৯. অসহনীয় থেকে অপ্রতিরোধ্য অভ্যাস গঠনের পরীক্ষিত উপায় যা আপনার জীবনে পরিবর্তন আনবে মাত্র ৩০ দিনে
মানুষ সফল হয়ে জন্ম নেয় না। সফল মানুষ সাফল্যের জন্যে কাজের কিছু নির্দিষ্ট ধরণ ও কিছু অভ্যাস আত্মস্থ করেন, যা অসফল মানুষ করেন না।
সফল মানুষেরও অনেক কাজের ভেতর কিছু কাজ থাকে যা তাদের পছন্দ নয়; কিন্তু তবু তারা সেটা শুরু করেন এবং শেষ করেন।
— ডন মার্কুইস
অনুপ্রেরণা আপনাকে শুরু করতে সাহায্য করবে। অভ্যাস আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
— জিম রন
.
বলা হয়ে থাকে, কারো জীবনমান নির্ভর করে তার অভ্যাসের মানের ওপর। একজন সফল মানুষের সাফল্যের গোপন সূত্র হচ্ছে যে, কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পেতে নিয়মিত যে কাজগুলো করা দরকার, তারা সেগুলোকে অভ্যাসে পরিণত করেছেন। অন্যভাবে বলা যেতে পারে, যিনি সফল নন, তিনি প্রয়োজনীয় অভ্যাসগুলো ধারণ ও চর্চা করতে পারেননি।
অভ্যাসের ওপর সাফল্য নির্ভর করে। তারপরও এখনও পর্যন্ত নিখুঁত এমন কোনো উপায় উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়নি যার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় অভ্যাস ধারণ ও চর্চা করা যায়। আপনি যে ক্ষেত্রে, যে মাত্রায় সাফল্য চান তা অধিগ্রহণ করতে যে সব অভ্যাসের প্রয়োজন, তা আপনাকেই নির্দিষ্ট করতে হবে; ধারণ করতে হবে ও চর্চা করতে হবে। এবং একই সঙ্গে যে সব অভ্যাস ব্যর্থতার জন্যে দায়ী, সেগুলোও নির্দিষ্ট করে বর্জন করার দায়িত্বও আপনার। অভ্যাস হচ্ছে সেই সব কাজ, যা আপনি সচেতনভাবে ও অবচেতন মনে নিয়মিত করে যাচ্ছেন। বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন, আপনার জীবনধারণ ও উন্নয়ন আপনার তৈরি করা অভ্যাসের মাধ্যমেই নির্ধারিত। হয় আপনি অভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করুন, নতুবা অভ্যাসই আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করবে।
দুর্ভাগ্যের বিষয়, আমাদের শেখানো হয় না কীভাবে অভ্যাস ধারণ ও চর্চা করতে হয়। কোনো স্কুলে কিংবা কলেজে এমনকি প্রথাগত কোন প্রাইভেট কোচিং সেন্টারেও এই বিষয়ে কোন বিশেষায়িত শিক্ষা দেওয়া হয় না। যদিও সাফল্যে পৌঁছান এবং তা ধরে রাখতে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে অভ্যাস চর্চা ও নিয়ন্ত্রণও আমাদের পাঠ্যক্রমে থাকা উচিত। কারণ কোনো বিষয়ে যদি আপনার শিক্ষা না থাকে, আপনি যতবারই চেষ্টা করুন আপনি ওই নির্দিষ্ট বিষয়ে সফল হবেন না। প্রতিবছর, বছরের শুরুতে আপনি যে পরিকল্পনা করেন, তার দিকে একটু মনোযোগ দিলেই বুঝতে পারবেন।
অভ্যাসগত ব্যর্থতা : নতুন বছরের প্রতিজ্ঞা
প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের শুভ বুদ্ধির ওপর ভরসা করে ইতিবাচক সব পরিকল্পনা করেন কিন্তু দেখা যায় শতকরা পাঁচ ভাগেরও কম মানুষ তাদের প্রতিজ্ঞার প্রতি সুবিচার করেছেন। প্রতি বছরের শেষ ক্ষণে আমরা নতুন বছরের জন্যে ইতিবাচক সব প্রতিজ্ঞা করি, প্রতিজ্ঞা করি নেতিবাচক অভ্যাস পরিত্যাগের। পরিসংখ্যানের দিকে না গিয়েও আমরা সবাই জানি, জানুয়ারি মাস শেষ না হতেই আমাদের বেশিরভাগ পরিকল্পনা শেষ হয়ে যায়।
এই প্রবণতার আপনি নিজেও চাক্ষুষ প্রমাণ পেয়ে যাবেন। পহেলা রমজানে মসজিদে যান কিংবা জানুয়ারির পহেলা সপ্তাহে জিম-এ সদস্য হওয়ার চেষ্টা করুন। আপনি মসজিদে বসার জায়গা পাবেন না। জিম-এ সদস্য হওয়ার ফর্ম পাবেন না। দুই সপ্তাহ পরে আবার চেষ্টা করুন। মসজিদ ও জিম দুইই ফাঁকা দেখবেন। এর কারণ একটাই, ইতিবাচক অভ্যাসে নিবদ্ধ থাকার মতো প্রস্তুতি আমাদের অধিকাংশের নেই।
যে অভ্যাসগুলো আমাদের সুখী, স্বাস্থ্যবান ও সফল জীবনের পথে এগিয়ে দেয়, সেই সব অভ্যাস নিয়মিত চর্চা করা কেন এত কঠিন?
ঐতিহ্যে অভ্যস্ততা : পরিবর্তনে ভীতি
এটা সত্যি, কোনো না কোনো অবস্থায়, কোনো না কোনো অভ্যাসের প্রতি আমরা সবাই কমবেশি দায়বদ্ধ। একবার কোনো অভ্যাস গড়ে উঠলে সেটা পরিবর্তন করা কঠিন। কারণ পরিবর্তনের জন্যে সফল ও পরীক্ষিত কোনো কার্যকর কৌশল আমাদের জানা নেই।
নতুন অভ্যাস গড়ে তুলতে আমরা বেশিরভাগ সময়ই ব্যর্থ হই। কারণ আমরা জানিনা, নির্দিষ্ট অভ্যাসটা থেকে কী ফলাফল আমরা পাব এবং কীভাবে তা অর্জন করব। সে কৌশল আমাদের জানা নেই।
নতুন একটা অভ্যাস গড়তে ঠিক কতটা সময় লাগে?
এটা নির্ভর করে আপনি কোনো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিচ্ছেন কিংবা কোন বইটা পড়ছেন তার ওপর। এই বিষয়ে আশ্বস্ত হবার মতো যে সব তথ্য পাওয়া যায় তা থেকে একটা নিরাপদ সময় বের করা যায়। সেটা হলো, মোটামুটি তিন সপ্তাহ থেকে তিন মাসের মতো লাগে একটা নতুন অভ্যাস গড়ে তুলতে কিংবা পুরাতন একটা অভ্যাস পরিত্যাগ করতে।
২১ দিনের (৩ সপ্তাহ) একটা জনপ্রিয় শ্রুতি আমারা অনেকেই শুনেছি। এই তথ্যটা আমরা পেয়েছি সম্ভবত ১৯৬০ সালে প্রকাশিত PsychoCybernetics: A New Way To Get More Living Out of Life বইটি থেকে। বইটা লিখেছিলেন ডা. ম্যাক্সওয়েল মল্টজ (Dr. Maxwell Maltz)। তিনি পেশায় কসমেটিক সার্জন ছিলেন। পেশাগত কারণেই অনেক শরীরে তাঁকে কাঁটা-ছেঁড়া (অপারেশন) করতে হয়েছে। তিনি লক্ষ্য করে দেখেছিলেন, কোনো অঙ্গহানির শুন্যাবস্থা কাটাতে শরীরের মোটামুটি ২১ দিনের মতো সময় লাগে। তিনি আরও কিছু তথ্য প্রমাণ দিয়ে এটাও দেখাতে চেয়েছিলেন, একজন মানুষের অভ্যাস পরিবর্তনের জন্যেও মোটামুটি একই রকম সময় লাগে।
আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং অন্যান্যদের অভিজ্ঞতা (আমার ক্লায়েন্টদের) থেকে আমি যে সব তথ্য সংগ্রহ করেছি, তা বিশ্লেষণ করে এটা বলা যায় যে, অভ্যাস পরিবর্তনের জন্যে ৩০ দিন যথেষ্ট সময়, যদি আপনি একটি কার্যকরী কৌশল অনুসরণ করেন। সমস্যা হচ্ছে, অধিকাংশ মানুষের এব্যাপোরে কোনো কৌশলই থাকে না, সঠিক বা কার্যকরী কৌশলের তো প্রশ্নই আসে না। সুতরাং প্রতিবছরই তারা আত্মবিশ্বাস হারাতে থাকেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একজন ধুমপায়ী সঠিক কৌশলে চেষ্টা না করার ফলে বছরের পর বছর সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিতে চেয়েও পারে না। প্রতিবার সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং ব্যর্থ হয়ে তা থেকে সরে আসায় শুধুমাত্র আত্মবিশ্বাসই কমে, আর কোনো কাজ হয় না।
কীভাবে আপনি আপনার অভ্যাসকে বশ করবেন? আপনার জীবন এবং ভবিষ্যতের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেবেন? কীভাবে সাফল্যের জন্যে প্রয়োজনীয় ইতিবাচক অভ্যাস গড়ে তুলবেন; নেতিবাচক অভ্যাস পরিত্যাগ করবেন? সবগুলো প্রশ্নের সঠিক উত্তর একটাই: আপনাকে পরীক্ষিত, কার্যকরী কৌশল অবলম্বন করতে হবে। কৌশলের অভাবই সব থেকে বড় বাধা। আমাদের অধিকাংশেরই পরিষ্কার ধারণা থাকে না, যে অভ্যাসটি পরিত্যাগ করব কিংবা গ্রহণ করব বলে সিদ্ধান্ত নিলাম, তা থেকে ঠিক কী পরিবর্তন জীবনে আশা করতে পারি। যেহেতু ফলাফল সম্পর্কে আমরা সন্দিহান সেহেতু আমরা কোন মানসিক চাপও অনুভব করি না সিদ্ধান্তটি কার্যকর করতে।
এই অধ্যায়ে আমরা শিখব মাত্র ৩০ দিনে কীভাবে একটি নির্দিষ্ট অভ্যাসের পরিবর্তন আমাদের জীবনে আনতে হয়।
এই ৩০ দিনকে আমরা ১০ দিন করে তিনটি অংশে ভাগ করে নেব।
প্রতি অংশে আমরা নতুন নতুন মানসিক বাধা দূর করব।
প্রথম ১০ দিন : প্রথম ধাপ- অসহনীয়
যে কোনে নতুন অভ্যাস গড়তে কিংবা পরিত্যাগ করার প্রথম দুই দিন আপনার হয়তো কিছু মনে হবে না, হয়তো নতুন পরিবর্তনের উত্তেজনায় আপনি একটু উত্তেজিতও হবেন। ধৈর্য ধরুন, নতুনত্বের বাষ্প মিলিয়ে গেলেই বাস্তবতার দেখা মিলবে। সবকিছু তেতো লাগবে। আপনি এটা একটুও পছন্দ করবেন না, অসহ্য মনে হবে। আপনার প্রতিটি ডিএনএ এই পরিবর্তনের বিরোধিতা করবে। মানসিক ও শারীরিক যাতনার বশবর্তী হয়ে আপনিও বলবেন, “এই পরিবর্তন আমি চাই নি। আমি আর সহ্য করতে পারছি না।”
আপনি নতুন যে অভ্যাসটা গড়তে যাচ্ছেন, সেটা যদি হয় ভোরে উঠা; তাহলে প্রথম ১০ দিনে আপনার প্রতিক্রিয়া এরকম হবে: নির্দিষ্ট সময় অ্যালার্ম বাজবে; আপনি ঘড়িতে সময় দেখবেন; নিজেকে বোঝাবেন আরো ১০ মিনিট ঘুমালে মহাভারত অশুদ্ধ হবে না; এবং আপনি সুজ বাটন চেপে আবার ঘুমিয়ে পড়বেন।
বেশিরভাগ মানুষের সমস্যা হচ্ছে, তারা জানেন না যে, এই ১০ দিনের অনুভুত হওয়া অসুবিধা বা অসহ্য অবস্থাটা নিতান্তই সাময়িক। বরং তারা ভাবেন, এই অসুবিধাগুলোই দীর্ঘস্থায়ী; এর থেকে মুক্তি নেই! এবং শেষ সিদ্ধান্তটা এরকম হয়, ‘পরিবর্তনটা যদি এতই পীড়াদায়ক হয়, তাহলে থাক। দরকার নেই এই ঝামেলার’।
এই কারণেই সমাজের শতকরা ৯৫ ভাগ মানুষ, আমজনতা ব্যর্থ হন নতুন সু-অভ্যাস গড়তে ও কু-অভ্যাস বর্জন করতে। এর ফলে তারা ব্যর্থ হন জীবনের মান বৃদ্ধিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে।
আপনার সাফল্য এখানেই যে, আপনি ইতোমধ্যে জেনে গিয়েছেন প্রথম ১০ দিন আপনাকে ভয়ানক চাপ নিতে হবে, যে চাপটা ক্ষণস্থায়ী এবং আপনি সেই চাপের জন্যে প্রস্তুত। যদি আপনি এই চাপটুকু সামলিয়ে উঠতে পারেন তাহলে আপনি অবশ্যই প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠতে পারবেন এবং সফল হবেন। এবং একবার যদি আপনি পরিবর্তনের মজা পেয়ে যান, তাহলে আপনি ১০ দিনে যেকোনো কিছু করে ফেলতে পারবেন।
সুতরাং অভ্যাসে পরিবর্তন আনার প্রথম ১০ দিন মধুচন্দ্রিমা নয়। অসহ্য লাগবে, বিরক্ত হবেন এবং এমনকি আগের অভ্যাসে ফিরে যেতে চাইবেন। কিন্তু, একটু কষ্ট করে নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন। আপনি পারবেন। আর পুরষ্কার? পাবেন সর্বময় সক্ষমতা! তখন জীবনের যে কোনো পরিবর্তনের জন্যে আপনি একাই যথেষ্ট!
১১ থেকে ২০তম দিন: দ্বিতীয় ধাপ- অস্বস্তিকর
প্রথম ১০ দিন কাটিয়ে উঠার পর আমরা এখন দ্বিতীয় অধ্যায়ে প্রবেশ করব। প্রথম ১০দিনের তুলনায় এই সময়টা অপেক্ষাকৃত সহজ হবে। কারণ আপনি ইতোমধ্যে নির্দিষ্ট অভ্যাসটা গ্রহণ কিংবা বর্জনে মটামুটি অভ্যস্ত হয়ে গেছেন; মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেছেন আপনার জীবনে আসন্ন ইতিবাচক ফলাফল সম্পর্কে। এবং এই ব্যাপারে কিছু আত্মবিশ্বাসও অর্জন করে ফেলেছেন।
যদিও এখন ব্যাপারটা আগের মতো অসহনীয় হবে না, তারপরও খুব সহজও হবে না। আপনার অবচেতন মন আপনাকে মায়াজালে আকৃষ্ট করে পিছনের দিনে নিয়ে যেতে চাইবে; ভাবাবে, দেখাবে আপনি কত আরামে ছিলেন, কত সন্তুষ্ট ছিলেন এই সব শুরু করার আগে। মনে হবে ফেলে আসা ঘুমের সকালগুলো কত আরামদায়কই না ছিল! ধৈর্য ধরুন, নিজের প্রতি করা প্রতিজ্ঞায় অটুট থাকুন। আপনি ইতোমধ্যে অসহনীয় অবস্থা পার করে এসেছেন। এখন যে পর্যায়ে আছেন সেটা আর অসহনীয় নয়, যদিও কিছুটা অস্বস্তিকর। তবে আপনার জীবনে খুব বড় পরিবর্তন ঘটতে চলেছে। আপনি খুব শিগগিরই পেতে চলেছেন অন্য এক অনুভূতি, আপনি হয়ে যাবেন অপ্রতিরোধ্য।
২১ থেকে ৩০ তম দিন: চূড়ান্ত ধাপ- অপ্রতিরোধ্য
আপনি শেষ ১০ দিনে প্রবেশ করেছেন। সাবধান! এই পর্যায়ে এসে আমরা ক্ষতিকারক একটা ভুল করি। ২১ দিনে অভ্যাস পরিবর্তনের জনপ্রিয় পরামর্শটা নিশ্চয় ভুলে যাননি; ‘২১দিন সম্পন্ন হয়েছে, যথেষ্ট, আর কী প্রয়োজন’। এই সময়ে এসে আপনার অবেচতন মন আপনাকে এভাবে বিভ্রান্ত করতে পারে।
২১ দিনের ব্যাপারটা কি পুরোপুরি ভুল? না, বিশেষজ্ঞরা খুব একটা ভুল করেননি। ২১ দিনে অভ্যাসগত পরিবর্তন সম্পন্ন করা সম্ভব। কিন্তু শেষ ১০ দিন আমরা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়ের জন্যে সংরক্ষিত রেখেছি। আমরা যে অভ্যাসটা গ্রহণ কিংবা বর্জনে এতদিন কষ্ট করলাম, তা দীর্ঘ মেয়াদে আমাদের জীবনে কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে তা আমরা অনভুব করতে চেষ্টা করব এবং একই সঙ্গে এই ১০ দিনে সেই পরিবর্তনে অভ্যস্ত হতে চেষ্টা করব। বিগত ২০ দিনে আমরা আমাদের পরিবর্তনে অসন্তুষ্ট ছিলাম, অসুখী ছিলাম। এখন আর অপছন্দ কিংবা এড়িয়ে চলা নয়, নতুন অভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে আমরা গর্বিত। আর তাই এখন আমরা এই পরিবর্তনের ইতিবাচক ফলাফল উপভোগ করব।
দৃশ্যমান প্রকৃত পরিবর্তন (transformation) এই শেষ ১০ দিনে দেখা দেবে। কারণ আপনি নতুন যে অভ্যাস গঠন করলেন তা এখন থেকে হয়ে যাবে আপনার পরিচয়ের একটা অংশ। ব্যাপারটা এমন, যেন এতদিন আমরা পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছি; এখন পরিবর্তনটা আমাদের অস্তিত্বের অংশ। এতদিন আমরা পরিবর্তন আনতে চেয়েছি, এখন পেরেছি।
উদাহরণ হিসেবে ভোরে ওঠার ব্যাপারটা নিয়ে ভাবুন। প্রথম ২০ দিন আপনি নিজেকে বোঝাতে চেয়েছেন, “সকালে উঠে লাভ কী?” “আমি সকালে ওঠা মানুষদের কাতারে পড়ি না।” বারবার সুজ বাটন চেপেছেন। অথচ এখন আপনি অ্যালার্ম বাজার সঙ্গে সঙ্গে উত্তেজিত হয়ে উঠেন বিছানা ছাড়ার জন্যে। কেননা আপনি জানেন এবং বিশ্বাস করেন যে, আগে আগে বিছানা ছাড়ার ফলে আপনি অতিরিক্ত কিছু কাজ চাপমুক্ত অবস্থায় করতে পারবেন। এগুলো নির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্য পূরণে আপনাকে সাহায্য করবে।
কিছু মানুষ প্রথম ২০ দিন শেষে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন। তারা ভাবেন, “২০ দিন তো চেষ্টা করেছি। এখন আমি পরিবর্তনে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এখন কিছুদিন ছুটি নিই।” দয়া করে, এই ভুল করবেন না। এখন বিরতি দিলেই আপনি আবার পুরোনো গর্তে পড়ে যাবেন; আবার প্রথম থেকে শুরু করতে হবে। কাজেই এই ঝুঁকি না নিয়ে আসুন পরিবর্তনকে উপভোগ করে শেষ ১০ দিন শেষ করি, তাহলে আগামী দিনে এভাবে চলতে পারব অবিরাম।
আমি দৌড়াতে অপছন্দ করি
“বিশ্বাস করো, জন। আমি দৌড়াতে অপছন্দ করি। কোনভাবেই আমি এটা করতে পারব না।”
“ও, হ্যাল, এটা কোনো ব্যাপারই না। আমরা Front Row Foundation- এর চাঁদার জন্যে দৌড়াচ্ছি।” জন বার্গহফ জবাব দিয়েছিল। সে আরো ব্যাখ্যা করেছিল, “দেখ, আমি নিজেকেও ম্যারাথনের জন্যে উপযোগী মনে করি না। কিন্তু একবার যদি তুমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেল, তুমি ঠিকই কাজটা শেষ করার একটা না একটা উপায় বের করে ফেলবা। এবং আমি তোমাকে বলছি, সত্যিই এটা একটা জীবন বদলানো অভিজ্ঞতা।”
“ঠিক আছে ভেবে দেখব।”
ভেবে দেখার ব্যাপারটা আসলে জনকে আপাতত দূরে রাখার একটা কৌশল। ভুল বুঝবেন না, Front Row Foundation-এর কাজের ব্যাপারে আমার পূর্ণ সমর্থন ছিল। এই সংস্থার জন্যে আমি অনেক দিন ধরে অর্থ দান করে আসছি। কিন্তু ম্যারাথনে দৌড়ানোর চেয়ে চেক লেখা অনেক সহজ। গ্র্যাজুয়েশনের পরে গত ১০ বছরে আমি দৌড়াইনি। এবং তখনও আমি শুধু শরীরচর্চা ক্লাসের জন্যেই দৌড়াতাম।
২০ বছর বয়সে আমার দুর্ঘটনাটা (কার অ্যাক্সিডেন্ট) ঘটে। এর বর্ণনা আপনাদের আগেই দিয়েছি। দুর্ঘটনাটার পর আমার শরীরে অনেকগুলো জটিল অপারেশন করা হয়। কেউ ভাবতেও পারেনি, আমি আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারব। যাই হোক, আমি বেঁচে আছি, বেশ ভালো ভাবেই। আমি কিছু আউটডোর স্পোর্টসেও অংশ নিই, যেগুলোতে ঝুঁকি কম। কিন্তু আমার মনে সবসময় একটা ভয় থাকে। জনের সঙ্গে কথা হওয়ার সপ্তাহ খানেকের ভেতর আমার একজন কোচিং ক্লায়েন্ট, Katie Fingerhut, সে তার দ্বিতীয় ম্যারাথন শেষ করে এসে আমাকে জানাল, “হ্যাল, বিশ্বাস করবা না; এই অনুভূতি সত্যিই অসাধারণ, এখন আমার মনে হচ্ছে আমি সবকিছু করতে পারি।”
ম্যারাথনের ব্যাপারে জন ও কেটের ইতিবাচক কথাবার্তার পর আমি ভাবতে বসলাম। আমার মনে হলো, নিজের সক্ষমতা নিয়ে আমার যে সন্দেহ তা দূর করার সময় হয়েছে। জীবনে আর সবকিছু যদি আমি করতে পারি, দৌড়াতে পারব না কেন? সুতরাং আমি শুরু করলাম। পরের দিন সকালে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে দৌড়াব। জুতা পরলাম; সদর দরজা খুলে বের হলাম। আমি সত্যিই চাচ্ছিলাম দৌড়াতে। মনে আছে? যেমন বলেছিলাম, পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রথম দুই দিনে উত্তেজিত থাকবেন!
বাড়ি থেকে রাস্তায় বের হওয়ার সময়টুকু আমি নিজেকে উৎসাহ দিলাম, সাহস দিলাম। বাড়ি থেকে বের হয়ে ফুটপাথে হালকা চালে খানিক দৌড়ালাম। এরপর রাস্তায় নামলাম। রাস্তায় নেমেই আমি হোঁচট খেলাম, গোঁড়ালি মচকে গেল। ব্যাথায় নীল হয়ে গোঁড়ালি ধরে আমি ভাবলাম, “কোনকিছুই খামোকা ঘটে না। সম্ভবত আজকের দিনে দৌড়ানো আমার জন্যে উপযুক্ত না। আবার কাল চেষ্টা করব।” এবং আমি তাই করেছিলাম।
৩০ দিন : “অসহ্য থেকে অপ্রতিরোধ্য”
পরের দিন থেকে আমি অফিসিয়ালি প্রস্তুতি নিতে শুরু করলাম ম্যারাথনের জন্যে। নতুন সিদ্ধান্তের যে উত্তেজনা থাকে তা আমার ক্ষেত্রে স্থায়ী হয়েছিল মাত্র কয়েক মুহূর্ত। এরপর ব্যথা শুরু হলো; আমার অবচেতন মন স্মরণ করিয়ে দিতে থাকল যে আমি দৌড়ের উপযুক্ত নই, আমি খুব খারাপ দুর্ঘটনায় পড়েছিলাম, আমার পেছনে ব্যাথা করছে, আমার পা ভাঙা, ইত্যাদি। কিন্তু সব থেকে বড় কথা আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম।
অত্যন্ত যন্ত্রণা নিয়ে আমি এক মাইল দৌড়ানো শেষ করলাম। যখন হাঁপাচ্ছি, আমার মনে হলো আমার সাহায্য দরকার, পরিকল্পনা দরকার। সুতরাং আমি বুক স্টোরে গেলাম এবং খুঁজে বের করলাম নিখুঁত সমাধান – ডেভিট হুইটসেটের (David Whitsett) লেখা The NonRunner’s Marathon Trainer!
১-১০ম দিন
দৌড় শুরু করার পর প্রথম দশ দিন আমি অত্যন্ত শারীরিক কষ্টে এবং মানসিক যন্ত্রণায় ভুগেছি। আমার অবেচতন মন বারবার আমাকে আর দশটা সাধারণ মানুষের মতো থামতে বলেছে। আমি শুনিনি।
‘সঠিক কাজটি করো, সহজটি নয়’ কথাটা বারবার স্মরণ করেছি। নিজের করা প্রতিজ্ঞার কথা মনে করেছি আর দৌড়েছি।
১১-২০তম দিন
শরীরের কষ্ট আগের থেকে কমে গেছে, অনেক। কিন্তু দৌড়ানোকে আমি এখনও ঠিক পছন্দ করে উঠতে পারিনি। আবার এটাও ঠিক আগের মতো এখন আর আমি দৌড়ানো ছেড়েও দিতে চাই না। প্রায় দুই সপ্তাহ টানা দৌড়ানোর পর জীবনে প্রথমবারের মতো আমি অনুভব করলাম, রোজ সকালে দৌড়ানোটা একেবারে খারাপ কিছু না। এখন ঘুম থেকে উঠে দৌড়ানোটা আমার জন্যে প্রাত্যহিক জীবনের অংশ হয়ে গেছে। প্রতিশ্রুতি তো আছেই।
২১-৩০ তম দিন
শেষ দিনগুলো ছিল সত্যিই উপভোগ্য। আমি ভুলে গেছি সেই সব দিনের কথা, যখন আমি দৌড়াতে ভয় পেতাম। এখন এটা আমার জীবনের অনুষঙ্গ। রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠি, জুতা পরি, দৌড় শুরু করি, মনটা খুশিতে ভরে ওঠে, মুখে লেগে থাকে হাসির দীপ্তি।
আমি দৌড়াতে পারব না এরকম কু০বিশ্বাস উধাও হয়ে গেল। সেখানে স্থান করে নিল ইতিবাচক আত্মকথন। সেই সঙ্গে আত্মউন্নয়নমূলক গানও আমার হাঁটার সঙ্গি হয়ে গেল। আমি হাঁঠতে পারবনা এরকম গণ্ডিবদ্ধ ধারণা আমি ঠিক ৩০ দিনেই অতিক্রম করলাম। সব থেকে বড় কথা, দুর্ঘটনার পরে, আমি যা কখনো কল্পনাও করতে পারিনি, সেটাই এখন বাস্তব। আমি দৌড়াতে পারি!
বাকি গল্প: স্বাধীনতার পথে ৫২ মাইল
৩০ দিন পর আমি যখন সকালে দৌড়ানোতে সম্পূর্ণ অভ্যস্ত, ম্যারাথনে অংশ নেওয়ার জন্যে প্রস্তুত, জনকে ডাকলাম, সুসংবাদ দেওয়ার জন্যে। জন আমার খুব ভালো বন্ধু। আমার দুঃসময়ে সে সব সময় পাশে থেকেছে। দুর্ঘটনা পরবর্তী সময়ে আমার মানসিক সংকীর্ণতা কাটিয়ে উঠার ক্ষেত্রে সে সব সময় সাহায্য করেছে। জন সবকিছু শুনে এমন এক প্রস্তাব আমাকে দিল, যা শুধু তার পক্ষেই সম্ভব। সে আমার পিঠ চাপড়ে অনেক প্রশংসা করে বলল, “বন্ধু, ২৬ মাইলের ম্যারাথনে দৌড়ানো আর ৫২ মাইলে দৌড়ানো একই কথা। তুমি ৫২ মাইলই দৌড়াও।” জন আমাকে খুব ভাল করে চেনে। সে জানে আমি তখন আবেগের পাহাড়ের মাথায় বসে আছি; যত অসম্ভব প্রস্তাবই সে দিক, আমি একবারেই “না” করে দেব না। জন ঠিকই ভেবেছিল। আমি “না” করিনি বরং ভেবে দেখার জন্যে তার কাছে সময় চাইলাম।
পার্থক্যটা হলো, এবার “ভেবে দেখব” বলতে আমি সত্যিই ভেবে দেখতে চেয়েছি। কারণ নিজেকে চাপে রাখলে যে ফল পাওয়া যায়, এই ব্যাপারটা এখন আমি জানি। আমি “একদমই দৌড়াতে পারি না” থেকে যদি একটানা ৬ মাইল দৌড়াতে পারি তাহলে ৫২ মাইলও পারব। সব থেকে বড় কথা ৫২ মাইলের ম্যারাথনের এখনও ছয় মাস বাকী। আমি বেশ উৎসাহ বোধ করেছিলাম। এমনকি আমি একজন বন্ধু ও দুইজন সাহসী কোচিং ক্লায়েন্টকে রাজি করিয়ে ফেললাম আমার সঙ্গে অংশগ্রহণের জন্যে।
প্রস্তুতি নেওয়ার ছয় মাসে আমি মোট ৪৭৫ মাইল দৌড়েছিলাম। এর ভেতর একটানা ২০ মাইল করে দৌড়েছি তিনবার। আমরা চারজনই এখন মোটামুটি প্রস্তুত আটলান্টিক সিটি ম্যারাথনের জন্যে। এমনকি উৎসাহ দেওয়ার জন্যে জনও চলে আসল। মুশকিল হচ্ছে আটলান্টিক সিটি “আল্ট্রা” ম্যারাথনের জন্যে প্রস্তুত ছিল না। সুতরাং আমরা একটু বুদ্ধি খাটালাম।
আমরা ঠিক করলাম, ভোর সাড়ে তিনটায় সবাই বোর্ডওয়াকে হাজির হব। সিদ্ধান্তটা ছিল অফিসিয়াল ম্যারাথন শুরুর আগেই আমরা আমাদের প্রথম ২৬ মাইল দৌড় শেষ করব এবং বাকি ২৬ মাইল শেষ করব অন্যান্য অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে। মুহূর্তটা ছিল পরাবাস্তব। আমাদের ভেতর একই সঙ্গে কাজ করছিল উত্তেজনা, ভয়, আত্মবিশ্বাস ও অবিশ্বাস। সত্যিই আমরা চ্যালেঞ্জটা নিতে যাচ্ছি?!
চাঁদের আলো আরেকটু উজ্জ্বল হলে অক্টোবরের কড়া শীতে আমরা আমাদের নিশ্বাস দেখতে পেতাম। তবুও আমাদের পথ ছিল যথেষ্ট আলোকিত। আমরা শুরু করলাম। একসঙ্গে, ধীরে ধীরে আমরা এগোতে থাকলাম। আমরা সবাই একমত হয়েছিলাম সাফল্য শুধু এভাবেই আসতে পারে- এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে। সুতরাং এটা আমাদের জন্যে শুধু দৌড়ানোই ছিল না, আমাদের জন্যে ছিল উদ্দেশ্যের পথে এগিয়ে যাওয়া।
ছয় ঘণ্টা পাঁচ মিনিট লেগেছিল আমাদের প্রথম ২৬ মাইল দৌড় শেষ করতে। এই ব্যাপারটাতে অনুশীলন যতটুকু সাহায্য করেছিল, ঠিক ততটুকুই সাহায্য করেছিল আমাদের পারস্পরিক উৎসাহ; একটা দল হয়ে আমাদের একসঙ্গে লক্ষ্যে পৌঁছনোর চেষ্টা। এই সময়টা আমাদের চার জনের জন্যে ছিল সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ সময়। ২৬ মাইল দৌড় শেষ করার আত্মতুষ্টি যেমন ছিল তেমনি সামনে আরও ২৬ মাইলও দৌড়াতে হবে- এই ভাবনাও ছিল।
যে উত্তেজনা নিয়ে ছয় ঘণ্টা আগে আমরা দৌড় শুরু করেছিলাম, তা এখন প্রচণ্ড শারীরিক যন্ত্রণা ও হতাশায় পরিণত হলো। টানা ২৬ মাইল দৌড়ানোর পর আমরা নিশ্চিত ছিলাম না যে, আরও ২৬ মাইল আমরা পারব। কিন্তু আমরা পেরেছিলাম।
টানা সাড়ে ১৫ ঘণ্টার চেষ্টায় James, Favian, Alicia ও আমি আমাদের ৫২ মাইলের লক্ষ্য পূরণ করলাম…একসঙ্গে। আমরা দৌড়েছি, হেঁটেছি, খুঁড়িয়েছি এমনকি কখনো কখনো নিজেদের টেনে বয়ে নিয়ে গেছি; কিন্তু আমাদের অবিচল লক্ষ্য ছিল ফিনিশ লাইন, আমরা সেদিকে এগিয়ে গিয়েছি।
ফিনিশ লাইনের ওপারে ছিল স্বাধীনতা… সেই স্বাধীনতা যা আপনার কাছ থেকে কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। এই স্বাধীনতাটা ছিল আমাদের স্ব- আরোপিত সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্তি। যদিও প্রস্তুতির সময় আমরা বিশ্বাস করতাম, টানা ৫২ মাইল দৌড়াতে পারব; কিন্তু সত্যিই সেটা সম্ভব হবে বলে আমাদের কারও বিশ্বাস ছিল না। আমাদের প্রত্যেককে যুদ্ধ করতে হয়েছে নিজের সঙ্গে বিরাজমান ভয়ের সঙ্গে, সন্দেহের সঙ্গে। কিন্তু যখনই আমরা ৫২ মাইল শেষ করলাম, আমরা নিজেদেরকে মুক্ত করলাম ভয় থেকে, সন্দেহ থেকে এবং আমাদের সক্ষমতার প্রতি সন্দেহ থেকে।
এই মুহূর্ত থেকে আমি বিশ্বাস করা শুরু করলাম, এই স্বাধীনতা সবাই পেতে পারেন। যদি শুধুমাত্র নিজের কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে এসে বিকশিত হওয়ার জন্যে একটু চাপ দেন নিজেকে, আপনি আজকে কিংবা অতীতে যা ছিলেন তার থেকে একটু উপরে ওঠার চেষ্টা করেন, এজন্যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন, তাহলে আপনিও উপভোগ করতে পারবেন এমন স্বাধীনতা; এটাই আসলে প্রকৃত স্বাধীনতা।
আপনি কি প্রস্তুত এই স্বাধীনতার জন্যে?
The Miracle Morning প্যাকেজের ৩০ দিনের জীবন পরিবর্তনকারী পরিকল্পনা আপনাকে সাহায্য করবে স্ব-আরোপিত সীমাবদ্ধতা থেকে নিজেকে মুক্ত করতে। আপনি সক্ষম হবেন, যা আপনি করতে চান তা করতে; যা আপনি হতে চান তা হতে। এবং এটা ঘটবে অবিশ্বাস্য দ্রুততায়। The Miracle Morning প্রকৃতপক্ষে একটা জীবন বদলে ফেলা অভ্যাস গঠন, একটা দৈনন্দিন রুটিন, যা আপনি অনুশীলন করবেন টানা ৩০ দিন। তখন এটা আপনার জীবনব্যাপী অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে। তবে এসবের জন্যে সবথেকে বেশি যা প্রয়োজন— তা হচ্ছে নিজের কাছে অঙ্গীকারাবদ্ধ হওয়া।
৩০ দিনের ওপারে আপনি দেখতে পাবেন যে আপনি সেই ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন, যার সক্ষমতা রয়েছে জীবনে এতদিনের চাওয়া সবকিছু হাতের মুঠোয় নিয়ে আসার। জীবনের সব ক্ষেত্রে সফল হওয়ার সব সক্ষমতাই আপনি পেয়ে যাবেন। সিরিয়াসলি বলছি, জীবনে এর চেয়ে বেশি উত্তেজনার আর কী হতে পারে?