল্যান্ড সম্পর্কিত কাহিনীটির জন্য দ্রষ্টব্য: Janet Dunbar, Golden Interlude, The Edens in India, London, 1955. তাছাড়া যেসব বইপত্র দেখা যেতে পারে তার মধ্যে রয়েছে: Charles Fabri, A History of India Dress,, Calcutta, 1960; G. S. Ghurye, Indian costume, Bombay, 1951; Bernard Cohn, Colonialism and its frame of knowledge, The British in India (see the chapter on—cloth, clothes, and colonialism), New Delhi, 1997; Nirod C. Choudhuri, Culture in a Vanity Bag, Bombay, 1976; S. N. Dhar, Costume of India and Pakistan, A Historical and Cultural Survey, Bombay 1969, গোলাম মুরশেদ, সংকোচের বিহ্বলতা, ঢাকা, ১৯৮৫; শ্রীপান্থ, পোশাকি ঔপনিবেশিকতা, শারদীয়া আনন্দবাজার পত্রিকা, ১৯৮৬; তাছাড়া ১২৭৫, ১২৭৬, ১২৭৮ এবং ১৩০৮ সালে বামাবোধিনী পত্রিকায় বাঙালি মেয়েদের পোশাক নিয়ে বেশ কিছু আলোচনা প্রকাশিত হয়েছে।
মৎস্য পুরাণ
তথ্যাদি মূলত হ্যারি হবস-এর উল্লেখিত বই থেকে সংগৃহীত। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার আদি পরিকল্পনাটির জন্য দ্রষ্টব্য, Bengal Past and present, vol. I, No. 2, 1908; তাছাড়া মাছ নিয়ে কয়টি সুখপাঠ্য বই: রাধাপ্রসাদ গুপ্ত, মাছ আর বাঙালি, কলকাতা, ১৯৮৯; কল্যাণী দত্ত, থোড় বড়ি খাড়া, কলকাতা, ১৯৯৩; অষ্টারম্ভা, কলকাতা, ১৯৯৭; একটি নাতিদীর্ঘ রচনায় নকুল চট্টোপাধ্যায় উনিশ শতকের কলকাতার মাছের বাজার সম্পর্কে কিছু খবর দিয়েছেন। দ্রষ্টব্য: নকুল চট্টোপাধ্যায়, তিন শতকের কলকাতা, কলকাতা, ১৩৭২।
কাফি হৌস
Major H. Hobbs, Spences Hotel and its times, 1830-1936, Calcutta, 1936; John Barleycorn Bahadur, old time Taverns in India,
Calcutta, 1940; দেবব্রত মুখোপাধ্যায়, কফির কাপে সময়ের ছবি, কলকাতা, ১৯৮৯; অ কু সা, কলেজ স্ট্রিট কফি হাউস, কলকাতা, ১৯৯০।
অরণ্য রোদন
কলকাতার জমির বিবরণটি Bengal consultation, June, 1707-এর অংশবিশেষ। দ্রষ্টব্য: Census of India, 1951, Vol-VI, Part-3, Delhi, 1954; বটতলার অবদান নিয়ে বেশ কিছু বই লেখা হয়েছে। দ্রষ্টব্য: সুকুমার সেন, বটতলার ছবি ও ছাপা, কলকাতা; শ্রীপান্থ, বটতলা, কলকাতা, ১৯৯৭; জোব চার্নকের বসার জায়গাটি যে বৈঠকখানা নয়, নিমতলায় ছিল, তার সপক্ষে যুক্তির জন্য দ্রষ্টব্য: A F. M. Abdul Ali, Job Charnock, Bengal Past and Present, Vol-65, 1945, প্রসঙ্গত আরও দেখা যেতে পারে যে সব বইপত্র তার মধ্যে রয়েছে: A.P. Benthal, The Trees of Calcutta and its neighbourhood, Calcutta, 1946; Catalogue of plants indegenous in neighbourhood of Calcutta, Calcutta, 1862; R.K. Chakrabarty and S. K. Jain, Beautiful Trees and Shurbs of Calcutta, Howrah, 1984, Kalipada Biswas (Ed.) Bengal Botanik Garden, 150th anniversary volume, Calcutta, 1942, Road Slimes of Calcutta, Journal of the Depertment of Science, Calcutta Universty, (8) 1927; Catalogue of the Plants in the Royal Botanic Garden, Calcutta, 1873; রুদ্রপ্রসাদ চক্রবর্তী, কলকাতার গাছ, কলকাতা, ১৯৯১।
কোম্পানির লেখক
এই রচনাটিতে যে সব বইয়ের সাহায্য নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য: E. F. Oaten, Sketch of Anglo Indian Literature, London, 1904; T. D. Dunn, Poets of the John Company, Calcutta, 1921, Robert Sencourt, India in English Literature, London, 1923; W.F. B. Lauri, Sketches of some distinguised Anglo-Indians, with an account of Anglo-Indian Periodical Literature, London, 1887; Bhupal Singh, A Survey of AngloIndian Fiction, London, 1934; Emily Eden, up the country, ed., E. J. Thompson, London. 1930. Letters from India (2 vols), (ed.) Elenor Eden, London, 1872; Ketaki Kushari Dyson, A Various Universe, A study of the journals and memoirs of British Men and Women in the Indian Subcontinent (1765-1865), Delhi, 1978. পরবর্তী কালের জন্য দেখা দরকার: Saros Cowasjee, Studies in Indian and Anglo Indian Fiction, New Delhi, 1993; Women Writers of the Raj, (Ed.) New Delhi 1994; Stories from the Raj, New Delhi, 1992. Charles Allen (Ed), Plain Tales of the Raj: Images of the British India in the Twentieth Century, London, 6th Edition 1978; Allen Greenberger, The British Image of India, A Study in the Literature of Imperialism, 1880-1960, London, 1969; Indira Ghose, Memsahibs Abrod, Writings of Women Travellers in Nineteenth Century India, New Delhi, 1998, ‘রাজ’-এর পটভূমিতে সম্প্রতিকালে অনেক উপন্যাস লেখা হয়েছে। তার মধ্যে বিশেষভাবে জনপ্রিয় দুটি: Paul Scot, The Jewel in the Crown, New York, 1966; M. M. Kaya, The Far Pavilions, New York, 1978.
কোম্পানির চিত্রকর
এ বিষয়ে প্রচুর বইপত্র রয়েছে। তবে মিলড্রেড আর্চারের বইগুলো বিশেষ করে প্রাসঙ্গিক। দ্রষ্টব্য: M. Archer, Natural History Drawings in the India Office library, London, 1962; Company drawings in the India office library, London, 1972; Indian Popular Painting, London 1977; India and the British Partraiture, 1770-1825, London, 1979; Patna Painting, London, 1947, M. Archer & W. Archer, Indian Painting for the British, London, 1955;
M. Archer & R. Lightbrawn, India Observed, India as viewed by the British Artists, 1760-1860, London, 1982; Sir William Foster, British Artists in India (1760-1820), Walpole Society 19 (1930-31), London, 1930-31; M. Hardie & M. Clayton, Thomas Daniell, R.A. and William Daniel, R.A., Walker’s Quarterly, 35-36, 1932; W. Hodes, Travels in India during the years 1780-1783, London, 1793; M.M. Kaye, The Golden Calm, New York, 1980; J. Mahajan, Picturesque India, Delhi, 1979; M. Shellim, India and the Daniells, London, 1979; T. Sutton, The Daniells: Artists and Travellers, London, 1954; I. Stube, The life and works of William Hodges, New York, 1979; M. Webster, John Zoffany, 1733-1810, London, 1976; Daniell T and W, A Picturesque Voyage to India, London, 1810; Stuart Cary Welch, Room for Wonder, Indian Painting during the British Period, 1760-1880, New York, 1978; Giles Eyre, Indian Painting for the British, 1770-1880, London, 1972; V. Manners & G.C. Williamson, John Zoffany, his life and works, 1735-1810, London, 1920; Stuart Cary Welch & Zebrowski, A Flower from Every Medow, New York, 1963; Pratapaditya Pal & Vidya Dehejia, From Marchents to Emperors, British Artists and India, 1757-1930, New York, 1986. এই বিস্তারিত তালিকায় এমন বেশ কিছু বই রয়েছে যার প্রতিপাদ্য ভারতে বিদেশি, বিশেষ করে ইংরেজ শিল্পীদের জীবন ও কাজ। আবার বেশ কিছু বইয়ের আলোচ্য ইংরেজ শাসকদের প্রয়োজনে ও পৃষ্ঠপোষণায় ভারতীয় শিল্পীদের শিল্পকর্ম, যাকে আজকাল বলা হচ্ছে ‘কোম্পানি ড্রয়িং’।
কালীঘাটে একদিন
কালীঘাটের পটুয়াদের ছবি নিয়ে মুকুল দে প্রমুখ বেশ কয়েকজন বাঙালি শিল্পরসিক লেখালেখি করেছেন। তবে এই সব ছবির দিকে বিদেশিদের প্রথম দৃষ্টি আকর্ষণ করেন উইলিয়াম আর্চার। পরে অন্যরা। দ্রষ্টব্য: W.G. Archer, Bazar Paintings of Calcutta, London, 1953; Kalighat Paintings, London, 1971; Hana Knizkova, The Drawings of the Kalighat Style, Prague, 1975; W.G. Archer (Introduction and Notes), Kalighat drawings, Bombay, 1962. কিপলিংই কালীঘাটে প্রথম বিদেশি দর্শক নন। বিদেশি সংগ্রহশালাতে কালীঘাটের ছবি দেখে বোঝা যায় অন্যরাও কালীঘাটের ছবি সংগ্রহ করেছিলেন। সম্প্রতি (১৯৯৯), ওয়েলস-এর একটি সংগ্রহশালায় ‘আবিষ্কৃত’ হয়েছে বেশ কিছু কালীঘাটের ছবি। অনুমান করা হচ্ছে পাদ্রীরা তা সংগ্রহ করে চিত্রশালায় জমা দিয়েছিলেন। এই অকিঞ্চিৎকর রচনাটির প্রেরণা বোর্ন অ্যান্ড শেফার্ড-এর তোলা কালীঘাট মন্দির চত্বরে একটি পুতুল ও ছবির দোকানের আলোকচিত্র দেখে। রচনাটি ছাপা হয়েছিল আনন্দবাজার পত্রিকার রবিবাসরীয় বিভাগে (শ্রীপান্থ, গতকাল)। এই বিশেষ রচনাটির প্রকাশকাল ৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৪ সাল। তারপর ইতস্তত কালীঘাট আদলের ছবি অন্যত্র চোখে পড়েছে। ১৮১৩ সালে প্রকাশিত Sir Charles D’oyly’র আঁকা ঘোড়দৌড়ের একটি ছবিতে দেখি কালীঘাটের আদল। দ্রষ্টব্য: W. Archer, Kalighat Drawings, Bombay, 1962. অন্যান্য ছবির মধ্যে একটি ঘোড়দৌড়ের ছবি আছে যা কালীঘাটকে মনে করিয়ে দেয়। ১৮৩২ সালে Mrs. S.C. Belnos-এর Manners in Bengal-এ বাঙালি গৃহস্থের রান্নাঘরের একটি ছবি আছে। ছবিটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক। কিন্তু ঘরের দেওয়ালে এমন একটি ছবি সাঁটা রয়েছে যা কালীঘাট আদলের। ১৮৮২ সালে প্রকাশিত J.W. Wilkin’s-এর Hindu Mythologyতে দেখি বেশ কিছু কালীঘাটের ড্রয়িং রয়েছে। তিনি নিজেই বলেছেন ছবিগুলো হিন্দু শিল্পীদের আঁকা। (‘Most of them (the illustrations) have been copied from pictures drawn by the Hindus themselves, and which may be seen in the house of the people’). সাধারণ মানুষের ঘরে এ ছবি সাজানো থাকত বইকি। ১৯০০ সালে প্রকাশিত পঞ্চানন রায়চৌধুরীর ‘কুলকলঙ্কিনী বা কলিকাতার গুপ্তকথা’য় দুর্দশাগ্রস্ত এক রূপোপজিবীর কথা বলা হয়েছে। সে বেচারা এমন এক দরিদ্র পরিবেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে যেখানে দর্শনীয় বিশেষ কিছু নেই। ‘একখানা বড় চৌকির উপর খানকয়েক পিতল কাঁসার বাসন শোভা পাইতে লাগিল। একখানি চাঁদোয়া খাটানো হইল; দেওয়ালে খানকয়েক কালীঘাটের ছবি মারা ছিল।’ ইত্যাদি। জেমস অগস্টাস হিকি সম্পর্কে অন্যান্য প্রাসঙ্গিক খবরাখবরের জন্য দ্রষ্টব্য: Margarita Burns, The Indian Press, A history of the growth of Public opinion in India, London, 1940; H.E. Busteed, Echos from old Calcutta, Calcutta, 1882; Graham Shaw, Printing in Calcutta to 1800, London, 1981; Tarun Kumar Mukhopadhya, Hicky’s Bengal Gazette. Contemporary life and events, Calcutta, 1988; P. Thankappan Nair, A history of the Calcutta Press, Calcutta, 1987; শ্রীপান্থ, যখন ছাপাখানা এল, কলকাতা, নতুন সংস্করণ, ১৯৯৬। তা ছাড়া আরও দেখা দরকার : W.K. Firminger, Selection from the notebooks of Justice John Hyde, Bengal Past and Present, Vol-2, No. 4, 1908 and Vol-3, 1909; W. Foster, James Augustus Hickey, Some new facts, Bengal Past and Present, 30, 1925. H. Hobbs, J.A. Hicky, Bengal Gazette 1780-82, Proceeding’s of Asiatic Society of Bengal, No. 6, 1940. আগে উল্লিখিত এটর্নি উইলিয়াম হিকির স্মৃতিকথায়ও সাংবাদিক হিকি প্রসঙ্গ রয়েছে।
কলকাতার গান
শান্তিকুমার দাশগুপ্ত, হরিবন্ধু মুখুটি (সম্পাদক), ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত রচনাবলি, ১ম খণ্ড, কলকাতা, ১৩৮১; ভবতোষ দত্ত (সম্পাদক), ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত ‘কবি জীবনী’, নতুন সংস্করণ, ১৯৯৮; কেদারনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, গুপ্ত রত্নাদ্ধার বা প্রাচীন কবি সঙ্গীত সংগ্রহ, কলকাতা, ১৩০১; দুর্গাদাস লাহিড়ী, বাঙ্গালীর গান, কলকাতা, ১৩১২; রমাকান্ত চক্রবর্তী, বিস্মৃত দর্পণ : বাবু বাংলা; গীতরত্ন, কলকাতা, ১৯৭১; অবিনাশচন্দ্র ঘোষ, প্রীতিগীতি, কলকাতা, ১৮৯৮; রাজ্যেশ্বর মিত্র, বাংলার গীতকার ও বাংলা গানের নানা দিক, কলকাতা, ২য় সংস্করণ, ১৯৭৩; উৎপলা গোস্বামী, কলকাতায় সঙ্গীতচর্চা, কলকাতা, ১৯৯১। অরুণ নাগ (সম্পাদক), সটীক হুতোম প্যাঁচার নকশা, কলকাতা, ১৩৯৮; বীরেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, বাংলাদেশের সঙ প্রসঙ্গে, কলকাতা, ১৯৭২;
একদিন হঠাৎ
রাজধানী বদল উপলক্ষে কলকাতার প্রতিক্রিয়া প্রধানত সমসাময়িক দৈনিক সংবাদপত্রের ভিত্তিতে লিখিত। বিশেষ করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে কলকাতার ‘The Englishman’ কাগজ থেকে। অন্যান্য বিবরণ লন্ডন থেকে সরকারিভাবে প্রকাশিত রাজকীয় ভ্রমণের প্রতিবেদন থেকে। দ্রষ্টব্য: The Historical Record of the Imperial visit to India in II, John Murry, London, 1914; Newal Kishore, who is who in India containing lives and portraits of Rulling Chiefs, Nobles, titled personages and other eminent Indians, cornation edition, 2 vols. Lucknow, 1911, Part V & VIII for Bengal and Calcutta.
একজন সাহেব এসেছিলেন কলকাতা দেখতে
জেফ্রি মোরহাউসের সুপরিচিত বই যখন স্বল্প পরিচিত তখন তা পড়ে লেখা। দ্রষ্টব্য: Geoffrey Moorhouse, Calcutta, London, 1971.
কলকাতা ইদানীং
কোনও বিশেষ বই-নির্ভর রচনা নয়। সমকালের একজন দর্শক হিসাবে দেখা কলকাতা। রচনার প্রয়োজনে পুরানো দিনের কিছু বিবরণ যদি ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তবে একালের কিছু কিছু দর্শককেও গ্রহণ করা হয়েছে সাক্ষী হিসাবে। প্রাসঙ্গিক বই হিসাবে পড়া যেতে পারে : বিনয় ঘোষ, মেট্রোপলিটান মন : মধ্যবিত্ত বিদ্রোহ, কলকাতা, ১৯৭৩; শিবপ্রসাদ সমাদ্দার, আমি আপনি কলকাতা, কলকাতা, ১৯৮১; অশোক মিত্র, কলকাতা প্রতিদিন (অনুবাদ : মালিনী ভট্টাচার্য, মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়,) কলকাতা, ১৯৮৩; কৃষ্ণ ধর, কলকাতার তিন শতক, কলকাতা, ১৯৮৯; গুন্টার গ্রস, জিভ কাটো লজ্জায় (অনুবাদ : দেবব্রত চক্রবর্তী), কলকাতা, ১৯৯০; Ashok Mitra, Calcutta Indian’s city, Calcutta, 1963; Calcutta on the eve of the tercentenary, New Delhi, 1991; Dominique Lapierre, The City of Joy, New York, 1985.
নির্দেশিকা আপাতত এখানেই শেষ। এই পর্যায়ে যে সব বইপত্রের উল্লেখ করা হল তার বাইরেও কলকাতার নানা দিক নিয়ে লেখা অসংখ্য বইপত্র রয়েছে।
এখানে তার বিস্তারিত বিবরণ দেওয়ার সুযোগ নেই। সম্ভবত তার প্রয়োজনও নেই। কারণ, ইতিমধ্যে বাংলা এবং ইংরেজি ভাষায় লেখা কলকাতা বিষয়ক একাধিক গ্রন্থপঞ্জী প্রকাশিত হয়েছে। দ্রষ্টব্য: নকুল চট্টোপাধ্যায়, তিন শতকের কলকাতা, ১৩৭৪। এই বইটির পরিশিষ্টে কলকাতা বিষয়ক ইংরেজি ও বাংলা বইয়ের একটি তালিকা রয়েছে। তালিকাটি যথেষ্ট বিস্তৃত নয়। তবু প্রয়োজনীয়। বিশেষত বাংলা সাময়িক পত্র থেকে কিছু কলকাতা বিষয়ক রচনাও এখানে পঞ্জিভুক্ত করা হয়েছে। দ্বিতীয় দ্রষ্টব্য: অশোক উপাধ্যায়, বাংলা ভাষায় কলকাতা চর্চা, ১৩৪ বছরের প্রকাশিত গ্রন্থের খতিয়ান। খতিয়ানটি বর্ষানুক্রমিক এবং অতিশয় পরিচ্ছন্ন। কিন্তু এক অর্থে সীমাবদ্ধ। এখানে প্রত্যক্ষত কলকাতা বিষয়ক নয়, অথচ কলকাতা চর্চায় অপরিহার্য এমন বইয়ের কথা বিশেষ বলা হয়নি। এই তালিকাটি প্রথম মুদ্রিত হয় ‘পশ্চিমবঙ্গ’ পত্রিকার ২৪ আগস্ট ১৯৮৯ সালে প্রকাশিত কলকাতা-সংখ্যায়। তখন অবশ্য তা ছিল কলকাতার ইতিহাস ও ভূগোল সম্পর্কিত বইয়ের তালিকা। বর্তমান তালিকা তারই সম্প্রসারিত রূপ। এটি ছাপা হয়েছে দেবাশিস বসু সম্পাদিত ‘কলকাতার পুরকথা’ সংকলনটিতে। প্রথম প্রকাশ, কলকাতা, ১৯৯০। তৃতীয় তালিকাটির সংকলক অশোককুমার রায়। দ্রষ্টব্য: কলকাতার নির্বাচিত গ্রন্থপঞ্জী; কলকাতা, ১৯৯১। এই সংকলনে বাংলা ইংরেজি দুই ভাষার বই-ই ঠাঁই পেয়েছে। তালিকা বর্ষাণুক্রমিক। দুঃখের বিষয় কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি রয়ে গেছে। তবু বলব সংকলকের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় রয়েছে এই তালিকায়। আপাত বিচারে বেশ কিছু ‘দূরবর্তী’ বই তিনি তালিকাভুক্ত করেছেন যা মূলত কলকাতার পক্ষে প্রাসঙ্গিক। চতুর্থ গ্রন্থপঞ্জীটি ইংরেজি বইপত্রের। দ্রষ্টব্য: Pradip Chaudhuri, (complier) Calcutta Studies, A list of Documents, Calcutta, 1998(?) বইটি তখনও প্রকাশের অপেক্ষায়। সংকলকের সৌজন্যে আমি প্রকাশ-পূর্ব বই ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছি। এ জন্য ধন্যবাদ। এই তালিকায় ১৩৯৪টি বই ও অন্যান্য রচনা স্থান পেয়েছে। বলা বাহুল্য বিষয় যেখানে কলকাতা সেখানে সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, জাতীয় গ্রন্থাগারের উদ্যোগে ১৯০৭-১৯৮৫ সালের মধ্যে Bengal Past and Present পত্রটির একটি সম্পূর্ণ ও বিস্তারিত সূচি এই হিসাবে প্রকাশিত হয়েছে। দ্রষ্টব্য: Index of Bengal Past and Present, 1907-1985, তা ছাড়া, দুই খণ্ডের আরও একটি গ্রন্থতালিকা উপহার দিয়েছেন আমাদের অমলেন্দু রায়। দ্রষ্টব্য: Amalendu Ray, Calcutta: An Annotated Bibliography, Vol-1, Calcutta, 1990, Vol-II, Calcutta, 1994; Calcutta Historical Society, Calcutta 1988. বলা বাহুল্য, বর্তমান সংকলককে এই সংক্ষিপ্ত নির্দেশিকা রচনায় উল্লেখিত সব কটি তালিকারই সাহায্য নিতে হয়েছে। তবে সবিনয়ে স্বীকার করি সব চেয়ে বেশি সহযোগিতা পেয়েছি এশিয়াটিক সোসাইটি প্রকাশিত পি.টি. নায়ারের দুই খণ্ডের কলকাতা বিষয়ক বিশাল গ্রন্থপঞ্জী থেকে। ১৬১৬ পৃষ্ঠা ব্যাপী এমন একটি ব্যাপক, নিবিড় এবং অনুপুঙ্খ গ্রন্থপঞ্জী রচনা করতে যে মনোযোগ অধ্যবসায় এবং জ্ঞানের ব্যাপ্তি প্রয়োজন তা ভাবলে সংকলকের প্রতি শ্রদ্ধায় নিজে নিজে মাথা নত হয়ে আসে। বইটির একমাত্র সীমাবদ্ধতা এটি সম্পূর্ণত কলিকাতা বিষয়ক ইংরেজি বই ও পত্রপত্রিকার পঞ্জী। স্বাভাবিক কারণেই নায়ার বাংলা বই ও পত্রপত্রিকা এড়িয়ে গেছেন। তবু যা দিয়েছেন তা অকল্পনীয়। দ্রষ্টব্য: P.T. Nair, Calcutta Tercentenary Bibliography, Vol-I, Calcutta, 1993, Vol-II, Calcutta, 1993. এই সংকলনে এমনকী কলকাতার তিনশো বছর পূর্তি উপলক্ষে যে সব পত্রপত্রিকার বিশেষ সংখ্যা এবং রচনা সংকলন প্রকাশিত হয়েছে সেগুলোও সযত্নে তালিকাভুক্ত। তাই বলছিলাম এতগুলি সহায়ক গ্রন্থতালিকা হাতের কাছে রয়েছে যখন তখন আর নতুন করে আমার পক্ষে সংক্ষিপ্ত-পাঠ ধার্য করা অবান্তর।
তবু কলকাতার তিনশো বছর পূর্তি উপলক্ষে তার আগে পরে যে সব বই বা সংকলন প্রকাশিত হয়েছে তার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করা হল। দ্রষ্টব্য: Jean Racine (Ed.) Calcutta 1981, New Delhi, 1990, Sukanta Choudhury (Ed.), Calcutta: The Living City, 2 vols, Vol-I The Past, Vol-II The Present and the Future, Calcutta, 1990; J.P. Losty, The City of Palaces, London, 1990; Marg, Vol-XLI, No.4, The City of Kali, Bombay, 1990; Pratapaditya Pal (Ed.) Changing Visions, lasting imgaes: Calcutta through 300 years, Bombay, 1990; The Raj: India and Britain, 1600-1947, Catalogue of the exhibition at National Portrait Gallery, London, 1990: Getti Sen, (Ed.), Calcutta Psyche, New Delhi, 1991; Nari, A tribute to the women of Calcutta, Editor, Tilottama Tharoor, Calcutta, 1990: Calcutta, Insight City Guide, Editor, Michel Vatin, Ed. Director, Geoffrey Eu, Singapore, 1991; Atlas of the City of Calcutta, National Atlas, Calcutta, 1990: P. Thankappan Nair, Calcutta Corporation at a Glance, Calcutta, 1989; Bengal Obituary (Reprint), Calcutta, 1991; Samaren Roy, Calcutta: Society and Change 1690-1990, Calcutta, 1991; Khushwant Singh, Kalighat to Calcutta 1690-1989; Calcutta, 1989; Nisith Ranjan Roy, Calcutta, The Profile of a City, Calcutta, 1986. বাংলা বই ও সংকলনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য: দেবাশিস বসু (সম্পাদক), কলকাতার পুরাকথা, কলকাতা, ১৯৯০; প্রাণকৃষ্ণ দত্ত, কলিকাতার ইতিবৃত্ত ও অন্যান্য রচনা (সম্পাদনা-দেবাশিস বসু), কলকাতা, ১৯৯১; নিশীথরঞ্জন রায়, অশোক উপাধ্যায় (সম্পাদক) প্রাচীন কলকাতা, কলকাতা, ১৩৯০; নিশীথরঞ্জন রায়, সুনীল দাস (সম্পাদক), পুরনো কলকাতার কথা, কলকাতা, ১৯৮৯; সিদ্ধার্থ ঘোষ, কারিগরি কল্পনা ও বাঙালি উদ্যোগ, কলকাতা, ১৯৮৮; অতুল সুর, ৩০০ বছরের কলকাতা, পটভূমি ও ইতিকথা, কলকাতা, ১৯৮৯; কমল সরকার, কলকাতার স্ট্যাচু, কলকাতা, ১৯৯০; অশোক ভট্টাচার্য, কলকাতার চিত্রকলা, কলকাতা, ১৯৯১; রথীন মিত্র, শাশ্বত কলকাতা, ১ম পর্ব, গঙ্গার ঘাট, কলকাতা, ১৯৮৮; ২য় পর্ব, ইংরেজ আমলের স্থাপত্য, কলকাতা, ১৯৮৮; ৩য় পর্ব—শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলকাতা, ১৯৮৯।